অচেনা শহর পর্ব ২
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি
আচমকা আদ্র স্নেহার হাত টেনে নিলো। স্নেহা ভয়ে কাঁপতে লাগলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটার
দিকে তাকিয়ে দেখে চোখ লাল করে মুখে দুষ্টু হাসি ফুটিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। অন্তরা ও ভয়ার্ত চোখে
তাকিয়ে আছে।
—-কি ভয় পাচ্ছো নাকি তোমরা দুজনেই দেখা যায় ভীতু। এই যে স্নেহা না কি যেন নাম বলছিলে তুমি তো
একটু আগে আমাকে প্রিন্সিপালের ভয় দেখাচ্ছিলে তাইনা আমি তো ভেবেছিলাম তুমি হয়তোবা একটু সাহসী
হবে কিন্তু এখন তো উল্টা মনে হচ্ছে। তোমাকে আর ও ভীতু মনে হচ্ছে। এই সাহস নিয়ে আমার সাথে লাগতে
আশা ।
বলেই হা হা করে হাসতে লাগলো। আশেপাশের সবাই হাসতে লাগলো। আদ্রর আমার হাতে সিগারেট দিলো
তারপর বলল,
—এইটা দেখে নাক মুখ ঢেকে ছিলে তাইনা এখন এইটা খাবে ধরো খাও এটাই করতে পারলেই যেতে পারবে
ক্লাসে না হলে ,
ভয়ে আমি এক হাতে অন্তরার হাত খামচে ধরে আছি।
আদ্রর ছেলেটা আমার হাতে জোর করে সিগারেট ধরিয়ে দেয় ভয়ে রীতিমতো ঘামছি আমি।
—কি হলো টান দাও? তারাতাড়ি করো আমাদের এতো সময় নেই তোমাকে নিয়ে বসে থাকার।
আমি অসহায় মুখ করে ওনার দিকে তাকালাম সে বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ছেলেটা দেখতে
যতটা সুন্দর সভাব ততটাই খারাপ। পেছনের মেয়েগুলো মজা নিচ্ছে ছেলে গুলোর ও একই অবস্থা। ভার্সিটির
অর্ধেক স্টুডেন্ট এই সব দেখছে । লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললাম,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
— ওকে বুঝেছি তুমি করবে না কিন্তু সমস্যা নাই আমি আছি তো।
বলেই ছেলেটা আমার হাত আমার মুখের কাছে নিতে লাগল, রাগে ঘৃণায় তার দিকে তাকালাম চোখ দিয়ে পানি
পরছে টপটপ করে। হঠাৎ আমার কি হলো জানি না অন্তরাকে ধরে রাখা বাম হাতটা অটোমেটিক আদ্রর
গালে চলে গেল।
চর দিয়ে বসেছি আমি আদ্রকে কিন্তু কিভাবে দিলাম নিজেও জানিনা দিয়ে নিজেই হতবাক হয়ে গেছি।
আদ্রর দিকে তাকিয়ে দেখি অগ্নিদৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। পুরো মুখ লাল টকটকে হয়ে গেছে
তাকিয়ে আমার ভয়ে মনে হয় আত্মা শুটিয়ে গেল। এতো ভয়ংকর লাগছে দেখতে বলে বুঝাতে পারবো।
আদ্রর হিংস্র বাঘের মতো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।এখনি গিলে খাবে মনে হচ্ছে।
ভয়ে একটা শুকনো ঢোক গিললাম আমি, কিছু বলবো তার আগে চিৎকার ভেসে এলো আমার কানে।
আশেপাশে তাকিয়ে দেখি মাঠের সবাই আমার দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে সবাই আমাকে
চোখ দিয়ে ভষ্স করে দিতে চায়। আমি যেন বড় সড় অন্যায় করে ফেলেছি।
সেই ঢংঙি মেয়েটা ছুটে এসে ছেলে টার পাশে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো,
—আদ্র বেবি তুমি ঠিক আছো তো।
তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল রেগে, ইউ ইডিয়েট তোমার এতো বড় সাহস তুমি আদ্রর গায়ে হাত তুল।
আজ তোর এমন অবস্থা করবো তুই ভাবতেও পারবি না।
মেয়েটা রেগে কথা গুলো বলল , পাশের ছেলেগুলো অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কেউই হয়তো
কল্পনা করে নি আমি এই কাজ করবো।
—সর মাইশা আজ এই মেয়ের এমন অবস্থা করবো আমি ও সারাজীবন আমার দিকে তাকাতে পারবে না। ও
আমার গায়ে হাত তুলছে এর শাস্তি তো ওকে পেতেই হবে।
.
বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। ভয়ে আমি
কি করবো বুঝতে পারছি না। আমার একটা গুন আছে সেই গুনটা এখন হবে জানি । হ্যাঁ তাই হলো ওনি
আশায় আগেই আমি ঙ্গান হারালাম।
হ্যাঁ আপনারা ঠিকই বুঝেছেন এটাই আর অন্যতম গুন।
আদ্র স্নেহার দিকে আসছিলো তার আগেই স্নেহা ঢলে পরলো আদ্র কাছে ছিল তাই পরার আগেই ধরে
ফেলল……
হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে স্নেহার ঙ্গান শূন্য মুখের দিকে।
রাগে ওর শরীর জ্বলে যাচ্ছে।
—কি হলো স্নেহার ?
বলেই অন্তরা ছুটে এলো। মাইশাও এলো ।
—কি হলো এটার ন্যাকামি ইচ্ছে করে ঙ্গান হারানোর নাটক করছে এই মেয়ে । অঙ্গানের নাটক করে পার
পেতে চাইছে কি ফাজিল মেয়ে দেখছিস আদ্র।
আদ্র এমনিতেই রেগে ছিলো নাটক করছে কথাটি শুনে আর ও রেগে উঠলো।
রেগে স্নেহার দিকে তাকাল কিন্তু রাগ না খাটাতে পারলো না স্নেহার মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়ে রাগ কমে
গেল।
স্নেহার গায়ের রং ফর্সা বলা যাবে না আবার কালো ও বলা যায় না । মাঝা মাঝি তে আছে উজ্জ্বল শ্যামলা, গায়ে
কম দামী সিম্পুল ড্রেস, সাজ বলতে কিছু নেই মুখে। কখনো সেজেছে কিনা মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছে না। পুরো
মুখ জুরে আছে ক্লান্তি। এই টুকু মেয়ের মুখে এতো ক্লান্তির সাফ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আদ্র।
এতো সাধারণ ভাবে কোন মেয়েকে আদ্র দেখেছে বলে মনে পরছে না। এই মেয়ে কোন কিছু আদ্রর পছন্দ হয়
নি কিছু না । বিরক্ত হলো এতক্ষণ একে স্কান করেছে বলে।এই মেয়ে আমাকে থাপ্পর মেরেছে আর আমি একে
ধরে রেখেছি ভাবতেই হাত আলগা করে ছারতে নিলাম কিন্তু কারো চিৎকার এ ছারতে পারলাম না।
অচেনা শহর পর্ব ১
—প্লিজ ভাইয়া ছারবেন না ও পরে ব্যাথা পাবে।
—পাক আমি তো সেটাই চাই আমার গায়ে হাত তুলেছে এই মেয়ে একে তো,
কথা কেড়ে নিয়ে,,,, প্লিজ এমন করবেন না ওর ঙ্গান ফিরানোর একটা ব্যবস্থা করেন প্লিজ যদি ভালো মন্দ
কিছু হয়ে যায়।
বিরক্ত হয়ে তাকালো অন্তরার দিকে একটা মানুষ এতো কাঁদতে পারে একে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।
যতসব।ভালোমন্দ কিছু হয় যদি তাই আর ছারলো না একটা গাছ আছে সেখানে বসার জায়গা ও আছে।
সেখানে নিয়ে বসিয়ে দিল।অন্তরা গিয়ে ওকে ধরে বসলো।
—আশিক যা তো একটা পানির বোতল নিয়ে আয়।
—কেন?
—আমি আনতে বলছি জিজ্ঞেস করতে না।
আশিক আর কিছু বলল না চলে গেল একটু পর পানির বোতল নিয়ে এলো ।
—এই যে ধর ।
আদ্র পানির বোতল নিয়ে স্নেহার মুখে পুরোটা ঢেলে দিলো । সাথে সাথে স্নেহা ধরফরিয়ে উঠে দাঁড়ালো।