পরিণীতা পর্ব ১২
নাহিদা ইসলাম
গাড়িটি একটি বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে এর সামনে এসে থামলো। ড্রাইভার এসে বললো, নামতে বললো। আমি
গাড়ি থেকে নেমে কিছু দূর যেতে ই ছোট একটা ছেলে হাতে গোলাপ ফুল দিয়ে বললো ওয়েলকাম ভাবি। ফুলটা
হাতে নিয়ে ভাবতেছি কী হতে চলেছে আমার সাথে।। তারপর রেস্টুরেন্টে এর গেইটের সামনে যেতে ই একটা
ছেলে ফুল দিয়ে বললো হ্যাপি মেরিড লাইফ ভাবি।।।
আমি যতটুকু হেটে গেলাম প্রত্যেক যায়গায় দেওয়ালের মধ্যে লিখা ছিলো কোন দিকে যাবো। আর সবাই একটা
করে গোলাপ দিয়ে বলেছে হ্যাপি মেরিড লাইফ।হঠাৎ সিড়ির কাছে আসতে ই উপরে লিখা দেখলা সাদে এসো।
নিচের দিকে তাকাতে ই দেখলাম প্রত্যেকটা সিড়িতে গোলাপ আর রজনীগন্ধার পাপড়ি দিয়ে লিখা পরিণীতা প্লাস
অর্ণব। সাদে ডুকতে ই দেখলাম, খুব সুন্দর করে ছাদটা সাজানো গোল্ডেন আর রেড কালার কম্বিনেশন এ
লাইটিং করা। বড় করে লিখা হ্যাপি মেরিড লাইফ অর্ণব এন্ড পরিণীতা। নিচে টেবিলে একটা লাভ আকরিতির
কেক রয়েছে। পাশে ই অনেকগুলো কালার পেপার রাখা দেখলাম।সুন্দর করে পিনআপ করা।
কালার পেপারটা হাতে নিতে ই দেখলাম লিখা, “”আমাকে পড়ো”” পৃষ্ঠা উল্টাতে ই দেখলাম লিখা,
“”ওয়েলকাম টিয়াপাখি “”
“কী অদ্ভুত নাহ”
“”বিয়ের পর তোমাকে প্রপোজ করতে আসলাম””
“” জানো তো টিয়া পাখি তুমি হাসলে অনেক সুন্দর লাগে””
“” আর রাগলে মনে হয় আমার আকাশে মেঘ জমেছে””
“” সেই মেঘের বৃষ্টিতে আমি আমাকে সারটি জীবন ভেজাতে চাই”
তোমার ভালোবাসা হতে চাই,,তোমার দিকে তাকিয়ে বাকি জীবনটা পারি দিতে চাই,
তোমার প্রতিটি স্পর্শের অনুভূতি নিতে চাই।তোমায় নিয়ে হারিয়ে যেতে চাই সুখের
অজানায়,,হবে কী আমার সেই তুমি…
পিছনে ঘুরে তাকাতে ই দেখলাম অর্ণব হাটুগেড়ে পাড়া। অর্ণবকে দেখে আরেক দফা ক্রাশ খেলাম। রেড
গোল্ডেন কালারের কম্বিনেশন পাঞ্জাবি হাতে গোল্ডেন কালারের ওয়াচ। হালকা খোচাখোচা দাড়ি। ঠোঁটগুলো
হালকা গোলাপিবর্ণ ধারন করে আছে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
“”এই টিয়া পাখি””
ডাকটা শুনে ই ঘোর কাটলো। অর্নব পেছন থেকে বেড় করে একট চকলেট বাক্স দিলো তার পর আবার একটা
আইসক্রিম এর বাক্স দিলো তারপর আবার একটা চকলেট বাক্স দিলো। অর্ণব এর এমন কান্ড দেখে আমি
হাসতেছি। তারপর একরা ডালা দিলো যার মধ্যে অনেকগুলো চুড়ি সাজানো ছিলো। তারপর আরেকটা ডালা
দিলো যার মধ্যে ভিন্ন ধরনের নুপুর ছিলো।
পিছন থেকে বের করে একটার পর একটা গোলাপ দিচ্ছে। আমি সবগুলো পাশের টেবিলে রাখছি। আস্তে করে
অনেকগুলো গোলাপ দিতে লাগলো আমার অনেক হাসি পাচ্ছে অর্ণব এর এমন কান্ড দেখে আমাকে এমন
হাসতে দেখে অর্ণব ও হাসতেছে। তারপর খুব সুন্দর একটা রিং সামনে ধরলো কিন্তু আমি হাত সরিয়ে নিলান।
–প্লিজ টিয়াপাখি আজকে অন্তত এমন করো না। কথাদিলাম তুমি যা বলবে তাই হবে।
আমি নিঃশব্দ দাড়িয়ে আছি। কী করবো আমার জীবনটা যে এতো সোজা না।
–প্লিজ জান আমার এমন করো না। তোমাকে ভালোবাসতে হবে না।
মাথা কাজ করছে কী করবো। কল্পনাতে ও ভাবি নাই কেউ আমাকে এতোটা সারপ্রাইজ দিবে। এতোটা ভালো
রাখবে। তাকে কী করে কষ্ট দেই। কিন্তু আমার যে অতীত আছে তারপর কী সে আমাকে মেনে নিবে।
–টিয়াপাখি ভালোবাসি অনেক। একটা বার একটা সুযোগ দেও। আর রিংটা পড়লে কী এমন হবে বলো তুমি তো
আমার বিয়ে করা বউ।
আমি আর কিছু ভাবতে পরলাম না হাত বাড়িয়ে দিলাম। কারণ সব কিছু ই আমার জন্য করেছে। আমি সবগুলো
জিনিস ই অর্নব এর কাছ থেকে নিয়েছি এখন এি রিংটা পড়লে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না। অর্ণব যদি আমার
অতীতটা যেনে রাখতে না চায় তাহলে আমি চলে যাবো। এতো টেনশনে নিতে পরবো না।
অর্ণব রিংটা পড়িয়ে দিয়ে গভীর ভাবে হাতে একটা কিস করে। হঠাৎ দেখলাম অনেকগুলো ছেলে মেয়ে মিলে
হাত তালি দিচ্ছে কেউ সিটি বাজাচ্ছে। এখন আমার বেশ লজ্জা লাগছে।
অর্ণব আমাকে হালকা জড়িয়ে ধরলো লজ্জা পেয়ে আমি অর্ণব এর পাঞ্জাবির কিছু অংশ খামচে ধরলাম।
পরিণীতা পর্ব ১১
–চলেন ভাবি কেকটা কাটবে।
অর্নব আমার কাছে কাছে এসে ফিসফিস করে বললো।
–আমার লজ্জা করছে কিন্তু এতোগুলো মানুষের সামনে তুমি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরে আছো।
আমি অর্ণব এর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকাতে ই আমাকে এভাবে তাকতে দেখে অর্ণব হাসি দিয়ে অন্য দিকল
তাকিয়ে যায়। সাথে সাথে অর্ণব এর পাঞ্জাবি থেকে হাত সরিয়ে নেই। আমি হাত সরাতে ই অর্ণব আমাকে পিছন
থেকে পেটে বরাবর জড়িয়ে ধরে।
মানুষের সামনে কিছু বলতে পারতেছিনা। তাই পায়ে দিলাম এক লাথি।মানুষের সামনে কিছু বলতে ও
পরতেছেনা। শুধু আমার দিকে করুন ভাবে তাকিয়ে আছে।।।
হঠাৎ ফোনের দিকে তাকালাম। দেখলাম আবার আদির আইডি থেকে ইরার আর আদির কয়েকটা পিক দিয়েছে।
আমি অর্ণব এর হাত ধরে সাইডে আনলাম।
–টিয়াপাখি এভাবে কেনো নিয়ে যাচ্ছো, ভয় হয় তো আমার তোমাকে এই রুপে দেখলে।
–আসেন কয়েকটা সেলফি তুলে একটু রোমান্টিক স্টাইলে।
অর্ণব এর চোখগুলো রসগোল্লার মতো করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
–তুমি ঠিক আছো তো পরী।
–কেনো।
–জ্বর টর হয়নি তো।
এবার আমি রাগ করে তাকাতে ই আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে,
–এভার সেলফি তুলো।
কয়েকটা সেলফি তুলে অর্ণব এর মুখে স্টিকার দিয়ে আদিকে সেন্ড করলাম। এখন দেখি আদি কতোটুকু জ্বলে।