বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ১২- Golpo Bazar

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ১২ || বাংলা ইমোশনাল গল্প

বৃষ্টি নামার পরে

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ১২
লেখিকা-ইশরাত জাহান ফারিয়া

“ভোরের কুচি করা নরম রোদ চাদরের উপর টুকরো হয়ে পড়ছিলো, কিছুটা বিছানার উপর আর বাকিটা মেঝেতে।ঠান্ডা ব্যকুল হাওয়ারা
ঘরময় ছড়িয়ে পড়ছে মিষ্টি করে।পূর্ব আকাশ লালে লাল হয়ে আছে।নীলের সাথে সাদা আর লাল টকটকে আকাশ দেখে হঠাৎ করে মনে
হবে আকাশের ওই কোণে বুঝি আগুন ধরে গিয়েছে।এই যা,এক বৃষ্টি আসার ধান্ধা।একগুচ্ছ সুবাসিত ফুলের গন্ধ নাকে এসে লাগতেই হুঁশ
ফিরলো গুঞ্জনের।মৃন্ময় এখনো ওর ঠোঁটে, গলায় নিজের ঠোঁট ছুঁয়াচ্ছে।গুঞ্জনের মনে হচ্ছে এ মৃন্ময় কি পাগল হয়ে গেলো নাকি?আলতো
করে দু’হাতে ঠেলে সরাতে চাইলো।কিন্তু পারলো না।এর তো বডিবিল্ডারদের মতো গায়ের জোর,কাঠির মতো শুকনো গুঞ্জন তো আর
বটগাছের মতো শক্তিশালী ব্যক্তির সাথে পারবে না।তাই গুঞ্জন টেকনিক বের করলো, এককথায় নিঞ্জা টেকনিক।দিলো মৃন্ময়ের হাতে এক
কামড়।”

“কামড় খেয়ে মৃন্ময় ছোট্ট করে আউচ বলে উঠলো। হাতটা আলগা করে অন্যহাতে চেপে ধরে চোখ বুজে ব্যথাটা গিলার চেষ্টা করতেই
গুঞ্জন ওকে ধাক্কা মেরে বিছানা থেকে উঠে পড়লো।ছলছল চোখে মৃন্ময়ের দিকে তাকিয়ে বললো, আমি এমনটা আপনার কাছ থেকে আশা
করিনি।বলে মুখ ফিরিয়ে নিলো গুঞ্জন।দ্বিতীয়বার আর মৃন্ময়ের দিকে পিছু ফিরে চাইলো না।সোজা রুম থেকে বেরিয়ে ছাদে চলে এলো।”
“ভালো করে ছাদটা খুঁজে দেখলো গুঞ্জন।নাহ,কেউ নেই।একটু আগে হয়তো এখানে অনু ছিলো।ওর জিম করার সরঞ্জামগুলো টেবিলের
উপর এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে।কেউ নেই দেখে নিঃশব্দে ছাদের দরজাটা ঠেলে লাগিয়ে দিলো।”

গল্প শুনতে আমাদের চ্যানেল থেকে গুরে আসুন

“গুঞ্জনের হঠাৎ করে খুব খারাপ লাগছে।ওর ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে।কিন্তু কান্নারা গলার কাছে এসে আটকে যাচ্ছে।কিছুতেই
চোখ,বুক ভিজিয়ে ওর কান্না আসছে না।গুঞ্জন ধপ করে ছাদের দরজায় হেলান দিয়ে ফ্লোরে বসে পড়লো।গুঞ্জন মনে করার চেষ্টা
করলো,শেষ কবে ও কেঁদেছে?”

“আবছা আবছা ভাবে অনেকক্ষণ চেষ্টা করে গুঞ্জনের মনে হলো,খুব ছোটবেলায়!সম্ভবত ওর যখন তেরো বছর বয়স,তখন থেকেই গুঞ্জন
সবার থেকে লুকিয়ে,আড়ালে কাঁদতো।আরও একটু বড় হবার পরে গুঞ্জনের জীবন থেকে কান্না নামক শান্তির সুখপাখিটা বিদায়
নিয়েছিলো,আজও ফিরেনি।মাঝে মাঝে কথায় বা কারো সাথে ইচ্ছে করে ফাজলামো করার সময় গুঞ্জন নাটকীয়ভাবে
চোখে পানি আনার ড্রামা করতো।’ড্রামা’ এই শব্দটা ছোটবেলায় অনেক শুনেছে গুঞ্জন।কখনো মা,কখনো বাবা,কখনো ফুপি,চাচ্চু-চাচী
বা অতি কাছের আপনজনদের কাছ থেকে ‘মেলোড্রামা” নামক শব্দটা বহুবার শুনেছে।মেনে নিয়েছিলো সেটা,বাঁচতে শিখেছিলো নিজের
মতো নিজের জগৎে।তাও সেটা সহ্য হলো না কারোর।জোর করে বিয়ে দিয়ে দিলো মৃন্ময়ের সাথে,যে কি না গুঞ্জনের কাজিন রুহীর
গার্লফ্রেন্ড।অবশ্য গুঞ্জন জানে না মৃন্ময় কখনো ভালোবেসেছে কি না রুহীকে?গার্লফ্রেন্ড হলেই যে কাউকে ভালোবাসতে হয়,আজকাল
তো তা আর দেখা যায় না।প্যাশনে পরিণত হয়েছে গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড খেলা,সারাদিন ঘুরাঘুরি আর ফোনে কথা বলা।তবে মৃন্ময়কে কখনো
রুহীর জন্য এতোটা সময় দিতে বা উতলা হতে দেখা যায়নি।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“কিন্তু আজ!এই বড্ড অসময়ে গুঞ্জন যখন বুঝতে পারলো মৃন্ময়ের জন্য ও কিছু অনুভব করে তখনই গুঞ্জনের চারপাশটা
অন্ধকারে,বিষাদে ছেয়ে গেলো।হঠাৎ করেই গুঞ্জনের মনে-প্রাণে পিছুটান অনুভূত হল,অনুভূত হলো কিছু কঠিন যন্ত্রণা। আগ্নেয়গিরির
মতো জ্বলে উঠলো ভালো লাগা নামক ভালোবাসা শুরু হবার প্রথম ধাপটা।ভালোবাসাহীন গুঞ্জন কোনো এক রাতের গভীরে ওর ডায়রীর
ছেঁড়া এক পৃষ্ঠায় লিখে রেখেছিলো ওর জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ এক কথাটি।মনে পড়লো গুঞ্জনের এই বড্ড অসময়ে,অবেলায়।”

‘আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎ্পাতের মতো হঠাৎ
বিষাদের আগুনে জ্বলে,
আমার জীবনে আসবে হঠাৎ ফাগুন।’

“এই পঙক্তিও গুঞ্জন লিখেছিলো ওর বাবার কথায়।যেদিন কোনোকিছু না করেই গুঞ্জন তার বাবার কাছ থেকে শাস্তি পেয়েছিলো।মায়ের
সাথে নানুবাসায় যেতে চাওয়ার অপরাধে বাবা তাঁকে সারারাত নিজের ঘরে আটকে রেখেছিলো,খাবার পর্যন্ত খেতে দেয়নি।অনেক ভয়ংকর
কথা অবলীলায় বলে ফেলেছিলো তার বাবা।ছোট্ট গুঞ্জন সেদিন সবই বুঝতে পেরেছিলো,সবচেয়ে বেশি যে কথায় ও কষ্ট পায় সেটা গুঞ্জনের
বাবা ওকে এভাবে বলেছিলো যে,’আসলে তুমি কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না গুঞ্জন।তুমি আসলে একটা অপয়া,তাই তোমার সাথে
কেউ মিশবে না।তোমাকে কেউ কোনোদিনও ভালোবাসতে চাইবে না,বুঝলে?কেউ না?ভালোবাসা পাবার যোগ্য তুমি নও!”

“গুঞ্জন খুব কষ্ট পেয়েছিলো। কথায় বলে ‘অল্প শোকে কাতর,অধিক শোকে পাথর’।সেদিন ওইসব কথা শোনার পর গুঞ্জন শেষ
কেঁদেছিলো।আর কাঁদেনি কখনো ওভাবে,কষ্টেরা টুকরো টুকরো করে ওর মনে জমতে জমতে আজ বিশাল এক কষ্টের পাহাড়ে পরিণত
হয়েছে।এগুলো নিয়েই গুঞ্জন বাঁচতে শিখেছে, হাসতে শিখেছে। একটু ফাজলামো করে নিজের আনন্দটুকু ধরে রেখেছে গুঞ্জন।এই যা!”

১৯.

“ছাদের ফ্লোরে বসে এলোমেলো চুলে,কাপড়ে কাঠ হয়ে বসে আছে গুঞ্জন।অনেক চেষ্টার পরে ওর চোখে পানি এসেছে।কাঁদছে ফুঁপিয়ে,
বেশি শব্দও হচ্ছে না।কান্নার কারণে চোখগুলো টকটকে লাল হয়ে আছে,গালগুলো গোলাপি হয়ে দু’দিকে বিস্তৃত হচ্ছে।সুন্দর নাকটা
লালচে গোলাপি হয়ে কান্নার বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।গুঞ্জনের শুধু রাগ হচ্ছে নিজের প্রতি।কি করে এতো স্ট্রং থাকা স্বত্ত্বেও গুঞ্জন মৃন্ময়ের জন্য
অন্যরকম অদ্ভুত অনুভূতি অনুভব করছে? কেন? কেন? মৃন্ময়ের ছোঁয়ায় শিহরিত হচ্ছিলো বারবার,ভালোলাগা ছড়িয়ে পড়ছিলো
গুঞ্জনের মনে।কিন্তু আর ক’দিন পরেই যে গুঞ্জনকে এ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে! মৃন্ময়কে মুক্ত করে দিতে হবে ওর জীবন থেকে।

পারবে কি গুঞ্জন? হুম পারতেই হবে।লোকটা তো ওকে আর চায় না,সেও তো গুঞ্জনের বাবার মতো বলেছে গুঞ্জন কারো ভালোবাসা পাওয়ার
যোগ্য না।হুম তাই,তাইতো গুঞ্জন না পেলো আপনজনদের ভালোবাসা না পেলো মৃন্ময়ের ভালোবাসা।সেজন্য বাকি কয়েকটা দিন
গুঞ্জনকে এভাবেই কঠিন হয়ে থাকতে হবে, কাউকে কিছু বুঝতে দিলে চলবে না।ভেবেই আবারও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো গুঞ্জন।ঠিক সে
সময় আকাশ ভেঙে নেমে এলো বৃষ্টিরাজির ফোঁটা ফোঁটা উষ্ণ জল।সেই জলের সাথে মিশে যাচ্ছিলো গুঞ্জনের চোখ বেয়ে পড়া লুকোনো
কিছু ঘটনা,কিছু সত্য,কিছু ভালোলাগার আবেশে আসা মুক্তোর মতো জল।টপটপ করে পড়া বৃষ্টিতে গুঞ্জনের গায়ের জামা,ওড়না ভিজে
একাকার।তবুও ভালো লাগছে,ফুঁপানোর শব্দটা বৃষ্টির সুন্দর শব্দের সাথে হাওয়ায় হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে খুব করে।

____________________

“মৃন্ময় স্তব্ধ হয়ে বসে রইলো খানিকক্ষণ।রাগের মাথায় এমন একটা কাজ কিভাবে করলো সে?নিজের প্রতি বেশ রাগ হচ্ছে।আর গুঞ্জনও
কি ভাবছে ওকে?আগে যা হোক আজকের মতো কাজটা করেনি মৃন্ময়।ইশ,সকাল সকাল এমন একটা বিহেভ করে নিজের প্রতি কেমন
যেন লাগছে।সে সময়টার কথা মনে করলো একটু, যখন রাগের মাথায় গুঞ্জনের ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়েছিলো তখন কেমন অদ্ভুত ভালোলাগা
তৈরি হয়েছিলো মৃন্ময়ের।”

“ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেরুবার পরে গুঞ্জনকে কোথাও দেখতে পেলো না গুঞ্জন, সারা বাড়িতে খুঁজেও যখন পেলো না তখন ছাদের
উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো মৃন্ময়।বাইরে প্রচন্ড বৃষ্টি, এই বৃষ্টির মাঝে তো আর গুঞ্জন ছাদে থাকবে না,তাও এ মেয়ে যা পাগল যদি বৃষ্টিতে ভিজেও
তাও মৃন্ময় অবাক হবে না।”

“সিঁড়ি বেয়ে ছাদের দরজার কাছে এসে দরজা ঠেলে দেখলো ভেতর থেকে দরজা বন্ধ।মৃন্ময় দরজায় কড়া নাড়লো,খুললো না কেউ।অবশ্য
ঝুপ করে নামা বৃষ্টির শব্দে কিছুই শোনা যাচ্ছে না।দরজার ফুটো দিয়ে মৃন্ময় ছাদের দিকে দৃষ্টি মেললো।দেখলো,ছাদের রেলিঙ ঘেঁষে
দাঁড়িয়ে আছে গুঞ্জন।চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে।ওর মুখ দেখে মনে হচ্ছে অন্যকিছু।আচ্ছা,গুঞ্জন কি
কাঁদছে?””মৃন্ময় এবার জোরে জোরে দরজা ধাক্কাচ্ছে।প্রচন্ড দরজা ধাক্কানোর শব্দে গুঞ্জনের হুঁশ ফিরলো। তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলে
মৃন্ময়কে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।বললো, কি?”

.

-“তুমি এই সকাল সকাল ছাদে কি করছো?”
“গুঞ্জন কোমড়ে হাত দিয়ে রাগী সুরে বললো, ড্যান্স করছি।”
“মৃন্ময় অবাক হয়ে বললো, কোথায়?”
-“কি কোথায়?”
-“আই মিন তুমি ড্যান্স করছিলে কোথায়?”
-“এইতো আপনার ঢংগী বোন যেভাবে লাফায় সেভাবে লাফ-ঝাঁপ দিচ্ছিলাম!”
“মৃন্ময় রেগে বললো, মিথ্যা কথা একদম বলবে না।আমি তো দেখেছি তুমি চোখ বন্ধ করে স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিলে!”
“গুঞ্জন সন্দেহী গলায় বললো, ওয়েট ওয়েট।আমি যে এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেটা আপনি জানলেন কিভাবে?”
“মৃন্ময় গম্ভীর গলায় বললো,এই যে দরজার ফুটো দিয়ে!”
“গুঞ্জন রাগলো।অতঃপর মৃদু হেসে বললো,তাই মিস্টার মৃন্ময় চৌধুরী?”
-“হুম!”
-“তা মিস্টার ম্যানার্সওয়ালা পাবলিক আপনি কি জানেন না এভাবে কাউকে উঁকিঝুঁকি মেরে দেখা ম্যানার্সের মধ্যে পড়ে না?”
“মৃন্ময় অবাক হয়ে বললো,আমার কথা আমাকেই ফিরিয়ে দিচ্ছো?”
-“অভিয়াসলি!”
“মৃন্ময় রেগে বললো, এসবই পারো।”

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ১১

“গুঞ্জন একটানে মৃন্ময়ের হাত ধরে ওকে সিঁড়িঘর থেকে ছাদে নিয়ে আসলো।বৃষ্টির তোড়ে মাত্র ফ্রেশ হয়ে আসা মৃন্ময় গুঞ্জনের মতো
কাকভেজা হয়ে গেলো।মৃন্ময় রেগে বললো, ডিসগাসটিং!এটা তুমি কি করলে?”
“গুঞ্জন বললো, আচ্ছা আপনি কি লুকিয়ে লুকিয়ে সবার ঘরেই নজর দেন?আর সবাইকে ধমকি ধামকি দিয়ে বুঝাতে চান যে এসব
ম্যানার্সের মধ্যে পড়ে না?আর তলে তলে আপনি মিস্টার ম্যানার্সওয়ালা পাবলিক হয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে সবকিছু দেখেন?”
” মৃন্ময় রেগে গেলো। বললো,হোয়াট দ্যা হেল ড্যাম ইট!কিসব বলছো?”
“আপনি একটু আগে আমার সাথে যা করেছেন তার ভিত্তিতেই বলছি।ছিঃ আপনি কি ম্যানার্সওয়ালা মানুষ যে,আমাকে একা ঘরে পেয়ে এমন
একটা কাজ করলেন ইয়াক!”
“মৃন্ময় একটু থমকালো।সত্যিই তো কি একটা ভুল কাজ করে ফেলেছে।এখন গুঞ্জন তো এটা নিয়ে সবসময় ওকে খোঁটা দেবে।কিভাবে
গুঞ্জন এসব টলারেট করবে?হাউ?হাউ?”

“গুঞ্জন কিছু মনে করলো না।সে এভাবে এসব বলেই যাচ্ছে।এক পর্যায়ে জিজ্ঞেস করলো,আপনি কি ওই ঢংগী অনুর ঘরেও ফুটো করে
দেখেন?আসলে ওর দরজায় একটা ছোট্ট ফুটো আছে!সেটা কি আপনিই করেছেন?আচ্ছা,আপনি কি ওর চেঞ্জ করাও দেখেন?”
“মৃন্ময় বাক্যহারা হয়ে গেলো।এ মেয়ে বলে কি?মুখে কিছু আটকায় না নাকি?রাগে মাথায় ওর ভোঁতা যন্ত্রণা হচ্ছে।এ মেয়েকে কিভাবে
থামাবে মৃন্ময় তুমি?কিভাবে?”

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ১৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.