পরিণীতা পর্ব ১৭ - Golpo Bazar

পরিণীতা পর্ব ১৭ || notun valobasar golpo

পরিণীতা

পরিণীতা পর্ব ১৭
নাহিদা ইসলাম

মায়ের এমন ব্যবহারের জন্য মোটে ও প্রস্তুত ছিলো না অর্ণব। কিন্তু মায়ের কথাকে উপেক্ষা করে পরীকে নিয়ে
ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরীকে নিজের রুমে নিয়ে শুয়ে দিয়েছে।
অনিতা চৌধুরী ও ছিলের পেছনে দৌড়ে রুমে ডুকে।
–অর্ণব তুই আমার কথা শুনতে পাচ্ছিস।
–আপনি কী চাচ্ছেন আমি এই বাসা থেকে চলে যাই।
কথাটা শুনে ই চুপ করে যায় অনিতা।

–বাবা আমার কথাটা শুন এই মেয়ে কয়েকদিন আগে এসে বলেছিলো অ নাকি আদির বিয়ে করা বউ, বাচ্চা ও
নাকি পেটে। এই মেয়ে মিথ্যেবাদী আদিকে না পেরে তোকে ফাসিয়েছে। বের করে দে তুই ওকে এ বাসা থেকে।
–অহ্ আচ্ছা, শুনেন আমি এতোটা বোকা না আপনার কথা শুনে আমি আমার বউকে বের করে দিবো। পরীর
সুস্থ হক তার মুখ থেকে ই সব কিছু শুনবো তারপর দেখা যাবে কী হয়।এখন আপনি আমার রুম থেকে যেতে
পারেন।

অর্ণব এর এমন ব্যবহারে অনিতা চৌধুরী একমুহূর্তের জন্য ও দাড়ালো না চলে গেলো। যতই অনিতা চৌধুরী কথা
বিশ্বাস না করুক না কেনো তারপর ও না চাওয়া শর্তে একটা অবিশ্বাস কাজ করছে পরীর প্রতি।
এখন নিজের উপর রাগ হচ্ছে পরীর কথাগুলো যদি ঐ টাইমে শুনতো তাহলে এখন আর এমন হতো না। এতো
টেনশন আর নিতে পরছে না।।।

অর্ণব পরীকে অনেক আগে থেকে ই পছন্দ করতো। পরীর স্কুল লাইফ থেকে ই কিন্তু বলতে পারতো না। এক
গাদা চিঠি লিখেছে পরীর জন্য কিন্তু একদিন ও দিতে পারেনি।।রাস্তা মোড়ে দাড়িয়ে শুধু দেখতো, সাদা ড্রেস
পড়া মেয়েটি হাসিতে মগ্ন থাকতো। এতোটা ভালো লাগা কাজ করতো যা বলে বুঝানো সম্ভব না। পরীকে
সাধারণের মধ্যে অসাধারণ লাগতো। যখন জানতে পারলো মেয়েটা এতিম তখন আরো বেশি মায়া কাজ করতে
থাকে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

বেশকয়েদিন গোলাপ নিয়ে গিয়েছিলো প্রপোজ করার জন্য কিন্তু ঐ সাহস টা হয়ে উঠেনি। যখন পরী কলেজে
এডমিশন নেয় পড়ে জানতে পারলাম পরী আদির সাথে সম্পর্ক। আমি চেয়েছিলাম ভালো থাকুক আমার
ভালোবাসা তাই তো দূরে সরে এসেছিলাম। কিন্তু আদিকে বিয়ে করেছে কিনা তা জানা হয়ে উঠেনি। এতো বছর
পর যখন আমার ভালোবাসা আমার চোখের সামনে আসলো, খুব খুশি হয়েছিলাম সেদিন।
কিন্তু পরীর অজানা প্রত্যেকটা কষ্ট আমাকে কষ্ট দিচ্ছিলো তাই চেষ্টা করেছি সব সময় খুশি রাখার।

অর্ণব….
ডাকটা শুনে ই পিছনে তাকাতে দেখলাম পরী। চোখ মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে এখন ই
কেদে ফেলবে। আমি কোনো মতে ই চাইনা পরীকে অবিশ্বাস করতে। তাই টেনে আমার কাছে এনে বসালাম।
আলতো করে বাহুডোরে আবদ্ধ করে কপালে চুমু খেয়ে, মুখটা উপরে তোলতে ই দেখলাম কান্না করছে।
–অর্ণব এতোক্ষণ অনেক কিছু হয়ে গেছে তাই না। তাও আপনি আমাকে এভাবে কাছে টেনে নিচ্ছেন কেনো।
–টিয়াপাখি আমি চাইনা তোমাকে অবিশ্বাস করতে, ভুল বুঝতে, কী হয়েছে আমাকে এখন বলো। আমি এখন
সব কিছু শুনতে চাই।

—আমার সব কথা কী আপনার বিশ্বাস হবে।
–অন্ধের মতো বিনা সার্থে যাকে ভালোবেসে গেছি তাকে যদি বিশ্বাস না করি তাহলে আমার ভালোবাসা ই বৃথা।
পরী অর্ণব কে প্রথম দিন থেকে শেষ অব্দি যা হয়েছে সব কিছু বলেছে। আদি যে পরীকে থ্রেড করেছে অর্ণবকে
নিয়ে তা ও বলেছে।।।
অর্ণব একমুহূর্ত ও বসে না থেকে বাবা মাকে ডেকে আনে। সবগুলো বিষয় খুলে বলে।

–আশা করি মা এর পর আমার বউ নিয়ে তোমাদের কোনো আপত্তি নেই।
অনিতা চৌধুরী পরীর কাছে গিয়ে। আদর করে অনেকক্ষন। আমার ছোট ছেলের হয়ে আমি মাফ
চাইছি মা তোর কাছে। মাফ করে দে।আমার আদি এমন কাজ করবে আমি স্বপ্নে ও ভাবতে পারি না।
–মা আমি আগের সব ভুলে যেতে চাই, আবার নতুন করে বাঁচতে চাই।
–হুম এখন একটু রেস্টনে।

পরিণীতা পর্ব ১৬

অর্ণব আমি যাচ্ছি তোরা রেস্টনে। পরে আবার কথা হবে। আর তোকে জানিয়ে রাখি ইরা এখন এবাসায় ই আছে।কোনো সমস্যা হলে আমাকে ডাকিস।
অর্ণব এর আব্বু আম্মু চলে যায়। এতোক্ষণ পরে একটু শান্তি লাগছে, পরীকে কাছে টেনে নেয়। অভয় দিয়।

–পরী আমি একটু বাহিরে যাবো, তুমি সাবধানে থেকো।
–কখন আসবেন।
–তা বলতে পারি না।
তুমি ভয় পেলে বাবার রুমে যেতে পারো।
–না সমস্যা নেই।
অর্ণব পরীর থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। পরী ফ্রেশ হয়ে একটা শাড়ি পড়ে বাহিরে বের হয়। রুম থেকে বের
হওয়ার সাথে সাথে ইরার মুখোমুখি হয়।
–আমার সংসারটা ভাঙ্গার জন্য চলে এসেছিস তুই, ছোট বেলা তো মা বাবাকে খেয়েছিস এখন আমার সংসারটা
খেতে এসেছিস
–চোখ নামিয়ে কথা বল। আমি সম্পর্কে তোর বড় জ্যা।নিজের স্বামীকে তো নিজের কাছে রাখতে পারিস না
অন্যের বউয়ের দিকে নজর দেয়। আসলে মানুষের চরিত্রে দোষ থাকলে যা হয়।
কথাটা বলে ই পাশ কেটে চলে যেতে নিলে ইরা টান দিয়ে হাত ধরে ফেলে….

পরিণীতা পর্ব ১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.