গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ৩
লেখক : তানভীর হাসান মুন্না
মেয়েটি তানভীরের পাশে বসে আছে অনেক্ষন কিন্তু কিছু বলার মতো খুঁজে পাচ্ছে না ।।
তবে মনের মাজে হাজারো কথা জমে আছে অনুভুতি আকারে কিন্তু প্রকাশ করার
মাধ্যম খুঁজে পাচ্ছে না ।। মেয়েটি আর কেউ না নেহা ।। নেহা হটাৎ বলে উঠলো
নেহা :- আমরা কি বন্ধু হতে পারি ।।
তানভীর :- না ।।
নেহা : কেনো ?? আমরা তো একই কলেজে একই ক্লাস এ পড়ি তাহলে কেনো বন্ধু
হতে পারি না ।।
তানভীর :- আমি মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব করি না ।।
নেহা :- এতো ভাব কেনো হমম ??
তানভীর : এইখানে ভাব নেওয়ার কিছু নেই ।। আর আমি আপনার সাথে
বন্ধুত্ব করতে পারবো না ।।
নেহা : – কেনো করতে পারবে না আমি তো তোমাকে ভালোবাসার কথা
বলছি না শুধু বন্ধু হতে বলছি আর আমি কি তোমার বন্ধু হওয়ার যোগ্য না ।।
তানভীর : আসলে তা না ।। আজ আমরা বন্ধু হলে কাল হইতো কোনো মোহ মায়ায়
পড়ে আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলবো আর আমি চাই না করো সাথে
ভালোবাসার সম্পর্কে জড়াতে ।।
নেহা : আমি কোনো কথা শুনতে চাই না ।। আমার সাথে বন্ধুত্ব না করলে
সেদিন সেই ছেলেটিকে যেভাবে মেরেছিলাম আজ তোমাকেও মারবো ।।
নেহার কথা শুনে তানভীরের গলার পানি শুকিয়ে গেলো সে তার পাশে রাখা পানির
বোতল থেকে পানি খেয়ে নিলো ।। তানভীরের এমন অবস্থা দেখে নেহা হাসছে ।।
আর ভাবছে
★সত্যি বেচারা ভয় পেয়েছে অনেক আমি তাকে কি করে মারবো আমি তো ওকে
ভালোবাসি ।। সত্যি একটা বুদ্ধো ও একদম ভোলা – ভালা ছেলে ওর এই ভোলা & ভালা
আচরণ ও শান্ত শিষ্ট ভঙ্গি তো আমাকে মুগ্ধ করেছে আমাকে বাধ্য করেছে ওকে
ভালোবাসতে★(মনে মনে)
তানভীর ভাবছে ★আচ্ছা মাইর না খেয়ে বন্ধুত্ব করে নেই ।। তাতে তো আর কোনো
সমস্যা নেই ।।★
নেহা : তাহলে এক্ষণ থেকে বন্ধু !!
তানভীর : আচ্ছা বন্ধু তবে অতটা ঘনিষ্ট নয় কারণ আমি শুনেছি বেশি ঘনিষ্ট
হলে প্রেম ভালোবাসা হতে সময় লাগে না আর আমি চাই না তা হোক ।।
নেহা : আচ্ছা !!★আমি তো তাই চাই ★(মনে মনে )
তানভীর : আচ্ছা তুমি এতো গুন্ডী কেনো বলতো ??
নেহা : আসলে আমি করো অকারণে ডিস্টার্ব করি না যারা যারা মেয়েদের সাথে খারাপ
ব্যাবহার বা উত্যক্ত করে তাদের ধরে একটু উত্তম মধ্যম ধোলাই দেই এই আর কি !!
তাতে সবাই আমাকে গুন্ডী বলে চিনে ।।
তানভীর : কিন্তু এতে তো তোমার ও বিপদ হতে পারে !!
নেহা : হ্যাঁ তা ঠিক ।। আচ্ছা ওসব কথা বাদ দাও ক্লাস শুরু হবে চলো ক্লাস এ যাই ।।
তানভীর : আচ্ছা চলো ।।
★নেহা মেয়েটি গুন্ডী হলেও মনের দিক থেকে আসলেই ভালো ।।★(মনে মনে)‽
তানভীর আর নেহা কথা বলতে বলতে ক্লাস এ চলে গেলো !! আর নেহার বন্ধুবিরা
এতক্ষন ওদের উপর খেয়াল করছিলো ওদের মাজে কি হচ্ছে ।। কিন্তু হটাৎ করে
তানভীর আর নেহা ক্লাস এর দিকে যাওয়ায় ওরাও ক্লাস এ চলে আসলো ।। তানভীর আর
নেহা যতক্ষণ বাদাম গাছের নিচে বসে ছিল ততক্ষণ সবাই তাদের দিকেই তাকিয়ে ছিলো
কিন্তু কেনো তাকিয়ে ছিলো সেটা তানভীর বুজতে পারে নী তবে কিছুটা হলেও আন্দাজ
করতে পেরেছে ।।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
★আসলে নেহা কোনো ছেলেকে পাত্তা দেয় না আর সেখানে কিনা কোথাকার কোন
ছেলের সাথে বসে কতক্ষন ধরে হেসে হেঁসে কথা বলছে ।। আর নেহার সাথে তানভীর
কে দেখে অনেক ছেলেই হিংসায় পটু পটু কারণ যতই হোক তাদের ক্রাস এর সাথে
একটি ছেলে কতক্ষন ধরে হেসে হেঁসে কথা বলছে ।।★
তানভীর আর নেহা এক সাথে ক্লাস এ ঢুকলো ।। সবাই তাদের দিকে তাকিয়ে আছে
যেনো কোনো এলিয়েন দেখছে ।। তানভীর আর নেহা একসাথে একই বেঞ্চে গিয়ে
বসলো ।। তানভীর একদম জানালার সাইট এ গিয়ে বসলো আর তার পাশেই নেহা
বসেছে ।। নেহা সবসময় তার বান্ধুপিদের সাথে বসে কিন্তু আজ তানভীরের সাথে বসায়
সবাই অবাক ।। সবাই বুজতে পারলো ওদের মাজে কিছু চলছে ।। নেহার বন্ধুবীরা ও
হিংসা আর রাগের চোখে নেহার দিকে তাকিয়ে আছে ।। আজ ক্লাস শেষে নেহার
বন্ধূপিরা কিছু একটা করবে নেহার সাথে সেটা নিশ্চিত ।।
কিছুক্ষন পর স্যার ক্লাস এ প্রবেশ করলো ।। তানভীর স্যারের কথায় মনযোক দিলো
আর নেহা খুব কাছ থেকে তার ভালোবাসার মানুষটিকে উপলব্ধি করছে আজ প্রথম সে
তার বাবা বাদে অন্য কোনো ছেলের সাথে এতো কথা বললো তবে কথা বলে তার কাছে
ভালোই লেগেছে ।।
ক্লাস শেষে স্যার সব স্টুডেন্টদের উদ্দেশে বললো
স্টুডেন্ট ২ দিন পর তোমাদের ভের ভার্সিটিতে একটি অনুষ্ঠান আনুষ্ঠিত হইবে আমি
চাই তোমরা সেই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করো ।।
নেহা বললো :- এই তুমি কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবে নাকি ??
তানভীর : এই না আমি এসব পারি না ।।
নেহা : তোমাকে কোনো না কোনো কিছুতে অংশগ্রহণ করতেই হবে ।।
তানভীর : আচ্ছা দেখি ।।
তানভীর ক্লাস শেষে নেহাকে বিদায় জানিয়ে বাসায় চলে গেলো আর নেহা ওর
বন্ধুপিদের কাছে যাওয়া মাত্র উত্তম মধ্যম দোলাই শুরু ।।
নেহা : এই মার্সিশ কেনো ?? আমি কি করলাম ??
রিনা : কি করলি মানি তুই তো দেখি ওকে পেয়ে আমাদের ভুলেই গেলি !!
নেহা : আচ্ছা !! সরি !! এক্ষণ সবাই বাসায় যা আমিও বাসায় যাই ।।
এইরকম ভাবেই ২ দিন চলে যায় তানভীর আর নেহা এক্ষণ অনেকটা ফ্রী ভাবেই একে
অপরের সাথে কথা বলে হইতো এটাই প্রথম প্রেমের সূচনা লগ্ন তাদের ।।
আজ ভার্সিটিতে অনুষ্ঠান ……
আজ নেহা ভার্সিটিতে একটি নীল শাড়ি পড়ে এসেছে যদিও এই শাড়ীটা তানভীর এর
কারণে পরেছে কারণ গতকালকে সে তানভীরকে জিজ্ঞাস করছিলো তানভীরের কি
কালার পছন্দ ?? তানভীর তখন বলেছিল নীল তাই তানভীরের পছন্দের কালার অনুযায়ী
সে নীল কালার এর শাড়ি পড়ে এসেছে ।। আজ নেহাকে অসম্ভব সুন্দর ও মায়াবী
লাগছে ।। আজ তানভীর কালো কলারের একটি কাবলি পড়ে এসেছে তানভীরকে ও
আজ অসম্ভব সুন্ধর লাগছে ।।
তানভীর ভার্সিটিতে ডুকে নেহাকে মেসেঞ্জার এ কল দিলো (যেহেতু নম্বর নেই এফবি
তে কানেক্ট করা আর এমবি থাকায় কোনো সমস্যা নেই)নেহা কল রিসিভ করে বাদাম
গাছটির নিচে তানভীরকে আসতে বললো তানভীর ও নেহার কথা অনুযায়ী সেখানে
গেলো কিন্তু সেখানে গিয়ে নেহাকে দেখতে পেলো না ।। তাই আবার কল দিতেই তার
পাশে বিপরীত দিকে মুখ করা শাড়ি পড়া একটি মেয়ের ফোন বেজে উঠলো ।।
মেয়েটি তানভীরের দিকে মুখ করে যেই ফোনটা রিসিভ করতে যাবে দুজনেই চমকে
যায় কারণ মেয়েটা নেহা ।।
নেহা তানভীরকে পাঞ্জাবি তে দেখে এক প্রকার নতুন করে
ক্রাস খেলো তানভীর ও খাই নী তা বলবো না তবে সে করো মোহ মায়ায় আবদ্ধ হতে
চায় না বলে নিজেকে সব সময় সংযত রাখার চেষ্টা করে ।। তবুও আজ বেহায়ার মতো
নেহাকে সে মন ভরে দেখছে নেহা ও তানভীরের দিকে তাকিয়ে আছে ।। আজ
তানভীরের কাছে নেহাকে অনেক মায়াবী লাগছে ঠিক যেনো একটি সুন্ধর পরি ।।
নেহাকে তার আগের রুপের চেয়ে শাড়িতেই অভূত পূর্ব সুন্দরী লাগছে ।।
নেহা : এইভাবে তাকিয়ে কি দেখছিল ??
তানভীর : কিছুনা !!
নেহা : আজ আমাকে কেমন লাগছে ??
তানভীর : অনেক সুন্ধর তোমার ওই ড্রেসের থেকে এই ড্রেস এ অনেক সুন্ধর লাগছে !!
নেহা : তাই সত্যি !!
তানভীর : হমম ।।
নেহার কাছে তানভীরের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়ে ভালো লাগছে ।। কারোই না ভালো
লাগে আরেকজনের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে আরো যদি সে হয় ভালোবাসার মানুষটি
তাহলে তো কোনো কথাই নেই ।।
নেহা আর তানভীর ভার্সিটির আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর দেখছে ভার্সিটিতে
আজ অনেক স্টুডেন্ট শিক্ষকের ভির তবে তারা আজ আবার ভার্সিটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে
আজ ভার্সিটি অনেক সুন্দর করেই সাজানো কারণ অনুষ্ঠান বলে কথা ।।
তারপর তারা গিয়ে ২ টি পাশাপাশি চেয়েরে গিয়ে বসে অনুষ্ঠান দেখতে লাগলো ।।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে অনেক ছাত্র ছাত্রীর পারফরমেন্স শেষে হটাৎ স্যার বলে উঠলো
স্টুডেন্ট এবার তোমাদের মাজে গান পরিবেশন করবে তানভীর ।।
সবাই হাতে তালি দিচ্ছে তানভীর হটাৎ স্যারের মুখে নিজের নামটি শুনে হতভম্ব হয়ে
গেলো ।। স্যারের কাছে তার নাম গেলো কি করে সে তো ওই লিস্ট এ নিজের নাম
লিখায়নী তাহলে কি করে !! কি করে তার নাম স্যারের লিস্ট এ গেলো !! তানভীর
একবার নেহার দিকে তাকালো কিন্তু নেহাকে দেখে মনে হচ্ছে নেহা ও অভাক তাহলে
কে কে এমনটা করলো রহস্য মনে হচ্ছে তার কাছে স্যার আবার তার নাম ডাকলো
তানভীর স্টেজ এ চলে গেলো !!
গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ২
তানভীরের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে মনে হচ্ছে সে নেরোয়াস ফিল করছে !!
নেহা ও কিছুটা আতঙ্কিত সে ও জানত না কিভাবে তানভীর নাম ওখানে গেলো এক্ষণ
তার কাছেও ভয় মনে হচ্ছে ।। সে একবার নিজের বন্ধূপিদের দিকে তাকালো দেখে
তারা মুসকি মাস্কি হাসছে তবে কি তারা এমনটা করলো কিন্তু কেনো ?? তারা একবার
তাকে তো জিজ্ঞাস করতে পারতো কিন্ত তা না করে বরং তাদের না বলেই নামটি
ওখানে দিয়ে দিলো ।। নেহার অনেক ভয় করছে তার চোখে প্রায় পানি চলে এসেছে
তানভীর যদি গান না গায় তবে অপমানিত হতে হবে ।। সে নিজের চোখের সামনে
ভালোবাসার মানুষটির অপমান মেনে নিতে পারবে না ।। এক্ষণ দেখা যাক তানভীর কি
করে !!
তানভীর স্টেজ এ গিয়ে গিটার টা নিজের হাতে তুলে নিল মাইকটা সামনে সেট করাই
আছে তানভীর একটা চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে গিটারে কিছুক্ষন উল্টা পাল্টা শুরে
বাজাতে লাগলো তাতে অনেকে অনেক কথায় বলতে লাগলো ।। তখনই এমন কিছু হলো