পরিণীতা পর্ব ১৫ - Golpo Bazar

পরিণীতা পর্ব ১৫ || misti valobasar golpo

পরিণীতা

পরিণীতা পর্ব ১৫
নাহিদা ইসলাম

বেশ কয়েকবার কল দিলো ইরা, পরী ফোন সাইলেন্ট করে রেখেছে। পরী তো এটা ই চেয়েছিলো পেয়ে
হারানোর কষ্ট যে কতোটুকু তা বুঝাতে।
অর্ণব অফিসে চলে গিয়েছে, খুব কেয়ার করে এরকম কাউকে পেতে সত্যি ই ভাগ্য লাগে। না চাওয়া শর্তে ও
একয়েকদিনে অর্ণব এর সাথে নিজেকে অনেকটা জড়িয়ে নিয়েছে। কিন্তু যখন ই জানতে পারবে আমার অতীত
মেনে নিবে কী অর্ণব নাকি এক আকাশ পরিমাণ ঘৃণা নিয়ে দূরে সরিয়ে দিবে।
পরী ফোন হাতে নিয়ে দেখলো আদি মেসেজ দিয়েছে। রিতীমতো থ্রেড করতেছে।

“” এমুহূর্তে তুমি কল না ধরলে তোমার সংসার ভেঙ্গে দিবো, তুমি কী চাও তোমার হাসবেন্ডর কোনো রকম ক্ষতি
হক। যদি না চাও তাহলে কল রিসিভ করো।”’
পরী অনেক ভয় পেয়ে যায়।পরী চায়না পরীর জন্য অর্ণব এর কোনো ক্ষতি হক। এমন টা হলে যে পরী মেনে
নিতে পরবে না। তাই পরের বার আদির নম্বর থেকে কল আসার সাথে সাথে রিসিভ করে।।।

–খুব সুখে আছো তাই না।
–আপনি ও তো এতোদিন খুব সুখে ছিলেন। আমি তো একবারের জন্য ও জিজ্ঞেস করতে যাইনি।
–চলে আসো পরী। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসবো কখনো ছেড়ে যাবো না।
–এই কথাগুলো কিন্তু আগে ও বলেছিলেন আপনাকে বিশ্বাস করে ফলস্বরূপ কিন্তু কষ্টটা পেয়েছি। আর আপনি
আমার হাসবেন্ড সম্পর্কে ঐমুখে কোনো কথা উচ্চারণ করবে না। আমি আমার হাসবেন্ডকে বড্ড ভালোবাসি।

–এদুদিনে আমাকে কীভাবে ভুলে গেলে।
–দুদিন না মিস্টার আদিত্য চৌধুরী, অনেক টাইম প্রতিদিনকে ঘন্টায় নিন, তারপর মিনিট তারপর সেকেন্ড এ
নিন দেখেন কতো বিশাল সময় এই সবটা সময় মানুষ আমার পাশে ছিলো, আমার অতীত বর্তমান কিছু না যেনে ই বিয়ে করছে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

–খুব গুনগান তো করছো। সোজা কথায় কাজ না হলে আমি কিন্তু বেঁকে বসবো। যদি ভালো চাও ঠিকানা দেও
আমি গিয়ে নিয়ে আসবো।
কথাটা বলার সাথে সাথে পরী কল কেটে দিলো। খুব কান্না পাচ্ছে আমাকে যা করার করুক কিন্তু অর্ণব এর কথা
বললে আমি সহ্য করতে পারি না। ফ্লোরে বসে নিঃশব্দে কাঁদছে আর ভাবতেছি ভুল মানুষকে ভালোবেসে আজ
তার ই মাশুল দিতে হচ্ছে।

অর্ণব বাসায় এসে পরীকে খুজতেছে। বাসায় ডুকে ই কয়োকবার ডাক দিলো, কিন্তু পরীর কোনো পাত্তা ই নেই।
এমন তো হয় না প্রতিদিন ডাকলে একটু সারা হলে ও তো দেয় কিন্তু আজকে তো কিছু ই না।
অর্ণব রুমে গিয়ে লাইট অন করেতে ই চোখ গেলো বেড সাইডে। পরীকে দেখে অর্ণব পাশে যেতে ই আচমকা
অর্ণবকে ঝাপটে ধরে চিৎকার করে কেদে উঠে।
আর্ণব ও বুকে জড়িয়ে নেয়। বেশ কিছুক্ষন পর পরীকে শান্ত করার জন্য অর্ণব মাথায় হাতবুলিয়ে জিজ্ঞেসা
করে।

–টিয়াপাখি ভয় পেয়েছো।
কিন্তু পরী কিছু বলে না।
–টিয়াপাখি বলো আমাকে। নিজের ভেতরে আটকে রাখলে কষ্টটা বাড়বে।
পরী শুধু অর্ণবের কথা শুনতেছে কোনো উওর দেয় না।
–পরী চলো তোমাকে আব্বুর বাসায় নিয়ে যাই, ঐখানে অনেকে আছে তুমি আর ভয় পাবে না।এইখানে হয়তো
একা আছো তাই ভয় পাচ্ছো।
পরী মাথা নাড়ালো। অর্ণব পরীকে উঠিয়ে বেডে বসিয়ে দিয়ে ফোন বের করে কল দিয়ে বললো কালকে বাসায়
যাবে। পরীকে বসতে বলে অর্ণব ফ্রেশ হতে চলে গেলো।

পরিণীতা পর্ব ১৪

ইরা আর কোনো উপায় না পেয়ে আদির বাসায় যায়। গিয়ে সব কিছু খুলে বলে প্রণাম সহ দেখায়।
–আপনারা যদি আশ্রয় না দেন তাহলে আমি কোথায় যাবো বলেন।
কান্না করতে করতে ইরা এই কথাগুলো বললো,
–জাহান্নামে যা মানা করছে কে, আমার আব্বু আম্মু কাছে আসলি কেনো।
কথাগুলো শুনে পিছনে তাকাতে ই দেখে আদি বাসায় ডুকতে ডুকতে এই কথাগুলো বললো।
–আমি এই বিয়ে মানি না বাবা।
কথাটা বলার সাথে সাথে আদির মা থাপ্পড়টা আদির গালে দিয়ে দেয়।

–কয়েকদিন পর পর মেয়েরা এসে একই কথা বলে। আমাদের মানসম্মান কী তুই ধূলোয় মিশেবি নাকি।
–যাও তুৃমি তোমার রুমে যাও।
চম্পা আদির রুমটা দেখিয়ে দে।
–আম্মু তুমি জানো না এই মেয়ে ভালোনা। আমি ওর সাথে থাকতে চাই না।
–তাহলে বিয়ে করলি কেনো।
–আম্মু আমি বিয়ে করতে চাইনি।
–তাহলে কী তোকে জোর করে বিয়ে করে নিয়েছে।
–জানিনা আম্মু কিন্তু আমি বিয়ে করতে চাইনি।

এবার অর্ণব এর গালের উপর আরেকটা থাপ্পড় পড়ে।
এসব ধরনের আর একটা কথা ও বলবি না। কালকে অর্ণব আসছে, অর্ণব এর সামনে আপাতত ভালো শিক্ষা দিয়ে
যে তোকে বড় করি নাই এটা দেখাস না। অর্ণব মা বাবা ছাড়া ও অনেক ভালো শিক্ষা পেয়ে বড় হয়েছে। আর
আমরা থেকে তোকো ভালো মানুষ বানাতে পারিনি।

পরিণীতা পর্ব ১৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.