কতোটা চাই তোকে - Golpo Bazar

কতোটা চাই তোকে পর্ব ১৪ || ভালোবাসার যন্ত্রণা

কতোটা চাই তোকে

কতোটা চাই তোকে পর্ব ১৪
Writer:-TanjiL Mim

“থর থর করে কাঁপছি আমি’!!ভেজা শাড়িতে পুরো জমে গেছি’!!আর আমার সামনে কাঠের টুকরো দিয়ে আগুন জ্বালাচ্ছে কাব্য’!!বিষয়টা অদ্ভুত হলেও ভালো লাগছে’!!কিছুক্ষণের মধ্যেই কাব্য আগুন জ্বালিয়ে বললোঃ
——-“এবার আর শীত করবে না’!!আচ্ছা তুই বস আমি গিয়ে গাড়ি থেকে তোর জন্য জামা নিয়ে আসছি……
“আমি কাব্যের কথা শুনে শুধু মাথা নাড়ালাম’!!তারপর ভাইয়াও আর কিছু না বলে চলে গেল……
“আর আমি আগুনের থেকে কিছুটা উপরে হাত রেখে শীত কমাচ্ছি…..”!!

“এদিকে গাড়ির কাছে’ এসে হাসছে কাব্য’!!নিজের কাজে নিজেই লজ্জিত’!!অবশ্য যেটা হয়েছে সেটা হয়তো কাব্য করতে চায় নি হয়ে গেছে’!!এই ভেবে গাড়ির ভিতর থেকে মাইশার একটা জামা নিয়ে নিজেও চেঞ্জ করে আবার চললো সে’!!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“হুট করে মাইশা চেঁচিয়ে উঠে পিছন দিকে দৌড়াতে লাগল’!!এমন সময় সামনে কাব্যকে দেখে দৌড়ে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বললোঃ
——–“ভুত ভুত……
“এদিকে হুট করে কেউ জড়িয়ে ধরাতে অবাক হয়ে গেল কাব্য’!!পরক্ষণেই মাইশা বুঝতে পেরে বললোঃ
———“কি হয়েছে……
——–“ওখানে ভুত আছে…..
——”কি???
——-“এই সন্ধ্যা বেলা ভুত কোথায় পেয়েছিস তুই……
———“না মানে ওখানে কেমন যেমন ছমছম লাগছে…….
“এই বলে কাব্যকে ছেড়ে দিলাম আমি’!!তারপর ঠোঁটে কামড় দিয়ে বললামঃ
———“না মানে ওখানে একা ভয় লাগছিল……
“কাব্য আমার কথা শুনে আমার দিকে কিছুটা ঝুঁকে এসে বললোঃ
——–“তাই,, নাকি আমাকে জড়িয়ে ধরার ধান্ধা হুহ……
“কাব্যের কথা শুনে অবাক হয়ে বললাম আমিঃ
———“কি(চেঁচিয়ে)
——–“কানে শুনতে পাস নি…..
——-“আচ্ছা ঠিক আছে যাও এত বড় মিথ্যা কথা বললে তুমি আজ থেকে তোমায় আর কোনোদিন জড়িয়ে ধরা তো দূর তোমার থেকে ১০ সে.মি. দ্রুততা রেখে থাকবো……পুরো এক শ্বাসে কথাগুলো বলে কাব্যের কাছ থেকে আমার জামাটা টান মেরে এনে হন হন করে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেলাম আমি”!! রাগে মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে শয়তানডায় বলে কিনা ওকে জড়িয়ে ধরার বাহানা করছি হুহ আর যদি তোরে কোনোদিন জড়িয়ে ধরছি,লাগলে কারেন্টের তারকে জড়িয়ে ধরমু তারপরও তোরে ধরমু না শালা হনুমান,,,,……..
.
“এদিকে কাব্য আগুনের সামনে দাঁড়িয়ে হাসছে’!!তার হাসি যেন থামছেই না’!!মাইশাকে এইভাবে রাগাতে তার সত্যি খুব ভালো লাগে’!!এখন তো খুব লাগছে এই বলে হাসছে কাব্য………

“রাত প্রায় ৮ঃ০০টা……..
“শহরে থাকলে হয়তো এখন কেবল সন্ধ্যে’!!কিন্তু এই জঙ্গলে মনে হচ্ছে রাত ১ঃ০০টা…….
“আগুনের কাছে বসে আছি আমি’ আর কাব্য’!! এখন শীত অনেকটাই কম লাগছে’!!হালকা ঠান্ডা লাগছে মনে হয়’!!এদিকে ক্ষুদাও লেগেছে খুব’!!না কিছু বলতে পারছি আর না কিছু করতে পারছি’!!এমন সময় কাব্য আমার সামনে কিছু খাবার এনে বললো’!!
——–“খেয়ে নে……
“আমি নাক ফুলিয়ে বললামঃ
——–“খাবো না আমার খিদে নেই…..
——–“তোর খিদে আছে কি নেই তা আমি খুব ভালো করে জানি……’!!তাই বলছি খেয়ে নে……
“কাব্যের কথা শুনে আমিও আর কিছু না বলে হুট করে খাবারগুলো টান মেরে নিয়ে খেতে শুরু করলাম’!!এদিকে কাব্য এইভাবে মাইশাকে খাবার খেতে দেখে বললোঃ
——-“তোর নাকি খিদে নেই…..,খিদে নেই তাতেই এই অবস্থা খিদে থাকলে কি করতি তুই জানিস…….
“এই মুহুর্তে কাব্যের কোনো কথাই আমি কানে নিলাম না’!!প্রচন্ড খিদে পেলে যা হয় আর কি??সেই সকাল বেলা খেয়ে ছিলাম’!!এতক্ষণ কি করে না খেয়ে ছিলাম কে জানে…..বাসায় থাকলে মায়ের মাথা খেয়ে ফেলতাম খিদে লেগেছে,খিদে লেগেছে……এসব ভেবে ফটাফট সব খাবার খেতে লাগলাম আমি…….
“খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বসে আছি’!!এখন খুব ভালো লাগছে’!!এখন শুধু ঘুমানোর ব্যবস্থা হলেই শেষ’!!হুট করে কাব্যকে বলে উঠলামঃ
——–“এখন ঘুমাবো কোথায়…….
———“আমার মাথায়……
———“কি???
——–“না কিছু না……এইভাবে বসে থেকেই আজ সারারাত পার করে দিবো……
——–“কি তোমার কি মাথা খারাপ,এই রাতের বেলা খোলা আকাশের নিচে বসে থাকবো…….
——–“হুম…….
——–“তুমি কি আমার সাথে মজা করছো’!!
——–“মটেও না……
“বিনিময়ে কিছু বললাম না আমি’!!শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম কাব্যের
_____________________
“ধীরে ধীরে রাত আরো গভীর হতে লাগলো’!!আর আমার ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে’!!আশেপাশের পরিবেশ ছমছম করছে’!!হুটহাট শব্দ আসছে’!!যাতে করে আরো ভয় লাগছে’!!এই মুহূর্তে কাব্যের উপর প্রচুর পরিমানে রেগে আছি আমি’!!এগুলো করার কোনো মানে হয় এই ভাবে জঙ্গলের মধ্যে থাকার’!!অদ্ভুত বিষয় সারাদিনে কাউকে দেখতে পেলাম না’!!এদিকে ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে আমার’!!হর্ঠাৎই মনে হলো কেউ কাছে এনে তার কাঁধে মাথা দিলো’!!এই মুহূর্তে কে এমনটা করলো মটেও সেদিকে ইন্টারেস্ট নই মাইশা’!!সেও তার হাত শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরল’!!
“এদিকে কাব্য মাইশাকে নিজের কাছে এনে জড়িয়ে ধরে বসে রইলো’!!এমন সময় একটা লোক এসে বললোঃ
———“এখানেই কি বসে কাটিয়ে দিবে নাকি…..
“লোকটার কথা শুনে হাসলো কাব্য’!!তারপর বলে উঠলঃ
———-“না চাচা……..
“তোমার কথা মতো আমরা’!!সারাদিন এখানে আসি নি’!!
——–“থ্যাংক ইউ চাচা,,চাচিকে নিয়ে কেটেছে কেমন আজকে……
——–“কি আর কমু,বলো প্রথম বার সিনেমা হলে গেলাম,,তার সাথে আরো অনেককিছু করছি তোমারে কওন যাইবো না….
——-“ঠিক আছে চাচা আপনাকে আর বলতে হবে না……..
——–“এই তাহলে তোমার পিচ্চি বউ…….
——–“হুম চাচা…..
——–“খুব মিষ্টি দেখতে…….আর শোন এখানে বসে না থেকে এখন ভিতরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো…….
———ঠিক আছে চাচা,,এই বলে কাব্য মাইশাকে কোলে তুলে নিয়ে ঘরের ভিতর ঢুকে গেল’!!
“আর ওই চাচায় শুধু কিছুক্ষন তাকিয়ে রইল ওদের দিকে’!!তারপর সেও তার বউয়ের কাছে চলে গেল…..
_____________________
“এই জায়গাটা অনেক দিন আগেই দেখেছিল কাব্য’!!আর এই কুঁড়েঘরে থাকতো একজন মহিলা আর একজন পুরুষ কম জোর হলে তাদের বয়স ৬০ থেকে ৬৫ হবে’!!তারপর তাদের সাথে পরিচয় হয় কাব্যের’!!মাইশাকে নিয়ে এখানে আশার একটা ইচ্ছে জাগে কাব্যের’!!তারপর আর কি ওনাদের সবকিছু বলে কিছুক্ষনের জন্য ঘুরতে বলে কাব্য আর কিছু টাকাও দেয় তাদের’!!তারপর আর কি ওদিকে চাচা-চাচী ঘুরোঘুরি করছিল’!!আর এখানে মাইশা আর কাব্য……….
“ভিতরে ঢুকে মাইশাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরল কাব্য’!!

“সকালে জানালা ভেদ করে সূর্যের আলো আসছে রুমে’!!আর তার সাথে এক অপরকে জড়িয়ে ধরে আরামে ঘুমিয়ে আছে কাব্য আর মাইশা’!!হর্ঠাৎই দরজায় কারো টোকা পরেতেই ঘুম ভাঙল কাব্যের’!!তারপর সে মাইশাকেও জাগিয়ে বললোঃ
——–“তাড়াতাড়ি তৈরি হ আমাদের যেতে হবে……..
“এতটুকু বলে বাহিরে বেরিয়ে হয়ে গেল কাব্য’!!
“কারো মুখে নিজের নাম শুনে ঘুম ভাঙল আমার’!!চোখ ডলতে ডলতে শোয়া থেকে উঠে বসলাম আমি’!!তারপর আশেপাশে তাকিয়ে দেখলাম সেই ছোট্ট ঘরটায় আছি আমি’!!এখানে কখন আসলাম আমি’!!মস্তিষ্কের কোনায় এসে কথাটা বেজে উঠল আমার’!!এমন সময় কাব্য বলা কথাটা মাথায় বেজে উঠলঃ
——–“তাড়াতাড়ি তৈরি হ আমাদের যেতে হবে……..
“আমিও তার কিছু না ভেবে উঠে দাঁড়ালাম’!!তারপর ধীরো পায়ে বাহিরে বের হতেই দুজন মানুষকে দেখে চমকে গেলাম’!!ওনারা আমায় দেখে বললোঃ
——–“ঘুম ভাঙছে তাইলে…….
“ওনার কথা শুনে মাথা নাড়ালাম আমি’!!তারপর মহিলাটা বলে উঠলঃ
——–“ওদিকে একটা পুকুর আছে যাইয়া মুখ ধুইয়া আসো……
“আমিও ওনাদের কথা ওনার দেখানো পথের দিকে পা বাড়ালাম’!!এই মুহূর্তে মাথায় শুধু একটা কথাই বাজছে ওনারা আসলো কোথা থেকে…….
“হাঁটতে হাঁটতে একটা পুকুর দেখলাম আমি’!!কাব্য ছিলো সেখানে’!!আমায় দেখে ভাইয়া বলে উঠলঃ

——–“তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আয় ঠিক আছে……..
“ভাইয়ার কথা শুনে মাথা নাড়ালাম আমি’!!
“আমার মাথা নাড়ানো দেখে ভাইয়া চলে গেল’!!
তারপর আমি পুকুরে নেমে চোখে মুখে পানি দিয়ে ফ্রেশ হলাম…….’!!
“কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢুকে দেখলাম কাব্য ওনাদের সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে’!!তারপর আমায় দেখে ওনারা বলে উঠলঃ
——-“আইছো ওই হানে একখান গামছা আছে মুখটা মুছে খাইতে আহো……
“আমিও ওনার কথা মতো মুখে মুছে বসে পরলাম কাব্যের পাশে’!!তারপর খাবার খেতে শুরু করলাম’!!তারপর ওনারা অনেক কথা বললো যে এই বাড়িটায় তারাই থাকে”!!তাদের খুব ভালো লাগলো আমার’!!তারপর খুশি মনে গল্প করতে করতে খাবার শেষ করলাম আমরা’!!!

কতোটা চাই তোকে পর্ব ১৩

“তারপর ওনাদের কাছ থেকে বিদায় চলে আসলাম আমরা’!!
——“সবকিছুই ঠিক আছে শুধু এতটুকু মাথায় ঢুকলো না ওনাদের বাড়ি ওটা হলে কালকে কোথায় ছিলো ওনারা…….
“আমার কথা শুনে কাব্য ভাইয়া বলে উঠলঃ
——–“তোর ওতো বুঝে কাজ আছে কোনো…….
“বিনিময়ে আমি কিছু বললাম না’!!আর ভাইয়াও কিছু বললো না’!!গাড়ি চালাতে লাগলো তার আপন গতিতে……….
“তবে আর যাই বলো জায়গাটা খুব সুন্দর ছিলো”…….

কতোটা চাই তোকে পর্ব ১৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.