অচেনা শহর পর্ব ১৭
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
আদ্র বাইক থেকে নেমে আমার সামনে এসে অবাক ভঙ্গিতে তাকিয়ে আছে। এভাবে দেখে কিছুটা না
অনেকটাই অবাক হয়েছে যা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে।একেতে ব্যথা শরীর অসাড় হয়ে আসছে । তার
উপর আবার এভাবে চোখের সামনে আদ্রকে দেখে আমার লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে। লোকটাকে
এখন আমার সামনে আসতে হল।
এমনিতেই সব সময় আমাকে অপমান করে লোকটা কিছু হলেই। আজকে আবার এভাবে রাস্তা এভাবে পড়ে
থাকতে দেখেছে। এটা নিয়ে আমাকে কত কথাই না শোনাবে আল্লা মাবুদ জানে। কিন্তু উনি এখানে কি করছে?
এই সাত সকালে।
উনাকে দেখে তো মনে হচ্ছে ঘুম থেকে উঠে চেঞ্জ করে নাও এভাবে ছুটে চলে এসেছে। গায়ে একটা গেঞ্জি
আর ট্রাউজার। হলুদ গেঞ্জি। আজকে ওনাকে গেঞ্জিতে দেখলাম তাও হলুদ রঙের। উনার চোখে ঘুম ঘুম
ভাব।আমি কিছুটা অবাক হলাম। উনী এভাবে এখানে কোন জরুরী কাজে চাচ্ছিলাম মনে হয়।
“আপনি এখানে?”
আমতা আমতা করে কথাটা বললাম।
আমার জবাবের উত্তর না দিয়ে উনি আমাকে বলল,
“সাতসকালে তুমি রাস্তার মাঝে বসে কি করছো?”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
ওনার কথা শুনে আমি হতবাক। আমার উত্তর না দিয়ে উল্টা আমাকে প্রশ্ন করছে কত বড় অসভ্য লোক।
বিরবির করে উনাকে বকে উঠে দাঁড়াতে গেলাম।
কিন্তু উঠতে পারলাম না সাথে সাথে আবার বসে পড়ল।পায়ের ব্যাথাটা গুরুতর হয়েছে। এমন ভাবে পড়েছি
আল্লাহ পা দুটো আমার ভেঙ্গে গেল। একদিকে বাবাকে নিয়ে চিন্তা এদিকে আমার এই অবস্থা যখন বিপদ
আসে চারদিক থেকে আসে। তার উপর আবার সামনে আদ্র।
আমাকে এভাবে পড়ে যেতে দেখে আদ্র অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।
“কি হয়েছে এভাবে বসে পড়লে কেন?”
“আমাকে একটু ধরেন প্লিজ আমার তে পারছিনা।”
বলেই হাতটা এগিয়ে দিলাম এখন তাড়াতাড়ি ওঠার দরকার। উঠে আস্তে আস্তে হাঁটতে হবে তারসর বাবার
কাছে যেতে হবে। এখন আদ্রর সাথে তর্কে যেতে পারবো না যে কারণে এসে থাকো আই ডোন্ট কেয়ার।
আদ্র হা করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এই কথাটা হয়তো হজম করতে।
“কি হল এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন? একটু আমার হাতটা ধরেন না।
আমি উঠতে পারছিনা দেখতে পাচ্ছেন না।”
“পড়তে পারছো না কেন নাকি এক্টিং করছে আমার হাত ধরার জন্য। আর তোমার হাত আমি কেন ধরতে যাব
তোমাকে সাহায্য কেন করব।আমি কাউকে সাহায্য করি না ওকে। তুমি এখানে কি করছো বললেনা তো?”
আদ্রর কথা শুনে আমার রাগ উঠে গেল এমন খারাপ লোক আমি আমার জীবনে দুটো দেখিনি।সাহায্য করবে
না সাহায্য করেনা সে আবার আমাকে জিজ্ঞেস কর আমি এখানে কি করছি? আমি কেন বলতে যাবো।
“দরকার নাই আপনাকে।আমি একাই উঠবো”বলে উঠে দাঁড়িয়ে এক পা এগোতে ঠাস করে যেতে নিলাম।
এবার আমি শেষ কিন্তু আল্লা বাঁচিয়ে আমি পরি নাই।
.
এটা কিভাবে সম্ভব কেউ আমাকে ধরে রেখেছে শক্ত করে। সে আর কেউ না আদ্র। আদ্রকে দেখে মেজাজটা
গরম হয়ে গেল। একটু আগেই আমি হাত ধরতে বললাম ধরলোনা এখন আবার আমাকে ধরেছে। একে বোঝা
মুশকিল।
তবুও রাগ দেখিয়ে বললাম,
“আপনি আপনি আমাকে ধরেছেন কেন? ছারুন, একটু আগেই তো আপনি বলেছেন কাউকে সাহায্য করেন
না এর আগে বলেছিলেন। তাও কেন জানি বারবার আপনাকে সাহায্য করতে বলি বুঝি না আসলে দোষ আমার
না দোষ আপনার। আমি বিপদে পড়লে সব সময় আপনি আমার সামনে আসেন কেন বলেন তো।আমাকে
আপনার ধরা লাগবে না আপনার ধরা থেকে আমি নিচে পড়ে যাওয়া ভালো।”
কথাটা বলে আদ্রর দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায় একটা শুকনো ঢোক গিলি। আদ্রর চোখ টকটকে লাল হয়ে
আছে। এমন ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে যেন চোখ দিয়ে আমাকে ভষ্স করে দিবে।
আদ্রর দিকে তাকাতেই আমি ঠাস করে নিচে পড়ে গেলাম। নিচে পড়ে ওমাগো বলে চেঁচিয়ে উঠলাম।
“এটা আপনি কী করলেন এভাবে কেউ ফেলে আমার মাজার টা গেলো। এতক্ষণ পায়ে ব্যথা ছিল
এখন মাজাটা ভেঙে গেল বোধহয়।”
বলে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলো।
“স্টপ ইট। একদম কান্না করবেনা।”
“ব্যথা পেয়েছে এখন আবার কান্না করতে পারবেন না। আসলে আপনি একটা রাক্ষস।”
“আজেবাজে কথা বলে কিন্তু তোমাকে কি হাল করতে পারি । তুমি খুব ভালো করেই জানো।”
“অসভ্য লোক একটা। সব সময় থ্রেট দেওয়া।”
“আরেকবার তোমার মুখ থেকে আর একটা বাজে কথা বের হলে। আমি কিন্তু ধরে আর একটা
আছাড় মারবো তোমাকে।”
.
বিরক্ত হয়ে আদ্র দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটল স্নেহা। তারপর বলল,” দেখুন আপনার সাথে আমি ঝগড়া করতে
চাই এখন। এমনিতেই অনেক লেট হয়ে গেল আপনার জন্য আমার অবস্থা একদম খারাপ। এবার আমার
থেকে সরে যান। নিজের রাস্তা নিজে জান আমাকে আমার রাস্তায় যেতে দিন।”
বলে স্নেহা কষ্ট করে আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো খারাপ লাগলো এখন তাড়াতাড়ি ফার্মাসিতে যেতে হবে। ওইদিকে বাবা একা বাসায় আছে আবার কি না কি করতেছে। ঘুম ভাঙার আগে আমার বাসায় পৌঁছাতে হবে।
আদ্র দিকে আর না তাকিয়ে সামনে এগোতে লাগল। সারা শরীর ব্যথায় অসার হয়ে আসছে। এক পা এগানোর
শক্তিটুকু ও নাই এখন আর। চোখ বন্ধ করে বড় শ্বাস নেই দুর্বল ভাবে।
“বাইকে ওঠো।”
আদ্রর গম্ভীর কণ্ঠে আসতেই চমকে পিছনে তাকায়।গম্ভীরভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি বাইক
ছেড়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে গিয়েছিলাম। ও বাইকে বসে বাইক কথাটা বলে। আমি তাকাতেই বাইক স্টার্ট
করে। আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আবারঝ কই কথা বলে উঠলো,
“কি আমি আপনার বাইকে কেন উঠবো?”
“কথা বলতে বলিনি বাইকে উঠে বলছি। বড্ড বেশি কথা বল তুমি। তাড়াতাড়ি করে এমনি আমার হাতে বেশী
সময় নাই।”
“সময় নাই তো এখানে দাড়িয়ে আছেন কেন? আমি আপনাকে কি আমি বলছি আমার জন্য দাড়িয়ে থাকেন।
আর আমি আপনার বাইকে কেনো উঠবো”
“তোমার দরকার উঠবে।”
“আমার দরকার আপনার বাইক করতে যাব কেন? আমি আপনার বাইকে উঠবো না।”
.
“প্রশ্ন না করে তাড়াতাড়ি উঠ। আমি তোমাকে হেল্প করার জন্য বাইকে উঠতে বলছি না। আর না তোমার সাথে
লং ড্রাইভে যাওয়ার জন্য বলছি।আমি আঙ্কেলের জন্য বলছি এখন যদি না যাও তাহলে সত্যি অনেক লেট হয়ে
যাবে। আর তুমি যদি তোমার বাবার ক্ষতি চাও তাহলে ওঠো না।এতে আমার কিছুই হবে না সে বাসায় একা
আছে তারই প্রবলেম হবে তার। তার ভালো চাইলে ওঠো না হলে থাক আমি যাই।”
স্নেহা হা করে আদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। হ্যা না কিছুই বলতে পারছ না ওর মুখ দিয়ে কোন কথা বের
হচ্ছে না। বের হবে কিভাবে ওতো হতভম্ব হয়ে আছে। আদ্র জানলে কিভাবে বাবা বাসায় একা আছে।
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও এতটাই শক হয় ছে যে নড়াচড়া করছে না।
আদ্র স্নেহার এমন মুখ্য ভঙ্গিতে দেখে রেগে চিৎকার করে বলে,,
” এভাবে তাকিয়ে থাকবে নাকি যাবে হ্যাঁ, না কিছু একটা বলো।
ওকে বুঝতে পেরেছি যাবে না ঠিক আছে না গেলে।”
আদ্রর কথায় ধান ভাঙ্গে স্নেহার আদ্র গাড়ি স্টার্ট করতে যাবে এটা দেখেই স্নেহা টনক নড়ে। নানা আদ্রকে
এভাবে যেতে দেওয়া যাবে না ওর হেল্প নিতে হবে আমাকে। এই শরীর নিয়ে সত্যি আমার খুব দেরি হয়ে যাবে
এখনো অর্ধেক রাস্তা পেরোতে পারি নাই। তার থেকে বরং আদ্রর হেল্পটাই নেই।ও যেমনই হোক যতই ঝগড়া
করি যতই ঘৃণা করি না কেন? বাবার জন্য ওর হেল্প আমাকে নিতেই হবে।
এদিকে আদ্রর বাইকে স্টার্ট হয়ে গেছে চলে যাবে এমন সময় লাফিয়ে স্নেহা তাড়াতাড়ি বাইকে উঠে বসে।
জীবনে ফার্স্ট টাইম বাইক নামক জিনিসটা উঠেছে। ভয় ওর হাত পা কাঁপছে।
.
স্নেহা উঠতেই আদ্র গাড়ি থামিয়ে দেয়। না হলে স্নেহা পড়ে যাবেও ভালো করে বসে নাই।
কি ব্যাপার তুমি না বলে যাবে না আমার বাইকে উঠবে না। কিন্তু এটা কি হলো?
দেখুন এখন কথা বলেন না প্লিজ তাড়াতাড়ি ফার্মাসিতে চলুন।
কিছু টা নরম হয় কথাটা বলল স্নেহা। এখন রেগে কথা বলে লাভ নাই এর হেল্প আমার দরকার খুব দরকার।
আদ্র আর কিছু বলল না বাইকে স্টার্ট দিল। কিছুদূর যেতেই, স্নেহা চিৎকার করে উঠল,
সাথে সাথে আর্দ্র রেগে বাইক থামালো তারপরে কঠিন চোখ মুখ করে স্নেহা দিকে তাকালো,,
“কি হলো এমন ষাঁড়ের মতো চেঁচাচ্ছ কেনো?”
প্লিজ একটু আস্তে চালান। আমিতো পড়ে যাচ্ছিলাম আর একটু হলেই ঠাস করে নিচে পরে যেতাম।
আদ্রর স্নেহার দিয়ে তাকিয়ে দেখে স্নেহা কিছুই ধরে বসে নাই। এবার আরো রেগে যায়,
“ইউ স্টুপিড গার্ল, তুমি চোখে দেখো না বাইক না ধরে বসলে তো পরবাই। ”
“কি ধরে বসবো এই পাশে তো ধরেছিলাম। আমি আজি ফাস্ট বাইকে উঠেছি প্লিজ একটু সাবধানে যাবেন
আস্তে আস্তে চালান।”
“যতসব ঝামেলা।”
“দেখুন একদম আমাকে ঝামেলা বলবেন না।আপনি কিন্তু অফার করেছিলেন বাইকে উঠার জন্য আমি
আপনার কাছে অনুরোধ করে বাইকে উঠতে।”
“ভুল করেছি।এবার দয়া করে আমার কাঁধে হাত রাখে। শক্ত করে ধরে রাখেন হ্যান্ডেল।”
“কে আমি আপনার কাঁধে হাত রাখবো অসম্ভব।”
“ওকে ধরতে হবে না আমি আমার মতো চালাই তুমি যেভাবে যা ইচ্ছা ধরা পড়ে গেলে পরো ।
আই ডোন্ট কেয়ার!!”
.
বলে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বাইক চালাতে লাগলো। আল্লাহ মনে হচ্ছে পড়ে যাব। এত নরডছি পড়লে
আমি শেষ। পাশের হ্যান্ডেল দুই হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে আছি।তবুও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছিনা
ইচ্ছে করে মনে হয় বাইক স্টার্ট জোরে ছেড়ে দিয়েছে। শয়তান খচ্চর লোক বাধ্য হয়ে ডান হাতটা আদ্রর
কাঁধে ধরে আবার সরিয়ে নিলাম। পরবর্তীতে আবার ঝাকিতে পড়ে যাওয়ার মত হলে শক্ত করে কাঁপ চেপে
ধরলাম। অনিচ্ছাসত্ত্বেও ওইভাবে আসতে হল। ফার্স্ট টাইম কোন ছেলেরা এত কাছে বসে আছি। কেমন
কেমন যেন লাগছে?
আদ্রর শরীরের সাথে ঘেসে বসে আছি। কোন ছেলেরা এত কাছে বসে থাকলে যে কোন মেয়েরই এমন লাগবে
অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে কেমন লজ্জা লাগছে এখন। হঠাৎ আদ্রর বাইকের
আয়না চোখ পরল আদ্র আয়নার দিকে তাকিয়ে ছিল। আর আয়নায় আমার মুখে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল।সাথে
সাথে অন্য দিকে তাকায় কেমন যেন
লাগছিল আদ্রর চোখ মুখ।
আর একবার ওই দিকে তাকায় না সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকি। একটু পরে ফার্মেসীর সামনে এসে
গাড়ি থামায় আদ্রর।
ফার্মাসি তে পৌঁছে আমার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে ওঠে। আদ্র সাথে আগের সব রাগ নিমিষেই সব শেষ
হয়ে যায়। খুরিয়ে খুরিয়ে তাড়াতাড়ি ওষুধ কিনে নেই।
ওষুধ নিয়ে একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দিয়ে বাইরে আসতে দেখে আদ্র ফার্মেসিতে ডুকছে। ব্রু কুঁচকে ওর
যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি আদ্র কি ওষুধ কিনতে এসেছে। হয়তোবা! স্নেহা হাঁটতে লাগে।
এখন তাড়াতাড়ি বাসায় পৌছতে হবে। কিন্তু বেশি দূর যেতে পায়না আবার আদ্র সামনে এসে স্নেহা বাইকে
উঠতে বলে।
.
স্নেহা সাথে সাথে না করে দেয়।এবার আর যাবে না। ওই ভাবে খুব অস্বস্তি লাগছিল আদ্রর সাথে এভাবে এতো
কাছাকাছি আসলে বুকের ভেতরটা প্রচন্ড রকম লাফাতে থাকে।
কিন্তু অদ্ভুত বিষয় এবার আদ্র আমাকে জোর করে না। একবার আমার দিকে তাকিয়ে বাইক থেকে নেমে
আসে। হতবাক হয়ে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি। নেমে আসছে কেন? আমার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে হঠাৎ
আমার হাত টেনে নেয়।
আচমকা দুই হাত টেনে ধরায় শরীরে মনে হয় কারেন্টের শক খেলাম। এভাবে হুট হাট হাত ধরায় প্রচন্ড অসুস্থি
ফিল করি আমি। কিছু বলতে যাব তার আগে আমার হাতে আদ্রর একটা মলম দেয়। হাঁ করে মলম এর দিকে
তাকিয়ে আছে এটা তো ব্যথার মলম।
“এটা….
কথার মাঝে থামিয়ে দেয়,,
“ব্যথার স্থানে লাগিয় দুদিনে ঠিক হয়ে যাবে। আসি বাই।”
আর কিছু না বলে সোজা বাইকে উঠে শো করে চলে যায়। আমি হতভম্ব হয়ে আদ্র যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছি
আচমকা কথাটা আমি মেনে নিতে পারছিনা। আমার ব্যথার জন্য আদ্র মলম কিনে দিল। অবিশ্বাস্য চোখে
তাকিয়ে আছে মলম টার দিকে। এদিকে আদ্রর বাইক আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেল।
আমি এক কদম এগিয়ে যাব হঠাৎ একটা অটো আমার সামনে এসে দাঁড়ায় আর আমাকে গাড়িতে উঠে তে
বলে।
“আমি যাব। আপনি চলে যান।”
“কেন মা আসো তোমাকে তোমার বাসায় পৌঁছে দেই।”
অচেনা শহর পর্ব ১৬
“না আমার কাছে কোন টাকা নাই। আমি হেঁটে চলে যেতে পারবো।”
“আমারে টাকার কি বলছো? তোমার ভাড়া দেওয়া আছে চলো আমার সাথে।”
“ভাড়া দেওয়া আছে মানে? ভাড়া কিভাবে দেয়া হলো? আমি তো আপনাকে কখনো বাড়তি টাকা দেয়নি।”
“তুমি তো দেও নাই অন্য একজন দিয়ে দিয়েছে তাড়াতাড়ি চলো।”
“অন্য একজন কে দিছে?”
হঠাৎ আদ্রর কথা মনে পড়লো ওই কি তাহলে!
“তাড়াতাড়ি কর আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে।”
স্নেহা গাড়িতে উঠে বসে। সারা রাস্তা এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসে।
বাসায় এসে দেখি বাবা উঠে নাই একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি। হালকা কিছু তৈরি করে বাবার রুমে গিয়ে
বাবাকে দেখিয়ে ওষুধ খাইয়ে দিই।
আজকে আর ভার্সিটিতে যাব না বাবা এভাবে একা রেখে।
সারাদিন বাবাকে নিয়ে রুমে কেটে গেল দুইবার রায়াকে নিয়ে এসেছিল রানি সাথে রুনা আপু ও এসেছিলো।
বাবাকে দেখে গেছে।
সারাদিন আদ্রর মলম কিনে দেওয়ার অটো পাঠানো নিয়ে চিন্তা করেছি। এসব কেন করল আর হঠাৎ ই বা
কেন এলো? সাত সকালে সে জানলো কিভাবে আমি এখানে আছি।
কাল জিজ্ঞেস করবো। রাতে আবার অন্তরা ফোন দিয়েছিল ভার্সিটিতে কেন যায়নি সেটা জানার জন্য।
ওকে সব বললাম।