পরিণীতা পর্ব ৮ - Golpo Bazar

পরিণীতা পর্ব ৮ || nil cafer golpo group

পরিণীতা

পরিণীতা পর্ব ৮
নাহিদা ইসলাম

কোনো উপায় না পেয়ে বিয়েটা করতে রীতিমত বাধ্য হলো পরিণীতা আর অর্ণব। অর্ণব কিছুতে ই চাইছিলো
না বিয়েটা করতে, পরিণীতা ও চায়নি। বিয়ে হতে হতে প্রায় ১২টার মতো বেজে গেছে। পরী স্তব্ধ হয়ে মাটিতে
বসে আাছে, কী করবে এখন। একেতো এতো কষ্টের মধ্যে আছে তারপর আবার জোর করে বিয়ে। অচমকা
ইলা চেচিয়ে উঠে।

–এসব রাস্তার মেয়েদের আশ্রয় দিলে এমন ই হবে। রাস্তা থেকে তুলে এনে আশ্রয় দিয়েছি এই প্রতিদান দেওয়ার
জন্য।
–আপু আমি এমনটি করতে চাইনি। আমাকে ক্ষমা করে দেন প্লিজ।
–ক্ষমা করে দেওয়ার কোনো কাজ তুমি করোনি।
–আপনার ভাই ভালো করে জানে আমার কোনো দোষ নাই।
আপনার ভাইকে জিজ্ঞেস করেন। আপু আামর কোনো দোষ নেই। আমি আসতে চাইনি এখানে…

—থাক যা হইয়ে সব বাদ। তোমাকে সসম্মানে বলতেছি তুমি বাসা থেকে বের হয়ে যাও।
কথাটা বলার সাথে সাথে পরিণীতা ইলার পা জড়িয়ে ধরে। কান্না করতে লাগে।
অর্ণব সেই কখন বাড়ির ভেতরে চলে গেছে। কান্না করতে করতে পরী বললো।
—আপু আামকে কয়েকটা দিন আশ্রয় দিন আমি কয়েকটা দিন পর চলে যাবো।আপু একটু বুঝেন আমি এতিম।
আমার যাওয়ার যায়গা নেই। এতোদিন যেখানে ছিলাম ঐখানে যাওয়ার থেকে আমাকে মেরে ফেলুন।
পরীর এমনভাবে কথাগুলো বললো ইলার একটু মায়া হলো তাই বললো,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

–আচ্ছা দুমাস তোমাকে থাকতে দিবো তারপর চলে যাবে। আর এই দুমাস তুমি আলাদা রুমে থাকবে। এবং অর্ণব
এর আশেপাশে আসবে না। অর্ণব তোমাকে রাখতপ চাইলে ও চলে যাবে কারণ তোমার মতো মেয়ে আামদের
বাড়ির বউ হবার যোগ্যতা রাখে না।
ইলার সব সর্ত মাথা পেতে নিলো পরী। বিনিময়ে শুধু থাকতে দিবে।
এখন যে ঘটনাগুলো ঘটলো তার বিন্দু পরিমান অর্ণব জানে না। বিয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার পর বাড়ির ভেতরে গেছে।
এখন ও বের হয়নি।
বেশকিছুক্ষব পর অর্ণব গাড়ি নিয়ে বের হলো। রাত প্রায় দুইটা বাজে।

–আপু যদি ইচ্ছে হয় উঠে বসতে পারিস। আমি চলে যাচ্ছি ঢাকা।
–ভাই এতো রাতের বেলা যেতে অসুবিধা হবে। আর লাগেজ তো গুছানো না। কিছু ই গুছানো না।
–পরী উঠো।পরী কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে উঠে কারণ এখন পরী তাদের হাতের পুতুলের মতো যা বলবে
তাই করতে হবে।।পরী উঠার সাথে সাথে অর্ণব গাড়ি স্টার্ট দেয়। ইলাকে কথা বলার কোনো সুযোগ ই দেয় না।
ইলা বোকার মতো দাড়িয়ে আছে। কী হলো কিছু ই মাথায় ডুকছে না। খুব কষ্ট লাগছে ভাইয়ের জন্য এতো কিছু
করছে অথচ ভাই ই মুহুর্তে বলদে গেলো। এসব ভাবতে ভাবতে বাড়ির ভেতরে চলে যায় ইলা।
হঠাৎ গাড়ি থামিয়ে পিছনে তাকিয়ে জোরে বললো,

–আমাকে কী তোমার ড্রাইভার মনে হয়। সামনে আসো।
পরী বাধ্য মেয়ে হয়ে সামনে চলে যায়।
–স্যরি আমাকে মাফ করবেন, সময় হলে আমি ঠিক চলে যাবো।
–তোমাকে এতো কথা বলতে বলছি।চুপ করে থাকো বেশি কথা বললে এখানে রেখে ই চলে যাবো।

অর্ণব এর ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো পরীর। চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো অর্ণব এর বেডে শুয়ে আছে।
অর্ণবকে কোথাও দেখতে পাচ্ছে না। হয়তো কোথাও গিয়েছে। ফোন রেখে গেছে।
এলোমেলো চুলগুলো খোপা করতে করতে বিছান ছেড়ে উঠে পরী অর্ণব এর ফোনে ধরলো দেখলো বারোটার
মতো বাজে। আর অর্ণব এর ফোনে অসংখ্য ফোন ইলার নম্বর থেকে এসেছে। ইলার কথা মনে পড়তে ই দ্রুত রুম
ত্যাগ করার জন্য পা বাড়লো পরী।
হঠাৎ দরজার সামনে দুজনে ই ধাক্কা খায়।

.

–আরে কী করছো দেখে হাটতে পারো না।
–স্যরি।
বলে ই চলে যেতে চাইলে অর্ণব হাতটা ধরে ফেলে।
–কোথায় যাচ্ছো
–রুমে।
–বিয়ে হয়েছে আমাদের।
–আপনি মানেন বিয়েটা।
–ভাগ্যে তুমি আছো তাই বিয়েটা হয়েছে নায়তো হতো না।
–আমি মানি না।

কথাটা বলার সাথে সাথে হ্যাচকা টান দিয়ে অর্নব এর সাথে মিশিয়ে নিলো। কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে
গিয়ে বললো।
–তুমি না মানলে ও তুমি আমার বউ।
অর্ণব এর ঠোটগুলো বারবার পরীর কান ছুয়ে যাচ্ছে। অজানা অনুভূতিতে চোখ বন্ধ করে নিলো পরী। অর্ণব
তাকিয়ে তাকিয়ে হাসতেছে। আর পরী নিজেকে ছাড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে।
–আমি না ছাড়লে তুমি কখনো আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না। মনে রেখো।
কথাটা বলে ই অর্ণব পরীর হাত ছেড়ে দিলো।পিছন ফিরে না তাকিয়ে এক দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায় পরী।

পরিণীতা পর্ব ৭

অর্ণব এর কাছে আাসার অনুভূতি গুলো খুব সুন্দর পরীর যদি স্বাভাবিক জীবনে থাকতো তাহলে হয়তো অর্ণব এর
প্রতিটি স্পর্শে সারা দিতো। নিজের অধিকার বুঝে নিতো। কিন্তু জীবন এমন এক স্থানে এসে দাড় করিয়েছে
যেখানে নিজেকে টিকিয়ে রাখা ই বড্ড কষ্টকর।

পরের দিন,,,
পরী ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো। ক্ষুধা লেগেছে। কিন্তু রান্না করতে মন চাচ্ছে না।। কী করবে ভাবছে।
কাজের লোক ও কেউ নেই বাসায়। শুধু অর্ণব আর পরী।

কয়েকবার ডাকলো অর্নব পরীকে কিন্তু কোনো শব্দ নেই।।। শব্দ না পেয়ে অর্ণব পরীর রুমের দিকে যায়। যে
ঘটনা ঘটলো তারপর দুজনের ই একা থাকার প্রয়োজন ছিলো তাই একটু সময় নিয়েছে নিজেকে ঠিক করতে।
সোজা রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে। অর্ণবকে দেখে পরিণীতা দাড়িয়ে যায় অন্য দিকে মুখ করে তাকায়। পরীকে এমন
করতে দেখে অর্ণব পরীর হাতে টান দিয়ে নিজের উপর ফেলে দেয়, অমনি দরজায় দিকে তাকিয়ে দেখে ইলা
আসছে। পরী ভয় পেয়ে যায়, কী বলবে এখন কথা দিয়েছিলো তো অর্ণব এর পাশে আসবো না।

পরিণীতা পর্ব ৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.