অচেনা শহর - গল্প বাজার

অচেনা শহর পর্ব ৪ || জোড়াশালিকের সংসার

অচেনা শহর

অচেনা শহর পর্ব ৪
লেখিকা:– তানজিনা আক্তার মিষ্টি

–প্লিজ হাত ছাড়ুন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে…
বলে হাত সরানোর চেষ্টা করতে লাগল স্নেহা।
কিন্তু সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ করল না আদ্র ও নিজের মাথা হেঁটে চলেছে।স্নেহা শত চেষ্টা করেও
আদ্রকে থামাতে পারল না।
স্নেহার কান্না পাচ্ছে। আদ্রকে থামানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা না। ওর হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে ভয়ে।
একটা রুমে নিয়ে ছুড়ে মারল স্নেহাকে। এটা রুম না সরি ক্লাস আমি ক্লাসের ফ্লোরে হুমরি খেয়ে পড়লো।
ফ্লোরে পড়ে হাতে ব্যথা পেলাম হয়তো ছুলেও গিয়েছে।
হাতে এমনিতেই ব্যাথা করছিল এমন ভাবে শক্ত করে ধরে এনেছে যে মনে হয় রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
তার ওপর এভাবে পরায় আরো পুরো শরীর ব্যথা হয়েছে।

এখানে কেন নিয়ে এলো কি শাস্তি দিবে আমাকে? ভেবেই আমার সারা শরীর কাপতে লাগলো। মাথা উঁচু করে
সামনে তাকানোর আগে আরো কিছু গলার আওয়াজ পেলাম। আস্তে আস্তে মাথা উঁচু করে দেখি আদ্রর সব
ফ্রেন্ডরা রুমে ঢুকছে। কি যেন বলাবলি করছে তারপর সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেল। শুধু সেই মেয়েটা রয়ে
গেল মেয়েটা কি যেন বলতে আদ্র তাকে ও যেতে বলল মেয়েটা গোমরা মুখ করে আমার দিকে কটমট চোখে
তাকালো। সবাইকে বের হয়ে যেতে আমার আত্মা শুকিয়ে এলো। অজানা ভয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়লাম।
আল্লাহ কেন আমি এই ছেলেটার গায়ে হাত তুলতে গেলাম। এখন আমার কি হবে?

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

সে আমার দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে আছে। স্নেহা কোনমতে উঠে দাঁড়ালো তারপর। আমি ভয়ে ভয়ে তার
মুখের দিকে তাকিয়ে বললাম,
—প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন এখানে কেন নিয়ে এসেছেন? আমার কোন ক্ষতি করবেন না প্লিজ। আমি করে
ফেলেছি। আমার আপনার গায়ে হাত তোলা উচিত হয়নি কিন্তু আপনি যদি এরকম ব্যবহার না করতেন তাহলে
আমি এমনটা করতাম না। দোষ আপনারা ছিল এজন্য আমি চড় মারতে বাধ্য হয়ে আর আমি সত্যি চড় মারতে
চাই নি কিভাবে যে কি হয়ে গেল। আপনার কাছে আমি..

আদ্র রাগী চোখে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে দোষ ওর ও আছে সেটা শুনে তো আরও রেগে ফায়ার হয়ে গেল।
এই মেয়ে একে তে আমায় গায়ে হাত তোলার মতো স্পর্ধা দেখিয়য়েছে সারা ভার্সিটির সবার সামনে। আবার
এখন এতো কথা বলছে। চিৎকার করে উঠলো,
চিৎকার শুনে তো ভয়ে কেঁপে উঠলাম, হঠাৎ আদ্র এগিয়ে এসে আমার বাহু শক্ত করে ধরে। এটা দেখে তো
আমি আরও ভয় পেয়ে যাই এত শক্ত করে আমার হাত ধরে আছে যেন হাত ভেঙে যাবে।আগের ব্যথাটার
থেকেও বেশি শক্ত করে ধরেছে এবার।
ব্যথায় আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।

—কি বললে তুমি আমার দোষ ছিল? আদ্রকে দোষ দেখাও তুমি এতো বড় সাহস তোমার।
—আমি সেটা বলতে চাইনি আমি তো..
—স্টপ ইট..!!
হঠাৎ আদ্রর ফোনটা বেজে ওঠে, বিরক্ত হয়ে আদ্র স্নেহা কে ছেড়ে পকেট থেকে ফোন বের করে। ফোনের
উপর বড় করে লেখা আম্মু।আম্মুর কল দেখে তাড়াতাড়ি রিসিভ করে একটু দূরে সরে দাঁড়ায়।
-হ্যালো আম্মু,
অপর পাশ থেকে কান্নার আওয়াজ আসছে। কান্নার আওয়াজ শুনে আদ্র ভয় পেয়ে যায়।
ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগে,
-হ্যালো কি হয়েছে? কান্না করছো কেন? হ্যালো আম্মু কথা বলো সবাই ঠিক আছে তো!
-আদ্র বাবা তুই কোথায়?

.

-আমি তো ভার্সিটিতে থাকি এই সময় তুমিতো জানো সেটা।
-হ্যাঁ তুই তাড়াতাড়ি বাসায় আয় তোর আব্বুর অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে?
-হোয়াট কখন কিভাবে কোথায়?
-তুই তাড়াতাড়ি আয় এখন কিছু বলতে পারব না আমরা সবাই হসপিটালে যাচ্ছি?
-আচ্ছা আমি এখন আসছি কোন হসপিটাল।

আদ্রর আম্মু হসপিটালে ঠিকানা বলে ফোন কেটে দিল। একটু আগে অর্থাৎ একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে
ফোন এসেছিল তার পরে জানতে পেরেছে এক্সিডেন্টের খবরটা। আদ্র চাচা আদ্রর আম্মু ছোট বোন চাচাতো
ভাই সবাই হসপিটালে যাওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে বসলো।
আদ্রর মাকে তো কোন ভাবেই কান্না করা থেকে থামানো যাচ্ছে না।
আদ্রর ফোন কানে থেকে নামিয়ে একবার পেছনে তাকিয়ে তারপর দরজা খুলছ বেরিয়ে যাই ওর ফ্রেন্ডরা সবাই
বাইরে দাঁড়িয়েছিল। আদ্রকে এভাবে হতদন্ত হয়ে বের হতে দেখে সবাই ছুটে আসে ওর কাছে।

–কি হয়েছে আদ্র তুই এভাবে ছুটে কোথায় যাচ্ছিস।
ওই মেয়েকে রুমে রেখে এসেছিস আমরা কি বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেবো।
—না দরকার নাই ওকে চলে যেতে বল।
—হোয়াট চলে যেতে বলবো কেন?তুইতো বলেছিলি এই মেয়েকে রুমে বন্ধি করে রাখবি।
—হ্যাঁ বলেছিলাম এখন বলছি যেতে দে আমি এখন ব্যস্ত আছি আমাকে এখনই বাসায় যেতে হবে ওর যা
ব্যবস্থাও পড়ার পরে করব।
বল আর এক মুহূর্ত না দাঁড়িয়ে বাইক নিয়ে চলে যায়। উদ্দেশ্য হসপিটাল যাওয়া।

স্নেহা সট্যাটু হয়ে তাকিয়ে আছে আদ্রর যাওয়ার দিকে। কিছুই বুঝতে পারল না ও। ও নাড়াচাড়া করার কথা
ভুলে গেছে। হঠাৎ একটা ছেলে এসে ওকে চলে যেতে বলল, ওকে আর পায় কোন রকম দৌড়ে বেরিয়ে এলো
রুমে থেকে। কিছুই স্টুডেন্ট ছাড়া সবাই চলে গেছে। গেটের বাইরে আসতেই কেউ ওকে পিছন থেকে
ডাকলো, চমকে ভয়ে ভয়ে পেছনে তাকালো আবার কেডায় ডাকে আমারে। আল্লাহ আজকে কি আমার
বিপদ শেষ হবে না।

.

পেছনে তাকিয়ে আবার ভয় পেয়ে যায়।এটাতো আদ্রর ফ্রেন্ড মনে হয় তাদের সাথে তো দেখেছিলাম। নামটা
জানা হয় নাই দুই তিন জনের নাম মুখে শুনেছি এর নাম জানিনা।
আমি অসহায় মুখ করে তাকিয়ে আছে আবার শাস্তি দেওয়ার জন্য ডেকে নিয়ে যাবে নাকি।
—জি ব লু ন
—তোমাকে একটা কথা বলতে এলাম তোমার নামটা কি যেন?
—জি স্নেহা।

–আমাকে ভয় পাচ্ছো কেন আমি তোমার ক্ষতি করার জন্য তোমাকে সাহায্য করার জন্য এসেছি আদ্র তোমার
উপর অনেক রেগে আছে আর রাগ করাটা স্বাভাবিক। তুমি ওর গায়ে হাত না তুললে ও তোমাকে শাস্তি
দেওয়ার কথা বলেছে ও প্রচণ্ড রেগে আছে তোমার উপরে। সারা ভার্সিটি সবার সামনে তুমি ওকে চড় মেরেছ।
যেখানে সবাই ওকে ভয় পায় চোখ তুলে তাকাতে সেখানে তো তুমি এই কাজটা করে বসেছে এত সহজে
তোমাকে ছেড়ে দেবে না। ওর রাগ খুব ভয়ঙ্কর তোমার সাথে যে কি করবে আমি ভেবে পাচ্ছি না। তোমার
সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে জন্যই এই কাজটা করতে বাধ্য হয়েছো কিন্তু। আদ্রর রাগ খুব ভয়ঙ্কর ও রাগে
কি করে নিজেও বুঝতে পারে না। তাই ওর হাত থেকে যদি বাঁচতে চাও তাহলে তোমাকে একটা সাজেশন দিতে
পারি।

উনার কথাটা শুনে আমি চমকে তাকালাম ভালো করে হ্যাঁ ছেলেটা গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামলা, লম্বা স্বাস্থ্য
মিডিয়াম। দাড়ি মোচ নিচে নাই একদম ক্লিন। মুখে হালকা হাসি দেখতে ভালোই। ছেলেটাকে বিশ্বাস করতে
মন চাইলোএত কিছু হওয়ার মাঝে তার মুখে আমি একটা খারাপ কথা শুনি নাই সে সময় চুপচাপ দাড়িয়ে
ছিলো। আমাকে এত কথা বলছে কেন? আর ফ্রেন্ড এর বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে সাহায্য করতে এসেছি বা কেন?

.

—আপনি আমাকে সাহায্য কেন করবেন?
–কোন কারণ নেই। জাস্ট তোমার জন্য আমার খারাপ লাগছিলো এজন্যই আমি তোমাকে বলতে পারি তুমি
এমনি এমনি আদ্রর হাত থেকে ছাড়া পাবে না। আর অনেক জোর আছে ভার্সিটিতে।
—যে জোর‌ই থাক আমি কালকে ওনার নামে প্রিন্সিপালের কাছে কমপ্লেন করব।
—এই কাজটা ভুলে ও করতে যেও না
তারা তোমার কোন কথাই বিশ্বাস করবে না আর করলেও তারা আদ্র কিছুই করতে পারবেনা। ওহ তোমাকে যা
বলতে এসেছিলাম এইসব করার কথা বাদ দিয়ে আদ্রর কাছে সরি বলে দিও। এতে হয়তো বা ওর রাগটা কমতে
পারে।

—সরি কেন বলব উনি ভুল করেছেন উনি আমাদের সাথে বাজে ব্যবহার করেছেন?
—সেটা তোমার ইচ্ছা তুমি যদি সরি বলো হয়তোবা ব্যাপারটা সল্ভ হতে পারে। আর যদি না বল তাহলে
তোমার সামনে অনেক বিপদ আছে। আদ্রকে আমি চিনি ও এতো সহজে তোমাকে ছেড়ে দেবেনা। আজকে
একটা কারণেও চলে গিয়েছে।হয়তোবা তোমাকে বাঁচার একটা সুযোগ করে দিয়েছে।
ছেলেটা চলে গেল। হ্যাঁ চরটা দেওয়া ঠিক হয় নাই কিন্তু সে তো আমাদের সাথে খুব বাজে ব্যবহার করেছে।
কেন স্যরি বলবো প্রিন্সিপাল কে জানে কথা তোমার মনেই ছিলনা। এতটাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে এসব
কথা বলেই গিয়েছিলাম। কালকেই প্রিন্সিপালের কাছে নালিশ করব। আজকে আর একা যাবো না অন্তরা কে
নিয়ে যাব কালকে।

.

বাসায় এসে হালকা ফ্রেশ হয়ে আসে হাত ব্যথা করছে হাতে নীলা পরে গেছে এক সপ্তাহ মতো এই নীলা
থাকবে। ওইভাবে বাবার রুমে যায় স্নেহা বাবা ঘুমিয়ে আছে। দুটো উপরে বেজে গেছে রান্নাঘরে এসে সকালের
ভাত গরম করে তার পায়ে বাবার রুমে এসে বাবাকে খাইয়ে দেয় ডেকে ওঠিয়ে। খাওয়ার সময় বাবা আজকে
সারাদিন কেমন কাটলো নানা কথা জিজ্ঞেস করে আমাকে আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভালোই বলে প্লেট
নিয়ে বাইরে চলে আসে। বাবা যদি জানত আজকে ভার্সিটিতে কি সব ঘটেছে।

এসব বাবাকে জানতে দেওয়া যাবে না। নিজেও হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করতে
দেখি অনেকগুলো মিসকল আননন নাম্বার সাথে সাথে আবার ফোন আসে। রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে
অন্তরের কন্ঠে আসে।
—হ্যালো স্নেহা তুমি ঠিক আছো? আমি তোমাকে কখন থেকে কল করছি রিসিভ করছো না কেন। কত চিন্তিত
জানো তোমাকে নিয়ে গেল তোমার কোন ক্ষতি করেনি তো তুমি ঠিক আছো।
–হ্যা ঠিক আছি।
অন্তরাকে সবকিছু খুলে বলে স্নেহা। অন্তরা বলে কালকে ভার্সিটিতে আগেই যেতে।
স্নেহা হ্যাঁ বলে ফোন রেখে দেয়

.

এদিকে
আদ্র হসপিটাল এসে দেখে বাসার সবাই চিন্তিত হয়ে বসে আছে। ও সবার কাছে যেতে ডাক্তার বেরিয়ে
আসে।ডাক্তার কে দেখে আর কারো সাথে কথা না বলে ডাক্তারের কাছে ছুটে যায়।
—ডাক্তার আমার আব্বু ঠিক আছে তো।
ডাক্তার জানানআব্বু পায়ে ব্যথা পেয়েছে কিন্তু খুব গুরুতর না মাথা একটু বেশি আঘাত পেয়েছে কিন্তু সমস্যা
হবে না তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। এটা শুনে সবাই নিশ্চিন্ত হয়।
ডাক্তার কে বলা হয় বাসায় নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা

সে বলে নিয়ে গেল ওসমস্যা নাই ভালো করে দেখাশোনা করতে। রাতে বাসায় নিয়ে আসে আদ্র ও বাবাকে।
পরদিন অন্তরা আগে যেতে বলেছিল ফোন দিয়ে অন্তরায় টাইম বলে বাসা থেকে বের হয় আধা ঘন্টা লাগে
ভার্সিটিতে যেতে। অন্তরার বাসা কোথায় সেটা জানা হয় নাই এখনও। কারণ কালকে তো আমার আগেই চলে
এসেছে। কালকে অটোতে গিয়েছিল বেশি দূর না হলেও 50 টাকা ভাড়া। প্রতিদিন এমন 50 টাকা ভাড়া খরচ
করা লাগবে। যেতে আসতে 50 টাকা। ভেবে একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল, আজকে অটোতেই তাই কাল থেকে না
হয় হেঁটে যাবো। কিছু কাজ জোগাড় করতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি। ভাবতে ভাবতে অটোতে উঠে বসে স্নেহা
কিন্তু অটোতে উঠি চমকে যায় অন্তরা কে দেখে।

–ও এখানে কি করে? অন্তরার সেম অবস্থা ও চমকে গেছে স্নেহাকে দেখে।
—তুমি এখানে তোমার বাসা কি ওই দিকে?
—না আমার খালার বাসা। কালকে সন্ধ্যায় খালার বাসায় এসেছিলাম আমার খালাতো বোনের জন্মদিন ছিল।
–ও আমি আরো ভাবলাম তোমার বাসা বোধ হয়।
–হলে ভালো হতো একসাথে যেতে আসতে পারতাম।
—হ্যাঁ।

.

—-কালকে কি হয়েছিল এখন আবার ফিরে বল। তুমি জানো তোমার জন্য আমি কত টেনশন করেছি।
আমি কত ভেতরে যেতে চাইলাম আমাকে যেতে দিল না কেউ।
–সবকিছু খুলে তো বললাম কালকেই।
–আরে ফোনে তো বুঝি নাকি আবার বল।
আবার সবকিছু বলল স্নেহা।
সব শুনে অন্তরা বলল।
—-স্নেহা আমার কিন্তু শেষে ভাইয়াটা যা বলেছে তার কথায় ভালো লেগেছে।
—মানে তুমি আমাকে সরি বলতে বলছো।

—হ্যাঁ এটাই ঠিক হবে তুমি একটু ইনোসেন্ট মুখ করে সরি বলে দিবি। আচ্ছা আমরা তো বেস্ট ফ্রেন্ড তাই না
আমি তোমাকে তুই করে বলব কেমন। তুমি আবার রাগ করবে নাতো। আসলে ফ্রেন্ডকে না তুমি তে ভালো
লাগেনা।
—-সমস্যা নাই বলো।
—শুধু আমি একা নাকি তুইও বল।
—-আচ্ছা।

—তাহলে এবার আমি বলি কী তুই আদ্র ভাইয়ের কাছে গিয়ে ছরি বলে দে আমি তোর সাথে যাব। দেখ তার
অনেক ক্ষমতা ভার্সিটিতে। আর তুই প্রিন্সিপালের কাছে নালিশ করবি ভেবেছিস। প্রিন্সিপাল তোর কথা শুনবে
না দেখিস। আর ওএর জন্য আদ্র রেগে যাবে আমাদের ওপর।আর তুই যা বললি তোকে রুমে নিয়ে গিয়েছিল
যেভাবে ফেলছিল যদি তোকে আটকে রেখে দিত তাহলে কি হতো আর তোর সাথে খারাপ কিছু করে ফেলতো
তাহলে কি হতো ভাবতে পারছিস।
কথাগুলো শুনে স্নেহা ভয় পেয়ে গেল।

.

—আমার কথাটা শোন চল আমরা দুজনে গিয়ে ছরি বলে দেই। আমার বিশ্বাস ছরি বললে আর কিছু বলবেনা।
এমনিতেই প্রচন্ড রকমের ভীতু স্নেহা তার ওপর এতোটুকু সাহস রেখেছিল ভেবেছিল অন্তরা ওর সঙ্গ দেবে কিন্তু
অন্তরার কথা শুনে আরো ভয় পেয়ে যায়। সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় ও সরি বলে দেবে। ঝামেলা এমনিতেই স্নেহার
পছন্দ না।
ভার্সিটির সামনে এসে নেমে ভাড়া দিতে যাবে তার আগে অন্তরা দুজনে ভাড়া দিয়ে দেয়।
—এটা কি হলো তুই ভাড়া দিলে কেনো আমি দিতাম।
—সমস্যা নাই অন্য দিন দিয়ে দিস।
দুজনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি এখন গিয়ে আদ্রকে ছরি বলে দেবে।

স্নেহা ভেতরে ঢুকে যেখানটায় আদ্ররা দাঁড়িয়ে থাকে সে দিকে তাকায়। সবাই সেখানে আছে দেখে অন্তরা কে
নিয়ে সে দিকে এগিয়ে যায়। আমাদের দেখে সবাই অবাক হয়ে বড় বড়ো চোখ করে তাকিয়ে আছে। আমি
চারপাশে আদ্র কে খুজছি। কিন্তু সবাই আছে আদ্র নাই।
–এই মেয়ে তুই এখানে কি করছিস? মাইশা ওদেরকে দেখেই কথাটা বলে উঠলো,
—না মানে আসলে,
—তাদের সাহস দেখে তো অবাক হচ্ছি কোথায় ভয়ে এক সপ্তাহ ভার্সিটিতে আসবি না।
কালকে এত কিছু হওয়ার পর আবার এখানে এসেছিস। এখানে কি চাই?
কিছু বলতে যাবে তার আগেই সেই কালকের সাহায্য করবে বলেছিলে সেই ছেলেটা এলো।

অচেনা শহর পর্ব ৩

—উফ মাইশা অফ করো তো শুনে দেখ কি জন্য এসেছে।
—রাহাত তুই ভাবতে পারবি না মেয়েটাকে দেখে আমার কথাটা রাগ হয়। ও আদ্রকেচড় মেরেছে আমার
সামনে আমার তো মন চায় সেই মেয়েকে আমি উচিত শিক্ষা দিয়ে দেয় থাপরিয়ে গাল লাল করে দেয়। কিন্তু
আদ্র বলেছে ও শাস্তি দিবে এজন্য কিছু বলতে পারতাছিনা। আর আদ্র তো এখনো ভার্সিটিতে আসে নাই।
আদ্র ভার্সিটিতে আসে নাই শুনে স্নেহা অন্তরার দিকে তাকায় অন্তরা ও।

দুজনে চলে যাবার সিদ্ধান্ত নেয় এমন সময় বাইক এসে থামে ওদের সামনে। বাইক থেকে নেমে আসে আদ্র।
আদ্র নেমে এসে ওদের দুজনকে দেখে বাঁকা হাসি পাখি নিজেই খাঁচায় বন্দী হতে এসেছে ।
কাউকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে স্নেহা আদ্রর সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আদ্র সহ সবাই অবাক হয়ে ওর দিকে
তাকায়। চোখ বন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে বলে ওঠে,

–আই এম সরি আমাকে ক্ষমা করে দিন আমি কালকের জন্য সত্যিই খুব দুঃখিত।আমাকে কোন শাস্তি দিবেন
না প্লিজ আমার ভুল হয়ে গেছে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
এক নাগাড়ে কথাটা বললে স্নেহা চোখ মেলে তাকায়। সামনে ঠিক কি রিয়াকশন দেখার জন্য। দোয়া দরুদ
পড়ছে আল্লাহ কালকে কি ভয়টাই না পেয়েছিলাম উনি যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয়।

অচেনা শহর পর্ব ৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.