অচেনা শহর - গল্প বাজার

অচেনা শহর পর্ব ২৬ || বৃষ্টি হয়ে নামবো || Romantic Golpo

অচেনা শহর

অচেনা শহর পর্ব ২৬
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি

ব্রেকফাস্ট টাইমে আদ্রর জ্যাকেট নিয়ে নিলাম সাথে তখন দেওয়া হয় নাই এখন না হয় দিয়ে দেব। আসার
সময় দিতে পারি নাই।কিভাবে বা দিতাম আদ্র তো একা থাকেই না সব সময় ওর সাথে অর ফ্রেন্ড থাকে
ভেবেছি এক পেলেই গিয়ে দিয়ে আসব।
ওরনা আড়ালে লুকিয়ে খাবার টেবিলে বসে আছি আবার কে দেখে ফেলবে। সেই ভয়ে?
আদ্র জ্যাকেট আমার কাছে দেখলে অবশ্যই সবাই সন্দেহ করবে আবার নানা প্রশ্ন করবে। তার থেকে এটা
লুকানো থাকাই ভালো।

খাওয়া শেষ করে রেস্টুরেন্ট থেক বেরিয়ে আদ্রকে একা পেয়ে গেলাম। আদ্রর বন্ধুরা এক পাশে আর ও কিছুটা
দূরে দাঁড়িয়ে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। হয়তো ফ্যামিলির কারো সাথে।
আমি গুটিসুটি মেরে ভাবতে লাগলাম আমি এই দিক দিয়ে আদ্রর কাছে গেলে কি কেউ বুঝে ফেলবে না তো
আমি আদ্রর দিকে যাচ্ছি। চিন্তা ভাবনা এক পাশে ফেলে আদ্রর কাছে যেতে লাগলাম। জ্যাকেটটা আদ্রকে
দিতে পারলে নিশ্চিন্ত।
আমি ঠিক আদ্রর পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম এদিক ওদিক তাকাতে তাকাতে।
আদ্র কথা বলা শেষ করে পেছন ফিরে স্নেহাকে দেখে অবাক হল ভ্রু কুঁচকে ওকে জিজ্ঞেস করল….

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

” তুমি এখানে কি করছ?”
স্নেহা কিছু না বলে ওর ওরনার আড়াল থেকে জ্যাকেট টা বের করে আদ্রর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল….
“এই যে আপনার জ্যাকেটটা আমার কাছে ছিল। তখন দিতে মনে ছিল না নিন আপনার জ্যাকেট।”
আদ্রর জ্যাকেট টা ধরতেই স্নেহা দ্রুতপায়ে সেখান থেকে চলে গেল।
স্নেহা সোজা অন্তরা কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
“কিরে কোথায় গেছিলি?”
স্নেহা বলার আগে অন্তত আবার বলে,
“তা আদ্র ভাইয়ের জ্যাকেটটা কি করলি? ”

আদ্রর দিকে তাকিয়ে অন্তরা স্নেহার দিকে ভাল করে তাকিয়ে বলে,
“এই জ্যাকেট আবার কখন ফিরিয়ে দিয়ে এলি। আমাকে না বলেই আমাকে একটু নিয়ে যেতি‌।”
“ওই এখনিতো দিয়ে এলাম।”
“বাব্বাহ একাই গেছিলি।”
“দেখ ওরকম কিছু না আমি জাস্ট উনাকে গিয়ে ওনার জ্যাকেটটা ফিরিয়ে দিয়ে চলে এসেছি। ব্যাস এটুকুই।”
“আরো কিছু তো হতে পারে আমি কিভাবে জানবো তুই কি আমাকে নিয়ে গেছিলি।”
“তুই কি বলতে চাস?”
“কিছু না‌। শোন, চল একটু সাজুগুজু করে আসি এখন ঘুরতে বের হবে।”
আমি চুলটা বেঁধে ঠিকঠাক হলাম।অন্তর সাজতে লাগল।
“কিরে এভাবে বসে আছিস কেন?”
“তো কি করব তাড়াতাড়ি কর।”

.

“আরে আমি সাজছি দেখতে পারছিস না তুই। তুই ওসাজ এভাবে বসে না থেকে আর এভাবে যাওয়ার প্ল্যান
করছিস নাকি।”
“এতে আবার প্ল্যান করার কি আছে আমি এভাবে যাব। আমি সাজি না তুই সেটা ভালো করে জানিস।”
“আল্লাহ, সবসময় না সাজিস এখন তো একটু সাজুগুজু কর।এখানে আমরা বেড়াতে এসেছি সবাই কত
সাজবে দেখিস তুই একাই এভাবে গেলে কেমন দেখা যাবে।তোর নিজের ই ভালো লাগবে না দেখিস।”
“আমি এভাবেই ঠিক আছি রে।’

অন্তরার কিছু বললো না নিজের মত সাজুগুজু করতে লাগলো। তারপর দুজনে রুম থেকে বেরিয়ে দেখা পেল
হৃদয়ের। ঠোঁটের কোনে হাসি ঝুলিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে হৃদয়। আমি একবার অন্তরার দিকে
তাকালাম ও লজ্জা পাচ্ছে। ওদের রিলেশন এ যাবার পর মনে হয় যতবার আমি একসাথে দেখেছি ততোবারই
অন্তরা লজ্জা পাচ্ছে কিন্তু আগে এইটা ছিলনা। অন্তরা সব সময় রাগী ভাবে তাকিয়ে থাকতো।
হৃদয় হাসিমুখে আমাদের সামনে এসে দাড়িয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল,,
“কেমন আছো স্নেহা?”

“আলহামদুলিল্লাহ ভালো ভাই আপনি কেমন আছেন?”
“এইতো তোমার বান্ধবী যেরকম রাখছে ওই রকমই আছি। চলো তাহলে যাওয়া যাক।”
কথাটা শুনে আমি একা একা হাটতে লাগলাম আগে আগে। আর এদিকে অন্তরা আর হৃদয় কথা বলতে বলতে
আমার কিছুটা পেছনে আসতে লাগলো।
রিসোর্ট এর বাইরে এসে সবাই জিপে উঠে বসে হেলিপ্যাড যাওয়ার জন্য রওনা হলাম।হেলিপ্যাড থেকে আমরা
রওনা হলাম কংলাক পাড়ার উদ্দেশ্যে।

.

কিন্তু সম্পূর্ণ রাস্তা জিপে করে যাওয়া গেলোনা কারণ পাহাড় বেয়ে উঠতে হবে।
সুরু চিকন উঁচু নিচু রাস্তা বেয়ে সবাই হেঁটে যেতে লাগলাম। আশেপাশে শুধু সবুজ গাছের সমাহার। কংলাক
পাড়া পৌঁছাতে আমাদের এক ঘন্টা লাগল।
এখানে আসতে আসতে দুপুর হয়ে গেছে। লাঞ্চ এইখানের করা হলো।
এখানকারই জনপ্রিয় খাবার বাম্বু চিকেন।

সবাই নিজেদের মত ছবি তোলায় ব্যস্ত। আর আমি চারপাশ দেখতে ব্যস্ত। এখানে এসে আমার লাভ বয়ে ক্ষতি
হয়নি।অনেক জিনিস দেখতে পাচ্ছি নিজের গ্রাম আর ঢাকায় এসে ভার্সিটি অবদি আমি সীমাবদ্ধ ছিলাম। সত্যি এখানে নিজেকে মুক্ত পাখির মতো লাগছে। বড় একটা শ্বাস ফেলে ব্যস্থ হয়ে পরলাম সব কিছু দেখতে।
আর কোথাও যাওয়া হলো না কালকে নাকি একটা ঝর্ণা আছে ঐখানে যাবে আর কি যেন একটা নাম শুনেছিলামএখন ঠিক মনে নাই আমার আগামীকাল সন্ধ্যায় আবার ব্যাক করতে হবে ঢাকার উদ্দেশ্যে।
সন্ধ্যার দিকে সবাই রিসোর্টে ফিরে এলাম সবাই ক্লান্ত।যে যার রুমে চলে যাচ্ছে আমিও ক্লান্ত অন্তরা হৃদয়ের
সাথে আছে তাই ওকে না ডেকে আমি নিজেই রুমের দিকে যেতে লাগলাম।

কিছুটা এগিয়ে আমাদের রুমের সামনে আমার চোখ পড়ল আদ্র দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।আমি ভ্রু
কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে আছি রুমে না ঢুকে সে ওই রুমে কি করছে এইটা আমার ভাবনা। হঠাৎ আদ্র
রুমের ভিতরে ঢুকে পরল। আমি হাঁ করে তাকিয়ে আছি এটা কি হলো তাহলে কি এই রুমে আদ্র থাকে।
চিন্তা ভাবনা করতে করতে রুমে এলাম আমার আবার এই রুমে এসে বারান্দায় না আসলে ভালো লাগে না। তারেক সোজা বারান্দায় চলে এলাম। হঠাৎ আদ্র ওই রুমে ঢুকেছে মনে পড়ল সাথে সাথে পাশের বারান্দায়
তাকিয়ে দেখলাম আদ্র সিগারেট টানছে।
আমি বিস্ময় চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।

.

মনে হল বড় একটা জট খুলে গেল।কালকে আমার বারবার মনে হচ্ছিল কে যেন আমাকে দেখছে তীক্ষ্ণ
নজরে। আর আমার পাশের রুমে যে আদ্র আছে সেটা তো আমি জানতামই না। তাহলে কি আদ্রর ই
আমার উপর নজর রাখতো।
হ্যা আদ্র হবে ওই তো সিগারেট টানছে। এখন আমাকে খেয়াল করে নাই মনে হয়।
কিন্তু আমাকে কেন নজর রাখে কি উদ্দেশ্য তার।প্রথমে ঝগরা করা তারপর ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করা আবার
এখানে আসার সিটটা ও আমার তার সাথেই পড়ল। পাশাপাশি রুমে থাকা। আবার এখন মনে হচ্ছে আমার
ওপর নজর রাখছে কি মুসিবত। এর উদ্দেশ্য কি জানতেই হবে সিওর কোন খারাপ মতলব আছে।

আজকে এই মুহূর্তে জিজ্ঞেস করবো এর কী মতলব আমার পিছনে পড়েছে কেন?আজ এমনভাবে চেপে
ধরবো সত্যিটা বলতে বাধ্য হবে। ক্লান্ত নেস মনে হয় আদ্রর চিন্তায় গায়েব হয়ে গেছে। স্নেহা কটমট করে তাকিয়ে আছে আদ্রর দিকে। আদ্র আরেক দিকে ফিরে সিগারেট টানছে আর ফোন টিপছি আরেক হাত দিয়ে।
আদ্র শেষ টান দিতে দিতে পেছন ফিরে দেখে স্নেহা ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে আছে।

আচমকা স্নেহাকে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে যায় আদ্রর। কারন ও স্নেহাকে জানতে দিতে চাইছিল না যে ওর
পাশের রুমে থাকে। স্নেহা ওকে দেখে ফেলল।এমনভাবে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই জ্বালিয়ে
পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলবে।
“কি ব্যাপার তুমি এভাবে তাকিয়ে আছ কেন আমার দিকে?”
সাথে সাথে স্নেহা মৃদু চিৎকার করে বলে, “আপনার কি মতলব সত্যি করে বলুন।
কোন মিথ্যা কথা বলবেন না আপনার খারাপ উদ্দেশ্য টা এই মুহূর্তে আমার সামনে স্বীকার করুন।”
আদ্র হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে।

.

স্নেহা প্রচুর রেগে কথা বলছে তা ওর চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ এত রেগে যাওয়ার কারন কি?
আচ্ছা ওকি দেখে ফেলেছি আমি লুকিয়ে ওর ছবি তুলেছি।সিওর দেখে ফেলেছে মনে হয় সবার সামনে কিছু
বলতে পারে নাই তাই এখানে এসে ঝারছে।কিন্তু তখন তো দেখলাম দেখে নাই আমি তো খুব লুকিয়ে
সাবধানেই ছবি তুলেছে কয়েকটা।এভাবে লুকিয়ে ছবি তোলার কোন ইচ্ছা আমার ছিল না। কিন্তু ওর ওই
উজ্জ্বল হাসিমাখা মুখটার দিকে তাকিয়ে ছবি না তুলে তো আমি থাকতে পারলাম না।এখন কি বলব স্নেহা
তো আমাকে জিজ্ঞেস করবে ওর ছবি কেন তুললাম?

চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে যেমন লাগে আদ্রর এখন তেমন লাগছে?
আদ্র ছোট ছোট করে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে।স্নেহা সাথে সাথে থমথম গলায় আবার বলে উঠলো,,
“কি হল কথা বলছেন না কেন আমি জানি আপনার উদ্দেশ্য খারাপ না হলে কেন আমার পেছনে পড়বেন।”
স্নেহার অগ্রাহ্য করে আদ্র না জানার ভান করে জিজ্ঞেস করল,,

“হোয়াট আমার আবার কিসের মতলব থাকবে। আর আমি তোমার পিছনে পড়ে ছি পাগল হয়েছ তোমার
পেছনে পড়তে যাব কেন? ওয়েট ওয়েট তুমি আবার ভাবছো না তো আমি তোমাকে লাইক টাইক করি।তাহলে
সম্পূর্ণ ভুল আমি তোমাকে ওইসব করিনা ওকে তোমার কোনো যোগ্যতাই নাই আমার পাশে দাঁড়ানো দেখতো
আমি কোথায় আর তুমি কোথায়।কোথায় আমি হ্যান্ডসাম স্মার্ট বয় সবাই আমার জন্য পাগল আর আমি কিনা
তোমাকে লাইক করবো হাউ ফানি।”

.

“দেখুন একদম কথা ঘুরানোর চেষ্টা করবেন না। আমি একবারও বলি নাই যে আপনি আমাকে লাইক
করেন।আমি আপনাকে বলছি আপনার উদ্দেশ্য কি আপনি আমার পেছনে পড়েছেন কেন আর এভাবে
ডিস্টার্ব‌ই করছেন কেন আর আমার উপর নজর রাখছেন কেন? এ সব প্রশ্নের উত্তর চাই আমি।”
“দেখ না আমি তোমার পেছনে পড়েছি আর না তোমার উপর নজর রাখছি ফালতু করছেন করবে না।”
“দেখুন আমি শিওর আপনি আমার উপর নজর রাখছেন কি উদ্দেশ্য বলেন বলছি‌।”
“দেখো বারবার এক কথা বলবে না। এক্সিডেন্টলি তোমার পাশের রুম টা আমার হয়ে গেছে।”
“আপনি আমাকে ফোন দিবেন না।”

“মন চাইলে দেবো আমার আবার যেটা মন চাই সেটা আমি না করে থাকতে পারি না তাই তোমার কথাটা
ততক্ষণ অব্দি থাকবে যতক্ষণ আমার মন তোমাকে ফোন দিতে চাইবে না।”
“আপনি কি চান বলেন তো!”
“তোমার কি আছে আর আমি কি যাইবো। আচ্ছা তুমি যেহেতু এত আমাকে কিছু দিতে চাও সময় সুযোগ বুঝে
চেয়ে নেব।”
“আপনি আসলে একটা অসভ্য লোক। আমি কখন বললাম আমি আপনাকে কিছু দেবো।”
“তুমি নাই মাত্র বললা আমি কী চাই জানতে চাও।”
“পাগল হয়ে যাব আমি আপনার সাথে কথা বলে। যত সব ফালতু কথাবার্তা বলে আমার মাথা নষ্ট করে
ফেলেন।”

.

“আচ্ছা যাও রুমে গিয়ে রেস্ট নাও পাগল হওয়ার দরকার নেই আমি সারাজীবন পাগল টানতে পারবো না।”
“কি বললেন আপনি পাগল টা টানতে পারবেন না মানে।আমি আপনাকে আবার পাগল টানতে কখন বললাম।”
“ওসব তুমি বুঝবে না।”
“আপনার ফালতু মার্কা কথা আমি বুঝতে ও চাই না।”
“বুঝতে তো তোমাকে হবেই আজ না হোক কাল। আর একটা কথা তুমি রাগলে তোমার নাক আর গাল পুরো
লাল হয়ে যায় দেখতে,,

বলতে গিয়েও থেমে গেল আদ্র তারপর হাতের সিগারেট বারান্দায় দিয়ে ফেলে ভেতরে চলে গেল।
স্নেহা বিস্ময় চোখে আদ্রর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
“এই স্নেহা তুই এখানে কি করছিস। তুই না আমার আগে চলে এলি রুমে এখনো ফ্রেস হোস নাই।”
অন্তরার কথায় স্নেহার ধ্যান ভাঙে ও ফ্রেশ হতে চলে যায়।
আদ্র রুমে এসে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিজেকে এতো খন চোর মনে হচ্ছিল। কিন্তু আমি যেটা নিয়ে
ভয় করছিলাম সেটা হয় না। স্নেহা অন্য কারণ এভাবে বলেছে। ছবি ব্যাপারটা না বলে ভালোই হয়েছে। এটা
মনে হয় স্নেহা জানেই না।
খুব বাঁচা বেঁচে গেছি।

নয়টার পরে ডিনার শেষে সবাই রিসোর্টের বাগানে এলাম। বাগানে হালকা শীতে সবাই গল্পের আসর বসিয়েছে।
শীত হওয়ায় আগুন জ্বালিয়েছে।আর আগুনের চারপাশে সবাই গোল হয়ে বসেছে।প্রথমে ঠান্ডা লাগলো
আগুনের তাপে এখন অতটা শীত লাগছে না বরংচ সবার মাঝে ভালো লাগছে। সবাই গল্পের আসর বসিয়েছে।
হাতে কফি গরম গরম কফি আছে আর গল্পে মশগুল।
কফি খাওয়া শেষে গানের আসর বসলো। আমায় ঠিক সামনে আদ্র বসেছে।

.

কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।
অসস্থি হচ্ছে তবুও কিছু বলতে পারছি না কিন্তু আদ্রর এভাবে তাকিয়ে থাকার কারণ টা বুঝতে পারছিনা‌।
গান শুরু হলো দ্বিতীয় বর্ষের একটা ছেলে নাম তাহসান সে গাইল ফাস্ট গলাটা মুটামুটি ভালো সবাই মনোযোগ
দিয়ে শুনলাম।তারপর রিতা আমাদের ক্লাসের। এরপর একে একেগান চলতেই লাগল।
অনেক জন গাইল আমাকেও বলা হয়েছিল আমি সাথে সাথেই না করে দেয়। কারণ আমি গান পারিনা আর
কখনো গাই ও নি।

এবার আদ্রর গাইবে।বাবা কি স্টাইল করে বসলো তারপর গলা ঝেড়ে গাইতে লাগলো,
কিন্তু অদ্ভুত ভাবে এখনো আমার দিকে ই তাকিয়ে আছে। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি‌।আজকে এর
উওর ও আমি চাইবো আমার দিকে এমন বেহায়ার মত তাকিয়ে আছে কেন?
স্টুপিট একটা।মুখ ভেংচি কেটে অন্যদিকে তাকালাম এর গান শুনতে ই চাইনা।

🌹🌹🌹তোর মন পারায় থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল ওই উদাশ পারার বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনা
অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার
অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার তাই বলি আয়রে ছুটে আয়
তোর মন পারায় থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল ওই উদাশ পারার বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনা
তোর হৃদয় আঙিনায় থাকতে আমি চায়

অচেনা শহর পর্ব ২৫

তুই ছাড়া বাঁচার নেই রে উপায়, কিভাবে উড়ে তোকে ছেড়ে , একাকি আমি জীবন কাটায়,
অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার,অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার
অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার তাই বলি আয়রে ছুটে আয়
তোর মন পারায় থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল ওই উদাশ পারার বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনা
শুধু তোকে ঘিরেই শত সপ্নের ভীড়ে এখন আমার বসবাস,
তুই এলে জীবনে, পাবো বাঁচার মানে, পাবো সুখের‌ই আভাস,
অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার

অভিমানী মন আমার চায় তোকে বারবার তাই বলি আয়রে ছুটে আয়
তোর মন পারায় থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল ওই উদাশ পারার বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনা
তোর মন পারায় থাকতে দে আমায়
আমি চুপটি করে দেখবো আর ডাকবো ইশারায়
তুই চাইলে বল আমার সঙ্গে চল ওই উদাশ পারার বৃষ্টিতে আজ ভিজবো দুজনা।🌹🌹🌹

স্নেহা উঠতে গিয়ে ও উঠে নি আদ্রর কন্ঠ শুনে এতো সুন্দর করে গাইছে যে স্নেহা উঠতে পারে নাই‌। মুগ্ধ হয়ে
আদ্র গান শুনেছে। অপুর্ব গায় আদ্র। অদ্ভুত ভালো লাগা ছেয়ে গেছে কিন্তু আদ্র ও অবাক করেছে স্নেহাকে
তা হলো হাঁ করে এক ধ্যানে তাকিয়ে ছিলো গানটা গাওয়ার সময়।
গান শেষ হতেই চারপাশ থেকে হাত তালি ও প্রশংসায় শুরু হলো সবার কথা বলা থেকে জানতে পারলাম
আদ্রর আগে থেকে গান গায়।সহজে নাকি কেউ ওনাকে গান গাওয়াতে পারে না অনেক দিন পর নাকি আজ
এক কথায় গাইলো।

অচেনা শহর পর্ব ২৭

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.