অচেনা শহর - গল্প বাজার

অচেনা শহর পর্ব ২৪ || romantic sad love story

অচেনা শহর

অচেনা শহর পর্ব ২৪
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি

চোখ খুলে নিজেকে আদ্রর কাঁধে মাথা রেখে ওর বাম হাত জড়িয়ে ধরে আছি দেখে ছিটকে দূরে সরে
আসলাম। ‌হতবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি আমি। ঘুম আসলাম কখন, আর আমি আদ্রর কাঁধে ই বা
গেলাম কখন।
আদ্রর কাছে নিজেকে দেখেই আমার ঘুম ছুটে গেছে সাথে সাথে।
আদ্র চোখ বন্ধ করে সিটে হেলান দিয়ে আছে হয়তো ঘুমিয়ে। আমি সরে আসতে হবে হালকা নড়ে আবার চুপ
হয়ে র‌ইল। আমি মনে করার চেষ্টা করছি আমি ঘুমালাম কখন। তার পর মনে পরলো আমার মাথা ব্যথা
করছিলো তাই চোখ বন্ধ করে সিটে মাথা রেখে ছিলাম। তারপর আর কিছু মনে নেই তাহলে তখন‌ই হয়তো
ঘুমিয়েছি কিন্তু তাহলে আমি কি ঘুমের ঘোরে আদ্রর কাছে চলে গেছি।

কথাটা ভেবেই জ্বিভ কাটলাম ছিঃ ছিঃ নিজেকে একটু সংযত রাখতে পারলাম না সেই ঘুমিয়ে পরলাম।আদ্রর
কি দেখেছে আমি এভাবে তার উপর ছিলাম দেখে নী মনে হয় দেখলে কি আমাকে নিজের কাঁধে রাখতো
নাকি এতোক্ষন তুলকালাম বাঁধিয়ে দিতো‌।
আমার আগে যদি তার ঘুম ভাঙতো তাহলো কি হতো ছিঃ লজ্জ্বা আমার মাথা কাটা যেত আর ভুলে ও ঘুমানো
যাবে না।
নিজেকে বকতে বকতে সামনে তাকালো বাসের সবাই ই ঘুমে প্রায়।কতো সময় হলো ফোন টিপে দেখলাম
বারোটা বাজে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

দুই‌ ঘন্টা ঘুমিয়েছি তাহলো। একটু মুখে পানি দিতে পারলে ভালো লাগতো ঘুমের রেশ হালকা আছে। ওইভাবেই
জানালার বাইরে তাকালায়।
যেতে আর কতোক্ষন লাগবে তাও জানি না গাড়িতে আছি তার ঘন্টা হয়ে গেছে।
আর ও পনেরো মিনিট পর দেখলাম আদ্রর চোখ মেলেছে। আমি তাকাতেই সে আমার দিকে কেমন করে যেন
তাকালো তার চোখ লাল হয়ে আছে। ওইভাবে এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।ওনার তাকানো ঠিক
লাগছে না অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ জনি একটু আমার দিকে চেপে এলো। আমি ভ্রু কুঁচকে
তাকিয়ে আছি ওনার তাকানো দেখে আমার ভ্রু কুঁচকানো দেখে আদ্র নিজের জায়গায় গিয়ে চোখ সরিয়ে
নিলো‌।

কিন্তু আমি চোখ সরালাম না সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছি। এভাবে এগিয়ে আসছিলো কেন?
“আপনি এভাবে তাকিয়ে এগিয়ে আসছিলেন কেন? আপনার মতলব আমার ঠিক লাগছে না।”
আমি জানালার সাথে চেপে জিগ্যেস করলাম।
কিন্তু আদ্র আমার কথা কানে ও নিলো না তাকালো ও না। সামনে তাকিয়ে র‌ইল।
কিছু ক্ষন উওরের অপেক্ষা করে ব্যর্থ হয়ে সামনে তাকালাম।
বিড়বিড় করে আদ্র চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলাম।
5 মিনিট পর দেখি আদ্র পানি দিয়ে নিজের মুখ ধুচ্ছে তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
” কিছু বললে।”

আমি কি বলব বুঝতে পারছি না। হা করে উনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি।
এতো সময় পর তার মনে হলো আমি তাকে কিছু বলেছি। কটমট চোখে তাকিয়ে আছি সে উত্তরের অপেক্ষা
করছে। কিছু বলতে গিয়েও বললাম না তখন সে বলে না এখন আমি বলবো না। তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে জানালা
দিয়ে তাকিয়ে রইলাম তাকে অগ্রাহ্য করে।
আদ্র ভ্রু কুঁচকে স্নেহা দিকে তাকিয়ে আছে।
স্নেহা রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। ও বুঝতে পারল যে পরে উত্তর
দেওয়ার জন্য স্নেহাকে ওকে ইগনোর করলো।

.

গালে হাত দিয়ে আদ্র একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল স্নেহার দিকে। জানালার বাইরে দৃষ্টি স্নেহার ঠান্ডা হাওয়া এসে
ছুঁয়ে যাচ্ছে আর মুগ্ধ হয়ে সেদিকে তাকিয়ে আছে।
হঠাৎ আদ্রর দিকে তাকিয়ে হতবাক হলো কারণ আদ্রর ওর দিকে তাকিয়ে আছে। তাও পলক হীন ভাবে এটা
দেখে স্নেহা সন্দেহ চোখে তাকায় আদ্রর সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নেয়।স্নেহা বুঝির চেষ্টা করেছে এভাবে
তাকানোর কারন কি আবার কি জিজ্ঞেস করবো কিন্তু বলে না জিজ্ঞেস করলে।

আদ্র স্নেহাকে আচমকা এদিকে তাকাতে দেখে তারাতাড়ি চোখ সরিয়ে নেয়। একটু শান্তি তে দেখতে ও পারে না
এমন ভাবে তাকায় যেন চোখ দিয়েই ভষ্স করবে আমাকে। আদ্র পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের
করে একটা হাতে নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে টানতে থাকে কি ভেবে পাশে তাকিয়ে দেখে স্নেহা ওরনা দিয়ে নাক
মুখ ডেকে ওর দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকিয়ে আছে।
আর এক টান দিয়ে আদ্রর সিগারেটের আগুন নিভিয়ে ফেলে।
পুরো রাস্তা আর দুজনের মাঝে কথা হয় না।
স্নেহা নিজের মতো থাকে আর আদ্র স্নেহার দিকে মনোযোগ দিয়ে থাকে কিন্তু সেটা স্নেহা কে বুঝতে দেয় না।
মাঝে মাঝে দুজনে চোখা চোখি হয় কিন্তু কথা হয় না।

অবশেষে রিসোর্ট এসে পৌছালাম।
শেষে রাস্তাটুকু আর ঘুমাই নাই। জেগে ছিলাম।অন্তরা থেকে জানতে পারলাম ওর সাথে নাকি একটা মোটা
মেয়ে বসে ছিলো। সেই বাসে নাকি হৃদয় ছিল।
দুজন দুজনকে এক সাথে দেখে তো অবাক তারপর নাকি হৃদয় কিভাবে কি করে জানো অন্তরার পাশে এসে
বসেছিল।
আর সারা রাস্তা নাকি দুজন পাশাপাশি বসে এসেছে।
সেজন্য অন্তরা তো সেই খুশি। খারাপ থাকলে পরের সময় নাকি খুব ভালো কেটেছে।তাতো কাটবেই আমার
সে না খারাপ কেটেছে পুরোটা সময়।
আমাকে আর অন্তরাকে একটা রুমে।

.

অনেকটা পথ জানি কারাতে। সবাই ক্লান্ত তাই রুমে চলে গেছে।
এখন বিশ্রাম নেবে সবাই। আমি আর অন্তরা ও রুমে একসাথে চলে এলাম।
রুমে এসে হাঁ করে দেখতে লাগলাম সব কিছু। অনেক সুন্দর রুমটা। বাঁশের তৈরি রুম। একটা বিছানা আর
একটা সিঙ্গেল সোফা আছে।খুব বড় না ছোট রুম কিন্তু অন্য সব রুম বড় লেগেছে । অন্য সব রুমে দেখলাম
পাঁচ ছয় জন করে মেয়ে থাকবে। আর এটায় আমরা দুইজনই এজন্য হয়তো ছোট রুম।
যাই হোক তাও ভালো হয়েছে ছোট রুম সমস্যা নাই অন্যদের সাথে মিশতে পারতাম কিনা জানিনা আমরা
দুজন আলাদা। দুজনেই খুশি হলাম এজন্য।

অন্তরা রুমে এসেই চিৎ হয়ে শুয়ে পড়েছে খাটে আর ফোন কানে হৃদয়ের সাথে কথা বলছে।যার সাথে এত
ঝগড়া করত এখন কি না তার জন্য পাগল হয়ে গেছে মেয়েটা ভাবা যায়।
“স্নেহা রুমটা খুব সুন্দর তাই না রে আমাদের আলাদা থাকতে দিয়েছে। আমার যে কি ভালো লাগছে রে।”
“হ্যাঁ রুমটা খুব সুন্দর দেখ বেলকনি আছে আয় দেখি।”
“আমার খুব ক্লান্ত লাগছে আমি এখন দেখব না তুই গিয়ে দেখ। আমি এখন ঘুমাবো।”
“কি ঘুমাবি ফ্রেশ হবি না। ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমাও।”
“না এখন আর আমি ফ্রেস হতে পারব না তুই আমাকে ডাকিস না প্লিজ।”

আমি আর কিছু বললাম না ও চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে আমি ওকে রেখে একাই বেলকোনিতে চলে
গেলাম। এখানে এসে তো আর ও বেশি মুগ্ধ হলাম বেলকুনিতে আমার আরো বেশি পছন্দ হলো।বেলকনি থেকে সামনে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায় সামনে উঁচু-নিচু পাহাড় সবুজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে দেখতে।
হা করে স্নেহা প্রকৃতির সৌন্দর্য দূর থেকে হালকা দেখছে। এতে ও মুগ্ধ না জানি আরো কত সুন্দর কাছ থেকে
দেখতে পেলে।

.

হঠাৎ স্নেহার মনে হলো পাশের বারান্দা থেকে কেউ ওর দিকে তাকিয়ে আছে।চোখ ঘুরিয়ে পাশের বারান্দায়
তাকিয়ে দেখে না কেউ নাই। তোমার একবার সামনে তাকিয়ে রুমে ঢুকে পড়ে ফ্রেশ হ‌ওয়ার জন্য।
এদিকে আদ্রর রুম স্নেহার পাশেরটা।রুমে এসে ও বারান্দায় চলে আসে সিগারেট খেতে । বাসে একটা
সিগারেট খেতে ‌পারি নাই। এসে আগে বারান্দায় চলে আসে বারান্দায় এসে দেখে স্নেহা বারান্দায় দাঁড়িয়ে
চারপাশ দেখছে। স্নেহা কে দেখে আদ্রর সব ধ্যান স্নেহার মধ্যে চলে আসে।হঠাৎ স্নেহা ওর দিকে ফিরতে
তাড়াতাড়ি বারান্দা থেকে সরে যায়।

ফ্রেশ হয়ে আসতেই খাবারের জন্য ডাক পড়ে।
4 টার উপরে বাজে লাঞ্চ তো আর করা হয় না এখনি লাঞ্চ করতে হবে। স্নেহা এসে অন্তরা পাশে বসে ওকে
ডাকতে লাগে।
“কি এমন ডাঅ পারচ্ছিস কেন আমাকে কি একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিবিনা তোকে না বললাম আমাকে ডাকিস
না।”
“আমার কিছু করার নাই আমি নিজের ইচ্ছায় থাকতে আসি নাই‌। তো কি খিদে পায় নাই যদি খিদে না পেয়ে
থাকে তাহলে ঘুমা আমি খেতে গেলাম।”

খাবার কথা শুনে অন্তরার চোখমুখ চিকচিক করে উঠলো খুশিতে।
“খিদে পাই নাই আবার কি যে বলিস না আমার তো প্রচুর খিদে পেয়েছে তাড়াতাড়ি চল খেয়ে আসি।”
বলে অন্তরা ওঠে পরে।
“আগে ফ্রেশ হয়ে আয় তারপর।”
অন্তরা ফ্রেশ হতে যায় তারপর দুজনে একসাথে খেতে যাই।

.

খাবার টেবিলে গিয়ে আমি আর অন্তরা পাশাপাশি সিটে বসি। অনেকে আছে আবার অনেকে নাই আমার
পাশে বলতে ডান পাশের সিটটা খালি।
ভ্রু কুঁচকে একবার সেটার দিকে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিলাম। এই সেটটা খালি কেন?
তারপর সেটা পাত্তা না দিয়ে অন্তরা সাথে কথা বলতে লাগলাম। একটু পর খাবার চলে এল তখন আমার পাশে
এসে বসল মাইশা।আমি তাকে আমার পাশে বসতে দেখে চরম অবাক হলাম।কারন সে আমাকে একদম
পছন্দ করে না।আমার পাশে বসলো খানিকটা অবাক হয়েছে।

“কিভাবে ব্যাপার এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?”
“কিছু না এমনি।’
আমার কথা শুনে মাইশা একটা ভেংচি কেটে ফোন টিপতে লাগল। আমার প্রচুর রাগ লাগল। কিন্তু কিছু
বললাম না চুপ করে রইলাম। মাইশা খাচ্ছে আর ফোন
টিপছে একবার আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম। আমি ও চুপচাপ খাওয়াতে মনোযোগ দিলাম।
খাওয়ার মাঝে পানি না হলে আমি একটু খেতে পারিনা। তাই দুই লোকমা খেয়েই পানি খুঁজতে লাগলাম।
আমার খাবারের সামনে কোন পানি নাই গ্লাস আছে অনেকগুলা খানিকটা দূর। মাইশার পাশে গ্লাস আছে।
কিন্তু আমি সেটা আনার সাহস করলাম না।

আরেকটা দূরে থেকে গ্লাস এনে থেকে জগ থেকে পানি ভরতে লাগলাম।
কপাল খারাপ হলে যা হয় আমার হাত থেকে জগ ছুটে যায় অনেকটা পানি মাইশার হাটুতে পরে। আর কি
চিতকার চিৎকার দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আমার হৃদপিণ্ড কেঁপে ওঠে মাইশার চিৎকার শুনে ভয়ে আমি ঠিক করে
রেখে জগ রেখে কাপাকাপি করতে থাকি।
“ইউ স্টুপিড ইডিয়েট গার্ল। কি করলে তুমি আমার পুরো ড্রেসটা নষ্ট করে ফেললে বিজিয়ে।”
“সরি আপু আমি সত্যি ইচ্ছে করে এমনটা করি নাই। ভুলবশত হয়ে গেছে।’
“ইচ্ছে করে করোনি। আমি শিওর তুমি ইচ্ছে করে করেছ। ”

.

বড়সড় একটা সীন ক্রিয়েট হয়ে গেল। আমাকে যাতা বলে মাইশা বকতে লাগলো। শুধু বকেই শান্ত হলো না
শেষে তো হাত উঠালো মারার জন্য আমি সবার সামনে মাথা নিচু করে আছি। মুখে কোন কথা বের হচ্ছে না।
লজ্জায় অপমানে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে।
কিন্তু মাইশার হাত আমার অব্দি আসলো না। তার আগেই কেউ ধরে ফেলেছে।আমি মাথা উঁচু করে হাতের
মালিক কে দেখলাম সে আর কেউ না আদ্র। আগুন চোখে মাইশার দিকে তাকিয়ে আছে।

তার এমন ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আমি নিজেও ভয় গেলাম। মাইশা তার ফ্রেন্ড সেটা আমি জানি। খুব ভাল ফ্রেন্ড।
মাইশা সাথে এমনটা হল আমাকে না জানি আবার কি শাস্তি দেয়। ভয়ার্ত চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছি।
আদ্র চিৎকার করে বলল,, “এখানে কি হচ্ছে?’
গরগর করে মাইশা বললো।আমি নাকি তাকে ইচ্ছে করে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিয়েছে তার ড্রেস নষ্ট করেছি।
আরো নানা বকা স্ট্যাটাস গাইয়া ক্ষেত অনেক বকাবকি করতে লাগলো।
“আমি এখানে আর কোন সিনক্রিয়েট চায়না।

চুপচাপ বসে খা। ওর হয়তো ভুলে ভরে পরে গেছে। এই সামান্য বিষয়ে তুই ওর গায়ে হাত তুলতে গেলে কেন?”
“কি বললি তুই এটা সামান্য বিষয়? ও আমাকে ভিজিয়ে ফেলেছে এখন আমার ড্রেসটা চেঞ্জ করতে হবে। এটা
তোর কাছে সামান্য বিষয় মনে হচ্ছে।”
“এক কথা বারবার বলবি না। ড্রেস চেঞ্জ করলেই তো হবে এজন্য মারার কি দরকার?এটা তুই ঠিক করিস নি
আর এভাবে বকাবাজি করার কি আছে একটু পানি তো পড়েছে।”
মাইশার কিছু বলল না ও জানে আদ্র স্নেনাকে কিছুই বলবেনা দাঁতে দাঁত চেপে আদ্রর কথা সহ্য করে আর রাগী
চোখে স্নেহার দিকে তাকায়।

.

আদ্র কথা শেষ করে স্নেহার দিকে একনজর তাকিয়ে হনহন করে চলে যায়। অন্তরা হতবাক হয়ে এসব
দেখলো আর স্নেহাকে এক হাতে জাপটে ধরে ছিলো। স্নেহা সাথে সাথেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দৌড়ে চলে যায়
রুমে। কষ্টে ওর বুকটা ফেটে যাচ্ছে। সবসময় কেন ওকেই সবার সামনে অপমানিত হতে হয় কোন সময় কি
কোথাও একটু সম্মান পাবে না। সবাই কেন সবসময় ওকে নিয়ে হাসাহাসি করবে কেন সবার মত চলতে পারে
না কেন? গরিব বলে টাকা নেই বলে টাকাই কি জীবনের সব।
স্নেহাকে যেতে দেখে মুখ ভেংচি কাটে মাইশা আর বলে ঢং,
অন্তরা পিছন থেকে দেখে ঠেকে ও থামাতে পারেনি।

কিন্তু অন্তারা যেতে পারল না কারণ এখন গেলে আর খাবার পাবেনা। সে খাবার খেয়ে স্নেহার খাবার নিয়ে
যেতে পারবে তাও। এজন্য বসে রইলাম খাবার শেষ করে ওর প্লেটটা নিয়ে গেলাম।
অন্তরা এসে দেখেস্নেহা শুয়ে শুয়ে কাদছে।
ওরো খুব কষ্ট লাগে। মাইশা মেয়েটা বেশি খারাপ শাকচুন্নী একটা।
বিরবির করে মাইশাকে বকে স্নেহা পাশে গিয়ে বসে ডাকতে লাগে খাওয়ার জন্য।
“স্নেহা উঠ বোন খাবার খেয়ে নে তোর না খিদে পেয়েছে। ওই শাকচুন্নি মাইশার কথায় কষ্ট পাস না
আমিতো জানি তো ইচ্ছে করে করিসনি।”

অচেনা শহর পর্ব ২৩

“আমাকে ডাকিস না আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আমি খেতে পারব না।”
“প্লিজ অন্যের জন্য নিজের ক্ষতি করিস না। ও তোর কি না খেলে তো অসুস্থ হবি এতে ক্ষতি তোর হবে ও
না।”
অন্তরা শত বলে ও কিছু খাওয়াতে পারলো না।
তাই ব্যর্থ হয়ে শুয়ে পড়লো ওর ক্লান্ত লাগছে। কিছু ক্ষনের মাঝে ঘুমিয়ে ও পরলো।
স্নেহা ওইভাবে কিছু ক্ষন থেকে কান্নার মাত্রা কমিয়ে ওইভাবেই ঘুমিয়ে পরে।
সন্ধ্যায় পর ঘুম থেকে জাগে। উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে বারান্দায় যায়।

বারান্দায় এসে কিছু ভালো লাগে কিন্তু এখানে খুব ঠান্ডা লাগছে।গায়ে শীতের জামা নেই ব্যাগ থেকে বের‌ই করা
হয় নাই‌। ঠান্ডা বাতাস আসছে অনেক ভালো লাগার সাথে শীতে কাঁপছি ও গায়ে কাঁটা দিয়ে যাচ্ছে।
অন্ধকারে হয়ে এসেছে।
রুমে এসে অন্তরার আনা খাবারে নজর যায়।

কাছে গিয়ে দেখে নষ্ট হয়েছে কিনা হয় নাই কিন্তু এখন না খেলে নষ্ট হয়ে যাবে।তাই খেতে বসে।
কষ্টের জন্য খাবার নষ্ট করা উচিত না। তাই খেয়ে নেয়।
একজন সেটা আড়াল থেকে দেখে ।
সেও না‌ খেয়ে ছিল এবার তার মুখে হাসি ফুটে উঠে সে নিজে ও খেতে যায়।

অচেনা শহর পর্ব ২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.