অচেনা শহর পর্ব ২৯
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
কৌশিক নিজের ড্রেক্সে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
এমন সময় ম্যানেজার হাসিব এলো ওর কাছে। আর এসে একবার কৌশিক কে ভালো করে দেখে বলল..
“কৌশিক তোমাকে ম্যাডাম ডেকেছে।”
ম্যাডাম ডেকেছে শুনেই চমকে উঠে কৌশিক। ঘামতে থাকে এসি রুমে ও।
“কি হলো কৌশিক তুমি ঠিক আছো তো?”
নিজেকে স্বাভাবিক করে মাথা নেড়ে সায় জানায়।
হাসিব কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
কৌশিক পকেট থেকে রুমাল বের করে কপালের ঘাম মুছে উঠে দাঁড়ায়।
“মে আই কাম ইন?”
হাতের ইশারায় যেতে বলে।
কৌশিক ধীর পায়ে রুমে ঢুকে সামনে একটা অতি সুন্দরী মেয়ে বসে আছে। তার পরনে প্যান্ট ও শার্ট চুল জুটি
করা ঠোঁটে লাল টকটকে লিপস্টিক। এই অফিসটা তার বাবার ছয়মাস যাবত সে অফিসে বসেছে। আর তার পর
থেকেই কৌশিক কে জ্বালিয়ে খাচ্ছে।
মেয়েটার নাম ঐশী। বাবার মায়ের একমাত্র মেয়ে। যে প্রথম দেখায় কৌশিক কের প্রেমে পরেছে।
তারপর থেকে আঠার মত লেগে থাকে। কৌশিক কে বারবার নিজের মনে কথা বুঝাতে চায়। কিন্তু কৌশিকের
থেকে কোনো রেসপন্স পায় না। আর
তারপর একদিন প্রপোজ করে বসে।এমন করতে হবে ঐশী কখনো ভাবে নি। ও যথেষ্ট সুন্দরী স্মার্ট টাকা
আছে। কিন্তু কৌশিকের প্রেমে পাগল হয়ে মনের কথা জানিয়ে দেয়। সেদিন কৌশিক থেকে বড় আঘাত পায়
থাপ্পর সাথে কৌশিক বিবাহিত।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
বড় একটা ধাক্কা খায় কৌশিক বিবাহিত শুনে। কৌশিকের থেকে সরে আসতে চায়। এজন্য অফিসে আসা বন্ধ
করে দেয়। কিন্তু বিজনেসের ক্ষতি হবে ভেবে এক সপ্তাহ পর আবার অফিসে যাওয়ার শুরু করে।
কৌশিকের থেকে দূরে থাকতে থাকে কিন্তু পারেনা।আবার ওর প্রতি টান অনুভব করে।আর মনে জেদ চাপে
কৌশিক ওকে চল মেরেছিল সেটা ভেবে। আর একটা ব্যাপার ওকে আঘাত করে বিন্দুমাত্র অনুসোচনা দেখে
না কৌশিকের মাঝে সে দিব্যি নিজের হেসে খেলে আছে এসব দেখে ও গা জ্বলে ওঠে।
আমি কিনা কষ্ট ধুঁকে ধুঁকে মরছি আর এনি আনন্দ আছে তখন আবার কৌশিক কে পাওয়ার জেদ মাথায় চাপে।
আবার পেছনে লাগে কিন্তু কৌশিক ওর দিকে ফিরে ও তাকায় না এসব সহ্য করতে না পেরে কৌশিক কে
ট্রাপে ফেলে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করে। কিছু আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে যাতে বুঝা যায় কৌশিকের সাথে
ঐশীর গভীর সম্পর্ক আছে। কিন্তু কৌশিক সঙ্গানে কিছু করে নি একদিন কফির একটা পার্টিতে ও কলিগদের
সাথে ড্রিংক করে ফেলেছিল ঐশী বলছে সেদিনই নাকি আমি।
এসব বলে আর ছবি দেখিয়ে ঐশী কৌশিক কে ওকে বিয়ে করতে বলেছে নি হলে এই ছবি গুলো রুনাকে
দেখাবে আর ওকে জেলের ভাত খাওয়াবে বলেছে। এজন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে এর মাঝে তিনদিন চলে
ও গেছে।
কৌশিকের দিকে তাকিয়ে ঐশী শয়তানী হাসি দেয়। কৌশিক সেদিন রেগে তাকিয়ে থাকে।
“তা কি ড্রিসিশন নিলে। সময় তো ফুরিয়ে এলো।”
কৌশিক কিছু বলছে না।ওর এই মেয়েটাকে দেখলে খুন করতে ইচ্ছে হয়।
কৌশিক কিছু বলছে না দেখে ঐশী উঠে কৌশিকের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারপর ওকে জরিয়ে ধরে।
সাথে সাথে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় নিজের থেকে।
“আমার থেকে দূরে থাকুন।”
.
“উফ সুইটহার্ট এভাবে বলতে নেই। কয় দিন পর থেকে তো এভাবেই সারাদিন জরিয়ে থাকতে হবে।”
“প্রতি উওরে কিছু বলল না কৌশিক ওর কিছু বলার নেই। কিছু বললে ই ওই ছবি গুলো রুনার কাছে যাবে না
কিছু ভাবতে পারছি না।”
“চলো।”
বলেই এগুতে লাগলো ঐশী।
এবার কৌশিক বলে,,
“কোথায় যাবো।”
ঐশী পেছনে ঘুরে বলে…” শপিং এ।”
” কিসের শপিং।”
“বিয়ের।”
“মানে।”
“তিনদিন পর তোমার আর আমার বিয়ে সেটাকি ভুলে গেছ। সেজন্য শপিং করতে হবে তো এজন্য ভেবেছি
এখন যাব।”
বলেই কৌশিক কে রেখে চলে গেল। কৌশিক সেদিকে তাকিয়ে থেকে দীর্ঘ শ্বাস ফেলল।
এই মেয়ে টাকে ও কিছু তেই বিয়ে করবে না। কিন্তু আটকাবো কিভাবে?
এখন না গেলে আর ও সিন্কিয়েট করবে তার থেকে যাই।
ওই ক্লাবে গিয়ে দেখতে হবে সত্যি কি ঐশীর সাথে কিছু ঘটেছিল।
গাড়িতে বসে আছে কৌশিক ওর পাশে ড্রাইভিং সিটে ঐশী ড্রাইভ করছে। বিরক্ত আর অসস্থি নিয়ে পাশে
বসে আছে।
হঠাৎ ফোন বেজে উঠল তাকিয়ে দেখী রুনার নাম্বার। কলের শব্দে ঐশী ও তাকিয়েছে ফোনের দিকে।
“উফ দুজনে একটু একা আছি এখনই এই সতীন জন্জালটার কল করতে হলো।”
রেগে তাকালো ঐশীর দিকে কৌশিক।
“ভয় পেয়েছি এভাবে তাকাও কেন?”
ভয় পাওয়ার ভঙ্গি করে বললো ঐশী।
“হা হাহা এটাই বলল ভেবেছো তাই তো কিন্তু সুইটহার্ট এইটা তো আমি বলবো না। তোমার ওই মিডেলক্লাস
বউকে তোমার ডির্বোস দিতেই হবে।”
কৌশিক সেদিন কান না দিয়ে ফোন রিসিভ করে কানে ধরলো।
ওপাশ থেকে,,
.
“আসসালামু আলাইকুম।”
“ওয়ালাইকুম আসসালাম।”
“কি করছো?”
“কিছু না।”
“বাসায় আসতে কয়টা বাজবে।”
“জানিনা।”
“আগে আসতে পারলে চিনি নিয়ে এসো শেষ হয়ে গেছে।”
“আচ্ছা। বাবু কাঁদছে কেন?”
“খিদে পেয়েছে নিচে থেকে চিনি নিয়ে এলাম শেষ হয়েছে খেয়াল ছিলো না।”
আর কিছু বলল না কৌশিক ফোন কেটে রেখে দিলো।
ঐশী তীক্ষ্ণ নজরে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কৌশিক সেদিন খেয়াল দিলো না।
আদ্রর চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করেছে বসে বসে স্নেহা। রাগে ওর আদ্রর মাথা ফাটাতে ইচ্ছে করছে।
কাল রাতে তীব্র রাগ নিয়ে আদ্রর সাথে গেল ও পরিবেশ টা আমার পছন্দ হয়েছিল কিন্তু কি হলো আদ্রকে সেই
জ্বালালো।
এমন কিছু হবে আমি খুব ভাল করেই জানতাম তবুও ওই বেয়াদব টাকে একটু জন্য ভালো লেগেছিল আর
সাথে সাথে কিনা আমার সমস্ত আনন্দ মাটি করে দিলো।
কাল রাতে
আমি আরামছে কফি খাচ্ছি আর চারপাশের নিস্তব্ধতা অপভোগ করছি হঠাৎ আমার আদ্রর দিকে চোখ যায়।
ও কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি তাকাতেই ঠোঁট কামড়ে হেঁসে উঠল তারপরে কিছু
বোঝার আগেই আমার কোমর জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে নিলো কফি শেষ হয়েছিলো না হলে আমার শরীরে
পরতো।
আচমকা ঘটনায় আমি হতদম্ব হয়ে গেছি কি হচ্ছে বুঝতে পারছি না। হঠাৎ ঠাস ঠাস শব্দ তাকিয়ে দেখি আদ্র
ফটাফট কয়েকটি ছবি তুলে নিয়েছে ।
তারপর আমাকে ছেড়ে দিলো। আমি হাঁ করে কিছু ক্ষন তাকিয়ে থেকে জিজ্ঞেস করলাম,,
” কি করলেন এটা?”
“পিকচার নিলাম।”
“তা তো বুঝলাম কিন্তু কেন?”
“আমার একটা অভ্যাস আছে।”
“কি?”
ভ্রু নাচিয়ে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
“বন্ধু শত্রু হোক আর সব পরিস্থিতি তে পিকচার নেওয়া।”
.
“এটা আবার কেমন অভ্যাস। আর যেমনই হোক আমার সাথে নিলেন কেন? আমি আপনার কি বন্ধু না…
মুখের কথা কেড়ে নিয়ে…
“বন্ধু না তুমি আমার বন্ধু কখনো হতে পারবে না।”
“তাহলে শত্রু এটাই ঠিক আছে আর আপনার মতো হনুমান কে আমি আমার বন্ধু কখনো বানাবো না।”
“আমি হব ও না।'”আমি হতে দিলে তো হবেন।”
“আমি তো হতেই চাইনা তুমি দিলেই কি?”
বিরবির করে বলে … “আমি তো অন্য কিছু হতে চাই।”
বিরতির কথা ও আমার কানে কিছু টা আসে।
“কি বললেন?”
“কিছু না। চলো।”
তারপর দুজনে বাইকে উঠে বসি।
বাইকে থেকে নেমে গেট দিয়ে ঢুকতে যাব পেছনে থেকে আদ্র আটকে ধরে।
“কি হলো? আবার আমার সাথে ঘেসেছেন কেন?ছারুন হাত আর কতো জ্বালাবেন?”
“চুপ।”
“আবার চুপ করতে বলছেন আপনি খারাপ কিছু করতে চাইছেন না তো?”
সন্দেহ চোখে তাকিয়ে।
“চুপপপ স্টপিট গার্ল। ওই দেখ ।”
বলেই দারোয়ানকে ইশারায় দেখায়।
আমি দেখেই ভয়ে কাঁপতে থাকি আল্লাহ দারোয়ান জেগে গেছে এখন কি হবে। ভিতরে ঢুকবো কি করে।
ফিসফিসিয়ে আদ্রকে জিজ্ঞেস করি,,
“এখন ভেতরে যাবো কেমনে?”
“সেটা তোমার ভাবতে হবে না উনি এখনি চলে যাবে।”
“আপনি জানলেন কি করে?”
অবাক হয়ে।
আদ্র কিছু টা থতমত খেয়ে যায় কথাটা শুনে।
“কি হলো বলেন?”
“এটা না বুঝার কি আছে আমি কি তোমার মতো গাধা নাকি। এখন ওনার টয়লেট এও তো যেতে হতে পারে।”
কথাটা বিশ্বাস করলাম।
“তা ঠিক আছে এর জন্য আপনি আমাকে গাধা কেন বললেন।”
“ওই চলে গেছে যাবে নাকি আমার সাথে ঝগড়া করবে।”
কটমট চোখে উনার দিকে তাকিয়ে চলে আসতে নিলাম।
সত্যি চলে গেল সুযোগ বুঝে আমি ও চলে এলাম।
.
সকালেই ওনার ফোন কলের জেগে গেলাম। রাগ মিশ্রিত চোখ ফোনের দিকে তাকিয়ে ফোন কেটে দিলাম।পরপর কল চার এলো আমি চার বারই কেটে দিলাম।
এর ফোন আর রিসিভ করুম না যা খুশি পারুক করুক।
সাথে সাথে মেসেজ হলো।
“তারাতাড়ি কল রিসিভ করো না হলে আমি বাসায় চলে আসবো।”
সাথে ভয় পেলাম কাল যে ঘটনা ঘটলো আসা টা অস্বাভাবিক না। তাই ফোন রিসিভ করলাম।
” নয়টা মাঝে গেটের বাইরে আসো আমি আসছি।”
“মানে আসছেন মানে কি? কোথায় আসছেন?”
“তোমার বাসায়।”
“কিন্তু কেন ফোন তো রিসিভ করছি।”
“হ্যা করেছো কিন্তু লেট করে।”
“প্লিজ আসবেন না। আমার বিপদ হবে।”
“আমি তো আসবোই যদি তুমি নিচে না আসো ঠিক মতো।”
“নিচে আসবো মানে ভার্সিটিতে যাব না।”
“না আমার সাথে যাবে।”
“কোথায়? আর কেন দেখুন এমন করছেন কেন?”
“রাখছি ঠিক নয়টায় নিচে থাকবা।”
বলেই কেটে দিলো। পাগল করে দিবে উফ।
উঠে হালকা ফ্রেশ হয়ে। রান্নাঘরে গেলাম।
এর মাঝে কলিং বেল বাজলো খুলে দেখি রানী আর রায়া।
“কিরে এতো সকালে।
কোন দরকার।”
“হ”
“কি?”
বলেই রায়াকে কোলে নিয়ে ভেতরে এলাম।রানী বলল চিনি লাগবে কৌটা খুঁটে একটু পেলাম পুরোটাই দিয়ে
দিলাম। হবে কিনা জানি না এখানে এসে আধা কেজি চিনি কিনেছিলাম। একটু আধটু চা খাওয়ার জন্য।
ভয়ে ভয়ে নয়টায়ই নিচে নামলাম।আর এসে দেখি শয়তান আদ্রটা গেটের বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে বাইক নিয়ে।
হাতে সিগারেট আমাকে দেখেই সিগারেট ফেলে একটা হাসি দিলো তারপর বাইকে উঠে বসে আমাকে ও
উঠতে বলল।
“কি হলো?”
“উঠবো না।”
“কেন?”
.
“উঠবো কেন সেটা বলেন।”
“প্রেম করতে যাবার জন্য।”
“কিহহ?”
“এমনটাই তো তুমি ভাব কিন্তু এমন কিছু না। তোমাকে দিয়ে একটা কাজ করাবো।”
“কি আমি কিছু করতে পারবো না।”
“করতে হবে । ”
“করবো না।”
“করবে।”
“না বলছি।”
“তুমি কি চাও এখানে সিন্কিয়েট করি।”
“নাহ।”
“তাহলে চলো।”
“অসহ্য।”
গাল ফুলিয়ে উঠে বসলো।
আদ্র স্নেহাকে শপিং মলে নিয়ে এলো।
“এখানে কেন?”
“এখানেই তো সব কাজ।”
“কি কাজ বলুন তো।”
“আমাকে একটা শাড়ি চয়েজ করে দিতে হবে তোমায়।”
“অসম্ভব আমি পারবো না।”
“প্লিজ। আমি মেয়েলি জিনিস কখনো কিনিনি। এজন্য একটু হেল্প করো।”
“আমি কেন আপনি আপনার ফ্রেন্ড দের নিয়ে আসতেন। আপনি আমার সব সময় ভয়ে রাখছে আপনি
ভাবলেন কি করে আমি আপনাকে হেল্প করবো।”
“দেখো কাল আমার আম্মুর জন্মদিন। আম্মু গিফট করতে চাই আর তুমি আমাকে পছন্দ করো নি কিন্তু এটা তো
আমার না তাই হেল্প তো করতেই পারো তাই না।”
মায়ের কথা শুনে স্নেহা রাজি হলো। কিন্তু ভাবছে ওনার তো মেয়ে ফ্রেন্ড আছে তাহলে তাদের রেখে আমাকে
কেন?
“আচ্ছা আপনার মেয়ে ফ্রেন্ড দের রেখে আমাকে কেন আনলেন।”
আদ্রর স্নেহার দিকে তাকিয়ে রহশ্যময়ী হাসি দেয়।
“কি হলো হাসছেন কেন?”
“তোমাকে জ্বালাতে।”
“আপনি আসলেই খুব খারাপ।”
মার্কেটের বুকে শাড়ির দোকানে যায় ওরা। আদ্রর থেকে জেনে নেয় সে কেমন শাড়ি পরে তারপর একটা
বেগুনির কালারের শাড়ি চয়েজ করে।
আদ্র বিল দিতে চলে যায় স্নেহা চারদিকে তাকিয়ে দেখছে হঠাৎ একটা রানী গোলাপি রঙের শাড়ির উপর চোখ
যায়।
.
ও এগিয়ে শাড়ি টা হাত দিয়ে দেখে ওর খুব পছন্দ হয় শাড়িটা। শাড়িটা নিয়ে নিজের গায়ে দিয়ে দেখতে যাবে হঠাৎ একটা প্যান্ট শার্ট পরিহিত মেয়ে টেনে নিয়ে নেয়।
তারপর বলতে লাগে
“ওয়াও সো সুইট।”
বলছি নিজের গায়ে নিয়ে দেখতে লাগে আর পাশে দাঁড়ানো একটা ফর্সা লম্বা ছেলে কে বলে।
“কৌশিক দেখো শাড়িটা আমাকে ভালো লাগছে তাইনা।”
এভাবে কথা বলতে থাকে। কিন্তু ছেলেটাকে নিরব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।
আমি সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে অন্য দিকে চলে যাই।এই শাড়ি নেওয়ার সামর্থ্য ও আমার নাই। কিন্তু তবুও
কষ্ট এভাবে কেরে নেওয়াতে।
মনে হলো আমার সামর্থ্য নেই সেটাই বুঝিয়ে দিলো এইভাবে,,,
~স্নেহা এসব ধরো না তোমার টাকা নেই এইসব ওই মেয়েদের জন্য। যার টাকা আছে তাদের জন্য।
তুমি ধরে খুব ভুল করেছো খুব।~
না চাইতেও চোখ দিয়ে পানি পরলো এক ফোঁটা।
এদিকে আদ্র বিল প্রে করে এসে দেখে স্নেহা একটা শাড়ি গায়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে ওকে অপূর্ব সুন্দর লাগছে
দেখতে।ও হাঁ করে তাকিয়ে আছে আর ওর ভালোবাসার মানুষ টাকে মুগ্ধ হয়ে দেখছে। আর হাজারো কল্পনা
বুনছে। এই শাড়ি পরে খুব সুন্দর করে সেজে ওকে দেখিযচ্ছে এসব। হঠাৎ একটা অসভ্য মেয়ে এসে ওর সব
কল্পনা জল্পনা ভেঙে শাড়ি টা কেড়ে নেয় তা দেখে ওর চোখ দুটো লাল হয়ে উঠে।
স্নেহা কে মন খারাপ করে চলে যেতে দেখে ও তাদের কাছে আসে আর একই ভাবে শাড়িটা ছিনিয়ে নেয়।
ঐশী তীক্ষ্ণ চোখে আদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে,,
অচেনা শহর পর্ব ২৮
“হো আর ইউ? এভাবে শাড়িটা আমার কাছ থেকে নিলে কেন?”
“এইটা আমি নেব আপনি অন্যটা নেন।”
“অসম্ভব আমি এইটা পছন্দ করেছি আপনার আগে তাই এটা আমি নেব।”
“নো আপনি আগে করেনি নি। অন্য জন করেছে। তার কাছ থেকে অভদ্রের মতো কেড়ে নিয়েছিলেন। সো
এটা আপনার আমার আগে পছন্দ করেছো সেই তাই শাড়িটা সেই নেবে।”
“কই সে সে তো চলে গেছে তাহলে তুমি ঝামেলা করছো কেন?”
“কারন শাড়িটা আমি নেব তার জন্য।”
“হোয়াট, সে আপনার কি তার জন্য ঝগড়া করছে কেন?”
“হে আমার আত্মা। আমার ভালোবাসা আপনি তাকে কষ্ট দিয়েছেন। তবুও কিছু বলছি না যান অন্যটা নেন এটা
আপনি পাবেন না।”
বলেই শাড়িটা নিয়ে চলে গেল আদ্র।
রাগে ফুস ফুস করছে পেছনে থেকে ঐশী।
“ছেলেটা আমাকে অপমান করে শাড়ি টা নিয়ে গেল কিছু বললেনা কেন? ছেলেটা মেয়েটার জন্য এতো কিছু
বলল আমাকে আর তুমি কিছু বলতে পারলে না।”
বলেই রেগে তাকালো কৌশিকের দিকে।
“কি হলো বোবা হলে নাকি এক কথায় উত্তর দেওয়া যায় না।”
“ছেলেটা মেয়েটাকে ভালোবাসে তাই এতসব করলো। আর আমি আপনাকে ভালোবাসা তো দূরে ঘৃণা করি।
জাস্ট আই হেট ইউ।”
কথাটা শুনে আগুন চোখে তাকালো যেন চোখ দিয়ে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে ফেলবে কৌশিক কে।
কৌশিকের সেদিকে খেয়াল নেই ও ওর মতো নিরব হয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে আছে।