অচেনা শহর - গল্প বাজার

অচেনা শহর পর্ব ১৯ || দম বন্ধ ভালোবাসা

অচেনা শহর

অচেনা শহর পর্ব ১৯
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি

“কিরে তোর মুখটা এমন হয়ে আছে কেন?”
অন্তরার প্রশ্নে স্নেহা চমকে তাকালো।
“কি রে ভয় পেলি নাকি।”
মাথা নেড়ে না বলল।
“তাহলে চমকালি কেন?”
“চুপ কর তো ভাল লাগছেনা।”
“কি হয়েছে সত্যি করে বল?”

স্নেহা ভাবছে ফোন এর কথাটা অন্তরাকে বলবে নাকি। আবার পরক্ষণেই ভাবনা বাদ দিল। থাক আরতো ফোন
দেয়নি। মা ফোন মেসেজ রাতে দিয়েছিল। সকালে সব কিছু দেখে আমি চমকে গেছিলাম। ভয় ও পেয়েছিলাম
তার জন্য অনেক কিন্তু সকালে আর ফোন আসে নাই।
তাই সবকিছু বাদ দিয়ে রেডি হয়ে ভার্সিটিতে আসি‌ তারপরে ক্লাস রুমে বসে থাকি চুপ করে। আর একটা
জিনিস আমার খেয়াল হয়। গেট দিয়ে মাঠ পেরোতে একবার আদ্রদের দিকে আমার চোখ যায়। আদ্র সবার
সাথে কথা বলছে আর কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তাকাতেই চোখ অন্যদিকে
সরিয়ে নেয়।

সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে দ্রুত পায়ে ক্লাসে চলে আসি।
আনমনে বসে ছিলাম।
তারপরে হঠাৎ অন্তরা এই প্রশ্ন।
“কিরে তোর মত মুড এত অফ কেন? কি এত ভাবনা চিন্তা করছিস?”
“কিছু না কি আবার ভাববো?”
“আচ্ছা এখন তোর শরীর ঠিক আছে তো।”
“হ্যাঁ।”
“আঙ্কেল কেমন আছে?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

অন্তরের সাথে কথা বলতে বলতে ক্লাসমেট টাইম হয়ে যায়।
দুজনে ক্লাস করে একসাথে ভার্সিটি থেকে বের হই।
এখান থেকে সোজা টিউশনিতে যাব। গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। অন্তরা আমার সাথে দাঁড়িয়ে আছে।
“স্নেহা, চল ফুচকা খাই।”
” আমি খাব না। তুই খা।”
“ধুর একা খেতে ভালো লাগে নাকি। তোকে প্রতিদিনই বলি আর তুই প্রতিদিনই এক কথা বলিস।”
“আমার ফুচকা পছন্দ না। তুই খা না আমার জন্য কেন তুই খাস না।”

“আজকে তোর কোন কথাই শুনছি না। চলতো ফুচকা খাবে আমার সাথে। আজকে তোকে খেতেই হবে।”
অন্তর আমার কথা না শুনে টেনে ফুচকাওয়ালা সামনে নিয়ে গেল।
ফুচকা আমার পছন্দ না এমন না।আমাদের গ্রামেও ফুচকা পাওয়া যেত দুই তিনবার খেয়েছিলাম খেতে খুব
টেস্টি।কিন্তু হাত দিয়ে বাড়তি টাকা না থাকায় এখন ইচ্ছে থাকলেও খায় না। এ জন্য প্রতিদিন অন্তরাকে বলি
আমার ফুচকা পছন্দ না।

আমার সাথে রাগারাগি করে প্রতিদিন চলে যায়। একা খেতে বললে কখনোই খায় না। আজকে ও তাই হলো
কিন্তু জোর করে আমাকে নিয়ে গেল। এখন টাকা পাব কোথায়? হাতে মাত্র 10 টাকা আছে। এই টাকা ভাড়া
দিয়ে টিউশনিতে যেতে পারবো আসার সময় হেঁটে আসতে হবে। পা ব্যথা হয়ে যায় কিন্তু কিছু করার নেই
তাড়াতাড়ি না গেলে রাগারাগি করে এজন্য যাওয়ার সময় গাড়িতেই যায়। যাতে লেট না হয়।
আসার সময় হেটে সময় করে চলে আসি। বেলা থাকে পড়া শেষ এজন্য আসতে আসতে এক ঘন্টা লাগে।
সন্ধ্যার আগেই বাসায় পৌঁছাতে পারি।

.

“অন্তরা হাত ছার। আমি খাব না বললাম তো। তবুও টেনে আনলি কেন?”
“আজকে তোকে খেতেই হবে পছন্দ না হোক তবু ও খেতে হবে।আমার জন্য প্লিজ!!”
অসহায় মুখ করে কথাটা বললো অন্তরা মায়া হলো খুব কিন্তু…
“কিন্তু আমার তো বারতি টাকা নাই। তুই খা আমি তোর পাশে দাঁড়িয়ে থাকি।”
“টাকার জন্য তার মানে তুই এতখন না করছিলি?”
“না আসলে…

“চুপ । আমি কি তোকে একবারও বলছি তুই টাকা দে। তুই আমার সাথে খাবি এইজন্য তুই তারমানে প্রতিদিন
না করিস। শাকচুন্নি তুই আমাকে নিজের ফ্রেন্ড মনে করিস না তাই না।”
“আসলে তা না। প্লিজ রাগ করিস না। নিজের অসহায়ত্বের কথা আসলে কাউকে বলতে খারাপ লাগে।”
“তুই আমাকে কাউকে বানিয়ে দিলি আমাকে তুই আপন মনে করিস না তাই না। একথা বললে কি হতো আমি
কি তোকে বুঝতাম না।”
“আচ্ছা সরি কান ধরছি প্লিজ রাগ করিস না।”

“অন্তরা প্রচন্ড রেগে গেছে।অনেক কষ্টে ওর রাগ কমালাম তার সর্ত ওর সাথে আমাকে ফুচকা খেতে হবে।”
কি আর করব না রাজি হয়ে গেলাম। অনেকদিন পর ফুচকা খাচ্ছি । ঝাল করে আমার পছন্দ না কিন্তু অন্তরা
খুবই পছন্দ ওই জন্য আমাকে কেউ ঝাল করে খেতে হচ্ছে। বরাবরই আমি ঝাল পছন্দ করিনা। ঝাল খেতে
পারিনা ছোট থেকেই। কিন্তু অন্তরা এখানে এসেই বলেছে ঝাল করে ফুচকা দিতে। ওর নাকি ঝাল করে ফুচকা
পছন্দ।
আমি না করি নাই কিছু বলতে পারিনাই।

.

ফুচকার দিকে তাকিয়ে আছে মরিচগুলো মনে হয় গুলিয়ে দিয়েছে। টকটকে লাল হয়ে আছে। ফুসকা দেখে
একটা ঢোক গিললাম…
“কিরে খাচ্ছিস না কেন? তুই কিন্তু বলেছিস খাবি।”
“হ্যাঁ খাচ্ছি।”
বলেই একটা ফুচকা নিয়ে মুখে দিলাম। প্রচন্ড ঝাল অনেক কষ্টে গিললাম।
“অন্তরা আর খাব না তুই খা।”
“কি বললি তুই খাবি না।আজকে যথি তুই সবগুলো ফুসকা না খাস। তাহলে আর কোনদিন
তোর সাথে আমি কথা বলব না।”
“দেখ আমার না প্রচুর…”

“নো এক্সকিউজ আমি জানি তুই এখন নানান বাহানা বানাবি না খাওয়ার জন্য।”
আমার যে প্রচুর জ্বর লাগছে। এটা আমি খেতে পারব না। সেটাও অন্তরা শুনতে রাজি নয়। অসহায় মুখের
দিকে তাকিয়ে রইলাম।ওর একটা কথা না খেলে আমার সাথে আর কথা বলবে না।
চুপচাপ খেতে লাগলাম। এতো ঝাল গলা জ্বলে যাচ্ছে কান দিয়ে মনে হয় ঝাল বের হচ্ছে।
চোখ বন্ধ করে নিচু গপাগপ খাচ্ছিলাম।এখন আর খাওয়া সম্ভব না। আরেকটা আমি
খেতে পারব না। অন্তরার দিকে তাকিয়ে যে পানি চাইবো তাও হলো না।
অন্তরা ফুচকার প্লেট নিয়ে গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হৃদয়ের সাথে ঝগড়া করছে।

.

ওকে ডাকছি কিন্তু ওর কানে কথা যাচ্ছে না। আর যাবেই বা কি করে যেভাবে চিৎকার করে কথা বলছে।
ফুচকাওয়ালার দিকে তাকিয়ে বললাম,
“চাচা পানি হবে।”
“না তো মা পানি তো নাই। তোমার মুখ লাল টকটকে হয়ে গেছে ।তুমি কি ঝাল খেতে পারো না?”
“না চাচা আসলে অন্তরা এত জোর করলো তাই খেলাম এখন তো ঝালে আমি মরে যাচ্ছি মনে হয়।”
ঝালে চোখ দিয়ে নাক দিয়ে পানি পড়ছে। হঠাৎ কেউ পানির বোতল আমার সামনে ধরল।
আমি কে ধরল কিছু না দেখে আগে বোতলটা নিয়ে পানি ঢকঢক করে খেতে লাগলাম।

পানি খেয়ে কমছে না।আমি পাঁচ মিনিটের মতো পানি খেতে খেতে অর্ধেকের বেশি খেয়ে ফেলেছি। আস্তে
আস্তে ঝালে পরিমাণ টা মনটা হালকা কমে এলো। এবার আমার মাথায় এলো আমাকে পানি দিল কে?
সামনে তাকিয়ে দেখি আদ্র হাতে বোতলের মুখা নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হিংস্র ভাবে তাকিয়ে
আছে যা দেখি আমি একটা শুকনা ঢোক গিললাম।
চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে তাকিয়ে আছে মনে হয় চোখ দিয়ে আমাকে ভষ্স করে দেবে।
“আপ ..নি”
আমি কথা বলতে চেচিয়ে বলে উঠলো,,

.

“ইডিয়েট গার্ল যেটা খেতে পারো না সেটা কেন খেয়েছ হ্যা। এতটা কেয়ারলেস কেউ হতে পারে আমার জানা
ছিল না। ঝাল খেতে পারো না সেই ঝাল খেয়ে নিজের কি অবস্থা করেছে একবার দেখেছো।”
অবাক দৃষ্টিতে আদ্রর দিকে তাকিয়ে আছি। চিৎকার করে বলছে ঠিক‌ই। কিন্তু কথা বলার সময় আমার জন্য
চিন্তিত ওঅস্থিরতা দেখছি। আচ্ছা আমাকে নিয়ে চিন্তা কিন্তু না কেন আমার যা খুশি হোক এতে তার কি?
মনের কথা মনেই রইল। বলার সাহস হলো না। এমন ভাবে চিৎকার করে কথাগুলো বলছে। আমি কিছু বলতে
পারলাম না ।

“কি হলো এমন হা করে তাকিয়ে আছো কেন?বোতল দিতে বলছি না!”
এবার আমার ধ্যান ভাংলো আমি তো আদ্রর কে নিয়ে ভাবনার জগতে পা দিয়ে দিচ্ছিলাম। আদ্র কি বলেছি
আমি কিছুই শুনিনাই। এবার শুনতেই কাঁপা কাঁপা হাতে বোতলটাকে এগিয়ে দিলাম।
কটমট চোখে আমার দিকে তাকিয়ে।বোতলটা নিজের হাতে নিয়ে দুই কদমে গিয়ে কি মনে করে আবার
আমার সামনে এসে দাঁড়ালো।
“আর যেন এমন কেয়ারলেস হতে না দেখি। কথাটা মাথায় রেখো।”

.

বলেই বড় বড় পা ফেলে বোতল নিয়ে চলে গেল। আমি হতভম্ব হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি। কি থেকে কি
হলো সব মাথার উপর দিয়ে গেল। আচমকা আদ্রর এখানে আসা আবার চলে যাও।আমার বিপদ হলে কি এই
একজন কি সবসময় আমার সামনে আসতে হবে। কিছুই বুঝিনা‌।
আদ্র নিজের মত চলে গেল একবার ও পেছনে চাইলো না।
এর মাঝে অন্তরাও চলে এসেছে।
ও কিছু টা শুনেছি মনে হয়।

আমার কাছে এসে সরি বললো আমি মুখ ঘুরিয়ে চলে গেলাম। ওর জন্য সবকিছু হয়েছে।ওর জন্য এতগুলো
কথা শুনতে হলো আদ্রর কাছে।
অন্তরা বিল দিয়ে স্নেহার পিছনে আসবে তারা আগেই স্নেহা গাড়িতে উঠে চলে গেল।
অন্তরা ফুচকাওয়ালা থেকে শুনতে পেয়েছে স্নেহা ঝালের জন্য কি হয়েছিল। সবসময় নিজেক গিল্ট ফিল
করতে লাগলো। ইস আমার একটু বোঝা উচিত ছিল।
মন খারাপ করে ফুচকাওয়ালার সামনে দাঁড়িয়ে রইল।

“কি ব্যাপার ম্যাডামের মন খারাপ নাকি?একটু আগেই তো আমার সাথে পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করছিলে।
বাপরে বাপ এত ঠান্ডা হয়ে গেলে কিভাবে? একটু সময়ের মাঝে।”
ব্রু কুচকে অবাক হয়ে কথাটা বলল হৃদয়।
“কি হলো ম্যাডাম এখন কথা বলবেন না নাকি।”
“দেখুন আমার মনটা এখন এমনিতেই খারাপ। আপনি আমাকে একদম রাগানোর চেষ্টা করবেন না।”

.

“আরে আরে তোমাকে আমি রাগাবো কেন? আমার সব কথাই তুমি শুধু রাগ খুঁজে পাওনি কি শুধু। ভালোবাসা
খুঁজে পাওনা। আমি তো তোমার সাথে রাগারাগি ঝগড়াঝাঁটি করতেই চাইনা। শুধু ভালোবাসার কথা বলতে চাই
কিন্তু তুমি তো বলতে দাও না।”
“আপনি আসলে একটা ছ্যাসড়া। বলছি আমার মন খারাপ তাও আপনি আবার আজেবাজে কথা বলছেন।”
“এইসব কথা তোমার আজে বাজে মনে হচ্ছে।আমি তো ভালো কথা বলছি।”
“আপনি কিন্তু….
রেখে চিৎকার করে কথাটা বললাম অন্তরা।
” ওকে, ওকে বলছি না। এবার বল কি হয়েছে তোমার? মন খারাপ কি জন্য?”

অন্তরার কি হলো কে জানে ও ভালো ভাবে সব খুলে বলল হৃদয় কে। কেন বলল নিজেও জানেনা‌। হৃদয়
অবাক হয়ে অন্তরার মুখের দিকে তাকিয়ে ঠান্ডা মেজাজে কথা শুনছিলো।
“ও বুঝতে পেরেছি। আজকে ত আর তাকে পাবে না কালকে আসলে সরি বলে দিও। দেখ ক্ষমা করে দিবে।
চলো তোমাকে বাসায় পৌঁছে দেয়।”অন্তরা হৃদয়ের সাথে চলে গেল বাসায়। এই ফাস্ট ওরা ঝগড়া ছাড় এক ঘণ্টা কাটালো।অন্তরা বাসার সামনে আসতেই।ওকে নামিয়ে বিদায় নিয়ে চলে গেল হৃদয়।
য়।

অন্তরা ও কেন জানি গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হৃদয়ের গাড়ির দিকে তাকিয়ে রইল। যতখন গাড়িটা দেখা গেলে
ওই ভাবে তাকিয়ে রইল। আস্তে আস্তে গাড়িটা অদৃশ্য হয়ে গেল। তারপর গেট লাগিয়ে ভেতরে চলে গেল।
অন্তরার বাবা একটা বেসরকারি কোম্পানিতে জব করে। ওরা তিন বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে তার নাম
অহনা। একটা ছেলে আছে ছোট দুই বছরের। মেজ অন্তরা। আর ছোট বোন এবার ক্লাস নাইনে পড়ে। নাম
অলি।

.

বাসায় ঢুকতেই অলি হামলে পড়ল ওর উপর।
“কিরে এমন হাসছিস কেন?”
“আপু নিচের ছেলেটা কেরে?”
কথাটা শুনতে ই অন্তরা থতমত খেয়ে গেল।
হৃদয় কে তাহলে অলি দেখে ফেলেছে। এখন কি হবে ও যদি আব্বু আম্মুকে বলে দেয়।
ভয় ভয় চোখে তাকিয়ে আছে অলির দিকে।
“কি দে খে ছিস কো ন ছে লে আমার সাথে তো কোন ছেলে আসে নাই।”
তোতলাতে তোতলাতে কথাটা বললাম।

“মিথ্যা বলে লাভ নাই আপু। আমি দেখেছি নিচে একটা ছেলে তোমাকে অটো থেকে নেমে বিদায় জানানোর
চলে গেছে। তুমি সেখানে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে ছিলে তার দিকে যাওয়ার দিকে। কি ঠিক বলছি না?”
সাথে সাথে কেশে উঠলো অন্তরা । হৃদয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই ঠিক কিন্তু। যদি আমাদের বাসায়
কোন ছেলে আমার সাথে এসে ছিল এটা জানতে পারে তাহলে। তাহলে বাবা নিশ্চিত আমার বিয়ে ঠিক করে
ফেলবে।কারণ এমনিতে বাবা পড়াতে চেয়েছিল না ভেবেছিল অনার্স উঠলেই বিয়ে দিয়ে দিবে।
এক প্রকার জোর করে লেখাপড়া করছি। এখন সব আশায় জল ঢেলে দেই ওই শয়তানটা। না কিছু তো একটা
করতে হবে। যেভাবেই হোক অলির মুখ বন্ধ করতে হবে।

“কি বাবা মাকে বলবো তুমি এখন প্রেম করো লেখাপড়া বাদ দিয়ে।”
“লক্ষ্মী বোন আমার। বাবা মাকে কিছু বলিস না প্লিজ তুই যা চাবি তাই দিব।”
অলি মনে মনে এটাই চাইছিল মনে মনে বলে এইতো লাইনে আইছো। তা ওএকটু বাজিয়ে নেই।
“না না আমাকে ঘুষি দিয়ে লাভ নাই। কথাটা তো আমি বাবা-মাকে বলবো‌ই।যে তুমি একটা ছেলের সাথে
প্রতিদিন গাড়ি করে আস। সে তোমাকে বাই বলে তুমি ও তাকে বাই বলো। তারপর ইদানিং তো তুমি ফোনে
কার সাথে কথা বল। রাতে আমি সব শুনেছি।”

.

ওরে আল্লাহ এই মাইয়া বলে কি?রাতে মাঝে মাঝে হৃদয় ফোন দেয় ওর সাথে ঝগড়া করি কিন্তু তো ও ঘুমে
থাকে কিন্তু এখনতো দেখছি সে আমার পেছনে পুলিশের মত চোখ কান খোলা রেখে নজর রাখে।
“লক্ষী সোনা বোন আমার। প্লিজ বলিস না তার বিনিময় কি চায় তাই বল।”
“আচ্ছা একটা শর্তে আমি মুখ বন্ধ রাখতে পারি।”
সাথে সাথেই অন্তরা জিজ্ঞেস করে, “কি শর্ত তাড়াতাড়ি বল?”
“আমাকে রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে হবে আর একটা বড় মেকআপ বক্স কিনে দিতে হবে।”
বড় বড় চোখ করে অলির দিকে তাকিয়ে আছি।
“কি হলো পারবে তাহলে আমার মুখ বন্ধ থাকবে।
না হলে যাই বলে আসছি আম্মু কে।”
“আচ্ছা আচ্ছা এখন টাকা নাই হাতে। কয়েকদিন পর।”
“আচ্ছা।”

বলে চলে গেল অন্তরা।
রাতে আর হৃদয় ফোন দেইনি ।ফোন দিলে ওর উপর রাগ ঝারতো ওর জন্য এত কিছু হয়েছে?
পরদিন ভার্সিটিতে গিয়ে। স্নেহাকে আগে সরি বললাম। সে কি রাগ স্নেহার অনেক কষ্টে রাগ কমানোর চেষ্টায়
সফল হলাম।
তারপরও কে ক্লাসে রেখে আমি হৃদয় কে খুঁজতে বেরিয়ে হৃদয়কে পেয়েও গেলাম।
“এই যে শুনুন আপনার সাথে আমার জরুরী কথা আছে।”
“আরেব্বাস, আমার সাথে তোমার জরুরী কথা আছে। রিয়েলি, আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না।”
“একদম ন্যাকামো করবেন না। আমি আপনার ন্যাকা কথা শোনার জন্য আসিনাই।”
“আচ্ছা বলো কি জরুরী কথা তার আগে বল কেমন আছো?”

অচেনা শহর পর্ব ১৮

“ইউ আপনার জন্য ভালো থাকা যায় নাকি।অসম্ভব কালকে আপনি আমার সাথে বাসায় গিয়েছিলেন সেই টা
আমার ছোট বোন দেখে ফেলেছে। আর এখন সেইটা নিয়ে ভেবেছি আমার সাথে আপনার কোন সম্পর্ক
আছে।তাই নিয়েও আমাকে শর্ত দিয়েছে ওকে রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে হবে। আর বড় একটা মেকআপ বক্স
কিনে দিতে হবে। যদি না দেই তাহলে আমাকে সব আব্বু আম্মু কে বলে দেবে।”
“ওই ব্যাপার আচ্ছা যাও তোমার হয়ে আমি না হয় সব করলাম।”

“মানে।”
“এই ধরো। তোমার বোনের ডিমান্ড না হয় আমি পূরণ করলাম। আমার জন্য যেহেতু সমস্যা হয়েছে আমি
সলভ করে দিলাম।”
চোখ ছোট ছোট করে অন্তরা হৃদয়ে দিকে তাকিয়ে আছে। হৃদয়ের ঠোটের মুচকি হাসি।
“কি আমার অফারটা পছন্দ হয়েছে?”

অচেনা শহর পর্ব ২০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.