পরিণীতা শেষ পর্ব - Golpo Bazar

পরিণীতা শেষ পর্ব || কাছে আসার গল্প || SA Alhaj

পরিণীতা

পরিণীতা শেষ পর্ব
নাহিদা ইসলাম

চোখ খুলে ইরা নিজেকে হসপিটালে আবিষ্কার করলো। হঠাৎ কী হলো বুঝতে পারলো না শুধু মনে আছে
আদির সাথে পরীকে নিয়ে কথা বলছিলো। আর মাথাটা একটু ঘুরতেছিলো তারপর আর কিছু মনে নেই।।।
হসপিটালের সামনে আদিকে সজোরে থাপ্পড় মারলো পরী।

–আমার বোনকে কী করছেন, আমি আমার বোনকে অনেক ভালোবাসি শুধু ওর ভুলটা বুঝানোর জন্য আমি
ইরার সাথে খারাপ ব্যবহার করতাম তাই বলে আপনি ইরাকে
— ব্যস পরী বিশ্বাস করো আমি ইরাকে কিছু করি না তুমি আমাকে ভুল বুঝছো। ইরা আমার সাথে কথা
বলছিলো তারপর হঠাৎ করে ই নিচে পড়ে গেলো। আর তোমার বোন যে নাটক করতে পারে সে অবশ্য ই
জ্ঞান হারানোর নাটক ও করতে পারে।
–কী সব বললে তুমি, এক হাতে কখনো তালি বাজে না অবশ্য ই তুমি ও নাটক জানেন দুজন এক ই।

–ইরার নামক পেসেন্ট এর অবিভাবক কে।
পিছনে তাকিয়ে দেখে নার্স এ কথা বলছে। পরী অর্ণব দুজনে ই নার্সর কাছে গেলো।
–পেসেন্ট এর হাসবেন্ড কে।
–কী হলো কানে কম শুনো নাকি।
চোখ রাঙ্গিয়ে তাকাতে ই আদি এগিয়ে আসে।।।
–আমি।
–তা মিষ্টি খাওয়াচ্ছেন কখন।
আদি কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো
–মানে।
–বাবা হচ্ছেন মিষ্টি খাওয়াবেন না নাকি।।।

পরী অর্ণব দুজনে ই খুশি হলো। কিন্তু আদি পরীর দিকে ছলছল চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে।।।
—আদি আমি যেহেতু সব ভুলে অর্ণব এর সাথে ভালো আছি তোমার ও প্রয়োজন সব কিছু ভুলে ইরার সাথে
সুখে থাকা। তোমার জন্য ই তো ইরা এতো কিছু করেছে। আশা করি তোমার ঐ বুঝটা আছে। বিয়ে যেহেতু
করেছো তাহলে ভালো রাখার দায়িত্বটা ও তোমার।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

—হে আদি। এখন আর জামেলা করিস না আমাকে ও আমার মিষ্টি বউটাকে নিয়ে সুখে থাকতে দে। তুই যদি
সত্যি পরীকে ভালোবাসতি তাহলে ইরাকে আবার ভালোবাসতি না। যাকে একবার মন থেকে ভালোবাসা যায়
তাকে কখনো ভুলা যায় না।
আদি তুমি মিষ্টি আনতে যাও আমি আর অর্ণব ডাক্তারের সাথে কথা বলে ইরারকে নিয়ে বাসায় আসছি।।।
আমি আর অর্ণব ইরার সাথে দেখা করতে যাওয়ার সাথে সাথে ই ডাক্তার রুমে প্রবেশ করে।।
–উনি মনে হয় অনেক টেনশনে থাকে সারাক্ষণ। এই জন্য ই এমন হয়েছে।
–হুম সারাক্ষণ তো কার পরীর ক্ষতি কী ভাবে করবে তার টেনশনে থাকে।

–ঔষধ গুলো ঠিকমত খাওয়াবে আর প্রতি মাসে চেকআপে টা ঠিক মতো করবেন। আশা করি মা ও
বাচ্চা সুস্থ থাকবে।।।আর হে আজকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
ইরার দিকে তাকাতে ই দেখলাম খুব খুশি।
–মা হবার অনুভূতি অনেক মধুর তাই না বোন।
ইরা আমার দিকে অপরাধের চোখ নিয়ে তাকিয়ে উওর দিলো,, হে।
–তারপর ও এই অনুভূতি নিয়ে আমার সাথে খেলা করেছিস।
পরী বাদ দেও চলো বাসায় এখন। সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। পরী আর কোনো কথা বললো না।

বাসায় যাওয়ার পর,,,
বাসায় সবাই খুব খুশি অনেকদিন পর নতুন মুখ আসবে। কিন্তু আদিকে তেমন খুশি দেখাচ্ছে না। সোফায়
চুপচাপ বসে আছে। পরী আস্তে আস্তে আদির দিকে গেলো।
পরীকে দেখে ই আদি চমকে উঠে।।
–কী হলো আদি ভয় পাচ্ছো। এখন কেনো তোমার বউ এর পাশে যাচ্ছো না। এখন তো আর বাচ্চাটা অস্বীকার
করতে পারবে না। বলতে পারবে না এই বাচ্চা আমার না। আমি অর্ণবকে বিয়ে করার আগে ও কিন্তু তুমি আর
ইরা খুব সুখে ই সংসার করেছো।আর রোজ আমাকে কাঁদানো জন্য ছবি পাঠিয়েছো।

.

–তাই তো এখন আমি ই রোজ কাদি ছবিতে দেখে নয় সামনে নিজের ভাইয়ের সাথে দেখে।
পরি মেকি হাসি দিয়ে রুমে চলে যায়।
আজকে কতোদিন পর আদির সাথে কথা হলো। ভালোবাসার মানুষকে কোনো দিন ও ভুলা যায় না। হাজার
সুখে থাকলে ও ক্ষনিকের জন্য হলে ও মনে পড়ে। অর্ণব নামটা এখন মনের সব জায়গায় বিচরণ করে।
হয়তো মানুষটা না থাকলে সুখ নামক পাখিটা পরীর কাছে ধরা দিতো না।

মা হবার অনুভূতি কেমন তা ইরা এখন বুঝতে পারছে। এই অনুভূতি নিয়ে ইরা পাপ খেলায় মেতে ছিলো।
কিছুক্ষন পর কোথাও পরী না পেয়ে রুমে প্রবেশ করে দেখে। ফ্লোরের মধ্যে বসে আছে বেডের উপর মাথা
দিয়ে।। অর্ণব দৌড়ে যায় পরীর দিকে, কোনো কথা না বলে কোলে তুলে নেয়। বেডে বসিয়ে জিজ্ঞেস করে,

–কী হয়েছে পরী।
–কিছু না।
অর্ণবকে দেখলে মনে হয় পরীর সব দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে গেছে।
–পরী।
–হুম
–সিরিয়ালে কিন্তু আমার বাবা হওয়ার কথা ছিলো।
–হুম তো।
–আমি ও বাবা হতে চাই।
এটা বলার সাথে সাথে পরী চলে যেতে নিলে অর্ণব হাত ধরে ফেলে।
–কোথায় যাচ্ছো, টিয়ে পাখি।
পরীর অনেকটা কাছে গিয়ে কথাটা বললো অর্ণব।
–আসবো..

পরিণীতা পর্ব ২০

কারো কন্ঠ শুনে পরী অর্ণব দুজন ই সরে বসে।
হঠাৎ ইরা রুমে ডুকে ই পরীর পা জড়িয়ে ধরে কান্না করে দেয়।
–আরে আরে কী হচ্ছে এসব।
–পরী আমাকে মাফ করে দে। আমি না বুঝে অনেক বড় ভুল করেছি।।।।তুই মাফ বা করলে আদি আমাকে
কখনো মেনে নিবে না।
— পাগল তোমরা। মানুষ ভুল করে আল্লাহ তাদের শুধরানোর সুযোগ দিয়েছে। আমি মাফ করে দিয়েছি এখন
আল্লাহ কাছে মা চাও।
–প্লিজ পরী আমাকে ও মাফ করে দিয়ো। তুমি যদি মাফ না করো তাহলে আমি ইরার সাথে সুখে থাকতে
পারবো না।
–মাফ করে দিলাম কিন্তু কথা দিতে হবে এমন কাউকে কখনো ঠকাবে না।

–কথা দিলমা। মাফ করেছো তো।
–হুম।
ইরা পরীকে জড়িয়ে ধরে। অনেক্ষন কান্না ও করে।
বেশকিছুক্ষন পর তারা চলে যায়।
পরী দরজা লক করে আসতে আসতে অর্ণকে জিজ্ঞেস করে।
–দাদিমা নাকি আজকে আসবে, আসলো না কেনো।
–উনি হঠাৎ ই অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাই পরে আসবে।
পরী আয়নায় চুল ঠিক করতেছে।
–টিয়াপাখি আসবা তুমি এতো কী করো আয়নার সামনে।
–দেখতেছে ই তো।
পরী ইচ্ছে করে ই বেডে যাচ্ছে না। অর্ণবকে রাগাতে অনেক ভালো লাগে তাই।

–তুমি আসবা এখন
–না।
–আসবা না।
–বললাম তো না।
অর্ণব পরীকে কোলে নিয়ে। বেডে শুয়িয়ে দেয়। ঠোঁটে গভীর ভাবে কিস করে বলে।
–আই লাভ ইউ পরিণতা।
পরিণীতা নামটা অর্ণব এর মুখে অনেক দিন পর শুনলো।আজকে পরী আর কোনো কারণ না খুজে অর্ণবকে
বলে দিলো
–আই লাভ ইউ টু অর্ণব।
কী বললা টিয়াপাখি। আজকে আর তোমাকে ছাড়ছি না। বলে ই পরিণতা মাঝে হারিয়ে গেলো।

—সমাপ্ত—-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.