দ্বিতীয় বাসর পর্ব ৩
writer – Arfin Sumon
মাঝরাতে কারও কান্নার আওয়াজ শুনে
আমার ঘুম ভেংগে গেলো পরে দেখি আর
কেউ নয় সে আমার বউ নামাজে বসে
দোয়ায় কান্না করতেছে। আর বলতেছে..
“হে আল্লাহ্ আপনি আমার স্বামী কে আপনার
পথে আসার তৌফিক দিন তাকে নামাজ
পড়ার তৌফিক দেন”। আমি আর কিছুই বলি
নাই আবার শুয়ে পড়লাম।পরে দেখি
আমাকে কে যেনো পরে ডাকতেছে ঘুম
থেকে উঠার জন্য। পরে দেখি আমার বউ
আমাকে ডাকতেছে আর আমি কহনো
ঘুম থাইকা উইঠা মাইয়া দেহিনাই আমি
আবার ক্রাশ খাইলাম বউয়ের উপর কারন
এহন তারে আমার পরী মনে হয়তেছে।
একাঃ- এহেম এহেম ফজরের আজান দিচ্ছে যান
উঠে নামাজে যান।
আমিঃ- পারবো না আমার ঘুম পাচ্ছে খুব।
(পুরাডাই ডাহা মিছা কথা)
একাঃ- দেখেন নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের
জন্য ফরজ। নামাজ না পড়া অনেক বড়
গোনাহ এর কাজ নামাজ না পড়লে এর
শাস্তি অনেক। আর মারা যাওয়ার পর
সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব দিতে হবে।
আমিঃ- আরে ধ্যাত এতো জ্ঞান দিতে
এসো না তো যাও নিজের কাজ করো
গিয়ে।(একটু রাগের সুরে বললাম)মেয়েটা
কথা না বাড়িয়ে চলে গেছে মনে হয় কষ্ট
পেয়েছে। আমার এইভাবে বলাটা হয়ত ঠিক
হয়নি। আমি ওকে এইভাবে না বললেও
পারতাম ধ্যাত কেনো যে এমন হয়। আর ওর
কথা শুনে নামাজে গেলেই বা কি ক্ষতি
হতো আমার।।।।
আরও গল্প পড়তে আমাদের ফেসবুক গুপে জয়েন হউন
পরে সকাল সকাল চা নিয়ে হাজির পাশের
টেবিলে রেখে চলে গেলো কোনো কথা
বলেনি আমার সাথে। আমিও উঠে চলে
গেলাম ফ্রেশ হয়ে এসে চা টা মুখে
দিতেই।(আরে আপনারা কি মনে করলেন
আবার আপনারা যা ভাবতেছেন তা না)চা
টা অনেক ভালো হয়েছে কিন্তু চা টা
আমার মায়ের হাতের না কারন মায়ের
হাতের চায়ের তুলনা হয়না এইটাও খারাপ
না। পরে আমার ছোট বোনকে জিজ্ঞাস
করলাম এইটা কে বানাইছে।
বোনঃ- ভাইয়া এইটা ভাবি বানাইছে নিজের
হাতে আর উনিই আজকে সবাইকে চা দিছে।
মনে মনে বললাম বাহ!! যাক আজকে তার
নতুন আরেকটি গুনের দেখা পেলাম তাকে
যতই দেখি ততই প্রেমে পড়ি। এহনতো মনে
হয় এইটা আমার বউনা আমার ক্রাশ আর
প্রেমের ডিব্বা। সারাক্ষণ খালি প্রেম
করার ইচ্ছা হয়। আগে প্রেম না করে
ভালোই হলো তখন আমার বোন বলে উঠল..
বোনঃ- ভাইয়া কোথায় হারায় গেলা।
আমিঃ- কই নাতো আমি তো এইখানেই।
বোনঃ- হুম বুঝছি। আচ্ছা মা ডাকতেছে খাবার
টেবিলে যাওয়ার জন্য।
আমিঃ- হুম তুই যা আমি আসতেছি।
বোনঃ- আচ্ছা।
একটু পরে নিচে যাব তখন মা আমাকে
ডেকে নিয়ে গেলো তারপর বলল…
মাঃ- বাবা আজকে বিকেলে সুরাইয়া কে নিয়ে
একটু বাহির থেকে ঘুরে আসবি। নতুন পরিবেশ একটু বাহির
থেকে ঘুরে আসলে ওর মনটা ভালো লাগবে।
(আরে আপনারা কি ভাবতেছেন এই
সুরাইয়া টা আবার কে আরে আমার বউয়ের
নাম। তার পুরো নাম সুরাইয়া আক্তার একা। আর
আমি নাম দিলাম স্বপ্নীলা কারন সে
আমার স্বপ্নের নীল পরী। দেখেন এখনো
আপনাদের আমার বউয়ের নামটাই
বলিনাই। হিহিহিহিহি)
আমিঃ- আচ্ছা মা তুমি তাকে বলে দিয়ো রেডি
হয়ে থাকতে আমি নিয়ে যাব।
মাঃ- আর এখন খেতে আয়।
আমিঃ- হুম চল।
খেতে এসে দেখি বউ আমার অপেক্ষায়
বসে আছে, টেবিলে বসে পড়লাম। বউ ভাত
তরকারি প্লেটে তুলে দিচ্ছে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের ফেসবুক গুপে জয়েন হউন
মা-বাবা আর ছোট বোন নাকি আগেই
খেয়ে নিয়েছে। আর আমাদের জন্য রেখে
গেছে। তাকেও ভাত নিতে বললাম। সে
নিজের প্লেটে ভাত নিল আমার প্লেটেও
ভাত দিল। আমি তার প্রথম খাওয়া দেখবো
এই লোভ আর আটকে রাখতে পারলাম না।
আমি তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে
আছি যে সে কখন প্রথম লোকমা মুখে নেবে
আর আমি তা দেখব কারন ক্রাশতো ক্রাশ
ওই হয়। আর সবচেয়ে বড় কথা তার
প্রত্যেকটি কাজ আমাকে তার দিকে
আকৃষ্ট করে। কিন্তু আমার সব আশা ব্যার্থ
করে স্বপ্নীলা মানে আমার বউ আমাকে
বলল নেন শুরু করেন। আমি আর কোন কথা না
বলে নিচের দিকে তাকিয়ে খাবার মুখে
নিলাম। বউয়ের দিকে তাকিয়ে দেখি বউ
মুচকি মুচকি হাসতেছে আর ভাত খাচ্ছে।
আমিতো তারে দেখে আবার কি আর কমু
সেই পুরাতন কথা ক্রাশ চিন্তা করি
আমি কি ভাত খামু নাকি বউয়ের নুরানি
চেহারার ক্রাশ খামু। আর মনে মনে
বলতেছি এই বেটি মনে হয় আমার মনের
কথা জানতে পেরে এরকমটা করল। পুরাই
কচু কাটা হয়ে গেলো আমি আর লজ্জায়
তার দিকে তাকালাম না। খাবার শেষ
করে আমি চলে গেলাম আর এখন হালকা
হালকা মনে হতে লাগল আমি বউ না পরী
পাইলাম।আর জীবনে প্রেম না করে ভুল
করিনাই। খাওয়া শেষে বাসা থেকে একটু
বাহিরে গেলাম বন্ধুদের সাথে দেখা
করতে। আমরা আগে যেখানে আড্ডা
দিতাম সেইখানে গিয়ে দেখি
সজিব,ইমামুল,হৃদয়,অনিক,শাকিল, আলিমুন
সব সালাই আছে। এইইই সালা বলছি বইলা
মনে কইরেন না ওরা সব আমার সালা
আমরা সবাই একজন আরেকজনের জানে
জিগার বন্ধু কলেজে সবাই কত মজা
করতাম। আমাকে দেখেই সজিব আর
আলিমুন বলল..
আরও গল্প পড়তে আমাদের ফেসবুক গুপে জয়েন হউন
সজিবঃ- কিরে দোস্ত তুই এইখানে।
আমিঃ- কেনো রে আমি কি তোদের সাথে আজ
নতুন আড্ডা দেই নাকি।
আলিমুনঃ- না মামা তা না তবে ঘরেতো
আমাগো নতুন মামি ওরে একলা রাইখা
আইলাযে তাই।
আমিঃ- ভাতিজা তুমি আর মানুষ হইবা না।
সজিবঃ- তা বিড়াল মারতে পারছতো
নাকি।
আমিঃ- ধুর ব্যাটা তোর কথা শুইনা সারা
রাত বিড়াল খুঁজলাম সারাবাড়ি কিন্তু
পাইনাই মারমো কেমনে হিহিহিহিহি।
আলিমুনঃ- মামা বুঝছি তা মামিরেতো
দেখাও নাই আমাগো দেখাইবা না নাকি।
আমিঃ- ধুর বেটা তোর মামি কারও সামনে
যায়না। আমার ২ বছরের ছোট খালাতো
ভাইয়ের সামনেও যায় নায়।
সজিবঃ- আচ্ছা দোস্ত তোর শালি আছে
তো??
আমিঃ- নারে দোস্ত একটা সালা আছে
বড়গিরি হইতে পারবি।
হিহিহিহিহি আর সব একসাথে হাসাহাসি
করতে লাগলাম।
আলিমুনঃ- মামা আইসাই যখন পড়ছো একটা
পার্টি দিতে হবে আজ আর এখনি।
আমিঃ- চল।
দ্বিতীয় বাসর পর্ব ২
ওদের সাথে অনেক মজা করলাম অনেকদিন
পর আড্ডা দিতে দিতে দুপুর হয়ে গেলো
পরে আমরা সবাই চলে গেলাম। পরে বাসায়
গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে একটু রেস্ট
নিলাম। বিকাল বেলায় বের হবো বলে
তাগাদা দিতে লাগলাম কারন মেয়েরা
তো কোথাও গেলে ময়দা মারতে মারতে ৭
ঘন্টা লাগাই। কিন্তু আমার সব ধারণা ভুল
প্রমান করে একটু পরেই আমার স্বপ্নীলা
রেডি হয়ে চলে আসল এই প্রথম কোন
মেয়েকে তারাতারি রেডি হয়ে আসতে
দেখলাম। তাছাড়া সে কালো কুচকুচে
একটা বোরখা পড়ছে,কালো হিজাব,হাতে
মোজা,পায়ে মোজা, সেই মায়াবি
চোখদুটো ছাড়া আর কিছুই দেখা যাচ্ছে
না। বুঝাও যাচ্ছে না ভেতরে মানুষ নাকি
অন্য কিছু। শুধু চোখের দিকে তাকিয়েই
আমি আবারো যেন ডুবে যাচ্ছি সেই অতল
সাগরে। এভাবেও যে এত সুন্দর লাগে আগে
খেয়াল করি নি।