বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৪- Golpo Bazar

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৪ || golpo poka golpo

বৃষ্টি নামার পরে

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৪
লেখিকা-ইশরাত জাহান ফারিয়া

মৃন্ময় একটা চেয়ার নিয়ে ব্যলকুনিতে রাখলো।গুঞ্জনকে সেখানে নিয়ে বসালো।নিজে পেছন থেকে দাঁড়িয়ে রইলো দেয়ালে হেলান দিয়ে।
পকেটে হাত গুঁজে গুঞ্জনকে আলতো হেসে বললো, নাও!ভিজো।”
“গুঞ্জন ব্যক্কলের মতো চেয়ে বললো, মানে? এখানে কিভাবে ভিজবো?”
-“ভিজতে চেয়েছো,ব্যবস্থা করে দিয়েছি।”
-“আরে কোথায় ব্যবস্থা করেছেন? আমি ভিজবো কিভাবে সেটাই তো বুঝতে পারছি না।”
“মৃন্ময় এগিয়ে আসলো।গ্রিলের বাইরে গুঞ্জনের হাতদুটো বাড়িয়ে ধরে বললো,এভাবে ভিজো!”
-“এভাবে ভেজা যায়?”
-“যায় তো!”

“গুঞ্জন কিছু বলে উঠার আগেই হঠাৎ করে বৃষ্টির তোড় বেড়ে গেলো।আকাশ কাঁপিয়ে ঝিলিক দিতে লাগলো বিদ্যুতের আলোরা।ঠান্ডা
বাতাসে গা কাটা দিচ্ছিলো। দক্ষিণমুখী হয়ে বয়ে চলা বাতাসেরা ঠেলে পাঠাচ্ছিলো বৃষ্টিরাশিদের।সেই ঝাপটায় গুঞ্জনের চুল,হাত,চিবুক
খানিকটা ভিজে গেলো।গ্রিলের উপর তেছড়াভাবে পড়া ফোঁটাগুলো চুইয়ে চুইয়ে পড়ছিলো দেয়ালজুড়ে।আকাশ ভেসে যাচ্ছে মেঘেদের
ঠেলায়।সেই অদ্ভুত সুন্দর মুহূর্তগুলো গুঞ্জন অবাক হয়ে দেখছিলো,ওর চোখ শান্তির বার্তা বইয়ে দিলো যেন।আহা!কি সেই চাহনি।কি
সুন্দর খোদার সৃষ্টি,কি সুন্দর প্রকৃতির খেলা!এরকম শান্তি আর আনন্দ কোথায় গেলে পাওয়া যায়?কোথায়?”

“গুঞ্জনকে এভাবে দেখে মৃন্ময়ের মনে হচ্ছে এই মেয়েটার সাথে যদি আরও আগে ওর দেখা হতো,তাহলে কি হতো?নিজের ভালোবাসাটাও
আরও আগে প্রকাশ করতে পারতো,কাছে পেতো।এই বর্ষা রাতের মতো হাজারো রাত গুঞ্জনের সাথে কাটাতে চায় মৃন্ময়।ওর জীবনে বৃষ্টি
হয়ে নামতে চায়!ধুয়ে দিতে চায় মেয়েটার সব কষ্ট!বুক ভরা ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখতে চায় আরও হাজারো রাত।এজন্ম-পরজন্ম
দুইখানেই এ মেয়েকেই চায় মৃন্ময়।ওকেই চায়!”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

“গুঞ্জনের দিকে ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে রইলো মৃন্ময়।এমন সময় বিকট শব্দে বাজ পড়লো আর সাথে সাথে হসপিটালে কারেন্ট অফ
হয়ে গেলো।রাস্তার কোণের সোডিয়াম বাতির আবছা আলোয় পৃথিবীটা আরও মায়াময় হয়ে উঠলো।সেই সাথে মৃন্ময়ের গভীর চোখে ধরা
পড়লো বৃষ্টিতে ভেজা এক মায়াবতীর দিকে।মৃন্ময় আস্তে করে এগিয়ে এলো গুঞ্জনের কাছে।হাটু মুড়ে বসলো গুঞ্জনের কাছে।টপটপ করে
জল বেয়ে পড়ছিলো গ্রিল থেকে, সেই জল আবার ছিঁটকে পড়ছিলো গুঞ্জনের মুখপানে।মৃন্ময় ঠোঁট ছুঁয়ালো গুঞ্জনের ঠোঁটে,
চিবুকে,কপালে।এক অদ্ভুত মাদকতায় শিউরে উঠলো গুঞ্জন।সামনের মানুষটির ছোঁয়া তাকে বরফের মতো শীতল বানিয়ে
দিলো।গুঞ্জনের চুলে আঁকড়ে ধরে আছে মৃন্ময়,গুঞ্জন ঠেলে সরাতে চাইছে বারবার।কিন্তু এমন আসক্ত ব্যক্তিকে সরানোটা ওর পক্ষে সম্ভব
হচ্ছিলো না!”

“হঠাৎ করেই আবারও হসপিটালের কারেন্ট জ্বলে উঠলো।চোখ ধাঁধিয়ে গেলো গুঞ্জনের।মৃন্ময় এখনো আগের মতোই গুঞ্জন নামক
মানবীতে আসক্ত হয়ে আছে।গুঞ্জন ধাক্কা দিলো,হুঁশ ফিরলো মৃন্ময়ের।”
“কি এক রাত!বৃষ্টির তোড় বেড়েই চলছিলো সে রাতে।ভেসে আসছিলো বুনো ফুলের সুবাস।দূরে কোনো এক গীর্জায় বাজছিলো
বেল।হসপিটালের মসজিদে জোর কন্ঠে কেউ কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত করছিলো।পাতাগুলো বৃষ্টি ধুয়ে-মুছে চকচক করছিলো এই
রাতের অন্ধকারেও।পথ-ঘাট ফাঁকা ফাঁকা।নয়তলার এই ব্যলকুনিতে বসে গুঞ্জন পুরো শহরটাকে দেখতে পাচ্ছিলো।দু’চোখ ভরে দেখে
নিচ্ছিলো পৃথিবীকে।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিলো!”

৪৩.

“পরদিন!”
“মৃন্ময় গুঞ্জনকে চুল বেঁধে দিয়ে খাবার খাওয়াচ্ছিলো। ঠিক তখনই কেবিনে ঢুকলো গুঞ্জনের বাবা-মা সহ বাড়ির বাকি সদস্যরা।মৃন্ময় কিছু
না বলে গুঞ্জনকে খাইয়ে দিতে লাগলো।কিন্তু সবার সামনে এভাবে খেতে গুঞ্জন বেশ আনইজি ফিল করছিলো।সেজন্য মৃন্ময়কে চুপিসারে
জিজ্ঞেস করলো,ওরা কেন এসেছে?”
-“আমি জানি না।তুমি চুপচাপ খাও!”
-“আমি সবার সামনে এভাবে খেতে পারছি না!”
-“কেন?”
-“আমার অস্বস্তি হচ্ছে।”

“মৃন্ময় চোখ রাঙিয়ে বললো,এক্ষুনি না খেলে কাল রাতে যা করেছিলাম সেসব এখন সবার সামনেই করে দেবো!”
-“আরে প্লিজ!ওরা কি বলবে শুনি আগে!”
“মৃন্ময় ভাবলো।তারপর পেছনে ঘুরে তাকিয়ে বললো, কিছু বলবেন?”
“গুঞ্জনের বাবা জামান সাহেব মাথা নাড়লেন।”
“মৃন্ময় উঠে বাইরে চলে গেলো। বললো,আপনারা কথা বলুন।আমি আসছি!”
“বলেই বাইরে চলে গেলো।”

“জামান সাহেব এসে বসলেন গুঞ্জনের পাশে।কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন।গুঞ্জন অস্বস্তিতে পড়ে গেলো।নিজের বাবা হলেও
মানুষটাকে কোনোদিন বন্ধুসুলভ আচরণ করতে দেখেনি,সবসময় পর পর লেগেছে।বেশি কথাও হয়নি কখনো।তাই গুঞ্জন অস্বস্তিতে গাঁট
হয়ে বসে রইলো।জামান সাহেব হঠাৎ হু হু করে কেঁদে উঠলেন।গুঞ্জন চমকে তাকালো।ঢোক গিলে বললো, আপনি কাঁদছেন কেন?
” জামান সাহেব নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে করতে বললেন,আমাকে ক্ষমা করে দিও আম্মু!”
“গুঞ্জন অবাক হয়ে বললো, কিসের জন্য?”

-“আমাদের এই ব্যবহারের জন্য।আমাদের জন্যই তো তোমার আজ এই অবস্থা মা।তোমাকে ঠিকমতো ভালোবাসতে পারিনি,সবসময়
তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছি সেজন্য আম্মু।তুমি আমাদের ক্ষমা করে দাও!”
“গুঞ্জন তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।বললো,আমি মরে যাবো বলে আপনারা সবাই দল বেঁধে ক্ষমা চাইতে এসেছেন?”
“মায়া আহমেদ মেয়েকে জড়িয়ে ধরলেন।বললেন,এরকম বলছো কেন গুঞ্জন?আমরা ভুল করেছি আর সেটা বুঝতেও পেরেছি।এখন ক্ষমা
করে দাও তোমার এই অপরাধী মা-বাবাকে।যে মা-বাবা কোনোদিনই তাঁদের বড় মেয়েকে ভালোবাসেনি,খোঁজ রাখেনি,শুধু ভুল বুঝে
এসেছে।আর তুমি আমাদের ছেড়ে কোথাও যাবেনা মা।মৃন্ময় আছে না?ও তোমায় ভালো করে তুলবে দেখো!”

.

-“পারবে না হয়তো!”
“মায়া আহমেদ চুপ করে গেলেন।তারপর একে একে গুঞ্জনের ফুপ্পিরা,চাচ্চু-চাচীরা সবাই গুঞ্জনের কাছে ক্ষমা চাইলেন।গুঞ্জনও আর না
পেরে সবাইকে ক্ষমা করে দিলো।বললো,সবই পেলাম আমি,তবে অনেক দেরিতে!”
“বাকিরা চুপচাপ রইলো।মায়া আহমেদ মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বসে রইলেন।মাকে জড়িয়ে ধরে গুঞ্জনের চোখে পানি এসে গেলো।কতদিন
পর?কতদিন পর মা ওকে জড়িয়ে ধরলো?এক বছর? দুই বছর না দীর্ঘ ষোলো বছর পর!কত শান্তি লাগছে!”

“একটু পরে মৃন্ময় এলো কেবিনে।মায়া আহমেদ আর জামান সাহেব ওর কাছেও ক্ষমা চাইলো।পেরেন্টস’দের সাথে গুঞ্জনের মিল দেখে
মৃন্ময় মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। ও একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললো, আমার কাছে ক্ষমা চাইবার কিছু নেই আঙ্কেল!!
” জামান সাহেব সচকিত গলায় বললো,তুমি আমার ছেলে,আমাকে আব্বু ডাকতে পারো!”

“মৃন্ময় তাকালো।হাসিমুখে বললো,ঠিক আছে আব্বু!আর আপনাদের একটা কথা জানিয়ে দিই তাহলে,
এক্ষুনি আমাকে ফোন করে জানানো হলো আমাদের সবকিছু ঠিকঠাক,তিন-চারদিনের মধ্যে আমাদের ফ্লাইট!”
“গুঞ্জন পানি খাচ্ছিলো। মৃন্ময়ের কথা শুনে অবাক হয়ে বললো,কিসের ফ্লাইট?”
“জামান সাহেব বললেন,তোমাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে আম্মু!”
-“কিন্তু কেন?”
-“ট্রিটমেন্ট এর জন্য!”

“গুঞ্জন আহত চোখে তাকালো।ওর গলা ধরে আসছিলো। কান্না চেপে ধীর শান্ত গলায় বললো,আমার অবস্থা কি বেশি খারাপ আব্বু?”
“জামান সাহেব মেয়ের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলেন।মৃন্ময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য বললো,মোটেও না।কিন্তু আমি তো আর রিস্ক নিতে চাই না গুঞ্জন। তাই নিয়ে যাবো!”
-“আমাদের সাথে আর কে কে যাবে?”
-“আমি,তুমি,তোমার আব্বু-আম্মু,আমার আব্বু-আম্মু!”
“গুঞ্জনের কি যেন মনে হতেই আনমনে বললো,দিদা যাবে না?”
“মৃন্ময় সরু চোখে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো,কেন?”

গল্প শুনতে আমাদের চ্যানেল থেকে গুরে আসুন

-“আমি দিদাকে ছাড়া থাকতে পারবো না কোথাও,যদি আমার কিছু হয়ে যায় তাহলে তো দিদার সাথে আর দেখাই হবে না কখনো!”
-“তুমি কি আমার হাতের থাপ্পড় খেতে চাও?”
“গুঞ্জন ভয় পেয়ে চুপ হয়ে গেলো!”
“কিন্তু গুঞ্জনের অসগায় আদুরে মুখখানা দেখে মৃন্ময়ের কোথাও গিয়ে বাঁধলো।কিছুক্ষণ চিন্তা করে বললো,ঠিক আছে দাদীমাকে নিয়ে
যাবো!”

“গুঞ্জনের চোখ দুটো চিকচিক করে উঠলো।ওর চোখে পানি এসে গিয়েছে। এতো ভালোবাসাও গুঞ্জনের প্রাপ্য ছিলো সেটা গুঞ্জন জানতোই
না।সারাজীবনের দুঃখ-কষ্ট গুলো এখন সুখ হয়ে উড়াল দিচ্ছে গুঞ্জনের জীবনে।ঠিকই বলে মানুষ,’সুখ আসে দুঃখের পর!’আচ্ছা, এতো
ভালোবাসা আর সুখ সইবে তো ওর?”

“হসপিটালের কেবিন থেকে সবাই চলে গেলে মৃন্ময় আবারও তাঁর ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। এমন সময় একটা নার্স এলো। এই
নার্সটা প্রতিদিন একবার হলেও আসে আর গুঞ্জনকে দেখে যায়,উপদেশ দিয়ে যায়।নার্সটা খুব সুন্দরী,এক কথায় গুঞ্জনের চেয়েও বেশি
সুন্দর দেখতে।আসলেই হ্যাংলার মতো মৃন্ময়ের দিকে তাকিয়ে থাকে।গুঞ্জন একটু একটু বুঝতে পারে যে এই নার্সটা সুবিধার নয়।নার্সটা বের
হয়ে যেতেই গম্ভীরমুখে গুঞ্জন মৃন্ময়কে কাছে ডাকলো।মৃন্ময় কাছে এসে বসতেই,গুঞ্জন ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দেয় মৃন্ময়ের
গালে।মৃন্ময় হতভম্ব হয়ে বললো,এটা তুমি কি করলে গুঞ্জন?”

“গুঞ্জন রাগী গলায় বললো,আদর করেছি!”
-“মানে?”
-“আপনি এতো সুন্দর কেন?”
-“এই তোমার মাথাটাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে নাকি?”
-“আমি যেটা বলছি সেটা বলুন!”
-“আমি সুন্দর হয়েছি তাতে তোমার সমস্যাটা কি হচ্ছে বুঝলাম না তো!”
“গুঞ্জন ভয়ংকর চোখে তাকালো মৃন্ময়ের দিকে। বললো,ওহহ!আমার সমস্যা?তাই না?তাহলে ওই লুচ্চি নার্স হা করে আপনার দিকে
তাকিয়ে থাকে কেন?আপনার মুখে কি মধু আছে?”

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৩

“মৃন্ময় এতক্ষণে বিষয়টি ধরতে পারলো।মৃদু হেসে বললো,আর ইউ জেলাস?”
“গুঞ্জন আবারও ভয়ঙ্কর চোখে তাকালো। বললো,তো জেলাস হবো না কি হবো?ঢ্যাঙ্গার মতো লম্বা আর ক্রিমের মতো ক্রিমি হওয়ার
দরকারটা কি ছিলো শুনি?”
“মৃন্ময় ভান করে বললো,কি আর করবো বলো!সব কপাল!আমি কি জানতাম যে বড় হয়ে এমন লম্বা আর ক্রিম হবো?জানলে আমি
কখনোই বড় হতাম না।কাঁথাতে জড়িয়ে তখন আমার বউ আমাকে নিয়ে সারাবাড়ি ঘুরতো,তাই না?কিন্তু আফসোস!”

“গুঞ্জন এমন ফাজিল কথা শুনে আবারও রাগান্বিত হলো।ইচ্ছে করছে,সামনে বসা এই ছেলেটাকে ঠাস ঠাস করে আরও দুইটা চড় বসিয়ে
দিতে।কিন্তু পারবে না ও।দোষ তো ওই নার্স নামক কালনাগিনীর,তাহলে গুঞ্জন কেন মৃন্ময়কে মারবে?ওর তো এতে দোষ নেই,তাই
না?দেশের একজন সচেতন বিচারকের দৃষ্টিতে দেখতে গেলে গুঞ্জনের উচিৎ ওই নার্স নামক বেয়াদবটাকে ঘাড় ধাক্কা মেরে জেলের ভিতর
আটকে রাখা।কেন তাকাবে ও মৃন্ময়ের দিকে?কেন তাকাবে গুঞ্জনের বরের দিকে?ওর কোনো রাইটই নেই!যত্তসব প্যাঁচাল পারা লোকের
জন্য শুধু শুধুই গুঞ্জন মৃন্ময়ের ফর্সা টমেটোর মতো গালটা লাল করে দিলো,ইশ!”

বৃষ্টি নামার পরে পর্ব ২৫

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.