কেয়ারিং হাসবেন্ড পর্ব ২+৩
শহীদ উল্লাহ সবুজ
— সবুজ মেয়েটা খুব ভালো। আর তোর না বাচ্চা খুব পছন্দের তার একটা ফুটফুটে মেয়ে আছে খুব সুন্দর এই দেখ মেয়েটার ছবি।
সবুজের ফুফি তার দিকে মোবাইলটা এগিয়ে দিলো। আর মেয়ের ছবি দেখেই খুব ভালো লেগো। সবুজ বলল — আচ্ছা ঠিক আছে।
— আমি জানি তুই আমার কথা ফেলবি না। এখন তাহলে উঠি আমরা বিকালে যাবো ওই বাড়িতে।
— আচ্ছা।
তারপর ফুফি চলে গেলো। দেখতে দেখতে বিকাল হয়ে গেলো। সবুজ সহ সবাই মিলে চলে গেলো নেহাদের বাসায়। সবাই নিজেদের মধ্যে পরিচয় হয়ে নিল। একটু পরে নেহার আম্মু নেহার মেয়ে মাইসা চলে আসলো তাদের কাছে। ছবিতে যেমন মিষ্টি লাগছিলো বাস্তবে মেয়েটা আরো বেশি মিষ্টি।
সবুজ মাইসার দিকে তাকাতেই মাইসা ও সবুজের দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি করে হাসি দিলো। একটু পরে নেহা সবার জন্য চা নিয়ে আসলো।
পর্ব গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
সবাইকে চা দিয়ে নেহা সবার সামনে বসল। সবুজের আব্বু নেহাকে কিছু প্রশ্ন করলো আর নেহা সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিলো৷ নেহাকে সবার পছন্দ হয়েছে। আর সবুজ নেহার দিকে ভালো ভাবে তাকালোও না সবুজের নজর ছিলো মাইসার দিকে। মেয়েটা এতো মিষ্টি যে চোখ সরাতে পারছেনা।
নেহা বলল — আমার ওনার সাথে একটু কথা ছিল!
— হুম বলতে পারো সমস্যা নাই। তোমাদের মধ্যে কথা থাকতেই পারেই। যাও তোমরা আলাদা ভাবে কথা বলে আসো।
এবার নেহা সবুজকে নিয়ে নেহার রুমে চলে গেলো।সবুজ নেহার রুমে গিয়ে দেখে রুমটা খুব সুন্দর করে ঘুছিয়ে রেখেছে। সবুজ গিয়ে খাটের উপরে চুপচাপ বসে রইলো।
নেহা সবুজকে বলল — আপনাকে আলাদা ভাবে ডেকে আনার কারণটা হচ্ছে আপনি আমাকে বিয়ে করতে চাইলে আমার মেয়েকে মেনে নিতে হবে। আপনি কি আমার মেয়ের দ্বায়িত্ব নিতে পারবেন?
— আমার বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে ছিলনা। আমি আপনার মেয়েকে দেখেই আপনাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি। আমি আপনার মেয়েকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসবো।
সবুজের কথা শুনে নেহা অনেক খুশি হয়ে গেলো। সবুজ বলল — আর কিছু?
— না।
— চলুন তাহলে সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করে বসে আছে।
— জ্বী চলুন।
তারপর দুজনে এক সাথে সবার কাছে চলে গেলো। বিয়ের দিন ঠিক করা হলো। দেখতে দেখতে বিয়েও হয়ে গেলো। বড় করে কোনো অনুষ্ঠান করা হয়নি। ছোটখাটো ভাবে অনুষ্ঠান করে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করা হলো। বিয়ের কাজ সম্পন্ন করে নেহাকে নিয়ে যাওয়া হলো সবুজের বাসায়।
বাসর ঘরে বসে আছে নেহা। তার পাশেই শুয়ে আছে নেহার বাচ্চা মেয়ে মাইসা। নেহা বাসর ঘরে চুপটি করে বসে আছে। কিন্তু সবুজের আসার কোনো খবর নেই। রাত অনেক হয়ে গেলো কিন্তু সবুজ এখনো আসছেনা। লাল শাড়ি তে নেহাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। হালকা সাজে নেহাকে অনেক সুন্দর লাগছে। কিছুক্ষণ পরে দরজার শব্দ শুনে নেহা নড়েচড়ে বসে।
আর বুঝতে পারে তার স্বামী বাসর ঘরে প্রবেশ করছে। নেহা উঠে এসে সবুজের পায়ে সালাম করলো। তারপর নেহা আবার খাটের উপরে চলে গেলো। সবুজ নেহার পাশে গিয়ে বলল — লেট হওয়ার জন্য দুঃখিত। সারাদিন হয়তো বিয়ের দখলে কিছু খেতে পারেননি। খাবার নিয়ে আসছি আসেন খেয়ে নেই। আমিও খাইনি অনেক্ষন হলো অনেক খিদে পেয়েছে আমার।
— আপনি খেয়ে নিন আমার খিদে নেই।
— রাতে খাবার না খেলে শরীর খারাপ করবে। আসেন খেয়ে নিন।
নেহা আর কোনো কথা না বলে সবুজের সাথে খাবার খেতে বসে গেলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে নেহা আবার খাটের উপরে চলে আসলো। সবুজ খাটের দিকে তাকিয়ে দেখে মাইসা ঘুমিয়ে আছে।
নেহা বলল — ওকে কি অন্য রুমে রেখে আসবো?
— না ও এখানেই থাকবে আমাদের সাথে। আমার কোনো সমস্যা নেই।
নেহা আর কিছু না বলে নিশ্চুপ হয়ে বসে রইলো। তখন সবুজ বলল — আমি আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই। এই রাতটা আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ রাত। আর আমরা বিয়ের আগে কেউ কাওকে ঠিক করে চেনারও সময় পায়নি। আচ্ছা আপনার কি কোনো কথা আছে?
— হুম আছে সেটা আমি পরে বলব আগে আপনার কথা বলুন। আর হ্যাঁ! আপনি না বলে আমাকে তুমি করে বলুন।
— ঠিক আছে। দেখো নেহা আমার পরিবারে আমি আর আমার বাবা ছাড়া আর কেউ নাই। আমাদের পরিবারটা খুব ছোট হলেও ভালোবাসার কিন্তু কোনো কমতি নেই। আমি চাই তুমি আমার বাবার সাথে ভালো ব্যবহার করবে। আমার বাবা যেনো তোমাকে এই বাড়ির বউ না মনে করে মেয়ে মনে করে।
আর যতই খারাপ সময় আসুক আমরা এক হয়ে থাকবো। আর একজন ভালো স্বামী হওয়ার জন্য যা করতে হয় আমি তাই করবো। ওহ ভুলেই গিয়েছিলাম আমি তো শুধু স্বামী না তোমার বাচ্চার বাবাও আমি। একজন ভালো স্বামী হওয়ার আগে ভালো ফ্রেন্ড হতে হয়। আমি আমার সবটা দিয়ে তোমাদের ভালো রাখার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।
সবুজের কথা শুনে নেহার মন খুশিতে ভরে গেলো। নেহা বলল — আচ্ছা আমাদের যখন বাচ্চা হবে তখনকি আমার মেয়েটা অবহেলিত হয়ে যাবে? কারণ আর যাইহোক কোনো মানুষ তার রক্তের কাওকে ছাড়া অন্য কাওকে এতোটা ভালোবাসেনা।
নেহার কথা শুনে সবুজ চুপ হয়ে গেলো। চুপ থাকার কারণ টা নেহা বুঝতে পারেনি। হয়তো আপনাও বুঝতে পারেন নাই গল্পের সাথে থাকুন বুঝতে পারবেন।
নেহা সবুজকে চুপ হয়ে থাকতে দেখে নেহা ভাবছে তার কথা সবুজের কাছে হয়তো খারাপ লাগছে তাই নেহা আবার বলল — সরি আমি ওই ভাবে বলিনি।
— সরি বলার কিছুই হয়নি।
— তাহলে চুপচাপ হয়ে আছেন কেন?
— এমনি। আচ্ছা চলুন ছাদে যাই। আজকের আকাশটা খুব সুন্দর।
— মাইসা?
— ও তো ঘুমিয়ে আছে। আর আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবো।
— আচ্ছা ঠিক আছে চলুন তাহলে।
এবার দুজনেই ছাদের উপরে চলে আসলো। সবুজ নেহাকে সাথে ছাদের এক কোণে চলে গেলো। আর দুজনেই দাঁড়িয়ে চাঁদের দিকে তাকিয়ে রইলো। হালকা বাতাসে শরীর যেনো শীতল হয়ে আসছে।
সবুজ বলল — আকাশ টা আজ অন্যরকম লাগছে কেনো জানি। যেনো অন্যরকম ভাবে সেজেছে আকাশ।
নেহা সবুজের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল — আকাশ দেখতে ভালোবাসেন বুঝি?
— হুম খুব। যখন মন খারাপ হয় তখন আমি এখানে আসলেই আমার মন ভালো হয়ে যায়। আর চাঁদ দেখতে আমার অনেক বেশিই ভালো লাগে। আর এখানে আসলে আমার মনে হয়না আমি একা।
— কেন?
— কারণ আমি মনে করি আমার মা আমার সঙ্গে আছে।
— আপনার মাকে অনেক ভালোবাসেন তাইনা?
— হুম। আমার সব আপন লোক আমাকে ছেড়ে চলে যায়।
— সব মানে?
— কিছুনা।
— ওহ।
— তোমার ভালো লাগে না চাঁদ দেখতে?
— আমি তেমন একটা দেখিনা আজ কেনো জানি খুব ভালো লাগিছে। শীতল বাতাসে খুব ভালোই লাগছে আমার কাছে।
— হুম। আমি প্রায় সময় ছাদের উপরেই কাটিদেই অনেক রাত।
— ওহ।
— আচ্ছা অনেক রাত হচ্ছে এবার আমাদের রুমে যাওয়া উচিৎ।
— হুম চলুন।
তারপর দুজনেই রুমে চলে গেলো। সবুজ নেহাকে বলল — এবার ঘুমিয়ে পড়ুন। আপনি হয়তো খুব ক্লান্ত। আর রাত ও অনেক হয়েছে।
নেহা কোনো কথা না বলে শুয়ে পড়ে। সবুজ ও শুয়ে পড়ে। তাদের মাঝা খানে মাইসা ঘুমাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে দুজনের চোখেই ঘুম নেমে আসে। সকালে নেহা ঘুম থেকে উঠে দেখে সবুজ বিছানায় নেই। নেহা তাড়াতাড়ি উঠে বসে পড়ে। নেহা ভাবতে থাকে এতো সকালে লোকটা কোথায় যেতে পারে?
#কেয়ারিং_হাসবেন্ড
[৩য় পর্ব]
লেখক – শহীদ উল্লাহ সবুজ
নেহা সবুজকে না দেখে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। রুম থেকে বেরিয়ে নেহা রান্না ঘরের দিকে তাকিয়ে দেখে সবুজ রান্না করছে। নেহা এবার রান্না ঘরের দিকে গিয়ে বলল — আপনি এখানে কি করছেন?
সবুজ নেহার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল — রান্না করছি। আব্বু ঘুম থেকে উঠলে আগে খাবার দিতে হবে। আর এখন তো তুমিও আছো খেতে হবেনা নাকি?
— তাই বলে আপনি রান্না করবেন?
— হুম সবসময় তো আমিই রান্না করি। আর এতো সকাল সকাল কাজের মেয়ে টাও আসেনা। তাই আমাকেই রান্না করতে হয়।
— আজ থেকে আর আপনাকে রান্না করতে হবেনা। এখন আমি চলে আসছি আমিই রান্না করবো। আর হ্যাঁ কাজের মেয়েটাকে না করে দিবেন।
— ঠিক আছে। কিন্তু তুমি এতো কাজ কি ভাবে করবে? আর তুমি এতো কাজ করলে মাইসাকে কে দেখবে?
— আমি যখন কাজ করবো তখন আপনি আছেন না? এখন রুমে যান আমি রান্না করছি।
— আচ্ছা ঠিক আছে৷ কোথায় কি আছে আমি সব দেখিয়ে দিচ্ছি। নাহলে আবার খুঁজে পাবেনা।
— তা ঠিক।
তারপর সবুজ সব কিছু নেহাকে দেখিয়ে দিয়ে রুমে চলে আসলো। রুম থেকে নিজের রুমে চলে গেলো। সবুজ রুমে গিয়ে দেখে মাইসা ঘুম থেকে উঠে কান্না করছে। সবুজ তাড়াতাড়ি গিয়ে মাইসাকে কোলে তুলে নেয়। মাইসা সাথে কান্না বন্ধ করে দেয়। সবুজ মাইসাকে কোলে তুলে হাটতে থাকে। মাইসা আবার ঘুমিয়ে পড়ে। নেহা রান্না শেষ করে এসে দেখে সবুজ মাইসাকে কোলে নিয়ে হাটাহাটি করছে। আর মাইসা ঘুমিয়ে আছে। নেহা মাইসাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে মনে মনে ভাবতে থাকে – মাইসা তো তার কোলে ছাড়া অন্য কারো কোলে গেলে কান্না করে কিন্তু উনি কি ভাবে পারলো ওকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে?
নেহা সবুজের কাছে গিয়ে বলল — ও তো ঘুমিয়ে গেছে আপনি এখনো হাটছিলেন কেন?
— ঘুমিয়ে গেছে? খেয়াল করি নাই। আচ্ছা তাহলে শুইয়ে দেই।
তারপর সবুজ মাইসাকে বিছানার উপরে শুইয়ে দিলো।
নেহা বলল — বাহ আপনি তো দেখছি যাদু জানেন?
— কিসের যাদু?
— এইযে মাইসা তো অন্য কারো কোলে যেতে চায়না আর খুব সহজেই আপনার কোলেই ঘুমিয়ে গেলো।
— দেখতে হবেনা বা,, এই কথা বলে সবুজ আর কিছুই বলল না। আর সে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
নেহা নিজে নিজে বলতে থাকে– কি হলো ওনার? বুঝলাম না কিছুই।
সবুজ যাওয়ার সাথে সাথে মাইসা ঘুম থেকে উঠে কান্না শুরু করে দিলো। কিন্তু কিছুতেই নেহা মাইসার কান্না থামাতে পারছেনা। নেহা মাইসাকে খাওয়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু মাইসা খাচ্ছেনা। মাইসার কান্নার শব্দ শুনে সবুজ রুমে চলে আসছে। এসে দেখে মাইসা নেহার কোলে কান্না করছে। আর নেহা খাবার নিয়ে বসে আছে।
সবুজ এসে বলল — কি হইছে মাইসা এই ভাবে কান্না করছে কেন?
— জানিনা ঘুম থেকে উঠেই কান্না করছে কিছুই বুঝতে পারছেনা। হঠাৎ করে এমন করছে কেন?
নেহার কোল থেকে সবুজ মাইসাকে নিয়ে নিজের কোলে তুলে নিলো। আর সে বলল — কি হয়েছে মা? কান্না করছো কেন? আম্মু কি বোকা দিছে? আর বোকা দিবেনা আমি চলে আসছি। আর কান্না করেনা।
মাইসার কান্না সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গেলো। নেহা তো অবাক হয়ে গেলো।
সবুজ বলল — আমাকে দাও আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
এবার সবুজ মাইসাকে খাইয়ে দিতে থাকে। আর মাইসা ও খুব ভালো ভাবে সবুজের হাতে খাবার খেতে থাকে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবুজ মাইসাকে নিয়ে তার বাবার রুমে চলে যায়।
এই দিকে নেহার ফোন বেজে উঠে। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে নেহার আম্মু কল দিয়েছে। নেহা তাড়াতাড়ি করে কোল রিসিভ করলো।
— কেমন আছো আম্মু?
— আলহামদুলিল্লাহ। তুই কেমন আছিস? আর মাইসা কেমন আছে?
— আমরা ভালোই আছি। আব্বু কেমন আছে?
— ভালো আছে। তা মা ওখানকার সবাই কেমন আছে? আর জামাই?
— সবাই ভালো আছে।
— ওহ। তা মা ছেলেটা কেমন?
— উনি তো খুব ভালো। আর আসল কথা কি জানো?
— কি?
— মাইসার খুব ভালো খেয়াল রাখতে পারে উনি। মাইসা সব সময় ওনার কাছেই থাকে। ওনাকে ছাড়া কিছুই বুঝে-না। তারপর সব কিছুই বলল।
নেহার আম্মু অনেক খুশি হয়ে গেলো। নেহার আম্মু বলল — মা তোর কাছে আমরা একটা কথা গোপন রেখেছি।
— কি কথা?
— আসলে মা সবুজ ও বিবাহিত। দুই বছর আগে ওর ডিভোর্স হয়ে গেছে। তবে কি জন্য ডিভোর্স হইছে তা আমি জানি না।
— ওহ। তাতে আমার কোনো সমস্যা নাই। আমার মেয়েটা তো একজন ভালো বাবা ফেলো সেটাই অনেক।
— আচ্ছা ঠিক আছে মা ভালো থাকিস এখন রাখি।
— ঠিক আছে।
অন্যদিকে মাইসাকে কোলে নিয়ে সবুজ তার বাবার রুমে চলে গেলো। তারপর তারা সবাই মিলে মজা করতে থাকে। মাইসাও সবার মাঝে থেকে হাসতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে নেহাও রুমে আসে। এসে দেখে সবাই মাইসার সাথে দুষ্টুমি করছে।
নেহা বলল — আপনারা কি খাবার খাবেন না? নাকি না খেয়েই থাকবেন আপনারা?
সবুজের আব্বু বলল — আরে মা খাওয়ার কথা তো সত্যিই ভুলেই গিয়েছিলাম মাইসাকে কাছে পেয়ে।
— ঠিক আছে এখন খেতে আসুন আপনারা।
— হুম চল মা।
সবাই খাবার খেতে শুরু করলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবুজ বাহিরে চলে গেলো। অনেক্ষন ঘুরাঘুরি করে বাসায় ফেরার সময় সবুজ মাইসার জন্য কিছু খাবার জিনিস কিনে নিলো। আর মাইসার জন্য কিছু খেলার জিনিস। আর পায়ে হাটার একটা খেলনা গাড়ি। (আসলে ওটার নাম যেনো কি? আমি নামটা জানিনা। বাচ্চার যে একটা গাড়িতে উঠে হাটে! নিচে ছোট ছোট অনেক গুলো চাকা থাকে। যাইহোক আমি ওটার নাম জানিনা দুঃখিত। কেউ নাম জানলে কমেন্ট করে বলবেন প্লিজ।) তো সবুজ এসব কিনে বাসায় ফেরার পথে একটা ফুলের দোকান চোখের সামনে পড়ে। সবুজ সেই ফুলের দোকানে গিয়ে নেহার জন্য বেলি ফুল কিনে নেয়। এসব নিয়ে সবুজ বাসায় চলে যায়।
সবুজ বাসায় গিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। রুমে গিয়ে দেখে নেহা মাইসার পাশে শুয়ে আছে। নেহা সবুজকে দেখে উঠে বসে গেলো। আর সবুজের হাতে এসব দেখে বলল — কি এসব?
— মাইসার জন্য কিছু খাবার আর ওর জন্য কিছু খেলার জিনিসপত্র নিয়ে আসলাম।
— কেনো শুধু শুধু এতো টাকা অপচয় করতে গেলেন?
— এ তেমন কিছুনা। তোমার জন্য একটা জিনিস এনেছি।
— কি জিনিস?
এবার সবুজ নিজের পকেটে হাত দিয়ে বেলি ফুলের মালা বের করে নেহার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল — এই মালা তোমার জন্য।
সবুজের হাতে বেলি ফুল দেখে অনেক খুশি হয়ে গেলো। নেহা সবুজের হাত থেকে ফুল নিয়ে নেয়। দেখতে দেখতে রাত হয়ে গেলো। নেহা সবুজের কাছে এসে বলল — আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো।
— কি কথা?
— এখানে না। চলুন আমরা ছাদের উপরে গিয়ে কথা বলি।
— ঠিক আছে।
— আপনি যান আমি একটু পরে আসছি।
— ওকে।
কেয়ারিং হাসবেন্ড পর্ব ১
সবুজ ছাদের উপরে গিয়ে নেহার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে৷ অনেক্ষন হয়ে গেলো কিন্তু নেহা এখনো আসছেনা। সবুজ আরো কিছুক্ষণ নেহার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। হঠাৎ কারো পায়ের শব্দ শুনে সবুজ পিছনে ঘুরতেই সে হতবাক হয়ে গেলো।