সাথে থেকো প্রিয় পর্ব ১৬
লেখক:রিয়ান আহমেদ
শুভ্র সারা অফিস খুঁজেও সারিকার টিকিটাও পেল না।শুভ্র নিজের চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে ঠোঁট কামড়ে বিড়বিড় করে বলতে লাগলো,
-‘ও কোথায়?এতদিনে তো কখনোই ওকে অফিস মিস করতে দেখি নি।আজ কি আমার কারণে ও আসে নি?কিন্তু আমি এমন কি করলাম যে আসবে না?শুধু তো বলেছি,”আমি তোমাকে পছন্দ করি, তুমি কি আমাকে পছন্দ করো?” এখানে এতো লজ্জার কি আছে।আর যাইহোক মিস এরোগেন্ট তোমার কাছে এমন টিপিক্যাল লজ্জা লজ্জা ভাব আমি আশা করি নি।,,নাহ্ বাঙালি মেয়ে হয়ে এতটুকু লজ্জা পাওয়াটা স্বাভাবিক,,কিন্তু আজ অফিসে কেন এলো না।,,,উফফ টেনশন হচ্ছে।এক কাপ কোল্ড কফি খাওয়া দরকার।’
শুভ্র কফি খেতে খেতে টিভির চ্যানেল ঘোরাচ্ছিল তখনই একটা চ্যানেলে ও সারিকাকে দেখতে পায়।শুভ্র সেই নিউজটাই দেখতে শুরু করে।সারিকা জার্নালিস্টদের সঙ্গে কথা বলছে কিন্তু কেন?সারিকা তো একজন সাধারণ ক্যামেরাম্যান ওর কি কথা থাকতে পারে এদের সঙ্গে।শুভ্র কফি খেতে খেতেই নিউজটা দেখে।সারিকা বলছে,
-‘দেখুন আপনারা একটু সরুন আমার কাজ আছে আমাকে যেতে দিন।’
একজন সাংবাদিক থামিয়ে দিয়ে বললেন,
-‘না ম্যাম আপনাকে আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।মিসেস অন্তিকা খানের কি সত্যিই বিবাহ বহির্ভূত কোনো সম্পর্ক আছে?আপনার ভাই ভাবির কি খুব তাড়াতাড়ি ডিভোর্স হতে চলেছে?’
সারিকা রেগে বলল,
আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন
-‘আপনাদের এমন কেন মনে হচ্ছে বলুন তো?আমার ভাই ভাবির সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো।আমার ভাবি অন্তিকা খান সেই ছেলেটাকে মেরেছিল কারণ ছেলেটা তাকে ইভটিজিং করেছে।আর আপনারা কি ধরণের রিউমর ছড়াচ্ছেন।কেউ সেলিব্রিটি বলে যে তার প্রত্যেকটা ব্যক্তিগত ব্যাপারে আপনাদের মতো মিডিয়ার মানুষরা ইন্টারফ্যায়ার করবে এমনটা কিন্তু না।সবার নিজস্ব লাইফ আছে আর সবাই স্বাভাবিক মানুষের মতো প্রাইভেসি ডিজার্ভ করে।এবার সরুন আমাকে যেতে দিন।’
গার্ডসা সাংবাদিক ক্যামেরাম্যান সবাইকে সরিয়ে দিয়ে সারিকাকে চলে যাওয়ার রাস্তা করে দিল।সাংবাদিক ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-‘এতক্ষণ আমরা কথা বললাম খান পরিবারের একমাত্র মেয়ে মেয়ে এবং খান ইন্ডাস্ট্রিজ এর ৪০% শেয়ারের মালিক সারিকা বুসরা খানের সঙ্গে।তার ভাই অভিনব খান বিজয়ের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি আমরা ততক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকুন।’
কথাগুলো শুনতেই শুভ্রর চোখ বড়বড় হয়ে গেল।মুখ থেকে কফি পড়ে গেল।সে ভাবতেই পারে নি এই সারিকাই সেই সারি।শুভ্র জলদি নিজের টাই লুজ করে নিল সে ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে পানি মারলো।শুভ্র বিস্মিত সে ভাবতে পারছে না এতদিন পর সে আবার সেই মেয়েটিকে দেখতে পাবে।শুভ্র ধীরে ধীরে বলল,
-‘তু,,তুমি সারি কিভাবে?আমি তোমাকে আগে কেন চিনতে পারি নি?ওহ মাই গড,,,,কিন্তু তুমি কি আমাকে চিনতে পেরেছো?ওয়ান মিনিট তুমি প্রথম থেকেই আমাকে চিনতে পেরেছিলে না হলে আমাকে দেখিলেই ওমন রেগে যাওয়া,ঝগড়া করাটা স্বাভাবিক ছিল না।’
শুভ্রর চোখে নিজের হাই স্কুল লাইফ ভেসে উঠে।সে সারিকা আর অভিনব এক’ই স্কুলে পড়তো।শুভ্র ওদের এক বছরের সিনিয়র ছিল।সারিকা স্কুলের সব ছেলেদের ক্রাশ ছিল। কোনো এক কারণে সবসময় সারিকার সঙ্গে শুভ্রর ঝগড়া লেগেই থাকতো।দুজন দুজনকে একদম সহ্য করতে পারতো না।সারিকাকে সবাই তখন সারি নামেই চিনতো।শুভ্রর সঙ্গে সারিকার ঝগড়া একবার এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল যে ছেলেরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।এক দল যারা সারিকার পক্ষে আর অন্যদল শুভ্রর পক্ষে।হঠাৎ করেই সারিকা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয় কারণ তার দাদুভাই মারা গিয়েছিল ।শুভ্র সারিকাকে ছাড়া নিজের জীবন নিরামিষ ভাবতে শুরু করে।কারণ এমন কোনোদিন হয় নি যেদিন শুভ্র আর সারিকা একে অপরের সাথে ঝগড়া না করে থেকেছে।শুভ্র তখন ক্লাস নাইনে পড়ে কিশোর মনে ভালোলাগা নামক বীজের বেড়ে উঠার বয়স সেটা।শুভ্রর ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম হয় না।শুভ্র সারিকার প্রতি একটা ভালো লাগা অনুভব করতে শুরু করে।সে সারিকার প্রতি এই ভালো লাগাকে ভালোবাসার নাম দিয়ে দেয় অন্য সব কিশোর কিশোরীদের মতো।সারিকা স্কুলে আবার ফিরে এসেছে শুনতেই সে সারিকাকে প্রপোজ করে সাধারণ একটা নাইনের ছেলেদের মতো।কিন্তু সারিকা এক্সেপ্ট করে না কারণ তার চোখে শুভ্র ছিল তার সবচেয়ে বড় শক্র।সারিকা ভেবেছিল শুভ্র হয়তো ওর সঙ্গে মজা করছে বা কোনো কিছুর প্রতিশোধ নিচ্ছে।তাই সারিকা সকলের সামনে শুভ্রচে বেশ ঘটা করে অপমান করে রিজেক্ট করে দেয়।শুভ্র এতে এতোটাই অপমান বোধ করে যে আর কখনো সেই স্কুলেই ফিরে যায় না।
এই ছিল সারিকার আর শুভ্রর কাহিনী।শুভ্র বুঝতে পারছে না সে আবার কি করে সারিকাকেই প্রপোজ করলো?চৌদ্দ বছর আগের সেই রিজেকশন এখনো তার বেশ ভালো করে মনে আছে।ভেবেছিল আর কখনোই সারির মতো কাউকে ভালোবাসবে না কিন্তু সেই মনের অজান্তেই ভাগ্য তাকে আবার সারিকার সামনে এনে দিয়েছে।আবার ও সারিকাকে ভালোবেসে ফেলেছে।আগেরবার কাঁচা বয়সের আবেগ ছিল তাই ভুলতে পেরেছে সে কিন্তু এবার তো এই মেয়েকে ভুলে থাকাটা তার জন্য অসম্ভব।
সারিকা আর বিধান নিউজ স্টেশনগুলোতে গিয়ে নিউজগুলো রিমুভ করাতে প্রায় দশ লাখ টাকার মতো খরচ করেছে।
(এতক্ষণ শুভ্রর সঙ্গে আর আর সঙ্গে যা যা ঘটেছে তা হলো অন্তি আর অভিনবর ফটোশুটের সময়ের।মানে অন্তি আর অভিনব যখন ফটোশুটে ব্যস্ত তখন সারিকা অভিনবকে অন্তির নামে বাজে রিউমরের বিষয়ে এই সময় ম্যাসেজ পাঠিয়েছিল। আশা করি ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে পেরেছি।)
সারিকা গাড়ির সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে।সূর্য ডুবছে আকাশ লাল ,বেগুনি,গোলাপী রঙে রঙিন হয়ে আছে।সারিকা আজ নিজের ফ্লাটে যাবে না অভিনবর বাসায় যাবে অন্তি রিকোয়েস্ট করেছে অনেক ফোন দিয়ে সারিকাকে।সারিকার ফোনে বাবার অনেকগুলো মিসড কল পড়ে আছে সারিকা দেখেছে কিন্তু কল ব্যাক করার ইচ্ছে তার নেই।কল ব্যাক করলেই নিশ্চিত অন্তির নামে অনেকগুলো বদনাম বলবে যেমন,
-‘দেখেছো বিয়ের চার মাস হতে না হতেই ঐ মেয়ে তোমার ভাইকে ধোঁকা দিয়ে দিল।তুমিও তোমার ভাইয়ের মতো আমাদের নাক কাটিও না।’
সারিকা গতকাল রাতের কথা মনে পড়তেই সে বিরক্ত হয়ে বলল,
-‘শুভ্র কি জানে না আমি কে?এতদিনে ও আমাকে চিনতে পারে নি।নাহ্ কাল গিয়ে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে হবে।,,,কিন্তু শুভ্র আমাকে কি না চিনে নিজের মনের কথা বলেছে না কি চিনে?’
সারিকা আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে অভিনবর বাড়িতে গিয়ে পৌছালো।
অন্তি মন খারাপ করে নিজের রুমের থাই গ্লাসের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।সে কপাল ঘষছে বার বার।চোখ বন্ধ করলেই চোখের সামনে অভিনবর সেই কপালে কিস করার মুহূর্তটা ভেসে উঠে।অন্তি বার বার সেই স্পর্শটা নিজের কপাল থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে কিন্তু বারংবার ধোয়া ,মোছা,ঘষার পর ও তার মনে হচ্ছে স্পর্শটা যায় নি।
আসলে অভিনবর সেই স্পর্শটা অন্তির কপাল থেকে মুছে গেলেও মন কিংবা মস্তিষ্ক থেকে মুছতে চাইছে না।বরং প্রতি মুহূর্তে নিজের জায়গাটা আরো বেশি পাকাপোক্ত করে নিচ্ছে।অন্তি বিয়ের আগে ভাবতো তার স্বামীর প্রত্যেকটা স্পর্শ তার কাছে মূল্যবান হবে। বিয়ের পর আজ এই প্রথম সে স্বামীর স্পর্শ পেল আর এই প্রথম স্পর্শটাই তার কাছে অসহ্য লাগছে।এই জন্য হয়তো কোনো কিছুই আগের থেকে ভেবে রাখাটা ঠিক না।
অন্তির চোখ থেকে গাল বেয়ে পানি পড়ে অন্তি সেটা মুছে মুছে নিজেকে নিজে বলে,
-‘অন্তি বি স্ট্রঙ্গ।একটা সাধারণ স্পর্শকে এতটা গুরত্ব দিতে যাস না।হয়তো এটাই ভবিষ্যতে তোর দূর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।অভি যেমন ব্যাপারটা সাধারণভাবে নিয়েছে তুই ও সাধারণভাবে নেয়ার চেষ্টা কর।এখনো আরো চারটা বছর পড়ে আছে।এই চার বছরে তোর জীবনে এরকম আরো অনেক অভিনয় করতে হবে সো বি রেডি।’
তখন দরজায় নক করার শব্দ হয়।অন্তি জিজ্ঞেস করে,
-‘কে?’
দরজার অপর পাশ থেকে উত্তর আসে,
-‘আমি সারিকা।’
অন্তি চোখের পানি মুছে নিয়ে দরজা খুলে দেয়।সারিকাকে দেখে হেসে বলল,
-‘আপু আপনি?কষ্ট করে আসতে গেলেন কেন?কাউকে দিয়ে আমাকে ডেকে নিতেন।’
সারিকা সোফায় বসতে বসতে হেসে বলল,
-‘আরে এটা তেমন কোনো বড় ব্যাপার না।তুমি এখানে এসে বসো তো তোমার সঙ্গে তো আমার এখনো ঠিক মতো কথাই হলো না।’
অন্তি হেসে সারিকার পাশে বসে।সারিকা অন্তি হাত ধরে হেসে জিজ্ঞেস করলো,
-‘তোমাকে আজ কিছু কথা বলবো মন দিয়ে শোনো।’
-‘জ্বী বলুন।’
-‘দেখো আমি জানি আজকের ঘটনাটা বেশ আপত্তিকর ছিল।এমনটা হবে তুমি হয়তো ভাবো নি কিন্তু এই বাস্তবতাটাকেই তোমাকে মেনে নিতে হবে।বিখ্যাত লোকজনের কুখ্যাতি ছড়ানোর জন্য সাংবাদিকরা শুধু সুযোগ খুঁজে।আমি নিজে একজন ক্যামেরাম্যান তাই এসব আমি জানি।’ক’ কে কলা কি করে বানাতে হয় এরা এটা খুব ভালো করে জানে।,,,,তুমি বিশ্বাস করবে না এক বার সকালবেলা আমি পার্কে হাঁটতে গিয়েছিলাম তখন আমার দেখা হয় এক সিঙ্গার রামিমের সঙ্গে।ভদ্রতার খাতিরে লোকটার সঙ্গে কথা আমি একটা কফি শপে বসেছিলাম।সেটা হয়তো কোনো সাংবাদিকের চোখে অথবা ক্যামেরায় পড়ে গিয়েছিল পড়ে আর কি বানিয়ে দিল ঐ লোককে আমার বয়ফ্রেন্ড।’
সারিকা কথাটা বলে হেসে দিল।অন্তিও হা হা করে হাসতে লাগলো।দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে অভিনব এই দৃশ্য দেখতে ব্যস্ত।মেয়েটার প্রাণবন্ত হাসি যে কারো হৃদয়কে শীতল হাওয়ায় ভাসতে বাধ্য করে।
সকালবেলা অন্তি ঘুম থেকে উঠেই আজ অভিনবর রুমের সামনে গিয়ে হাজির হয়েছে।হাতে এক কাপ কফি উদ্দেশ্য অভিনবকে সরি বলা।কারণ কাল অভিনব ওকে কপালে কিস করায় বাড়িতে আসার পথে দু চারটা কড়া কথা শুনিয়ে দিয়েছে।কিন্তু এখন বুঝতে পারছে অভিনব নিজেও তখন অক্ষম ছিল।তাই ছেলেটাকে একটা ছোট্ট করে সরি তো বলাই যাই।
অন্তি নক করতেই অভিনব বলল,
-‘কাম ইন।’
অন্তি আস্তে করে দরজা খুলে ধীর পায়ে ভেতরে গেল।অভিনব এখানে কোথাও নেই।অন্তি একটু ভালো করে খেয়াল করতেই ড্রেসিংরুমের দরজা খোলা পেল।সে ড্রেসিং রুমে গিয়ে দেখলো অভিনব ফোনে কথা বলতে বলতে রেডি হচ্ছে।আসলে ঠিক অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে না হওয়ার চেষ্টা করছে মোবাইলে কথা বলতে বলতে তো আর তৈরি হওয়া যায় না।
অন্তি সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।অভিনব ভ্রূ কুঁচকে ইশারায় জিজ্ঞেস করলো,
-‘কি ব্যাপার তুমি এখানে কেন?’
অন্তি মুচকি হেসে বলল,
-‘সরি কালকের ব্যবহারের জন্য।’
অভিনব ফোনে কথা বলতে ব্যস্ত এখনো কারণ আজ তার অনেক জরুরি একটা কাজ আছে শ্বাস ফেলার সময়টুকু নেই।অভিনব একহাতে মোবাইল ধরে টাই বাঁধতে পারছে না আবার শার্টের বোতাম ও ঠিকমতো লাগাতে পারে নি।তাই অন্তির হাতে টাই ধরিয়ে দিয়ে অভিনব ইশারায় বলল,
-‘বেঁধে দেও প্লিজ লেট হয়ে যাচ্ছে।’
অন্তি পড়ে গেল চিন্তায় আবার অভিনবর কাছাকাছি ওকে যেতে হবে?অন্তি একরাশ বিরক্তি নিয়ে অভিনবর কাছে যায়।তার বুক ধুকপুক করছে আবার ও।গনিত পরীক্ষায় যখন আমরা কিছুই পারি না তখন শেষ বিশ মানুষের হৃদয় এমন দ্রুত গতিতে লাফায়।
অন্তির আজ গনিত পরীক্ষা নয় অন্তির হৃদয়টা সাধারণের চেয়েও বেশি দ্রুত বিট করছে।অন্তি বড় নিঃশ্বাস ছাড়ে নিজেকে শক্ত করে।অভিনবর শার্টের বোতাম ঠিকমতো লাগিয়ে আঙ্গুলে ভর দিয়ে উচু হয়ে অভিনবর গলায় টাইটা বেঁধে দিতে শুরু করে।অন্তি মনে মনে বলল,
-‘সে আরেকটু কম লম্বা হলে পারতো। এতো লম্ব যেহেতু তাহলে বউও লম্বা আনা দরকার ছিল আমার মতো ৫ফিট ৪ইঞ্চিকে কেন এনেছে।ইসস পা ব্যথা হয়ে গেল।,,,,,,কত বছর আগে স্কুলে থাকতে টাই বেঁধেছি কিন্তু এখনো ভালো মতো মনে আছে দেখছি।সবটাই স্মৃতিশক্তির উপকারিতা।’
অভিনব ফোনে কথা শেষ করে অন্তির দিকে তাকিয়ে দেখলো অন্তি টাই বাঁধতে বাঁধতে মিটমিট করে হাসছে।অভিনব গম্ভীর গলায় বলল,
-‘এই হাসছো কেন?আমাকে কি অদ্ভুত দেখাচ্ছে না কি?'(নিজেকে আয়নায় দেখতে দেখতে)
সাথে থেকো প্রিয় পর্ব ১৫
অন্তি নিজের মিটমিটি হাসিটা রেখেই বলল,
-‘নাহ্ ভাবছিলাম আপনার বউ আরেকটু লম্বা হওয়া দরকার ছিল যেহেতু আপনি এতো লম্বু,,সামনের বার বিয়ে করার সময় আগে বউয়ের হাইটের প্রতি খেয়াল রাখবেন যেন টাই বাঁধতে ভবিষ্যতে আমার মতো কাঠখড় না পুড়তে হয়।’
অভিনব চোখ ছোট ছোট করে বলল,
-‘মোটেও না আমি ওতোটা লম্বা নই মাত্র ছয় ফুট দুই ইঞ্চি বুঝলে।’
-‘এটা আপনার কাছে কম মনে হয়?উফফ আমার পায়ের পাতা ব্যথা হয়ে গেল।’
-‘দাঁড়াও আমি তোমার সাহায্য করছি।’
কথাটা বলেই অভিনব অন্তির কোমর দুই হাতে জড়িয়ে ধরে নিজের পায়ের পাতার উপর দাঁড় করিয়ে দেয়।অন্তি চোখ বড়বড় করে অভিনবর দিকে তাকিয়ে থাকে কিন্তু অভিনবর মুখে বাঁকা হাসি।