গুন্ডি মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ১০- Golpo Bazar

গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ১০ || Valobashar Golpo

গুন্ডি মেয়ের ভালোবাসা

গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ১০
লেখক :তানভীর হাসান মুন্না

বাড়ির কাজ করতে করতে আজকের দিনটা কর্ম ব্যাস্ততার মাঝেই কেটে গেলো
তানভীতানভীর নেহাকে তার রুমে নিয়ে গেল ।। নেহা তানভীরের রুম দেখে অবাক
এতো সুন্ধর করে রুম টা সাজানো যে নেহা চোখ ফিরাতে পারছে না ।। রুমের পশ্চিম
দিকে বারন্ধা টা নেহার কাছে ভালো লাগলো এইখান থেকে বিকালের ডুবন্ত সূর্যটাকে
খুব ভালো ভাবেই দেখা যায় আর বারান্দার সামনে রয়ছে একটি সুন্ধর ফুলের বাগান
যেখান থেকে ফুলের গন্ধ সরাসরি নাকে এসে লাগে যা মনটাকে একদম তরতাজা করে
দেয় ।। নেহা তানভীরের রুমটা ভালোভাবে দেখতে লাগলো তানভীরের মতো তার
রুমটা ও বেশ সাজানো গুছানো যা নেহার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ।।
নেহা : ওয়াও তোমার রুমটা তো অনেক সুন্ধর সত্যি এইটা তোমার রুম ??

তানভীর : জি ম্যাডাম !! কোনো সন্দেহ !!

নেহা : না এমনি জিজ্ঞাস করলাম ।। এই রুমে থাকতে অনেক আরাম দেখতেই বোজা
যায় ।।
তানভীর : বুজতে হবে আমার রুম তো !!
নেহা : তোমার সাথে আমিও তো কিছুদিন পর এই রুমে থাকবো ( ফিসফিস করে )
তানভীর : কিছু বললেন ??
নেহা : এই না রুমটা দেখছিলাম ।। ফুলের টব গুলো অনেক সুন্ধর !!
তানভীর : হমম ভালো লাগলে তোমার রুম ও তুমি এইভাবে সাজাতে পারো !!
আচ্ছা চলো তোমাকে আমাদের বাসার ছাদ দেখিয়ে আনি !!

নেহা : আচ্ছা চলো !!

তানভীর নেহাকে নিয়ে ছাদে চলে আসলো সেখানেও নানা রকমের ফুল দিয়ে বাগান
করা তাতে কিছু পাহাড়ি ফুল গাছ ও আছে ।। নেহার কাছে সত্যি এইগুলো খুব ভালো
লাগলো ।। নেহার ইচ্ছে করছে সারাজীবন এই বাড়িতে থেকে যাই অবশ্য আর
কিছুদিনের অপেক্ষা ।। তবে অপেক্ষা টা কবে শেষ হবে কে জানে !!
নেহা : আচ্ছা তানভীর আমাকে একটু ভালোবাসা কি যায় না !!
তানভীর নেহার হটাৎ এমন প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলো না ।। তানভীর নেহার দিকে
তাকিয়ে কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো

তানভীর : হটাৎ এমন প্রশ্ন কেনো ??

নেহা : মনে হলো বলো না আমাকে কি একটু ভালোবাসা যায় না আমি তো তোমার
কাছ থেকে বেশি কিছু চাইছি না শুধু ভালোবাসো কিনা সেটা জানতে চাই !!
তানভীর : নিশ্চুপ …………
সে কি অভিশরে নেহার সাথে এক্ষণ কথা বলবে জানে না ।। সেও তো নেহার মায়ায়
জড়িয়ে পড়েছে তবে সেটা কি ভালোবাসা নাকি সেটা সে জানে না ?? হ্যাঁ সেও
নেহাকে ভালোবাসে তবে বলতে ইচ্ছে হয় না তার ভিতরে ও নেহাকে নিজের করে
নাওয়ার ইচ্ছা আছে কিন্তু কোনো এক অজানা বাদন তাকে বাধা দেয় ।। আর সে ভালো
না বেশে ও যাবে কোথায় ?? যে মেয়ে তার জন্য নিজেকে শেষ করে দিতে পারে !!

যে মেয়ে তার পছন্দকে এতো গুরুত্ব দেয় তাকে ভালো না বেশে কি থাকা যায় ।। আচ্ছা
ভালোবাসা কি ?? সেটা কিভাবে হয় মানুষ বা আমরা কি জানি ?? তানভীর কি জানে
ভালোবাসা কি ?? নাকি এটা শুধুই একটা মায়ার বাঁধন !! ভালোবাসা সম্পর্কে ব্যাখ্যা
দাওয়ার মানুষ খুঁজে পাওয়া বড়ই বিরল ব্যাপার !! আইনস্টাইনের নিউটন এরা শুধু
সাইন্স সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে কিন্তু ভালোবাসা সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে তারাও অক্ষম ।।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

নেহা তানভীরে কে নিশ্চুপ দেখে কিছুই বললো না চোখ দিয়ে কিছুটা পানি এসেছে
এতো ভালোবাসার পরেও এই মানুষটির মনে সে একটু ভালোবাসার সৃষ্টি করতে পারলো
না ।। নেহা চোখের পানি মুছে অনুষ্ঠানে চলে গেলো তানভীর নেহাকে বাধা দিতে
চেয়েছিলো কিন্তু সেই উপেখোমান শক্তি তার নেই ।। সেও চলে গেলো অনুষ্ঠানে ।।
দেখতে দেখতে সময়টা পেরিয়ে গেলো বর যাত্রী আসলো বিয়েটাও হয় গেলো বর যাত্রী
তার আপুকে নিয়ে যাওয়ার সময় তানভীর কিছুটা কান্না করেছে তার আপুর বিয়ে হয়
গেলো কিন্তু তাতে তার আপু আজ অন্যের বাড়ীতে গিয়ে উঠছে সেখানে এক্ষণ তার
আপন জন ।। এতদিন এই আপুর সাথে হাঁসি ঠাট্টা , দুষ্টুমি করে বেড়াতো কিন্তু আজ
সেই আপু তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে তানভীরের অনেক কষ্ট হচ্ছে ।। তানভীরের আপু ও
অনেক কান্না করতে করতে চলে গেলো অন্যের বাড়ি এক্ষণ সেটাই তার আসল ঠিকানা ।।

রাত ১১ টা তার আপুকে নিয়ে বর যাত্রী চলে গেছে তখন নেহার আব্বু তানভীরের
আব্বুকে বললো দোস্ত তোর সাথে কিছু কথা ছিলো যদি একটু পাশে আসতেই তাহলে
বলতাম !!

তানভীরের আব্বু : আচ্ছা চল !!

একটা সাইড এ গিয়ে
তানভীরের আব্বু : কি বলবি দোস্ত !!
নেহার আব্বু : আমি জানি এই সময় এই কথা বলা ঠিক না তবুও বলতে বাধ্য হচ্ছি !!
তানভীরের আব্বু : তুই নিশ্চিন্তে বলতে পারিস !!
নেহার আব্বু : আমি চাচ্ছিলাম যে নেহাকে আর তানভীরকে বিয়ে দিয়ে আমাদের
বন্ধুত্বটা আরো মজবুত করতে ।।
তানভীরের আব্বু : এটা ভালো কথা কিন্তু ওরা তো এক্ষণ ও পড়াশুনা শেষ করে নী !!
আর তাছাড়া আমি জানি আমার ছেলে আমার কথা ফেলবে না তবুও ওর মতামত জানা
দরকার !!

নেহার আব্বু : তাহলে শোন তোর ছেলে আমার মেয়ে একে অপরকে ভালবাসে আগে
থেকেই তারপর সবকিছু খুলে বললো !!
তানভীরের আব্বু : কি এতো কিছু হয় গেলো আমি কিছুই জানি না ।। আচ্ছা তাহলে
বিয়ে ঠিক করা হবে একদিন সময় করে !!
নেহার আব্বু আর তানভীরের আব্বু কোলাকুলি করলো তাহলে আজ থেকে বিয়াই ।।
তানভীরের আব্বু : আজ তাহলে তোরা আমাদের বাসায় থাক অনেক রাত তো হলো ।।
নেহার আব্বু : আচ্ছা ।।

রাতে ……

তানভীর নিজের রুমে শুয়ে আছে ঘুম আসছে না তারপর ও সোজা হয় শুয়ে চোখ বন্ধ
করে আছে ।। হটাৎ সে নিজের উপর কিছু ভারী জিনিষ অনুভব করলো চোখ খুলে
দেখে কে যেনো তাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে !! তানভীর তার উপর থেকে সরিয়ে
তার পাশে থাকা ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে বললো
তানভীর : নেহা তুমি এইখানে এতো রাতে !!

নেহা : ঘুম আসছিলো না তাই চলে আসলাম !!

তানভীর : এক্ষণই রুমে যাও তোমার কেউ দেখলে সর্বনাশ হয় যাবে ।।
নেহা : হলে হবে আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো !!
তানভীর : পাগল হয়েছে !! জানো না ইসলামে এইগুলো হারাম !!
নেহা : থাক আমি এক্ষণ তোমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাবো তুমি না করলে আমি কিন্তু
চিৎকার দিবো !!
তানভীর : এই না মানুষ খারাপ ভাববে ।।(এই মেয়ের আবার বিশ্বাস নেই বাবা )
নেহা : তাহলে তোমার বুকে ঘুমাতে দিবে !!
তানভীর : আচ্ছা !! কিন্তু কিছু যদি হয় যায় !!

নেহা : আমার ভালোবাসার উপর বিশ্বাস আছে !!

তানভীর শুয়ে পড়লো নেহা তানভীরকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলো তানভীর তার পাশে
থাকা ড্রিম লাইট অফ করে নেহার দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো তার বুকে একটি
ঘুমন্ত পরি শুয়ে আছে ।। কতো না মায়াবী লাগছে নেহাকে !! এই চাঁদনী রাতের
জোছনার আলো জানালার থাই গ্লাস কে বেদ করে এসে পড়ছে নেহার গালে যার
কারণে নেহাকে অসম্ভব সুন্ধর ও মায়াবী লাগছে ।। সুন্ধর তো সেই নারী যাকে ঘুমন্ত
অবস্হায় সুন্ধর লাগে ।। তানভীর যদিও অনেক না করছিলো তবুও তার কাছে এক্ষণ
খারাপ লাগছে না যতই হোক মনের মাজে কিছুটা ফিলিংস নেহাকে ঘিরে তার আছে ।।

তানভীর যেনো এবার নেহাকে সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে কি আছে এই মেয়ের মাজে
যা তানভীরকে তার প্রতি দূর্বল করে তুলছে ।। না না সে এটা কি করছে সে তো কাউকে
ভালোবাসবে না তার বাবাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তবে কি ?? তবে কি সে নেহাকে
ভালোবেসে ই ফেললো নেহা কি তার প্ল্যান এ সাকসেসফুল হলো নেহা কি জিতে গেলো
তার ভালোবাসা !!

সকাল বেলা …………

তানভীর আযানের সাথে সাথে ঘুম থেকে উঠে গেলো ।। বর্ষাকাল তাই সকাল বেলাই
রোদ উঠে দুপুর কিংবা ১০ ট্যার দিকে বৃষ্টি হয় ।। তানভীর ঘুম ভেংগে নেহাকে তার
বুকের মাঝে আবিষ্কার করে ।। সকালের মিষ্টি রোদের ঝিলিক থাই গ্লাস এর কাচ বেধ
করে নেহার গালে এসে পরছে নেহা এক্ষণ ও ঘুমিয়ে ।। এক্ষণ ও নেহা কে অসম্ভব
মায়াবী লাগছে ফ্যানের বাতাসে নেহার চুলগুলো এসে নেহার গালে পড়ছে তানভীর
কাপা কাপা হাতে চুলগুলো নেহার কানের নিচে গুজে দিয়ে নেহাকে ও ঘুম থেকে
ডেকে তুললো কারণ নেহাকে এক্ষণই চলে যেতে হবে নেহার রুমে ।।

গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট ৯

নই তো বা কেউ দেখলে সর্বনাশ ।। তানভীর নেহাকে নেহার রুমে পাঠিয়ে ফ্রেশ হয়
উজু করে নামাজ পড়ে নিলো ।। ফজরের নামাজের পর তানভীর একটু বারান্দায় গিয়ে
বসলো হালকা হালকা বাতাস চলছে হইতো কিছুক্ষন পর বৃষ্টি হবে ।। তবে বাতাসটা
খুবই ভালো লাগছে ।। আজ ভার্সিটিতে যাওয়ার কোনো তারা নেই তাই একটু শান্তি ।।
কালকে থেকে আবার ভার্সিটি ।। সকাল ১o টা নেহারা তানভীরদের বাসা থেকে বিদায়
নিল বিকাল বেলা তানভীরের আব্বু তানভীর কে এমন কিছু বললো তা শোনার জন্য
তানভীর মোটেও প্রস্তুত ছিলো না ………….

গুন্ডী মেয়ের ভালোবাসা পার্ট  ১১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.