অচেনা শহর - গল্প বাজার

অচেনা শহর পর্ব ২৮ || emotional sad story

অচেনা শহর

অচেনা শহর পর্ব ২৮
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি

শর্ত দেওয়ার পর থেকে আদ্রর কল দেওয়া বেরেছে।আগে শুধু রাতে কল করতো আর এখন দিনের ও করে।
দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতে হয়। কারণ আমি শিকার করেছিলাম রিসিভ করবো।
রাগে দুঃখে বারান্দায় বসে আছি। এখন রাত এগারোটা বাজে।
এখন পর্যন্ত কল আসে নাই আদ্রর তাই জেগে ফোন হাতে নিয়ে কলের অপেক্ষা করছি। ফোন রিসিভ না করে
ঘুমিয়ে পড়লে আবার ভার্সিটিতে গেলে চেপে ধরবে তাই চরম বিরক্ত নিয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে আছি।
এতো লেট করছে কেন আজ কেন আজ কল করতে। ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে আর ইনি আমাকে জ্বালিয়ে
খাচ্ছে।

জিম মেরে বসে অপেক্ষা করছি কলের কিন্তু আসছে না। বারান্দায় চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে
আছি।ওই ভাবেই আমার চোখ লেগে যায়।
ফোনের রিংটোন বেজে উঠতেই আমার ঘুম ছুটে যায় আর আমার মাথা কাত হয়ে ছিলো ঘারৈর ব্যাথা অনুভব
করলাম।ওইভাবে ঘারে হাত‌ দিয়ে মাথা সোজা করলাম।
ফোন বেজে বেজে কেটে গেছে। ফোন টিপ দিয়ে দেখলাম সারে এগারোটা বাজে।
আবার ফোন বাজলো সাথে সাথে রিসিভ করলাম তীব্র রাগ নিয়ে।এতো রাত করে ফোন দিয়ে উনি আমাকে
ডিস্টাব করছেন কতো খারাপ একটা হতে পারে ওনাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“এইটা কোন ফোন দেওয়ার টাইম হলো ঘড়ি দেখেছেন আপনি প্রায় বারোটা বাজে এতো রাতে কেন করলেন
বলুন।আপনি জানতেন আমি বসে লিখবো তাই ইচ্ছে করে এমন করে কষ্ট দিচ্ছেন তাই কি লাভ আমাকে কষ্ট
দিয়ে বলুন তো। আমি কি ক্ষতি করেছি আপনার এমন করছেন কেন? ফোন নি ধরলে হুমকি ধামকী দিবেন
আবার নিজেও লেট করে কল করবেন কেন? আমার কী ঘুম পায় না?এতো রাত অবধি….
“স্টপপপ।”

আদ্রর চিৎকার শুনে ভয়ে কেঁপে উঠলো স্নেহা সাথে কথা ও অফ হয়ে গেল। স্নেহার বাঁচাল মার্কা কথা শুনে
আদ্রর ফুঁসে উঠেছে।একে এতে কয়েক ঘন্টার মধ্যেই অনেক কিছু করতে হয়েছে তার উপর আবার এসব কথা
তাই রেগে স্নেহাকে থামায়।
বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে নিজের রাগ কন্ট্রোল করে বলে,
“পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিচে আসো।
আমি অপেক্ষা করছি।”

স্নেহা আদ্রর রাগী কন্ঠ শুনে ভয় পেয়ে চুপ করে আছে। কিছু বলতে পারছে না তার উপর নিচে যাওয়া শুনে
চমকে উঠে, তাও কথা বলছে না।
“কী হলো কথা কানে যায় না।”
“নিচে আসবো মানে কি ? এতো রাতে আমি নিচে কেন আসবো!”
“আমি বলেছি তাই আসবা।”
“আপনি বললেই আমাকে যেতে হবে। আমি যাব না দেখুন ফোন রিসিভ করবো বলেছিলাম কিন্তু আপনার সব
কথা শুনবো বলি নাই‌।”
“জানি। তুমি আসবে নাকি সেটা বলো‌।”
“আসবো না।”
“‘রিয়েলি।”
“হ্যা।”

.

“ওকে তাহলে আমি উপরে আসি।”
“হোয়াট আপনি উপরে আসবেন মানে?”
“তোমার রুমে আসবো।”
“আপনি কি পাগল হলেন নাকি কী যাতা বলছেন। মাথা ঠিক আছে আপনার।”

“সেই তুমি যাই ভাব না কেন ?আমি ডোন্ট কেয়ার!তুমি নিচে না আসলে আমি উপরে চলে আসবো। এখন
তুমি তুমি ডিসাইড করো কি করবে‌। পাঁচ মিনিটের মধ্যে নিচে না আসলে আমি আসতে বাধ্য হবো। বাই।”
নিজের কথা শেষ করে ফোন কেটে দিল আদ্র।হা করে তাকিয়ে আছি ফোনের দিকে।আদ্র কি সত্যি আসবে
নাকি আমাকে ভয় দেখাচ্ছে।

চিন্তা ভাবনা করতে লাগলাম।সব সময় এভাবে ধমক দিয়ে রাজি করার।সেদিন ভূত ভয় দেখিয়ে ফোন রিসিভ
করালো আজ আবার আরেক কথা না আজ কিছুতেই নিচে যাবনা। তাহলছ নেক্সট ও আর ও অনেক কিছু
বলবে। আর আদ্র এগিয়ে আসতে পারবে না আমি সিউর‌। মুখে বলা আর করা তো এক না। মুখে অনেক বড়
বড় কথা বলা যায় কিন্তু করা সহজ না।
আজকে ভয় পাবো না একদম।

নিজেকে শান্ত করে উঠে দাঁড়ালাম তারপর বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম সাথে সাথে কল এলো। আদ্রর কল
রিসিভ করে কড়ি কিছু কথা শুনাতে হবে তাই রিসিভ করলাম।
“দেখুন আমি নিচে নামবো না। আর আপনার হুমকি ও শুনবো না। সব সময় ভয় দেখাবেন আমাকে ভয়
দেখিয়ে এখন আমাকে নিচে নামাতে পারবেন না।আপনি উপরে আসতে পারবেন না। শুধু শুধু ভয় দেখাচ্ছেন
আমাকে।আজকে আমি আপনাকে ভয় পাব না।”
এক দুম এ কথা শেষ করলাম আমি।
“ওকে আসতে হবে না তোমাকে।”

.

সঙ্গে সঙ্গে ফোন কেটে দিল আদ্র। স্নেহা হতদম্ব হয়ে যায় আদ্রর কথা শুনে এতো সহজে মেনে নিলো। একা
স্নেহা আসা করে নি।
সব ভাবনা বাদ দিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।
আজকে আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু করতে পারবে না এজন্য হয়তো মেনে নিয়েছে।
ওফ কি যে শান্তি লাগছে বলে বুঝাতে পারব না।
আজকে আদ্রর কথায় ভয় নি পেয়ে সাহস দেখিয়ে ছিল ভেবে।
হঠাৎ বারান্দায় লাফিয়ে কারো নামার শব্দ হতেই স্নেহা চমকে উঠে বসে।
বিছানায় থেকে দেখার চেষ্টা করছে বারান্দায় কে আছে এমন শব্দ হলো কেন?

বারান্দায় অন্ধকার।রুম ও হালকা আলো তে বুঝা যাচ্ছে না। স্নেহা হঠাৎ দেখে কারো ছায়া বারান্দায় সে রুমে
আসছে এটা দেখেই স্নেহা একটা শুকনো ঢোক গিলে।
আল্লাহ ভূত নয়তো। হাত পা কাঁপছে স্নেহার। গলা দিয়ে আওয়াজ ও বের হচ্ছে না। জোর একটা চিৎকার দিতে
যাব হঠাৎ কেউ কানে কাছে করি বলে উঠলো,
“কি ম্যাডাম ভয় পেলেন নাকি।”
কন্ঠ শুনে ই বুঝতে পারলাম এটা আদ্র। সত্যি রুমে চলে এলো। অন্ধকারে আবসা দেখি যাচ্ছে আদ্রর মুখ। আদ্র
একদম ওর কানের কাছে গিয়ে কথা বলছে।
ভয়ে স্নেহার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
অবশেষে উনি এসে পরলো কি ডেন্জারাস ব্যাপার?

পাঁচিল টপকে আসলো ভয়ার্ত চোখে অন্ধকারে আবসা আদ্রর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি‌।
সমস্ত কথা আমার গলায় আটকে আছে।
কি শান্তি মতোই না‌ ঘুমাতে গেছিলাম সব শান্তি কেড়ে নিয়ে এখানে এসে হাজির।
অনেক কষ্টে তোতলাতে তোতলাতে বললাম…
“আপনি এখানে কিভাবে এলেন?”
“এটা কোন কঠিন ব্যাপার না আর কঠিন হলেও আসতাম‌ই।আদ্রর যা ইচ্ছা তাই করে।”
“তাই সত্যি চলে আসলেন।”
“ইয়েস।কি যেন বলছিলে আমি আসতে পারবো না।এই দেখো আমি চলে এসেছি।”
“কিন্তু কেন আসছেন।”
“তুমি কি ভয় পাচ্ছ।”
“হুম।”

.

“লাইট জ্বালাও।”
স্নেহা সাথে সাথে উঠে লাইট জ্বালিয়ে দিলো।
আল্লাহ আল্লাহ করে পেছনে তাকালাম আদ্র যেন না থাকে সব যেন আমার মনের ভুল থাকে কিন্তু না
কিছু মনে ভুল না সব সত্য।আদ্র আমার খাটে বসে আছে মুখে বাঁকা হাসি।
লোকটা স্মৃতি চলে এসেছে।
কি সাংঘাতিক এমন হবে একটু ভাবিনী‌।
“কি এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?”
‘আপনি এখানে কেন এলেন।”
“তুমি যাও নি দেখে।”

“আমি কেন যাব? আপনি আসলে পাগল হয়ছেন। যান এখানে থেকে চলে যান।”
“চলো তাহলে।”
“আমি আবার কোথায় যাব।”
“সেটা গেলেই দেখতে পাবে চলো। বাই দ্যা ওয়ে তোমাকে কিন্তু ওরনা ছাড়া খুব হট লাগছে।”
কথা শুনে স্নেহা বড় বড় চোখ করে তাকালাম আদ্রর দিকে‌। তারপর নিজের দিকে দৌড়ে ওরনা গাঁয়ে জরিয়ে
রেগে তাকালাম ওনার দিকে।
“না আমি আপনার সাথে কোথাও যাব না আপনি একটা ফাজিল লোক এভাবে একটা মেয়ের রুমে ঢুকতে
লজ্জ্বা করলো না আপনার।”
আদ্র বিছানায় থেকে উঠে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল,
আর বলল….
“না লাগে না।”

“আপনি এদিকে আসছেন কেন।”
“যাবে নাকি।”
“নাকি কি করবেন আপনি।”
“তুমি যদি না যাও আমার সাথে এখন তোমার সাথে কি করবো কল্পনাও করতে পারবেনা।”
বলতে বলতে একদম স্নেহার কাছে এসে দাঁড়ালো।
“সরুন।”
“আগে বলো যাবে।”
“আচ্ছা যাবো।”
আদ্র যাবো শুনে স্নেহার গাল টেনে দিয়ে ঠোঁট কামড়ে হেঁসে সরে দাঁড়াল।
আদ্রর ছোঁয়া পেয়ে স্নেহা স্তব্ধ হয়ে আছে।
“এখন ও দাঁড়িয়ে আছো কেন আসো।”
আদ্রর সাথে যেতে লাগলাম।

.

বাসায় নিচে দাঁড়িয়ে আছি।
আমি আর আদ্র। আমি শুধু ওর দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছি। মন চাইছে খুন করে ফেলতে।
আদ্র আমার হাত ধরে গেটের কাছে এলো তারপর বের হতে লাগলো সাবধানে আমি ভাবছি দারোয়ান ক‌ই
হঠাৎ ভালো করে তাকিয়ে দেখি দারোয়ান চেয়ার হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
গেটের বাইরে এসে আমার হাত ছেড়ে দিলো। সামনে বাইকে থামানো আছে আদ্রর বসে আমাকে ও বসতো
বললো কি আর করার বসলাম বললে ও শুনবে না তাই কথা বাড়ালাম না।
“বাবা কিন্তু বাসায় একা আছে।”
“তারাতাড়ি ফিরবো একঘন্টার ব্যাপার।”
“কোথায় যাচ্ছি।”

কিছু বলল না। আমি প্রশ্ন করে উওরের অপেক্ষা করলাম না বলবে না বুঝলাম। মনে মনে হাজার খানা বাকি
দিলাম আদ্রকে।সামনে কিছু বললাম না।
বাইকের স্পিড অনেক মনে হচ্ছে পরে যাবো না চাইতে ও আদ্রর কাঁধে হাত রাখতে হলো।
হঠাৎ বাইকের আয়নায় চোখ পরলো আদ্র আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আদ্রকে ধরে যাচ্ছি এতেই কেমন
অসস্থি লাগছে আবার আদ্রর তাকানো দেখে সেটা বেড়ে গেল।
মাথা ঘুরিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলাম। কোথায় যাচ্ছি কিছু জানি না জিজ্ঞেস করলাম বললো ও না। রাগে
আমার গা জ্বলছে মন। শেষমেষ ওর সাথে আসতেই হলো। আদ্রকে নিজের রুমে দেখে অবাকের চরম সীমায়
পৌঁছে গেছিলাম।

আমার সমস্ত আশা বেস্তে দিয়ে ওনি রুমে চলে গেল। কতো সাহস এনার অত্যাধিক সাহস আগে থেকেই
জানতাম কিন্তু তাই মে রুমে চলে যাবে ভাবিনি।
হঠাৎ বাইক থামাতে আমার সমস্ত ভাবনার অবশান হলো আর আদ্রর দিকে তীক্ষ্ণ নজরে তাকালাম।
“কি নামছো না কেন?”
“এখানে নামবো কেন?”
“নামো।”
অগ্যতা নামতে হলো। হঠাৎ সামনে একটা ছোট দোকান চোখে পরলো লাইট জ্বলছে আমি ভ্রু কুঁচকে
সেদিকে তাকিয়ে আছি।
আদ্র বাইক পার্ক করে আমার হাত ধরে সেই ছোট্ট দোকান টায় নিয়ে গেল আমাকে।
দোকান একটা বয়ষ্ক লোক বসে আছে‌।

.

এটা চায়ের দোকান বুঝলাম উনি আমাদের দেখেই হেসে আদ্রকে কেমন আছে জিজ্ঞেস করলো ।
আদ্র উওর দিয়ে নিজে ও জিজ্ঞেস করলো মনে হচ্ছে এরা পূর্ব পরিচিত। আমার সেসবে থেকে ভাবছি এখানে
কেন আনলো।
“সাথে ক্যাডা?”
“আমার ফ্রেন্ড চাচা।”
আদ্রর মুখে নিজেকে ফ্রেন্ড পরিচয় করাতে চমকে তাকালাম ওনার দিকে এতে ওনার কোন ভাবান্তর হলো না।
বিষ্ময় সাথে হতদম্ব হয়ে তাকিয়ে আছি আদ্রর দিকে।
আদ্র তাকে দুকাপ চা দিতে বলল…
তারপর আমার হাত টেনে নিয়ে পাশের বেঞ্চে বসে পরলো। এখন ও আমি অবাক চাহনীতে তাকিয়ে আছি
আদ্রর দিকে।

“কি হলো এভাবে ডাইনীর মতো তাকিয়ে আছো কেন?”
সাথে সাথে অবাক চাহনী রাগে পরিনত হলো, দাঁতে দাঁত চেপে বললাম…
“কি বললেন আপনি আমি ডাইনী?”
“যে ভাবে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে ছিলে আমার তো তাই মনে হয়েছিল।”
“তো তাকাবোনা আপনি ওনাকে কি বললেন আমি আপনার ফ্রেন্ড এতো বড় মিথ্যা কথা বললেন কেন?”
‘তো কি বলতাম তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড।”
“আমি সেটা কখন বললাম কিন্তু আমি তো আপনার ফ্রেন্ড না। তাহলে ফ্রেন্ড কেন বললেন।”
“আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই বলেছি।”

“আপনার এমন ইচ্ছে কেন হলো কী চান বলুন তো ক্লিয়ার করে।”
“তোমাকে।”
আনমনে কথাটি বলেই আদ্র চমকে উঠলো সাথে স্নেহা ও থমকে গেল।
“কি বললেন?”
“কিছু না।”
“কিন্তু আমি তো শুনলাম…
এর মাঝে চাচা চা নিয়ে এলো আর আমাকে আর আদ্রকে চা দিয়ে গেল। আদ্রকে আর কি জিজ্ঞেস করতে
পারলাম না।
ঠান্ডার মধ্যে এই গরম চা পেয়ে সব ভুলে স্নেহা চা তে চুমুক দিলো ।
আড়চোখে সেটা মুগ্ধ হয়ে দেখছে আদ্র। একটুর জন্য ধরা পরে যাচ্ছিলাম কি বলতে কি বলে ফেলি।
কন্ট্রোল আদ্র কন্ট্রোল।

.

হঠাৎ স্নেহি থাকাতেই ওদের চোখাচোখি হয়ে যায়।
স্নেহা আদ্রকে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকায়।
অবাক হয়ে আদ্রর তাকিয়ে থাকার কারণ জানতে চাইছে।
আদ্র সাথে সাথে ফোন এ মনোযোগ দেয়।
স্নেহা কিছু ক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের খাওয়ায় মন দেয়।
আদ্রর উপর তীব্র রাগ হলেও ভাল লাগছে এই খানে এসে। শীতের মধ্যে গরম চা এমন পরিবেশ
সত্যি মন ভাল করার জন্য যথেষ্ট।
আদ্র আমার চরম শত্রু না হলে ওকে বড় একটা ধন্যবাদ দিতাম।

আচমকা ঘুম ভেঙে যায় রুনার।
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে বিছানায় কৌশিক নাই‌।
উঠে বসে বিছানায় উপর।
কৌশিক কোথায় গেল ভাবছে রুনা বাথরুমের গেল কি।
মেয়ে ঘুমিয়ে আছে তার দিকে একবার তাকিয়ে উঠে বাথরুমের সামনে যায় লাইট নাই‌। দরজা খুলে উঁকি দিয়ে
দেখে নাই।

তাহলো হঠাৎ বারান্দায় থেকে মৃদু আওয়াজ কানে ভেসে আসে সেই আওয়াজ শুনে রুনা সেদিকে যায়।
কৌশিক ফোন কানে ধরে কারো সাথে রেগে কথা বলছে। মুখে রাগ স্পস্ট ফুটে উঠেছে।
এমন ভাবে কার সাথে কথা বলছে কে জানে?
ফসা মুখ লাল হয়ে আছে।
কিন্তু একটা ব্যাপার কৌশিক মুখ সাফিয়ে কথা বলছে মানে লুকিয়ে।

ফোনে কথা শেষ করে একটা বকা দিয়ে পেছনে ফিরতে যাবে তার আগেই আমি তারাতাড়ি রুমে চলে এলাম।আর বিছানায় শুয়ে পরলাম। মনে ভেতর সন্দেহের দানা বেঁধে গেল। কার সাথে এভাবে কথা বলছিলো
রেগে আবার লুকিয়ে।
কিসের এতো লুকোচুরি।
কৌশিক কে রুমে এসে শুয়ে পরতে দেখলাম আমি চোখ হালকা খুলে রেখেছিলাম।

অচেনা শহর পর্ব ২৭

সকালে বাবুর কান্নায় ঘুম ভেঙে গেল।
উঠে রায়াকে করে নেওয়ার আগেই কৌশিক ওকে কোলে নিলো।
কতো দিন পর মেয়েকে কোলে নিলো কৌশিক রায়ার কান্না থামাতে চেষ্টা করেছে পারছেনা।
তাই বাধ্য হয়ে আমি নিজে কোলে নিলাম সাথে সাথে থেমে গেল।
কৌশিক তীক্ষ্ণ চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আয়নার গিয়ে রেডি হতে লাগল।

রায়াকে কৌশিক একদম ই সময় দেয় না এজন্য এখন কৌশিকের কোলে ও কম যায়।
রানী ও উঠে গেছে ওর কাছে রায়াকে দিয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে রান্না ঘরে গেলাম।
তারাতাড়ি করে রুটি বেলতে লাগলাম।রুটি ভাজছি।
আধা ঘন্টায় রান্না শেষ করে রুমে এসে দেখলাম কৌশিক দেখি হয়ে সব ফাইল নিয়ে চলে যাচ্ছে।
“খাবে না।”
কৌশিক একবার আমার দিকে তাকিয়ে চলে গেল।

অচেনা শহর পর্ব ২৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.