অচেনা শহর পর্ব ১৪
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
“কিরে এখনই ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছিস কেন এখনো শেষ হয় নাই। আর একটা ক্লাস আছে।”
“আজকের আমি ক্লাস করবো না আর।”
“মানে ক্লাস করবে না কেন ? প্রথম দুইটা ক্লাসটাও তো করতে পারলি না একটা ক্লাস করলি।
আর একটা গ্লাসে আছে এটাও করবি না?”
“না সময় নাই অলরেডি 2 টা বাজে। সবগুলো ক্লাস করতে করতে তিনটা বেজে যাবে।”
“তো সেটা কি তুই ও জানিস। আমিও জানি। আজকে নতুন না কি। বাসায় কোনো সমস্যা হয়েছে
আঙ্কেল ঠিক আছে তো।”
“তেমন কিছু না তোকে বলছিলাম না একটা টিউশনি যোগাড় করেছি আজকে সেখানে যেতে হবে।”
“তো তাহলে কি প্রতিদিন এক ক্লাস বাদ দিয়ে চলে যাবি।”
“ধুর না।ক্লাস করেই সেখানে যাব। কিন্তু আজকে তো প্রথম বাসায় গিয়ে রুনা আপুর সাথে নিতে হবে।প্রথম
দিন কিছু চিনি না তো। তাই আমার সাথে আজকে যাবে আপু। আর কাল থেকে ক্লাস সবগুলো করেই ভার্সিটিতে থেকেই সেখানে চলে যাব।”
“ও আচ্ছা তাহলে চল। আমি চলে যাই আমার একা ভালো লাগেনা।”
“না তোর যাওয়া হবেনা কি পড়ায় নোটিশ করে রাখিস। কাল তাহলে আমি নিয়ে নেব দুজনে চলে
গেলে তো পড়ার ক্ষতি হবে।”
“কিন্তু আমার থেকে ভালো লাগেনা।”
“ভালো লাগবে এক ক্লাসই ত করে আয় আমি চলে যাই। আমার দেরি হয়ে যাবে।”
“আচ্ছা যা।”
মন খারাপ করে কথাটা বলল অন্তরা স্নেহা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে থেকে বেরিয়ে এলো।
স্নেহার হাতে সেই হলুদ সূর্যমুখী ফুল টা। সেইটা হাতে করে সিড়ি দিয়ে নামছে দ্রুত পায়ে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
ফুলটা দেখতে দেখতে সিড়ি দিয়ে নামছে। হঠাৎ কি মনে করে যেন ফলটা কানের কাছে নিয়ে গুজলো। অজান্তেই মুখে হাসি ফুটে উঠল। নিজেকে একবার আয়নায় দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে। কিন্তু এখানে আয়না কোথায়
পাবো। ব্যর্থ হয়ে আয়না দেখার কথা বাদ দিয়ে তাড়াতাড়ি যেতে লাগলো। ওড়না দিয়ে ভালো করে মাথা
পেচিয়ে কান ঢেকে নিলো যাতে কেউ কানে ফুল আছে দেখতে না পারে।
শেষে সিড়ি করে নিচে নামতে একজনের তীক্ষ্ম দৃষ্টি চোখে পড়লো। তাকে দেখে খানিকটা চমকালাম।
আধাঘন্টা আগে আমি এভাবে রেখে গিয়েছিলাম তাকে সে আর কেউ নয় আদ্র।কাজ শেষ করে উপরে যাওয়ার
সময় তখনো সে এই সিঁড়ির পাশে দাঁড়িয়েছিল কানে ইয়ারফোন হাতে ফোন নিয়ে দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এখনো সেই ভাবেই দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আর নিচে সিড়িতে নামতে পারলাম না সেখানে দাঁড়িয়ে তার দিকে তাকালাম। এনাকে দেখলে বুকের
ভেতরটা কেমন জানি করে ওঠে।তাও সাহস করে চোখ নামিয়ে চলে যেতে নিলাম কিন্তু যেতে পারলাম না
মনে আমাকে টেনে ধরে রেখেছে।
পেছনে তাকিয়ে দেখি আদ্র আমার হাত ধরে আছে। আমি তাকাতেই হাত ছেড়ে দিল।
“তোমার সাথে কিছু কথা আছে।আমার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে কোথাও যাবেনা।”
অবাক চোখে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি। অনেকটা শান্ত ভাবে কথা বলছে আর এর আগে কখনো এমন
শান্তভাবে কথা বলতে দেখনি। সব সময় রেগে গিয়ে কথা বলেছে আমার সাথে । আজকে চোখে-মুখে এর
রাগেও দেখছি না। কি বলবে ভাবছি? আমার মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি। যা বলবে
শুনে চুপচাপ চলে যাব।মাঝে মাঝে এই আদ্রর মাথা ফাটিয়ে দিতে ইচ্ছে করে সব সময় আমাকে ঝামেলায়
ফেলে। কিন্তু আমি কিছু করতে পারবোনা আমি খুব ভালো করে জানি তাই চুপচাপ থাকো।
.
চুপ করে তার কথা শোনার জন্য আছি।
“কালকের অনুষ্ঠান আসো নাই কেন?”
মাথা নিচু করে ছিলাম আদ্রর কথায় মাথা উচু করে তার মুখের দিকে তাকালাম। অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে
আছে এ কথা জিজ্ঞেস করার জন্য। কিছু বলছি না চুপ করে আছি কিছুক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর আদ্র
আবার বলে উঠলো,
“তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দাও এভাবে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে বলি নাই।”
এমন ভাবে কথা বলছে মনে হয়নি আমার গার্জেন। কথা বলার ধরন দেখেই আমার রাগ উঠে গেল।
চোখমুখ শক্ত করে উনার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
“আমার ইচ্ছায় হয় নাম আমি আসি নাই। সে কৈফিয়ত আপনাকে দিতে বাধ্য নই।”
কিছুটা রেগে কথাটা বলল স্নেহা।
স্নেহের কথার ধরন দেখে আরো ফুস করে উঠলো,
“তুমি আমার সাথে রাগ দেখাচ্ছো ইউ নো হোয়াট আমি কি করতে পারি তোমার ধারণা আছে?”
“দেখুন সব সময় ভয় দেখাবেন না। আপনি সেই প্রথম দিন থেকে আমার পেছনে পড়ে আছেন অনেক
জ্বালিয়েছেন আমাকে। এবার দয়া করে ছাড়ুন আমি কেন আসি নাই সেই কথা আমাকে কেন বলব বলুন তো।
আমি যা বলার তা স্যার কে বলেছি তার বিনিময় আপনারা আমাকে শাস্তি দিয়েছেন আর এখন সেসব নিয়ে
মাথা ঘামানো তাই ভালো।”
“তুমি কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি করছ স্নেহা আমি তোমাকে ভালো কথা কথা জিজ্ঞেস করছি।”
“সেটাইতো বুঝতে পারতাছিনা হঠাৎ এত ভাল করে কথা বলছেন।”
“আমার ইচ্ছে হয়েছে আমি ভালো করে বলছি। তোমার কোন সমস্যা আছে।”
“না সমস্যা নেই আপনার মুখে ভাল কথা আসবে সেটা আমি কখনো ভাবি নাই। আচ্ছা আমি আসছি।”
বলে স্নেহা এগিয়ে যায় পেছন থেকে আদ্র আবার বলে ওঠে,
“কোথায় যাচ্ছ ক্লাস এখনো শেষ হয় নাই।”
“জানি শেষ হয় নাই।”
“জানা যেহেতু তাহলে যাচ্ছো কোথায়?”
“সেই কৈফিয়ত ও কি আপনাকে দিতে হবে।”
বলার আর এক মুহূর্ত ও দাঁড়াল না স্নেহা সোজা হেঁটে গেল মাঠ দিয়ে।
আদ্রর ওর যাওয়া দিকে চোখ মুখ শক্ত করে তাকিয়ে আছে।
.
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে আমার সাথে দেখা করে এলাম হালকা কিছু খাবার খেয়ে। রুনা আপু সাথে নিয়ে বেরিয়ে
পড়লাম।কলেজের সামনে যেতে হলো আমি কলেজ থেকে বাম দিকে আছে কিন্তু টিউশনি
ডানদিকে।ভালোই হলো কলেজ থেকে আসে তাহলে কলেজ থেকে আধা ঘন্টার মত লাগলো সেই বাসায়
যেতে।আপু গিয়ে কলিং বেল চাপ দিয়ে দুই মিনিট পর একটা মহিলা হাসি মুখ করে দরজা খুলে দিল। আপুর
সমবয়সী হবে দেখতে খুব সুন্দর মহিলাটা। আপুকে দেখেই জড়িয়ে ধরলো। তারপর আমি আর আপু ভেতরে
গিয়ে সোফায় বসলাম। আপু তার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিল। তার সাথে পরিচয় জানতে পেলাম এই হল
আমার স্টুডেন্টের মা। সে আমাদের বসিয়ে রেখে রান্নাঘর থেকে ছোট লাগালো খাবার-দাবার নিয়ে এলো।
হালকা খাবার এনে সামনে দিল।তারপরে পরানের বিষয় নিয়ে কথাবার্তা চললো কিন্তু দুঃখের বিষয় তার
ছেলেরা নানুবাড়ি গিয়েছে’ যার জন্য আজকের পড়ানো হবে না কাল থেকে পড়াতে বলল। কিছুক্ষণ তার
সাথে কথা বললে মহিলাটিকে ভালই লাগলো।হাসিখুশি একটা মহিলা রায়া আমার কোলে ছিল দুই বান্ধবী মিলে
অনেক গল্প করল এক ঘন্টার মতো সেখানে বসে রইলাম তারপর তাদের থেকে বিদায় নিয়ে আমি আর আপু।
আপু বাইরে এসে বল তার নাকি একটু মার্কেটে যাওয়া দরকার।
কাছে নাকি একটা মার্কেট আছে সেখানেই যাবে।
আপুকে না করার সাহস আমার নায় তাই আর কিছু বললাম না মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম।
আবার আমি পাঁচ মিনিট একটু হেঁটে সামনে একটা বিশাল বড় মার্কেট দেখতে পেলাম বাইরে যেতে দারোয়ান
দাঁড়িয়ে আছে আমি হা করে মার্কেটের দিকে তাকিয়ে আছি অনেক বড় মার্কেট।এ ফর প্রেসেরভেশন
মার্কেটের ভিতরে ঢুকলাম মানুষের আনাগোনা অনেক। যে যার মত জিনিস কেনাকাটা করছে। আমি শুধু
অবাক হয়ে দেখছি। কিছু মহিলা কসমেটিকের দোকানে বসে বসে সাজছে। কেউ মুখে মেকআপ দিচ্ছে
আবার কেউ ঠোঁটে লিপস্টিক বা কেউ চুল বাঁধছে। রাখার মত সবকিছু।কেউ কারো দিকে ফিরে ও তাকাচ্ছে
না। সবার সামনে এভাবে সাজছে লজ্জা করছে না।
.
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আপু সাথে হাটতে লাগলাম। এখানে আসার পর থেকেই শুধু ভার্সিটিতেই গিয়েছে
আজকে ফার্স্ট শপিংমল এলাম।আপু কসমেটিকের দোকান পেরিয়ে উপরে উঠলো না শেষে দোকানে
গেল সেখানে মনে হয় ছোটোদের জামা দেখা যাচ্ছে তার মানে রায়ার জন্য কিছু কিনবে।
আমি শুধু চারপাশে দেখছি আপু দোকানে গিয়ে রায়ার জন্য শীতের জামা দেখতে লাগলো।
রায়াকে আপু নিজের কোলে নিয়ে পরিয়ে দিচ্ছে ঠিকঠাক লাগেনা। আমি আপুকে রেখেই দোকান ছেড়ে
বেরিয়ে পাশের দোকান গুলো দেখতে লাগলাম। কেন জানি খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে আর কখন আসতে
পারবে কিনা। দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না।
পরপর তিনটা দোকান পেরিয়ে গেছি আমি।আমার তো সেদিকে খেয়াল নেই আমি আমার মতো এগিয়ে যাচ্ছি।
প্রতিটা দোকান দেখছি। হঠাৎ আমার খেয়াল হল আমি ভুল করে ফেলেছি। কত দূর চলে এসেছি কে জানে
আমি এখন একটা জুতার দোকানের সামনে। ভেতরে ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের জুতা অসংখ্য। কিছু লোক আছে
তারা আছে আমি তার পাশে থাকা সেখানে তো সেই দোকান টা রুনা আপু কোথায়।
চারপাশে তাকিয়ে খুঁজছি পাচ্ছি না। এসেছিলাম দক্ষিণ দিকে গেলাম আমি উত্তর দিকে আমার সব তালগোল
পাকিয়ে গেছে। কি মুশকিল কি ঝামেলায় পড়লাম?
এখন আপুকে কোথায় খুজে পাব উল্টা দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আর আপুকে খুঁজছি। সবার মাঝে আমি এক
অচেনা সবাই আমার অপরিচিত। আমার ঘোরাফেরা তাকানোর চালচলন দেখে মনে সবাই বুঝতে পেরেছে
যে আমি হারিয়ে গেছি এমন। সবাই কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে যে যার
কাছে নিযুক্ত হচ্ছে। বড়সড় একটা ঢোক গিললাম এখন কি হবে?
আপুকে কোথায় খুজে পাব কেন যে তখন পাগলামো করে বেরিয়ে আসতে গেলাম।
এখন আপুকে কোথায় খুজে পাব।
.
ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। ভয়ার্ত চেহারা নিয়ে সবাইকে স্ক্যান করছি। একবার আপুকে দেখলেই দৌড়ে
চলে যাব।
চোখ বন্ধ করে একটা বড় শ্বাস ফেলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি।হঠাৎ একটা মুখে দেখে হাসি ফুটে উঠল জানিনা
কেন লোকটা কেন অসম্ভব ঘৃণা করি তবুও তার মুখটা দেখে আমার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল।
দৌড়ে এলাম এই লোকটার সামনে দাঁড়াতেই। আমাকে দেখে অসম্ভব পরিমানে শক খেলো লোকটা।
এখানে আমাকে কল্পনা করেনি হয়তো।
কিন্তু আমি একটু হলে ভয় মুক্ত হলাম কেন জানিনা। তাকে দেখে সাহস পেলাম হারিয়ে যাওয়ার হাত থেকে
তো বেচেছি। এই অনেক তাকে অসহ্য লাগে আমার কিন্তু তবুও সে আমার পরিচিত আর কেউ এখানে পরিচিত
নয়। তার কাছ থেকে হেল্প নিতে হবে। সে কি আমায় হেল্প করবে। আকাশ-পাতাল ভাবনা ভাবতে থাক সামনে
দাঁড়িয়ে।
আদ্র স্নেহাকে দেখি বড় স্বর শক খেয়েছে। ভাবি নাই এখানে আবার স্নেহা কে দেখবে। তারমানে মার্কেটে
আসবে বলে স্নেহা তখন ক্লাস সবগুলো না করে চলে এসেছে কিন্তু এভাবে দৌড়ে আসলে ?
“তুমি এভাবে দৌড়াচ্ছো কেন?”
“আপনাকে আমার সহ্য না হলেও। আজকে আপনাকে দেখে কতটা খুশি হয়েছে জানেন। অফ আর একটু
হলে ভয় হার্ট অ্যাটাক করতাম।”
বলে বুকে হাত দিয়ে বড় একটা শ্বাস ফেলল স্নেহা।
আদ্র স্নেহের কথা কিছুই বুঝতে পারছে না। কিন্তু ওকে সহ্য হয় না এ কথাটা শুনে ওর চোখ মুখ লাল হয়ে
গেল।
“কি বললে তুমি আমাকে তুমি সহ্য করতে পারো না। সেই কথাটা আবার তুমি বড় গলায় বলছো তোমার সাহস
দেখে আমি হতবাক।”
.
“দেখুন আমার সাথে ঝগড়া কইরেন না এখন। আমি সত্যি খুব বিপদে পড়ে আপনার কাছে এসেছি।”
“বিপদ আর বিপদ এর কি হয়েছে?”
কপালে ভাঁজ ফেলে চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করল কথাটা।
“আমি হারিয়ে গেছি আমাকে একটু সাহায্য করুন আমি কিছুই চিনতে পারছিনা। রুনা আপুকে খুঁজে
পাচ্ছিনা কোথায় চলে এলাম।”
স্নেহা এমন কথা শুনে আদ্রর পাশে দাঁড়ানোর ফ্রেন্ডরাও বড় বড় চোখ করে স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে।
সেম আদ্র ও এত বড় মেয়ে কিনা হারিয়ে গেছে।এ ই মেয়ে কি পাগল হলো নাকি।
“হোয়াট হারিয়ে গেছে মানে কি পাগল হলে নাকি হারাবে কেন?”
“সত্যি আমি হারিয়ে গেছি। রুনা আপু একটা বাচ্চাদের দোকানে গেছিল আমাকে নিয়ে। আমি মার্কেটে ঘুরে
দেখার জন্য তাকে রেখে চলে এসেছি। এখনো তাকে খুঁজে পাচ্ছিনা।”
কাঁদো কাঁদো মুখ করে কথাটা বলল স্নেহা।আর্দ্র সহ ওর সাথে সবাই আমার কথা শুনে হা হা করে হেসে
উঠলো। আমি চোখ ছোট করে তাদের হাসি দিকে তাকিয়ে আছি।
“আর ইউ সিরিয়াস তুমি হারিয়ে গেছ এত বড় মেয়ে কিনা হারিয়ে গেছে।”
কথাটা বলে আবার হেসে উঠলো।
স্নেহা ওদের এভাবে হাসার কারণ এ রেগে উঠে । তবুও অনেক কষ্টে রাগ সংযত করে বলে,
“আপনারা হাসছেন কেন? আমার কথা কি আপনাদের বিশ্বাস হচ্ছে না।”
কেউ কিছু বললো না হেসে চলছে।
এবার স্নেহা নিজের রাগ ধরে রাখতে পারেনা।
“আপনারা আসলেই অসভ্য। এই যে ( আদ্রকে দেখিয়ে) আপনাকে আমার পরিচিত মনে হয়েছিল বলে
আপনার কাছে এসেছিলাম সাহায্যের জন্য।আপনি যে সাহায্য করার মত লোক না সেইটা আমি ভুলে
গিয়েছিলাম। আপনাদের সাহায্য আমার লাগবে না।”
অচেনা শহর পর্ব ১৩
বলে হাঁটতে লাগলো নিজের চুল নিজেরই টেনে ছিড়ে ফেলতাম ইচ্ছে হচ্ছে। কেন যে অসভ্য লোক তার
কাছে গেলাম। আমার তো আগেই বোঝা উচিত ছিল উনি আমাকে হেল্প করবে না। উল্টো সবার সামনে
আমাকে হাসির পাত্র বানিয়ে দেবে।
নিজের মত বকবক করতে করতে হাটতে লাগল স্নেহা।
“আরে তুই কোথায় যাচ্ছিস?”
“তোরা যা আমি একটু পরে আসছি।”
আদ্র স্নেহার পেছনে যেতে লাগলো। আদ্র স্নেহার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে হাঁটছে। স্নেহা বকবক করতে
করতে হাঁটছে। নিজেকেই নিজে থাপ্পর মারতে ইচ্ছা হচ্ছে। কেন গেলাম কেন গেলাম করতে করতে হঠাৎ
রুনা আপুকে পেয়ে গেলাম।
আদ্র স্নেহার কাছাকাছি চলে এসেছে যেই স্নেহা বলে ডাকবে। আমি স্নেহা রুনাকে গিয়ে জাপটে ধরে।
আদ্র দুর থেকে সেটা দেখে থেমে যায়। সামনে আর যায়না।