কতোটা চাই তোকে - Golpo Bazar

কতোটা চাই তোকে পর্ব ৬ || he Story of a psycho lover

কতোটা চাই তোকে

কতোটা চাই তোকে পর্ব ৬
Writer:-TanjiL Mim

মাথা নিচু করে বিছানায় বসে আছি আমি আর বাকি সবাই রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে’!!আর সবার চেয়ে বেশি রাগী লুকিং এ আছে কাব্য ভাইয়া’!!অবশ্য দোষটা আমার ছিল বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গিয়ে হাতে গুরুতরভাবে আঘাত পেয়েছি আমি’!!গোসল করার সময় হর্ঠাৎই পা পিছলে পড়ে যাই আমি’!!আমার চেঁচানো আওয়াজে কাব্য ভাইয়া আসে’!!তারপর আমার অবস্থা দেখে আমায় কোলে তুলে নিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেই তরপর একে একে সবাই চলে আসে রুমে’!!এসেই সবার বকাঝকা শুরু…….যেমন এখনটা দিচ্ছে মামুনি’!!
———“তুই কি কানা নাকি চোখে দেখিস না,,কি করে পরলি বলতো…….
———-“সরি মামুনি কি করে পড়ে গেলাম আমি নিজেও জানি না’!!
———“কি কলে পরলাম আমিও জানি না মামুনি এটা কোনো কথা মাইশা…….
———“সরি আমার কি দোষ বলো আমি তো এই বলে যেই না হাতটাকে একটু নাড়াতে গেলাম তখনি ব্যাথায় মুখ থেকে বেরিয়ে আসল ”আস”
“আমার ব্যাথার আওয়াজে মামুনি তাড়াতাড়ি করে একটা মলম নিয়ে আসলো’!!”তারপর হাতে মলম লাগিয়ে দিল’!!তারপর একে একে সবাই চলে গেল’!!শুধু থেকে গেল কাব্য ভাইয়া’!!……
“চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে ভাইয়া’!!যা দেখে ভয়ে চুপটি করে বসে আছি আমি কোনো কথা বলছি না’!!
“হর্ঠাৎই ভাইয়া সামনে এসে বললোঃ
——–“তোর চোখ কোথায় থাকে,কখন কোথায় কিভাবে হাঁটতে হয় সেটাও জানিস না’!!ইডিয়েট মেয়ে কোথাকার,,এতটুকু বলে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চলে গেল কাব্য ভাইয়া’!!ভাইয়া যেতেই জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে লাগলাম আমি’!!
——–“ধুর ভাল্লাগে না এমনিতেই মন টা ভালো ছিল না তারপর ওপর হাতটায় ব্যাথা পেয়েছি,,উফ কি যন্ত্রণা করছে এই বলে ফু দিতে লাগলাম আমি’!!ব্যাথা পাইছি তো পাইছি ডান হাতটায় পেতে হলো এখন আমি খাবার খাবো কিভাবে……..

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“রাত_৯ঃ০০টা………
“বিছানায় বসে আছি আমি’!!আর নিচে সবাই খাবার খাচ্ছে’!!অবশ্য মামুনি বলেছে নিচে সবাইকে খাবার দিয়ে আমার জন্য খাবার নিয়ে আসবে’!সেই অপেক্ষায় বসে আছি আমি’!!হাতে ব্যাথার কারনে আমাকে নিচে যেতে বারন করেছে মামুনি’!!ধুর এই মুহুর্তে নিজের প্রতি নিজেরই রাগ হচ্ছে আমার’!!কি করে যে পড়ে গেলাম বুঝতেই পারি নি’!!এদিকে খিদেও পেয়েছে খুব’!!এই মুহূর্তে আম্মুর কথা ভীষণ মনে পরছে আমার’!!এখন যদি বাসায় থাকতাম আম্মুও মামুনির মতো খাবার নিয়ে এসে খাইয়ে দিতো’!!ভাবতেই মনে মনে খুশি হয়ে পরক্ষণেই দীর্ঘশ্বাস ফেললাম আমি’!!এমন সময় দরজার খোলার আওয়াজে নড়েচড়ে বসলাম আমি’!!সামনে তাকিয়ে কাব্য ভাইয়াকে দেখে ভয়ে কিছুটা মাথা নিচু করে ফেললাম আমি,,না জানি আবারো বকা দেয় নাকি…..
“হর্ঠাৎই ভাইয়া এসে আমার পাশে বসলো’!!হাতে তার খাবার প্লেট’!!কিন্তু ভাইয়া কেন নিয়ে আসলো মামুনির আনার কথা ছিলো তো’!!কিন্তু আনছে যখন খেতে তো হবেই কিন্তু খাবো কিভাবে আমি তো হাত নাড়াতেই পারছি না’!!এসব আলতু- ফালতু ভাবনার মাঝে ভাইয়া বলে উঠলঃ
——–“হা কর…….
“ভাইয়ার কথা শুনে চোখ বড় বড় করে তাকালাম আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ভাইয়া আমার দিকে এক লোকমা খাবার মুখের কাছে ধরে রেখেছে…….
“আমি হা হয়ে তাকিয়ে রইলাম ভাইয়ার কান্ড দেখে’!!আমাকে এই ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভাইয়া বলে উঠলঃ
——-“কি হলো কথা কি কানে যাচ্ছে না তোর”!!
“ভাইয়ার কথা শুনে কিছুটা হকচকিয়ে উঠলাম আমি’!!তারপর বলে উঠলামঃ
———“তুমি আমায় খাইয়ে দিবে ভাইয়া…….
———“তুই আবার আমায় ভাইয়া ডাকছিস……
“ভাইয়ার কথা শুনে ঠোঁটে কামড় দিলাম আমি’!!তারপর একসাথে বলতে লাগলামঃ
———-“সরি সরি ভাইয়া সরি থুক্কু প্লিজ রাগ করো না আমি চেষ্টা করছি তো ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে,,প্লিজ এখন কোনো শাস্তি টাস্তি দিও না’!!এমনিতেই হাতে যন্ত্রণায় আমি সহ্য করতে কষ্ট হচ্ছে……
_____________________
“এদিকে মাইশার কথা শুনে কাব্যের বুকের ভিতর ব্যাথা শুরু হয়ে গেল’!!তার সাথে রাগ ও উঠতে লাগলো’!!তার তো ইচ্ছে একটা থাপ্পড় মেরে দিতে মাইশাকে’!!তারপর যথা সম্ভব নিজের রাগকে কন্টোল করে বলে উঠল সেঃ
——–“ব্যাথা তো করবেই ওই রকম পাগলের মতো কাজ করলে তো ব্যাথা পাবি’!”না জানি কিভাবে পড়ে গেছোস তুই যা হয়েছে ভালো হয়েছে,,ইস্টুপিট মেয়ে……..
——–”আমি পাগল,সাথে ইস্টুপিট (মনে মনে)
——–“কি হলো চুপ কেন আর এত কথা শুনতে চাই নি মা বললো তোকে খাবার খাইয়ে দিতে তাই খাবার খাইয়ে দিচ্ছি এত কথা কেন বলছিস তুই তাড়াতাড়ি হা কর’!!(দমক দিয়ে)
“ভাইয়ার দমক শুনে তাড়াতাড়ি করে খাবার খেতে লাগলাম আমি’!!এই প্রথমবার ভাইয়া আমাকে নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দিচ্ছে ভাবতেই অবাক লাগছে’!!এর আগে যতবার ভাইয়ার সাথে দেখা আর কথা হয়েছে ততবারই শুধু বকা দিত,,কোনো ছেলের সাথে কথা বললে মন্দ বললো রাগারাগি করতো’!!আর ভাইয়া রেগে গেলে খুব কড়া শাস্তি দিতো’!!এই প্রথম ভাইয়া খুব কম বকা দিসে তার সাথে আবার খাবারও খাইয়ে দিচ্ছে’!!মনে মনে খুব ভালো লাগছে’!!ভাইয়া আমায় খাইয়ে দিচ্ছে আর আমি অপলকভাবে তাকিয়ে আছি ভাইয়ার দিকে’!!এই মুহুর্তে ভাইয়াকে সত্যি অন্যরকম লাগছে’!!কে বলবে এই ছেলেটা এতটা রাগী আর বদমেজাজি……..
“বেশকিছুক্ষন পর ভাইয়া আমায় সব খাবার খাইয়ে দিয়ে খাবার প্লেট নিয়ে চলে গেল’!!আমিও পানি খেয়ে শুয়ে পরলাম’!!কেন জানি না ভাইয়ার প্রতি এক অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করছে’!!আজ বুঝতে পেরেছি ভাইয়া আসলে বাইরে থেকে যতটা রাগী বুঝায় আসলে ভাইয়া ততটা রাগী নয়’!!ভেতরটা হয়তো অনেক নরম’!!এইভেবে মুচকি হেঁসে চোখ বন্ধ করে ফেললাম’!!ধীরে ধীরে ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেলাম আমি’!!

“রাত ১২ঃ০০টা………
“রুমে ঢুকে লাইট অফ করে দিল কাব্য’!!তারপর এসে বসে পরলো বিছানায়’!!কাব্য এই দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মাইশার মুখের দিকে’!!জোৎসা ভরা রাতে জানালা ভেদ করে চাঁদের আলো এসে মুখে পরছে মাইশার’!!কতোটা না মায়াবী লাগছে মাইশাকে কাব্যের কাছে’!!!কাব্যের হাত অটোমেটিক চলে যায় মাইশার মাথার কাছে’!!তারপর মুখ থেকে বেরিয়ে আসে একটা “পাগলী মেয়ে” আর এখন তো “পাগলী বউ” আমার’!!এই পাগলীটার জন্য সেই ছোট বেলা থেকে পাগল আমি’!!অথচও এই পাগলীটা আজও বুঝতে পারলো না’!!কবে বুঝবি তুই #কতোটা_চাই_তোকে আমি’!!তুই শুধু আমায় ভয় পেয়ে গেলি কখনো ভালোবাসতে পারলি না’!!তবে আমি জানি আজ নয় কাল একদিন ঠিকই বুঝবি তুই আমার ভালোবাসা’!!আর আমি সিউর একদিন তুইও আমায় ভালোবাসবি’!!হয়তো আমার চেয়েও বেশি’!!কিন্তু কবে পাগলী,,কবে আসবে সেই দিন’!!তোর মুখে ভালোবাসার কথাটা শোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে আছি আমি’!!কবে এই ব্যাকুলুতার অবসান ঘটবে’!!আমি জানি মাইশা তোকে যেভাবে বিয়ে করেছি আমি সেটা হয়তো করা উচিত হয় নি’!!কিন্তু কি করব বল আর তো কোনো উপায় ছিল না’!!সেদিন তোকে ওইভাবে বিয়ে না করলে হয়তো সারাজীবনে জন্য হারিয়ে ফেলতাম আমি’!!তার সাথে রিয়াও কষ্ট পেতো’!!আমরা কেউও সুখী হতাম না’!!তার চেয়ে বরং এটাই ঠিক হয়েছে তুই আমায় ভালো না বাসিস কমছে কাম চোখের সামনে তো থাকবি এটাই আমার জন্য অনেক’!!তোর দুষ্ট মিষ্টি কথাগুলো যে আমার খুব ভালো লাগে’!!এখন শুধু অপেক্ষা তোর ভালোবাসার’!!এইভেবে দীর্ঘ শ্বাস ফেললো কাব্য’!!তারপর মাইশার কপালে ছোট্ট একটা চুমু দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরল কাব্য’!!
__________________________________________
_____________________
“সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখলাম ভাইয়া আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে’!!ভাইয়া এতটাই শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে যে আমি নড়তেও পারছি না’!!এখন কি করবো’!!হাতের ব্যাথায় তো কিছু করতেও পারছি না’!!হর্ঠাৎই ভাইয়ার মুখের দিকে চোখ গেল আমার’!!কতোটা সুন্দর লাগছে ভাইয়াকে চুলগুলো পড়ে আছে ভাইয়ার কপালে’!!ইচ্ছে তো করছে হাত দিয়ে সরিয়ে দেই’!!কিন্তু এই মুহুর্তে সেটা কোনোভাবেই পসিবল নয়’!!হর্ঠাৎই ভাইয়া একটু নড়েচড়ে উঠলো’!!ভাইয়াকে এভাবে নড়তে দেখে খিচে চোখ বন্ধ করে ফেললাম আমি’!!না জানি আমি উঠে গেছি দেখে কি বলবে…….
“কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে তাকালাম আমি’!!!ভাইয়া এখনো ঘুমিয়ে আছে’!!ভাইয়া নড়ে যাওয়াতে কিছুটা সুবিধা হলো আমার’!!আস্তে আস্তে ভাইয়ার হাত সরিয়ে উঠে পড়লাম আমি’!!তারপর বিছানা থেকে উঠে এসে চলে গেলাম ওয়াশরুমে……
“কিছুক্ষন পর ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসলাম আমি’!!!ভাইয়া তখনও ঘুমিয়ে ছিলো’!!আমি আর কিছু না করেই চলে গেলাম নিচে……..

“দেখতে দেখতে কেটে গেল পুরো একসপ্তাহ’!!এখন আমার হাত আর আমি দুজনেই পুরোপুরি সুস্থ’!!এখন আর কোনো অসুবিধা নেই হাত নড়াচড়া করতে’!!এই সপ্তাহে প্রতিদিনই ভাইয়া আমায় খাবার খাইয়ে দিসে’!!বিষয়টা খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে’!!আজকে থেকে বিষয়টা মিস করবো খুব’!!আমার ভাবনার মাঝে তানিশা রুমে এসে বললোঃ
——–“তোর কি হয়েছে ভাইয়া তো মনে হয় আমাদের রেখেই চলে যাবে…..তারওপর ভার্সিটিতে যেতেও তো দেরি হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি কর বোইন……
“তানিশার কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দিয়ে চলে আসলাম আমি’!!তারপর তানিশাকে বলে উঠলামঃ
——–“চল আমি তৈরি…….
——–“হুম চলেন ভাবীজান…….
“তানিশার কথা শুনে হাসলাম আমি’!!তারপর দুজনেই একসাথে চলে আসলাম নিচে’!!তারপর মামুনি আর মামার কাছ থেকে বিদায় জানিয়ে চলে আসলাম আমরা বাহিরে……..
“গেটের বাইরে বের হতেই দেখলাম কাব্য ভাইয়া গাড়ির কাছে এলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে’!!পরছে তার ব্লাক শার্ট ব্লাক জিন্স হাটা কনুই পর্যন্ত বোল্ড করা,,ভাইয়াকে দেখিছি বেশি ভাগ সময় ব্লাকই পড়ে আর দেখতেও খুব সুন্দর লাগে’!!যেমনটা এখন লাগছে’!!হর্ঠাৎই চোখ গেল ভাইয়ার চোখের দিকে ভাইয়া চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে’!!যা দেখে কলিজার পানি শুকিয়ে গেছে’ আমার’!!না জানি এখন আবার কি বলে বকা দিবে…….
“আমার সামনে যেতেই ভাইয়া চেঁচিয়ে বলে উঠলঃ
——-“তোদের এত সময় লাগে আসতে ভার্সিটি যাচ্ছিস নাকি বিয়ে বাড়ি’!!
——–“আর বলো না ভাইয়া এই মাইশাই তো…….
“এতটুকু বলতেই তানিশার পায়ে পাড়া দিলাম আমি’!!সাথে সাথে তানিশা আহ বলে চেঁচিয়ে উঠল’!!
“কাব্য ভাইয়া হয়তো বুঝতে পেরেছে ঘটনাটা কি তাই আর তেমন কিছু না বলে শুধু বললোঃ
——-“ঠিক আছে এখন চল তাড়াতাড়ি তোদের ভার্সিটি দিয়ে আমি অফিস যাবো……..
“ভাইয়ার কথা শুনে আমরা দুজনেই একসাথে পিছনের সিটে বসতে গেলে ভাইয়া বলে উঠলঃ
——-“এই তোদের কি আমাকে তোদের ড্রাইভার মনে হচ্ছে’!!একজন সামনে বস এই বলে ভাইয়া ড্রাইভার সিটে বসে পরলো…..
“আমি তানিশার হাতে খোঁচা মেরে বললামঃ
——–“তুই গিয়ে বসে পর……
———“আমি পারুম না তুই বস…….
——–“বস না বোইন…..
——–“না মানে না……
“এমন সময় ভাইয়া চেচিয়ে বললঃ

কতোটা চাই তোকে পর্ব ৫

——–“তোরা কি বসবি নাকু তোদের রেখেই চলে যাবো…….
“ভাইয়ার চেঁচানোর আওয়াজে আমি আর কিছু না বলেই তাড়াতাড়ি গিয়ে বসে পরলাম ভাইয়ার সাথে সামনের সিটে’!!আর তানিশা পিছনে…..
“আমরা বসতেই ভাইয়া গাড়ি চালাতে শুরু করল………..

কতোটা চাই তোকে পর্ব ৭

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.