গল্প – দ্বিতীয় বাসর
Part – 1
writer – Arfin Sumon
দ্বিতীয় বাসর : আমি আরফিন সুমন। আমি লেখাপড়া শেষ করে
চাকরি না পেয়ে নিজের বাবার অফিসে
জয়েন দিলাম। আমার ইচ্ছা নিজে
কোম্পানি খোলা। যাক এখন
আলহামদুলিল্লাহ ভাল সময় চলতেছে।
হঠাৎ মা কিছুদিন যাবৎ বলতেছে একটা
বিয়ে করার জন্য তার নাকি একা একা
ভালো লাগেনা প্রথমে অমথ থাকলেও পরে
আর পারলাম না। আর আমার পছন্দের কোন
মেয়ে নেই বলে মা নিজেই মেয়ে ঠিক
করল। দেখতে দেখতে বিয়ের দিন এসে
পরল আর বিয়েটাও হয়ে গেল।
আজ আমাদের বাসরঘর। প্রত্যেকের একটা স্বপ্ন
থাকে এইরাত নিয়ে আমিও ব্যতিক্রম নয়।
আমারও কিছু স্বপ্ন ছিল আমার জীবন
সাথীকে নিয়ে। কিন্তু তা হয়ত আর সম্ভব
নয়। আমি চেয়েছিলাম স্মার্ট, আধুনিক
একটা মেয়ে। যে আমার সাথে আড্ডাতে
যাবে পার্টিতে যাবে। কিন্তু মা-বাবার
পছন্দ রাখতে গিয়ে এমন কাওকে বিয়ে
করে আনতে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। আগে
কি জানতাম এই শহরেও এমন ক্ষ্যাত মার্কা
পরিবার আছে। বিয়ের আগে কিছুই জানতে
পারিনি মাত্র বাসর ঘরে যাওয়ার আগে
সব জানলাম। আর বাসর ঘরে ঢুকে তা হারে
হারে টের পেলাম। আমি ঘরে ঢুকতেই
মেয়েটি সালাম করল একেবারে পায়ে
হাত দিয়ে।আমি একেবারে হতভম্ব হয়ে
দাড়িয়ে রইলাম। মনে মনে ভাবছি এ কেমন
কথা বাসর ঘরে কেউ স্বামীর পায়ে
হাত দিয়ে সালাম করে?
আমিঃ- এই কি করছো? এইভাবে পায়ে হাত দিয়ে
সালাম করছো কেনো? এমন ক্ষ্যাত কি আরো
আছে??
একাঃ- আপনি এইভাবে বলছেন কেনো??
আমিঃ- তো একটা ক্ষ্যাতকে কি ভাবে বলব।
মেয়েটা আর কিছুই আমাকে বলতে পারল
না। সে হয়ত মনের ভুলেও চিন্তা করেনি
এমন একটি বাক্য তাকে বাসর রাতে শুনতে
হবে। মাথা নিচ দিক দিয়ে আছে । আমি
স্পষ্ট দেখতে পেলাম দু ফোটা চোখের
পানি মেঝেতে গড়াগড়ি করছে। সে কোন
তর্ক না করেই বলল…
একাঃ- আমি তো নতুন কোথায় কি রাখা জানি
না। যদি জায়নামাজ টা বের করে দিতেন?
আসলে এত জামেলার মধ্যে এশার নামাজ
টা পড়া হয়নি।
আমিঃ- এখন কি কেউ নামাজ পড়ে? আর এই রাতে
শুরু করছো কি হা?(রাগের সুরে)
একাঃ- প্লিজ দিন নাইলে যে আমার ঘুমটাই
হবেনা।আমার জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। আমার সঠিক
জ্ঞান হওয়ার পর ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন
নামাজ কাজা করিনি।মেয়েটার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে
গেলাম। আমি শুধু শুক্রবার ওই নামাজ পড়ি
মায়ের বকা শুনে আর সে কোন নামাজ ওই
কাজা করেনি? মনে মনে একটু মায়া হল।
আমার আলমারির ভিতর জায়নামাজ
ছিলো। দুই ঈদে ব্যাবহার করা হয়, তাছাড়া
এর ব্যবহার নেই বললেই চলে। তাই তাকে
বের করে দিলাম আর বলে দিলাম…
আমাকে নামাজের কথা বলতে আসবেনা।
আর এইটা নিয়ে কানের কাছে প্যান প্যান
ও করবে না।
একাঃ- চলুন না একসাথে নামাজ পড়ি।
আমিঃ- এই মেয়ে এই সমস্যা কি তোমার? না করার
পর ও বলছ কেনো?
একাঃ- আমার কাজ দিনের দাওয়াত দেওয়া,
হেদায়াতের মালিক আল্লাহ।
আমিঃ- এত কথা না বলে নিজের কাজ করো।
সে নামাজ পড়ছে আর আমি মনোযোগ
দিয়ে দেখছি। আর মনে মনে ভাবছি
স্ত্রীরা অপেক্ষা করে স্বামীর জন্য আর
আমি অপেক্ষা করছি আমার বউয়ের জন্য।
হিহিহিহিহি
কত স্বপ্ন ছিল নিজের বিয়ে নিয়ে।নিজের
বিয়েতে মাস্তি হবে গানবাজনা হবে।
আমার বিয়েতে অনেক লোকজন আসবে
যেমন আমার অনেক বন্ধু -বান্ধবী,
অফিসের সহকর্মী আরো অনেকে আসবে
বিয়েতে। যত পরিকল্পনা ছিল সব ধুঁয়ে চলে
গেল বন্যার পানির মতো। বিয়ে হল বউ
কেউ দেখলনা এমন কি আমার ২ বছরের
ছোট খালাতো ভাই ও না। লোকজন ও
বেশি ছিল না বিয়েতে। সেইখানে ছিল শুধু
Road more : দ্বিতীয় বাসর পর্ব ২
বাবা-চাচা আর কাজী সাহেব। কোন
প্রকার জমছিল না বিয়েটা তখন মনে
হচ্ছিল ধ্যাত কেনো যে প্রেম করিনাই
সালার তাইলে আজকে মা বাবার পছন্দ
অনুযায়ী এমন একটা ক্ষ্যাতকে বিয়ে
করতে হতনা আর আমার সকল স্বপ্ন মাটি
হতো না। আর হুম সবচেয়ে বড় কথা হল বাসর
ঘরে চলে আসলাম কিন্তু এখন পর্যন্ত বউয়ের
মুখ খানা দেখতে পারিনাই। ও কি আমার
স্বপ্নের নীল পরী নাকি ঘুমের বড়ি তাও
জানিনা। মায়ের প্রতি হাল্কা রাগ
হচ্ছিল যে আমার নিজের আপন মা হইয়া
এমন একটা ক্ষ্যাত জুটাইল কপালে। সেই যে
আসার পর কচুকাটা মাথায় ঘুমটা দিয়া
রাখছে আর তুলার খবর নাই। মেয়েটা
পারেও রে বাবা!! ভাবতেছি যদি মেয়েটা
সুন্দরি হয় তবে তাকে নিয়ে বন্ধুদের
দেখাব আর ওদের জ্বালাতন করে আসব।
শুনেছি মেয়ে নাকি পর্দা করে আমার
বন্ধুদের তো দূরের কথা সে নাকি আমার
মামাতো, খালাতো ভাইয়ের সামনে ও মুখ
খুলবেনা। আমার এইসব ভেবে ভেবে মা-
বাবার উপর + ওই মেয়েটার উপর প্রচন্ড রাগ
হচ্ছিল।
.
হঠাৎ মেয়েটার ডাকে চিন্তার জগত
থেকে বাস্তবে ফিরে আসলাম। আর ফিরে
এসেই ভুত দেখার মতো চমকে উঠলাম। হায়
হায় কি এটা। আরে বুঝেন নাই তো খারান
আগে বুঝাইয়ালই আন্নেরারে আরে ভাই
আমার সামনে মেয়েটা তার মুখের ঘুমটা
খুলে দাড়ায়ছে আর তাকে দেখে মনে
হচ্ছে আসমানের কোন এক পরী আমার
সামনে দাড়ায় আছে। আমি ক্রাশ খাইলাম
রে ক্রাশ খাইলাম আবার আমার বউয়ের
উপর হিহিহিহিহি।