মন গহীনে - Romantic Golpo

মন গহীনে পর্ব ১৮

মন গহীনে

মন গহীনে পর্ব ১৮
দোলন আফরোজ

দেখতে দেখতেই দুদিন কেটে গেছে। এই দুদিনে তিথী যতোটা সম্ভব কম গিয়েছে। এক কথায় কাব্য তিথীর দেখা পায়নি বললেই চলে।তমার রিসিপশনের পর দিনি তারেক রহমান আর তানিয়া বেগম এসেছিলেন তিথীর সাথে দেখা করতে, কিন্তু দেখা করেনি তিথী। দরজা বন্ধ করে বসেছিলো। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে হতাশ হয়ে ফিরে যান উনারা।
আজ সন্ধ্যায় সেলিম সাহেব একটা পার্টি রেখেছেন তিথী আর কাব্যর জন্য। এতে সেলিম সাহেব এর বড় বড় লোক সহ নিজের আত্নীয় স্বজন সবাই এসেছে। এসেছে তিথীর আত্নীয় স্বজন রাও।

তিথীর এইসব বিরক্তিকর ছাড়া আর কিছুই মনে হচ্ছে না। অন্য সময় হলে এমন প্রোগ্রাম এর জন্য সেই বেশি এক্সাইটেড থাকতো। কিন্তু আজ তার মনে নেই কোনো আনন্দ। কিন্তু আর যাই হোক তিথী বেয়াদব না। তাই সেলিম সাহেব এর সিদ্ধান্ত কে সে সম্মান জানায়।

পর্ব গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

পার্লার থেকে লোকজন এসেছে তিথীকে সাজাতে। পড়ার জন্য সেলিম সাহেব নিজেই ডিজাইনার লেহেঙ্গা আনায়। প্রোগ্রাম এর জন্য সাভারের সবচেয়ে বড় কনভেনশন হল বুক করেন সেলিম সাহেব। সেলিম সাহেব কায়েস আগেই চলে যায় কনভেনশন হলে। কাব্য ও যায় উনাদের সাথে। কারণ এরেঞ্জমেন্ট ঠিক ঠাক আছে নাকি তা উনাদের ই দেখতে হবে। আর গেস্ট রাও কিছু কিছু আসা শুরু করেছে।

কাব্য আজ ফর্মাল ড্রেস পরেছে। ব্লু প্যান্ট এর সাথে হোয়াইট শার্ট এর উপর ব্লেজার। অমায়িক লাগছে দেখতে।
সন্ধ্যা ৭ টার দিকে তিথী আসে হিয়া আর অর্নার সাথে গাড়ি করে।
তিথী যখন স্টেজ এর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে তখন সবার নজর তিথীর দিকে। কাব্য ওর ফ্রেন্ডস এর সাথে কথা বলছিলো। তিথীকে দেখে সে হা হয়ে থাকে।

রয়্যাল ব্লু লেহেঙ্গা আর ভারী সাজে তিথী অন্যরকম লাগছে। কাব্য মনে হচ্ছে তার পুতুল বউ টা যেনো হুট করেই বড় হয়ে গেছে। তার চোখে মনে হচ্ছে এর চেয়ে সুন্দরী নারী বুঝি আর দেখেনি। হার্ট যেনো বিট করাই ভুলে গেছে কিছু সময় এর জন্য।
ওর হা হয়ে থাকা দেখে পিয়াস বলে, মুখ টা বন্ধ করো বন্ধু, মশা মাছি সব ঢুকে যাবে নয়তো।বলতেই বাকি সব বন্ধু এক সাথে হেসে উঠে।

হিমেল বলে বউ টা তো তোর ই নাকি, এখনি এভাবে দেখলে সারারাত কি করবি হুম? বাই দ্যা ওয়ে, বাসর কি করে ফেলেছিস?
কথাটা বলতেই কাব্য ওর পেটে আলতো ঘুষি মেরে বলে, শা*লা বদলালি না তুই। মাথায় সব সময় আজেবাজে কথা ই ঘুরে।
বা রে আজেবাজে কেমনে হলো?এটা আজেবাজে কথা নাকি আবির এলে আবিরকেই জিজ্ঞেস করিস। বলেই আবার সবাই হাসতে থাকে।

স্টেজে বসানো হয় তিথীকে, সেও সবার সাথে হাসি মুখেই কথা বলছে। এটা দেখে কাব্যর মনটা প্রশান্তিতে ভরে যায়। তারমানে কি তার পুতুল বউ টা সব আসতে আসতে মেনে নেয়ার চেষ্টা করছে?

তিথীর বাবা মা, তার সব আত্নীয় স্বজন রাও সবাই এসে গেছে।সবার সাথে ভালো করে কথা বল্লেও ওর বাবা মার সাথে কথা বলেনি একবারো। তারেক রহমান হতাশ হয়ে মেয়ের দিকে তাকান। মেয়ের চোখ দুটো ছলছল করে উঠে। আজ চার দিন হয় নিজের বাড়ি ছাড়া, বাবা মা ছাড়া। ইচ্ছে করছে বাবার বুকের উপর পরে মন খুলে কাঁদতে। কিন্তু না, তা করবে না সে। অনেক অভিমান জমে আছে তার বাবা মায়ের উপর। কেনো করলো তারা তার সাথে এমন টা।কেনো জোর করে ঐ ভিলেন টার সাথে বিয়ে দিয়ে দিলো তার।

কোনো দিন কথা বলবে না সে বাবা মায়ের সাথে। যাবেও না কোনো দিন ও বাড়ি আর। মরতে হয় এখানে পরেই মরবে সে।
কাব্য ও স্টেজে এসে দাঁড়ায়। কি যে সুন্দর লাগছে দুজন কে এক সাথে। একেবারে যেনো রাজ জুটক। কাব্য পাশে এসে দাঁড়াতেই ভ্রু কুঁচকে ফেলে তিথী। মুচকি হেসে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে? চারপাশে মানুষ দেখে স্বাভাবিক আচরণ করার চেষ্টা করে সে। ফটোগ্রাফার বিভিন্ন এংগ্যালে ছবি তুলে ওদের।এর মাঝেই আবির তমা আসে। আবির এসে কাব্য কে জড়িয়ে ধরে।

অবশেষে পেয়ে গেলি তোর পুতুল বউ কে। কিন্তু আমি গুরুতর রাগ করেছি তোর সাথে। দুইটা বড় অন্যায় করেছিস তুই আমার সাথে।
প্রথম টা, তিথী ই যে তোর পুতুল বউ তা আমাকে কেনো আগে জানাসনি?😡
আসলে আমি চাইনি এভাবে কিছু হোক। আমি চেয়েছিলাম আগে তিথী সবটা জানবে, তারপর তোদের জানাবো। তাকেই তো জানাতে পারিনি, তাই আর তোদের ও বলিনি। রাগ করিস না প্লিজ, বলে আবার জড়িয়ে ধরে আবিরকে।
এখন বলেছিস তো নাকি?

উহুম, আমি চাই না আমি এতো বছর যাবৎ ওকে ভালোবাসি, ওর জন্য অপেক্ষা করে আছি, এটা জেনে আমাকে ভালোবাসুক। আমি চাই ও আমাকে আমার মতো করে ভালোবাসবে, তারপর না হয় অতীত টা জানলো।
তুই কিন্তু ব্যাপার টাকে আরো কমপ্লিকেটেড করছিস।
জানিয়ে দিলেই কিন্তু তিথী সবটা মেনে নিতো। তোর জন্য এতোদিনের জমে থাকা সব ভুল ধারণা গুলো কেটে যেতো।
আমি চাই না সে দয়া করে আমাকে ভালোবাসুক। আমি জানি আমার ভালোবাসা দিয়ে ঠিক ই আমি ওর সব ভুল ধারণা দূর করতে পারবো। পারবো ওর মন জয় করতে।

তাই যেনো হয় ভাই। তোর কিন্তু আরো ধৈর্যশীল হতে হবে।
প্রতিনিয়ত সেই চেষ্টা ই করছি। কিন্তু পারি নারে এখন আর। ইচ্ছে করে বুকের মধ্যে খানে লুকিয়ে রাখতে।
আবির কাব্যর কাঁধে হাত রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
তমা এসে তিথীকে জড়িয়ে ধরে। এবার তিথী আর নিজেকে সামলাতে পারেনি। কেঁদে দেয় জোরেসুরেই। তমা তিথীকে বিভিন্ন ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছে। যা হয়েছে তোর ভালোর জন্য ই হয়েছে।
কিচ্ছু ভালো হয়নি। কেউ ভালোবাসে না আমায়। আমাকে ঐ কাবির সিং তোলে নিয়েছিলো জেনেও কি করে পারলো আমায় ওর সাথেই বিয়ে দিতে।

তখন তিথীর নানী এসে বুঝায় অনেক্ষণ। এতো মানুষের মাঝে এভাবে কাঁদে না দিদিভাই। লোকে খারাপ বলবে।
তিথী নাক টেনে ফুঁপিয়ে কান্না থামানোর চেষ্টা করে। সবটাই দেখে কাব্য, বুকের ভিতর টা কেমন যেনো হু হু করে উঠে তার। তার পুতুল বউ তাকে এতোটা অপছন্দ করে!

নানী গিয়ে কাব্য পাশে দাঁড়িয়ে গলা খাকানি দিয়ে জিজ্ঞেস করে, কি নাত জামাই, ফুলের মধু খাওয়া হয়নি বুঝি?
নানীর কথায় কাব্য উনার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে, তোমার নাতনি কি এতোটাও বুঝদার!
চিন্তা করো না, আমি বুঝিয়ে দিবো সব।
মানুষ জনের ভীড় কমছে। এখন শুধু বাড়ির মানুষ গুলোই আছে। নানী এসে তিথীকে অনেক কিছু বুঝাচ্ছে। বিয়ে হয়ে গেলে মেয়েদের স্বামী ই সব। আর কাব্যর মতো ছেলেতো আর দ্বিতীয় টি হয় না। কোনো দিন কষ্ট দিস না দিদিভাই, নাত জামাইকে।

স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক টা কেমন হয় তা বলতেই তিথীর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায়। কান দিয়ে ধোঁয়া বেরুতে শুরু করে।
হালকা ধাক্কা দিয়ে নানীকে সরিয়ে দিয়ে বলে এসব কি নোংরা কথা বলছো বুড়ি। আমি কিন্তু আপুটিকে দিয়ে তোমার মেয়ের কাছে নালিশ জানাবো।
নারে দিদিভাই না, এসব নোংরা কথা না। এসবই হয় স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে। নাত জামাই যদি সোহাগ করতে আসে ফিরিয়ে দিস না তাকে।
নোংরা বুড়ি। তুমি থেকে যাও ঐ ভিলেন টার সোহাগ খেতে। আমি থাকবোই না ওর সাথে।
ওদের কথা শুনে তমা মিটমিট করে হাসছে।

রাত প্রায় পৌনে ১২ টা। তিথীকে কাব্যর রুমে নিয়ে যাচ্ছে হিয়া।অনেক বলেছে তিথী, যাবে না ঐ কাবির সিং এর রুমে। থাকবে না ওখানে। সে হিয়ার সাথেই থাকবে।তিথীর কথা শুনে হাসে হিয়া। আমার রুমে আর থাকা যাবে না তোমার।
তিথী গিয়ে শাহানারা বেগম কে জড়িয়ে ধরে বলে, মামনী আমি তোমার সাথে থাকবো। যাবো না আমি ভিলেন টার রুমে।
শাহানারা বেগম পরম যত্নে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। বিয়ে হয়ে গেলে স্বামী স্ত্রীর আলাদা থাকতে হয়না। আমার ছেলেটা অতোটাও খারাপ না যতোটা তুই ভাবছিস। একটু সুযোগ দে আমার ছেলেটাকে, দেখবি তুই নিজেই সব বুঝতে পারবি ও কেমন। যা মা ঘরে যা।

উনাদের সাথে পেরে উঠে না তিথী, তাই কাঁদো কাঁদো হয়েই কাব্যর রুমের ভিতর যায় সে। তিথীকে ঘরে নিয়ে যায় হিয়া। ।ঘরে ঢুকে তো তিথী পুরাই অবাক।
পুরো ঘরটা অপরাজিতা আর কাঠ গোলাপ দিয়ে সাজানো। বিছানায় লাল গোলাপ দিয়ে হার্ট শেপ আঁকা, তার চারপাশে ঘার নীল অপরাজিতা। মুহূর্তেই তিথীর মন কেনো জানি ভালো হয়ে যায়। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে নিজেও তো আজ অপরাজিতার রঙে সেজেছে। অপরাজিতা বরাবর ই তিথীর পছন্দের ফুল। আর কাঠ গোলাপ কার না পছন্দ।
তিথী হিয়ার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।

আইডিয়াটা আমার, সাজিয়েছিও আমি। কিন্তু অপরাজিতা আর কাঠ গোলাপ এর কথা ভাইয়া ই বলে। তোমার নাকি অপরাজিতা পছন্দের ফুল।
অবাক হয় তিথী। এই কাবির সিং টা এতো রোমান্টিক হওয়া শুরু করেছে কেনো? আর জানলোই বা কোথায় অপরাজিতা আমার পছন্দ!

পরক্ষণেই নানীর বলা কথা মনে পড়ে। স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। ও আল্লাহ, এই কাব্য ব্যাটার এমন কোনো উদ্দেশ্য নেই তো? ব্যাটার তো এমনিতেই নজর খারাপ। আমি এখন কই যাই।
হিয়াপু, আমি থাকবো না এ ঘরে। প্লিজ আজ রাত টা তোমার সাথে থাকতে দাও, কাল ই আমি বাড়ি চলে যাবো। বলেই কান্না শুরু করে।
পাগল হয়ে গেছো ভাবি? কতো প্ল্যান করে এসব করেছি। তোমাদের বাসর করাবো বলেই ২ দিন ভাইয়াকে তোমার থেকে আলাদা রেখেছি।

আপু আমি কি তোমার কোনো ক্ষতি করেছি বলো? কেনো করছো আমার সাথে এমন টা?
পাগলি মেয়ে, কিছু হবে না, শুধু শুধু ভয় পাচ্ছো তুমি। আচ্ছা থাকো, ভাইয়া এখনি চলে আসবে, বলেই হিয়া দরজা চাপিয়ে দিয়ে চলে যায়।

ভয়ে তিথীর কলিজা শুকিয়ে যাচ্ছে। থাকতে পারবে না সে ঐ ভিলেন এর সাথে এক ঘরে। এসব ভাবনার মাঝেই কাব্য ঘরে আসে। কাব্যর আসাতে তিথীর বুকের ভিতর টা যেনো শুকিয়ে যায়। এক দৌঁড় দিয়ে গিয়ে খাটে বসে পরে কম্বল জড়িয়ে। এক দম না। একদম কাছে আসবেন না আমার বলে দিচ্ছি।

ভ্রু কুঁচকায় কাব্য। কি হলো হঠাৎ? এতো ভয় পাচ্ছো কেনো, কাছে গিয়ে বসতে বসতে। কাব্যর বসা দেখে তিথী খাটের উপর ই দাঁড়িয়ে যায়। কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে, আ আপ আপনি কি সোহাগ করতে আসছেন?? আমার চাই না সোহাগ, নানীকে গিয়ে করুন, বলেই কেঁদে দেয় সে।
এবার শব্দ করে হেসে দেয় কাব্য। এসব কে বলেছে তোমাকে, নানী?
কান্না অবস্থাতেই উপর নিচ মাথা নাড়ায় তিথী।

আয়েশ করে বিছানায় বসে, কি বলেছে শুনি? ( মুখে মুচকি হাসি লেগে আছে)
বলেছে, স্বামী তার স্ত্রী কে সোহাগ করে। আরো বলেছে,,,, বলেই দাঁত দিয়ে জিভ কাটে সে।
আবার হাসে কাব্য, হুম আরো বলেছে? বলে ভ্রু উঁচিয়ে তাকায় তিথীর দিকে।
তিথী দুইদিকে মাথা নাড়িয়ে, উহুম, আর কিছু বলেনি।

আমার সোহাগ চাই না, প্লিজ। আমি বাড়ি যাবো।
আগে ঠান্ডা মাথায় বসো আমার সামনে।
আবার মাথা নাড়ায় তিথী, উহুম।
কপট রাগ দেখিয়ে, বসো বলছি।
তিথী ও বাধ্য মেয়ের মতো বসে পরে।

কাব্য তিথীর মুখোমুখি বসে বলে, খুব ইচ্ছে করছে হাত টা ধরতে, ধরি প্লিজ?
বড় বড় চোখ করে তাকায় তিথী।
আচ্ছা আচ্ছা ধরবো না। আমাকে কি তোমার অনেক খারাপ মানুষ মনে হয়?
উপর নিচ মাথা নাড়ে তিথী।
খুব বেশি খারাপ?

আবারো আরো জোরে উপর নিচ মাথা নাড়ে সে।
হতাশার নিশ্বাস ছাড়ে কাব্য। তোমার সাথে যা করেছিলাম তা আমার জীবনে করা সবচেয়ে বড় ভুল ছিলো। উহুম ভুল বললে ভুল হবে, অন্যায় করেছিলাম আমি। বিশ্বাস করো, কাব্য কোনো দিনো কারো উপকার ছাড়া ক্ষতি করেনি।
আবির সু*সা*ই*ড করার পর আমার মাথা ঠিক ছিলো না। তাই হিতাহিত জ্ঞান ভুলে এতো বড় একটা অন্যায় করে ফেলি আমি।

তুমি ভেবোনা অপরাধবোধ থেকে বিয়ে করেছি তোমায়।তোমার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে হলে তাকে কখনোই বিয়ে করতাম না আমি, হয়তো তার সাথে করা অন্যায় এর মাসুল টা অন্যভাবে দিতাম।
এখন বলতে পারো তোমাকে কেনো বিয়ে করলাম তবে, জানবে, সময় হলে ঠিক জানবে।
দুই হাটুতে মুখ গুজে তিথী চুপ করে আছে। কাব্য কথা গুলো বলার সময় তার চোখ দুটো ছলছল করছিলো। তা দেখে তিথীর বুকের ভিতর টা হু হু করে উঠে। মনে মনে ভাবে তবে কেনো বিয়ে করলো আমায়!

এবার হালকা হাসে কাব্য। সোহাগ করার কথা বলছিলে না? এখন নিশ্চিন্ত থাকতে পারো। তোমার অনুমতি ছাড়া ছোঁবো না তোমায়। এসব আদর সোহাগ সব তুলা রাখলাম। যখন আমায় ভালোবাসবে তখন সব হবে। এর আগে না। আর তখন শোধ সমেত সব ফেরত নিবো আমি। বলে মুচকি হাসে।।
আর এখন যা করবো তার জন্য অনুমতি নিবো না।
কাব্যর কথা শুনে ভরকে যায় তিথী। চোখ দুটো বড়

বড় করে ফেলে। কি করবে এখন আবার? ভয়ে অন্তর আত্না শুকিয়ে যায় তিথীর।
পকেটে হাত দেয় কাব্য, একটা বক্স বের করে। তা থেকে একটা গোল্ড এর পায়েল বের করে নিজ হাতে পরিয়ে দেয় তিথীর সুন্দর পা টা তে। পড়িয়ে দিয়ে পায়ে গভীর চুমু খায়।
তিথীর শরীর যেনো হিম হয়ে আসে। অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে তিথীর। ভালো লাগছে নাকি খারাপ বুঝতে পারছে না সে। চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়।

পা থেকে ঠোঁট তুলে তিথীর বন্ধ চোখ জোড়ায় ফুঁ দেয় কাব্য। এতে কেঁপে উঠে তিথী।
ভালোবাসি! বড্ড বেশি ভালোবাসি!!
চোখ দুটো বড় বড় করে খুলে ফেলে তিথী। এর জন্য যেনো প্রস্তুত ছিলো না সে। এই কাবির সিং এতোটা রোমান্টিক হতে পারে তা তার জানা ছিলো না। সারাক্ষণ তো মুখ গোমড়া করে রাখে।

মন গহীনে পর্ব ১৭

তিথীর এই চাহনি দেখে কাব্যর নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। মনের অবাধ্য ইচ্ছে গুলো বার বার হানা দিচ্ছে। এক্ষুনি কিছু অঘটন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
ফট করে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায় সে। কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে এসে বলে, যাও ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ো।

মন গহীনে পর্ব ১৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.