বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৩- Golpo Bazar

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৩ || golper thikana bangla

বৃষ্টি নামার পরে

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৩
লেখিকা-ইশরাত জাহান ফারিয়া

মৃন্ময়দের বাড়িতে ফেরার পর রাতের বেলা গুঞ্জন অনেক ক্লান্তবোধ করলো।মৃন্ময় গুঞ্জনের সব ঔষধ খাইয়ে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে
পড়লো।গুঞ্জনের গলায় নাক ডুবিয়ে বললো,আমার না এখন গান গাইতে ইচ্ছে করছে।”
“গুঞ্জন বললো,স্টপ ইট মিস্টার।আপনার অনু বেপ্পির মতো যখন তখন গান গাওয়াটা একদমই বিরক্ত লাগে আমার!”

-“তুমি এভাবে বলতে পারলে গুঞ্জন??”
-“জ্বি,পারলাম।ননসেন্স!”
-“তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো গুঞ্জন।”
-“এই আপনার প্যানপ্যানানি বন্ধ করবেন!আচ্ছা!আমার ডায়েরিটা দেখেছিলেন আপনি?বাসা থেকে এনে সোফার উপর রেখেছিলাম!”
-“না দেখিনি।তবে তুমি ডায়েরি আনোনি,এনেছ তোমার একটা পুরোনো খাতা।যেটাতে তোমার ফেভারিট হিরোর নাম লেখা!”
-“কি বলেন?আমি ডায়েরিই এনেছি নিশ্চিত।”
-“না গুঞ্জন। তুমি ডায়েরি আনলে আমি দেখতে পেতাম।”
“গুঞ্জন চিন্তিত হয়ে বললো,আমি আজকাল সবকিছু ভুলে যাচ্ছি কেন?কিছুই মনে থাকছে না।এটা কি আমার এই সমস্যার জন্য
হচ্ছে,হুম?”

“মৃন্ময়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়লো।জেসিকা ওইদিন ওকে এটাও বলেছিলো যে,গুঞ্জন অনেককিছু ভুলে যেতেও পারে।”
“হঠাৎ করে গুঞ্জন বিছানায় উঠে বসলো।মাথা চেপে ধরে চোখমুখে অসহায় দৃষ্টি ফুটিয়ে বললো,আমার মাথা প্রচন্ড ব্যথায় ছিঁড়ে
যাচ্ছে।প্লিজ কিছু করুন!”
“মৃন্ময় কিছু বুঝে উঠার আগেই গুঞ্জন দ্বিতীয়বারের মতো আবারও জ্ঞান হারালো!”
“মৃন্ময় চিৎকার করে এতোরাতে বাসার সবাইকে জাগিয়ে তুললো।এম্বুল্যান্স ডেকে এনে তাড়াতাড়ি হসপিটাল রওনা দিলো গুঞ্জনকে
নিয়ে।সঙ্গে বাড়ির গুরুজনেরা।এর মধ্যেই ইকবাল চৌধুরী ফোব করে গুঞ্জনের আব্বু-আম্মুকে ওর অসুস্থতার বিষয়টি জানিয়ে দিয়ে
ওনাদের হসপিটাল আসতে বলেছেন।”

______________

“হসপিটালে নেওয়ার পর ইমিডিয়েট গুঞ্জনকে ভর্তি করা হয়।ডাক্তাররা সবাইকে বাইরে ওয়েট করতে বললেন।সবাই হসপিটালের
করিডোরে অপেক্ষা করছে আর দোয়া করছে গুঞ্জনের জন্য।
হঠাৎ করে আবারও কেন এমন হলো কেউওই বুঝতে পারছে না।এদিকে মৃন্ময় আবারও পাগলের মতো কান্ড করছে!”
“আধঘন্টা পর ডাক্তার কেবিন থেকে বের হয়।মৃন্ময় প্রায় আধপাগলের মতো উদ্বিগ্ন হয়ে ডাক্তারের দিকে এগিয়ে যায়। ডাক্তারকে গুঞ্জনের
কথা জিজ্ঞেস করতেই ডাক্তার বললেন,মিসেস গুঞ্জন এখন একটু সুস্থ আছেন আল্লাহর রহমতে।
ইউ হ্যাভ টু বি স্ট্রং ওকে?”

“মৃন্ময় দম নিয়ে বললো, আপাতত আর সমস্যা হবার চান্স নেই,তাই না?সবসময়ের জন্য ও কবে সুস্থ হবে ডাক্তার?কবে?”
-“ডাক্তারদের পুরো টিম ওনাকে সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। জ্ঞান ফিরবে একটু পর ইনশাআল্লাহ। তবে উনাকে উত্তেজিত হতে মানা
করবেন।এমনিতেই উনি ডেঞ্জার জোনে আছে।আই হোপ আপনি উনার সাথে থাকলে উনি কিছুটা সাহস পাবেন।ভেঙ্গে পড়বেন
না।অনেক কঠিন পরীক্ষা আছে আপনাদের সামনে।ইউ হ্যাভ টু বি স্ট্রং!”

“ডাক্তার কথাটা বলেই চলে গেলেন। ‘কঠিন পরীক্ষা’?ভাবতেই দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো মৃন্ময়ের।বুকের একপাশে চিনচিন ব্যথা
করছে।ঘামছে প্রচন্ড।একটু পর একটা নার্স মৃন্ময়ের কাছে এসে বললো, স্যার আপনার ওয়াইফের জ্ঞান ফিরেছে।দেখা করতে যেতে পারেন
আপনি!”

“মৃন্ময়ের জানে পানি এলো কথাটা শুনে। ওর মনে হচ্ছে এর চেয়ে খুশির সংবাদ এর আগে ও কোনোদিন শোনেনি।পৃথিবীর সবচেয়ে
খুশি,আনন্দের সংবাদে মৃন্ময়ের চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়লো পানি।আনিসা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলো বাচ্চাদের মতো।মায়া
আহমেদ এবং জামান সাহেব একপাশে বসে আছেন।মায়া আহমেদ মৃন্ময়ের কাছে এসে কাঁদতে কাঁদতে বললো,আমাদের প্লিজ ওর কাছে
যাবার অনুমতি দাও বাবা।মেয়েটাকে একটু বুকে জড়িয়ে নিতে দাও।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“মৃন্ময় সোজা হয়ে দাঁড়ালো।চোখমুখ মুছে দৃঢ় কন্ঠে বলে দিলো,আপনার মেয়ে নয় গুঞ্জন।আমার স্ত্রী গুঞ্জন, আমার মায়ের মেয়ে আর
দিদার আদরের নাতনি গুঞ্জন।ওর আর কোনো পরিচয়ের দরকার নেই।গট ইট আন্টি!”
“বলেই মৃন্ময় গুঞ্জনের কেবিনের ভেতর চলে গেলো। মায়া আহমেদ আর জামান সাহেব সেখানেই বসে রইলেন।আনিসা চৌধুরী তাঁদেরকে
সান্ত্বনা দিচ্ছেন,ছেলের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাইলেন।কিন্তু জামান সাহেব বললেন, ওর তো কোনো দোষ নেই,তাহলে আপনি কেন মাফ
চাইছেন?আমার মেয়ের সাথে আমরা যা করেছি তারপর এই শাস্তি আমাদের প্রাপ্য।মৃত্যুর পথে একপ্রকার ঠেলে দিয়েছি মেয়েটাকে।এটা
হওয়ারই ছিলো।”

“আনিসা চৌধুরী আর কিছু বললেন না।”
“মৃন্ময় গুঞ্জনের কাছে গিয়ে দেখলো বেডে ঘুমাচ্ছে গুঞ্জন।একহাতে স্যালাইন লাগানো। চোখমুখ রক্তশূণ্য,তবুও কি সুন্দরই না লাগছে
ওকে।ঠোঁটগুলো লাল হয়ে আছে। মৃন্ময় ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলো গুঞ্জনের কাছে।গুঞ্জনের প্রতিটি নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে।দেয়ালের
ওপাশে ঘড়ির টিকটিক শব্দ পুরো ঘরটাকে জাগিয়ে রেখেছে।মৃন্ময় হাটু গেড়ে ফ্লোরে বসে গুঞ্জনের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
ডোন্ট ওয়ারি গুঞ্জন।আমি আছি তোমার কাছে,কিছু হতে দেবো না, দেখো।আমাদের একসাথে মিলে এই বিপদের সাথে লড়তে
হবে!পারবো না আমরা? জানো তো!তুমি আছো বলেই আমি স্ট্রং হয়ে আছি।নইলে কবেই হোপলেস হয়ে যেতাম।আমাদের এখনো অনেক
ভয়ংকর একটা সিচুয়েশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে গুঞ্জন।বি রেডি এন্ড স্ট্রং!”

“দুপুরের দিকে গুঞ্জনের জ্ঞান ফিরলো।ডাক্তারের সাথে মৃন্ময় কথা বলে ঠিক করেছে গুঞ্জনের সব ট্রিটমেন্ট, দেখাশোনা সবকিছু এবার
থেকে হসপিটালে থেকেই হবে।বাই চান্স যদি আবারও জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,তাহলে রিস্ক বেড়ে যাবে।অপারেশন অবধি গুঞ্জনকে তাই
হসপিটালে রাখার সিদ্ধান্তই গ্রাহ্য হলো।”

৪২.

“সময় বহমান।স্রোতের মতো বইতে থাকে। এর মাঝে এক মাসও কেটে যায়।হসপিটালের দিনগুলো একইরকম কাটছিলো গুঞ্জন আর
মৃন্ময়ের।’
“মৃন্ময়ের সব কাজ ও ওর ল্যাপটপেই করে ফেলে।সারাদিন গুঞ্জনের খেয়াল রাখা,খাবার,ঔষধ খাওয়ানো সহ যাবতীয় সব কাজ
করে।গুঞ্জনকে কিছু করতে দেয় না,চুল পর্যন্ত বেঁধে দেয়।এর মধ্যে গুঞ্জন ততোটা অসুস্থ হয়ে পড়েনি কোনোদিন।কিন্তু হসপিটালে কার
এতোদিন থাকতে ভালো লাগে?তাও আবার একমাস?”

“এতদিন থাকতে থাকতে আর ডাক্তারদের নিয়ম মানতে মানতে গুঞ্জন বড্ড ক্লান্ত।এই করো,সেই করো।সাবধানে সব করে দেয়
মৃন্ময়।একটুও বিরক্তি দেখায় না লোকটা,গুঞ্জন অবাক হয় ওর এসব কাজকর্মে।কিন্তু এতো আর কার ভালো লাগে?”

“সেদিন রাতে ঝুপ করে হঠাৎ বৃষ্টি নামলো।ঝমঝম করে পড়া বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা গুঞ্জনের হৃদয়ে এক অস্থির অনুভূতির সৃষ্টি করছিলো।ওর
মনে হচ্ছে এত সুন্দর বৃষ্টির শব্দ এর আগে ও কখনোই শুনেনি।তবে গুঞ্জনের সবচেয়ে ভালো লাগে বৃষ্টি নামার পরে আকাশ যেরকম
কালচে-নীল হয়,সে সময়টা।নীল আকাশের মাঝখানে যখন মেঘেরা দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় এবং লালচে-ধূসর আবরণে ঢেকে নেয় পুরো
পৃথিবীর আকাশ,সে সময়টা!”

“সারাদিন ধরে গুঞ্জন মৃন্ময়ের কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে কখন বাসায় যাবে বলে।মৃন্ময় একেবারে না বলে দিয়েছে।কিন্তু সন্ধ্যার পরে
গুঞ্জন আবারও চেঁচামেচি শুরু করলে মৃন্ময় পাত্তা দেয় না।”
“গুঞ্জন মুখ ফুলিয়ে বলে,আপনি আর আমাকে আগের মতো ভালোবাসেন না,তাই না?আসলে আমিই তো আপনার ঘাড়ে বোঝা হয়ে বসে
রয়েছি,এখন আর আমাকে পাত্তা দিয়ে কি হবে?”

গল্প শুনতে আমাদের চ্যানেল থেকে গুরে আসুন

“মৃন্ময় ল্যাপটপ থেকে মুখ তুলে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। রেগে বললো,আমি তোমাকে ভালোবাসি না এটা তুমি কিভাবে বলতে পারলে
গুঞ্জন?আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি শুধু এটাই বুঝে নিও,নইলে তোমার যা ইচ্ছা ভাবতে পারো।আই ডোন্ট কেয়ার, আই রিয়েলি
ডোন্ট কেয়ার গুঞ্জন!”

-“আসলে আমার যা মনে হয় আমি সেটাই বলি।আপনার ক্ষেত্রে আমার এটাই মনে হচ্ছে।নইলে এতদিন আমাকে এখানে বন্দীর মতো
রাখতেন না।আসলেই ভালোবাসা গুঞ্জনের জন্য নয়।”
“গুঞ্জনের অভিমান ভরা কথা শুনে মৃন্ময়ের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।বেড থেকে নেমে গুঞ্জনের বেডের কাছে গিয়ে বসলো।গম্ভীর
কন্ঠে বললো,তোমার কি আমাকে এমন ফালতু মনে হয় গুঞ্জন?তোমার কি মনে হয় আমি অন্য মেয়েদের ভালোবাসি?আর তুমি একটু
অসুস্থ বলে আমি তোমাকে দয়া করছি?”

-“আমার এমনই মনে হচ্ছে!”
“মৃন্ময় একটু উঁচু হয়ে গুঞ্জনের উপর ঝুঁকে পড়ে রেগে বললো,লাইক সিরিয়াসলি গুঞ্জন?যাও..আমি তোমাকে বাসায় নিয়ে যাবো
না।এবার থাকো এখানে এবং চুপচাপ। নইলে দেখবে কি করি!”
“গুঞ্জন ভয়ে চুপ হয়ে গেলো।হাতের কাছে রাখা বালিশটাকে এক আছাড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো মৃন্ময়!”

“এরপর হসপিটালের বারান্দায় চলে যায়। এই কাজটা যেনো গুঞ্জন নিতে পারলো না।দপ করে উঠলো রাগ।মাথা ব্যথায় অস্থির তাও পরোয়া
করছে না।শিরায় শিরায় রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে লাগলো। ওকে কেন বাসায় নিয়ে যাচ্ছে না গুঞ্জন সেটা বুঝে উঠতে পারছে না।বেশ
কিছুক্ষণ পর মৃন্ময় বারান্দা থেকে কেবিনে এলো।গুঞ্জনের দিকে একবার তাকিয়ে ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে পকেটে হাত গুজে বসে
রইলো।তারপর আচমকা পকেট থেকে হাত বের করে ল্যাপটপটা নিয়ে নিজের জন্য বরাদ্দ অন্য সাইডের বেডে গিয়ে বসে
পড়লো।গুঞ্জনের এই নিজের প্রতি অবহেলা করাটা মৃন্ময়ের শরীরে রাগ উঠিয়ে দিচ্ছে।খাচ্ছে না,ঘুমাচ্ছে না।বারবার এক কথা বাসায়
যাবো,বাসায় যাবো।ল্যাপটপের ব্যাক সাইডের ক্যামেরা অন করে মৃন্ময় গুঞ্জনের লাল হওয়া রাগী মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো,যেটা গুঞ্জন
বুঝতেও পারছে না।”

.

“মৃন্ময়ের এমন ভাব দেখে এবার গুঞ্জন আর আর থাকতে পারলো না। বেশ স্পষ্ট স্বরে বললো,আমি এক্ষুনি বাসায় যাবো।এখানে থাকবো
না।””গুঞ্জনের নির্বিকার চিত্তে বলা কথাটা যেনো আরো মেজাজ খারাপ করিয়ে দিলো মৃন্ময়ের। রাগী গলায় বললো,বাসায় যাবে
মানে?তোমার স্বভাবটা আগের মতোই আছে।ঠিকমতো উঠে বসতেই পারছো না,বলছে কিনা বাসায় যাবে।যত্তসব!”

-“নিয়ে যাবেন তো এই জেলখানা থেকে?আমি ভোরের প্রথম রোদের ঝিলিক দেখতে চাই,দুপুরের ক্লান্ত পাখি হতে চাই,বিকেলে ছাদে বসে
আরিশার সঙ্গে চা খেতে খেতে উদাস হতে চাই,গোধূলির লাল আকাশ দেখতে চাই।রাতের তারাভরা আকাশ দেখতে চাই।প্রকৃতির গন্ধ
নিতে চাই।আমি বৃষ্টিতে ভিজতে চাই,খুব,খুব,খুব করে।আমি এইসব কিছু চাই,যা এই হসপিটালের বেডে বসে কোনোদিন পাওয়া সম্ভব
না।আমার কথা শুনুন প্লিজ,বলতে বলতে গুঞ্জন কেঁদে দিলো!”

“মৃন্ময় গুঞ্জনকে ধরে বেডে বসিয়ে দিলো।তারপর ওর গালে হাত রেখে বললো, গুঞ্জন!একটু বলবে কি হয়েছে? আমি কি কোনো দোষ
করেছি যে তুমি আমার কথা শুনছো না? আমার কাছ থেকে যেনো দূরে যেতে চাইছো,কেন এমন করছো গুঞ্জন?”
“গুঞ্জন ধীরে ধীরে একটু নড়েচড়ে বসলো।ক্লান্তকর ভঙ্গিতে বললো,আমি ক্লান্ত, আপনি জানেন?আমি আর এসব নিতে পারছি না।আপনি
প্লিজ আমাকে বাসায় নিয়ে চলুন।আমি সবার দুঃখী চেহারা টলারেট কর‍তে পারছি না। দম বন্ধ হয়ে আসছে।আমি এখান থেকে মুক্তি চাই।
কেনো যেনো আর ভালো লাগছে না,খুব তাড়াতাড়ি চলে গেলেই ভালো!”

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২২

“মৃন্ময় রেগে বললো, মানে?”
“গুঞ্জন কিছু বললো না।ওর গলা কাঁপছে। ওর জন্য কি সবাই কষ্ট পাচ্ছে?মন খারাপ করছে?আসলেই গুঞ্জন ভালো মেয়ে নয়।নইলে ওর
জন্য সবাই এতো কষ্ট পেতো না।মৃন্ময় ভাবলেশহীন ভাবে গুঞ্জনের ফ্যাকাসে মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। এবার সে একটু এগিয়ে আসলো।
গুঞ্জনের মুখোমুখি হয়ে বসে বললো,তোমাকে আমরা এতোটা ভালোবাসি বলেই সবাই কষ্ট পাচ্ছি,তুমি কি নিজেকে দোষারোপ করছো?”

“গুঞ্জন কিছু বললো না।মৃন্ময় ঠান্ডা গলায় ধীরে ধীরে বললো,তোমার অপারেশন হয়ে গেলেই আমরা বাসায় যাবো।আর তুমি বৃষ্টিতে ভেজার
জন্য এরকম করছো,তাই না?ওয়েট!আমি ব্যবস্থা করছি!”
“গুঞ্জন আবারও হতাশ হলো। এ লোকটা যে নিজের মনের কথাই শুনে সেটা গুঞ্জন বেশ বুঝতে পেরে গিয়েছে।তাই বৃষ্টিতে ভেজার কথা
শুনেই নিজের অশান্ত মনটাকে শান্ত করলো।দেখাই যাক না,কি ব্যবস্থা করে মৃন্ময়!”

আমি এখনো ঠিক বুঝতে পারছি না,হ্যাপি নাকি স্যাড হবে।এটা যেদিকে আগাবে আমি সেইমতোই দিবো।জোর করে কিছু একটা দিতে
গেলে উল্টাপাল্টা করে ফেলবো।আপনাদের মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.