শেষ পাতায় তুমি পর্ব - Golpo bazar

শেষ পাতায় তুমি পর্ব ৫৯ || ফাবিহা নওশীন

শেষ পাতায় তুমি

শেষ পাতায় তুমি পর্ব ৫৯
ফাবিহা নওশীন

মানুষের কোলাহলের শব্দ ফায়াজের কানে পৌছাতে ফায়াজ পিটপিট করে চোখ খুলল। মনে হচ্ছে শুয়ে আছে। কিন্তু কোথায়? ফায়াজ চারপাশটা দেখার চেষ্টা করছে। ও একটা বেডে শুয়ে আছে। দেয়ালের সাথে লাগোয়া যন্ত্রগুলো জানান দিচ্ছে এটা হসপিটাল। ফায়াজ উঠে বসার চেষ্টা করছে। তখনই হাতে টান অনুভব করে। স্যালাইন চলছে। হটাৎ ওর মনে পড়ে কিছুক্ষণ আগের কথা। একটা ঘরে আগুন জ্বলছে। মেহের, ফায়াজ বলে চিৎকার করছে। ওরা ওকে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছে।
ফায়াজের শ্বাস দ্রুত উঠানামা করছে।
হাতের সব কিছু ছিড়ে ফেলে বেড থেকে নামতে নামতে চিৎকার করছে।
“মেহেররররররর!!”

ফায়াজ চিৎকার করে কাঁদছে আর মেহেরের নাম করছে। তুষার দৌড়ে এসে ওকে বাঁধা দিল। ফায়াজ তুষারকে দেখে ওর দু-বাহুতে হাত রেখে বলল,
“ওরা আমার মেহেরকে মেরে ফেলেছে। আমি কাউকে ছাড়ব না। কাউকে না। সবাই কে খুন করে ফেলব।”
ফায়াজ হাউমাউ করে কাঁদছে। তুষার কিছুতেই ওকে থামাতে পারছে না। তুষারকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।
“ফায়াজ, থাম। আমার কথা শোন। কি করছিস? তোর হাত থেকে রক্ত বের হচ্ছে।”
ফায়াজ বিলাপ করে বলছে, “ওরা মেহেরকে মেরে ফেলেছে। আমি কি করে বাঁচব? আমি মেহেরকে বাঁচাতে পারি নি। ওরা ওকে মেরে ফেলেছে।”
“ফায়াজ, মেহেরের ট্রিটমেন্ট চলছে। ও বেঁচে আছে। কি বলছিস তুই এ-সব?”
ফায়াজ কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে গেল। তুষারের কথা ওর কানে মধুর সুর হয়ে বাজছে। ফায়াজ কান্না থামিয়ে তুষারকে ছেড়ে ওর দিকে বিস্ময় নিয়ে চেয়ে আছে। তুষার ফায়াজের চোখের পানি মুছে বলল,
“মেহেরের ট্রিটমেন্ট চলছে ভাই।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গুপ এ জয়েন হউন

ফায়াজ আবারও ডুকরে কেঁদে উঠে। তুষারকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। কিছুক্ষণ আগেও কাঁদছিল। তবে এ কান্নার মধ্যে পার্থক্য আছে। এ কান্না সুখের কান্না।
তুষার ফায়াজকে সব খুলে বলল। ফায়াজের মাথা কাজ করছিল না ওই ভিডিও দেখার পর। হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল। কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়ছিল। ড্রাইভিং করতে করতে তুষারকে ফোন করে সব জানায়। তুষার তাৎক্ষণিক পুলিশ আর ফায়ার ব্রিগেডকে লোকেশন জানায়। ওরা এসে মেহেরকে উদ্ধার করে। ফায়াজকে সেন্সলেস অবস্থায় পায়। ততক্ষণে তুষারও চলে আসে। তারপর ওদের দ্রুত হসপিটালে নিয়ে যায়।
সবটা শুনে ফায়াজ তুষারকে আবারও জড়িয়ে ধরে।

“আমি অনেক ভাগ্যবান তোর মতো বন্ধু পেয়েছি। তুই সব সময় আমার পাশে থাকিস। তোকে আমি আমার সব বিপদে কাছে পেয়েছি। আজ-কাল এমন বন্ধু কারো ভাগ্যে জুটে না। আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবান। তুই আজ আবারো আমাকে বাঁচিয়ে দিলি। তোর এই ঋণ আমি শোধ করতে পারব না।”
“শোধের কথা বলছিস কেন? তুই আমার বন্ধু। আর বন্ধু তো সেই হয় যে বিপদে পাশে থাকে। আমি আমার বন্ধুত্বের দায়িত্ব পালন করেছি।”
“তবুও। তুই আমার জন্য অনেক করেছিস। আজ পর্যন্ত আমি তোর জন্য কিছুই করি নি।”
তুষার আগ্রহ নিয়ে বলল,
“তাহলে কিছু কর। সামিরার সাথে আমাকে বিয়ে দিয়ে দে। দুদিন পর পর ব্রেকাপ করে। অন্য কাউকে বিয়ে করার হুমকি দেয়।”
“ঠিক আছে ওকে তুলে নিয়ে আসব। তোকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে চাইলে সেই ছেলেকে উপরে পাঠিয়ে দেব। এই ঝামেলাটা মিটতে দে তারপর কথা দিচ্ছি। আমি নিজে তোদের বিয়ে দেব।”
তুষার মুচকি হাসল। তারপর চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল,
“পুলিশ কাউকে খুঁজে পায় নি। ওরা কারা ছিল জানিস কিছু? আর সব চেয়ে অদ্ভুত বিষয় কি জানিস? ওরা যেসব পদার্থ ব্যবহার করেছে তাতে আগুন ধীরে ধীরে জ্বলবে। মানে অনেক সময় লাগবে। কাউকে মারতে চাইলে দ্রুত মারতে চাইবে কিন্তু ওরা.. ”

ফায়াজ চোখ-মুখ শক্ত করে বলল,
“যাতে মেহের ধীরে ধীরে মরে আর আমি ছটফট করছে থাকি। তিলে তিলে মেহেরকে মরতে দেখি। কষ্ট পাই। তাই এমন করেছে।”
তুষার অবাক হয়ে বলল,”কিন্তু কেন? ওরা কারা?”
ফায়াজ মুখ গম্ভীর করে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আমি জানি ওরা কারা ছিল।”
তুষার কৌতূহল নিয়ে বলল,”কে?”
ফায়াজ ওর দিকে চেয়ে বলল,”হিমি!”
তুষার দাঁড়িয়ে গেল।
“হিমি!! হিমি এ-সব করেছে? কিন্তু কেন? তুই ওকে দেখেছিস?”
ফায়াজ চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
“ও-ই আমাকে ফোন করেছিল। ও-ই এসব করেছে। কিন্তু কেন সেটা তো আমি পরে দেখে নিব।”
“আচ্ছা, ওকে পরে দেখছি মেহেরকে নিয়ে ভাব। ওর অবস্থা অনেক ক্রিটিকেল। আমি আংকেলকে জানিয়েছি। ওরা আসছে।”
ফায়াজ মেহেরের অবস্থা ক্রিটিকেল শুনে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমি ওকে এখুনি দেখতে চাই।”
তুষার ফায়াজের হাত ধরে বলল,

“পাগলামি করিস না। ড্রেসিং হচ্ছে। তবে বেশি পুড়ে নি। তুই চিন্তা করিস না।”
“ওর শরীর পুড়েছে? অনেক কষ্ট পাচ্ছে? হিমি ওকে এত কষ্ট দিল? আমি হিমিকে ছাড়ব না। ওরা আমার মেহেরের সাথে যা করেছে আমিও ওদের সাথে তাই করব। কাউকে ছাড়ব না। ভয়ানক শাস্তি দেব।”
“আচ্ছা, আচ্ছা দিস। তবে এখন শান্ত হ। ওর জন্য দোয়া কর। আর যেভাবে রক্ত ঝড়ছে তুই নিজেই জমের বাড়ি চলে যাবি।”
ফায়াজ মুচকি হেসে বলল,
“মেহের যেহেতু বেঁচে আছে আমি এত তাড়াতাড়ি জমের বাড়ি যাচ্ছি না। হিমির থেকেও যে প্রতিশোধ নেওয়া বাকি।”
হালকা ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে। বাতাসের সাথে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পড়ছে ভোর থেকে। সকালে মেহেরের জ্ঞান ফিরল। ফায়াজ পুরো রাত দরজার বাইরে বসে ছিল। ভেতরে ঢোকার পারমিশন দেয় নি। মেহেরের বাবা-মাও রাতে চলে এসেছেন। আর বারবার কেন উনার মেয়ের সাথে এমন ঘটনা ঘটছে তার কৈফিয়তও চেয়েছেন। মাহি আর তূর্জ সকালে এসেছে। ফায়াজের বাবা-মা, ফাইজা খবর পেয়ে সাথে সাথেই চলে এসেছে।

সকালে মেহেরের জ্ঞান ফিরতেই ফায়াজ মেহেরের সাথে দেখা করতে গিয়েছে। ওর জামা-কাপড়ে রক্তের ছিপছিপ দাগ। চুল এলোমেলো, মুখটা ফ্যাকাসে, চোখগুলো কেমন ছোট ছোট হয়ে আছে।
ফায়াজকে ডাক্তার বলে দিয়েছে মেহের এখনো ট্রমার মধ্যে আছে। ভয় পেয়ে আছে খুব। তাই মেহেরকে এমন কোন কথা বা প্রশ্ন যেন না করে যাতে আবারও ভয় পেয়ে যায়।
মেহের চোখ খুলে শরীরে ব্যথা অনুভব করছে। ও ভাবছে ওকে ফায়াজ নিয়ে এসেছে হসপিটালে৷ ফায়াজ ভেতরে ঢুকে মেহেরের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ দেখতে পেল। মেহেরের খোলা চোখ যেন কাউকে খুঁজছে।
ফায়াজকে দেখেই মুচকি হাসল। মেহের ভাবে নি আর ফিরে আসবে। চোখ বন্ধ করার আগ মুহুর্তে মনে হয়েছে দুনিয়ার সঙ্গ শেষ। আর এই দুনিয়া দেখতে পাবে না।
মেহের হাত বাড়িয়ে ফায়াজকে ডাকল। ফায়াজ মেহেরের হাত ধরে হাতে চুমু খেয়ে চোখের পানি মুছল।
মেহের কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,

“ফায়াজ, আমি শুধু তোমাকে কাঁদাই। আমার জন্য তোমাকে কষ্ট পেতে হচ্ছে। সবাইকে ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। জানো আমি অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চারদিকে আগুন জ্বলছে আর তার মাঝে। তোমাকে ডাকছি কিন্তু তুমি আসছো না। চোখ বন্ধ করলেই আমার সামনে এগুলো ভেসে উঠে। আমার এখনও ভয় করছে। আমি ভাবতে পারি নি আমি আবার এই দুনিয়ার আলো দেখতে পাব। তোমাকে দেখতে পাব। ভেবেছিলাম সব শেষ।” ( মেহের ডুকরে কেঁদে উঠল)
ফায়াজ কিছু বলতে পারছে না। ও মেহেরকে সাহায্য করতে পারে নি। চুপচাপ দেখা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। নিজেকে অপরাধী লাগছে। মেহের ফায়াজকে চুপ দেখে বলল,
“আমাকে একটু উঠিয়ে বসাও।”
ফায়াজ মেহেরকে উঠিয়ে বসাল।
“মেহের, আমি তোমাকে নিরাপত্তা দিতে পারি নি। আমি তোমার খেয়াল রাখতে পারি নি। আমি তোমার ব্যর্থ স্বামী। সরি।”
মেহেরের হটাৎ কি জানি মনে পড়ল। পেটে হাত দিয়ে চোখ বড়বড় করে আছে। চোখে মুখে ভয় বিরাজ করছে।
ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
“ফায়াজ, আমার বেবি? বেবি ঠিক আছে?”

ফায়াজ মেহেরের কথা শুনে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেল। কি উল্টো পালটা কথা বলছে। ডাক্তার বলল ও ট্রমায় আছে, শকড। শকডের জন্য এমন উলটা পালটা কথা বলছে। মাথায় সমস্যা হয় নি তো?
ফায়াজকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে মেহের চিৎকার করে ডাক্তারকে ডাকল। চিৎকার শুনে নার্স দৌড়ে এল। কিছুক্ষণ পরে একজন ডাক্তার এল।
মেহের বিচলিত কন্ঠে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করল,
“আমার বেবি? বেবি ঠিক আছে?”
ডাক্তার মুচকি হেসে বলল,
“জি, আপনার বেবি একদম ঠিক আছে।”
ফায়াজ ডাক্তারের দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে। তারপর আমতা আমতা করে আধো আধো হেসে বলল,
“কি বলছেন ডাক্তার? কিসের বেবি?”
ডাক্তারের আগে নার্স বলল,
“ওমা, আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট। আপনি জানেন না?”
ফায়াজ বিস্ময় নিয়ে ডাক্তারের দিকে প্রশ্নবোধক চাহনি দিল।
ডাক্তার মুচকি হেসে বলল,
“জি, আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট।”
ফায়াজ মেহেরের দিকে তাকাল। ফায়াজের বুক ঢিপঢিপ করছে। কেন করছে? আনন্দে? মেহের চোখ নামিয়ে নিল। ফায়াজ এখন ওকে চিলের মতো ধরবে। কেন ওকে জানায় নি। মেহেরও তো সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল।
“মেহের! ডাক্তার কি বলছে? তুমি আমাকে বলো নি কেন?”
মেহের দৃষ্টি নত করে বলল,
“আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার আগেই…..”
“হ্যাঁ তোমার সারপ্রাইজের ঠেলায় সব যাচ্ছিল।”
ডাক্তার আর নার্স বেরিয়ে গেল। ফায়াজ মেহেরের আরেকটু কাছে গেল। মেহেরের লজ্জা লাগছে। কেমন অদ্ভুৎ লজ্জা।
ফায়াজ মেহেরের গালে ঠোঁট ছুয়ালো। ওর কি যে খুশি লাগছে। এই খারাপ সময়ে এত ভালো নিউজ, ভাবা যায়। মেহের আবারও ডুকরে কেঁদে উঠল।
ফায়াজ বিচলিত হয়ে বলল,
“কি হয়েছে কাঁদছো কেন?”
মেহের কেঁদে কেঁদে বলল,

“আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ফায়াজ, খুব। নিজের জন্য না আমাদের বেবির জন্য। মনে হচ্ছিল আমি ওকে বাঁচাতে পারব না। ওকে আমি দুনিয়ার আলো দেখাতে পারব না। অনেক ভয় হচ্ছিল। আমার কতটা ভয় লাগছিল তোমাকে বুঝাতে পারব না।”
ফায়াজের চোখ মুখ শক্ত হয়ে এলো।
“মেহের, কথা দিচ্ছি তোমার আর আমাদের বেবির উপর যে চোখ তুলে তাকিয়েছে এইবার আমি আর তাকে ছাড়ব না। ওকে ধরে ফেলেছি। ওকে আমি ভয়ানক মৃত্যু দেব।”
“কে? কে এমন করছে? আমি তো ঘরে শুয়ে ছিলাম। ওখানে গেলাম কিভাবে তাও জানি না।”
“হিমি, হিমি করেছে। কেন করেছে জানি না। তবে জেনে যাব। আগে তুমি সুস্থ হও তারপর। তোমাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাচ্ছি না। এক মুহুর্তের জন্য চোখের আড়াল হতে দেব না। তোমার পুরো খেয়াল রাখব। কোন ফাঁক রাখব না।”
“আচ্ছা, তবে আমার একটা কথা রাখবে? আমার কথা না ভেবে হোক, আমাদের বেবির জন্য।”
“তোমার কোন কথা আমি রাখি না?”

“হিমিকে পুলিশের কাছে দেবে। তুমি নিজে কিছু করতে যাবে না। আমি চাই না তুমি এমন কিছু করো যার প্রভাব আমাদের অনাগত বাচ্চার উপর পড়ুক। তুমি তো বলেছিলে আমাদের বাচ্চা হলে তাকে সুস্থ-সুন্দর স্বাচ্ছন্দ্যের একটা জীবন দিবে।”
ফায়াজ কিছুক্ষণ ভেবে বলল,”আচ্ছা, ওকে পুলিশের কাছেই দেব।”
সবাই একে একে মেহেরকে দেখে গেল। কিছুদিন পরে মেহের ডিসচার্জ পেয়ে গেল। তবে নিয়মিত চেকাপের উপর থাকতে হবে। ঘা না শুকানো পর্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ইন্সট্রাকশন দিয়ে দিয়েছে।
~~
মেহের আর ফায়াজ পুলিশ স্টেশনে হিমির সামনে বসে আছে। হিমি হিংস্র চোখে মেহের আর ফায়াজের দিকে তাকাল।
ফায়াজ নম্রভাবে জিজ্ঞেস করল,
“মেহেরের সাথে তোমার কি সমস্যা? কেন ওর পেছনে পড়ে আছো? সেই ভার্সিটি থেকে দেখছি। কেন বলো তো? কি সমস্যা?”
হিমি ফায়াজের দিকে ক্ষীপ্ত দৃষ্টি দিয়ে বলল,
“আমার সমস্যা তোমার সাথে। আমি চাই তোমাকে কষ্ট পেতে দেখতে। আমি চাই তোমার জীবনে ভালোবাসা বলতে কিছু না থাকুক। তুমি সর্বহারা হয়ে রোজ জ্বলে পুড়ে মরো। এতেই আমার শান্তি। তাই তো মাহিকে ব্যবহার করেছিলাম।”
মেহের ফায়াজ দুজন দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকাল।
হিমি হেসে বলল,

শেষ পাতায় তুমি পর্ব ৫৮

“বুঝতে পারছো না? আমি মাহিকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। মাহি তূর্জকে ভালোবাসে, তূর্জের সাথে বিয়ে ঠিক সব জানতাম তাই ওকে ব্যবহার করলাম তোমাকে হার্ট করার জন্য। কিন্তু কি হলো? তুমি ওর বোনকে বিয়ে করে নিলে। আর তাকে পাগলের মতো ভালো বাসতে লাগলে। সুখের স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল তোমার জীবন। তাই তোমার জীবন থেকে তোমার বেঁচে থাকার অবলম্বন মেহেরকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সেটা সম্ভব হয় নি। প্রথমে চেয়েছিলাম তুমি নিজেই মেহেরকে তোমার জীবন থেকে সরিয়ে দেও তাই ওই পার্সেল পাঠিয়েছিলাম বাট ফেইল। তাই নতুন প্ল্যান করি ওকে মারার। কিন্তু আপসোস সেখানেও বেঁচে গেল।”
মেহের কিছুই বুঝতে পারছে না। ফায়াজের প্রতি এত রাগ কেন? কি করেছে ফায়াজ?

মেহের জিজ্ঞেস করল,
“ফায়াজের প্রতি এত রাগ কিসের? কি করেছে ও?”
হিমি কাঁদতে কাঁদতে বলল,
“তোমার বরের জন্য আমার আদরের বোন আজ নিথর হয়ে পড়ে আছে।”
মেহের ওর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল।

শেষ পাতায় তুমি শেষ পর্ব 

1 thought on “শেষ পাতায় তুমি পর্ব ৫৯ || ফাবিহা নওশীন

  1. Khub khub khub khub khub khub khub sundor hoeache khub khub khub khub khub khub khub khub khub khub khub khub valo legeche but kharap lagche ata vebe j golpo ta ses hoea jabe sotti khub khub kharap lagche

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.